লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৩-[৩১] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুক্ত করা গোলাম বিলাল ইবনু ইয়াসার ইবনু যায়দ বলেন, আমার পিতা আমার দাদার মাধ্যমে বলেন, আমার দাদা যায়দ বলেছেন, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন। যে ব্যক্তি বলল, ’
"আস্তাগফিরুল্ল-হাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম ওয়া আতূবু ইলায়হি"
(অর্থাৎ- আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা’বূদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছে তওবা্ করি।)।
আল্লাহ তা’আলা তাকে ক্ষমা করবেন, যদিও সে যুদ্ধের ময়দান হতে পালিয়ে যেয়ে থাকে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ। তবে আবূ দাঊদ বলেন, বর্ণনাকারীর নাম হলো হিলাল ইবনু ইয়াসার। তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব)[1]
وَعَن بِلَال بن يسَار بن زيدٍ مَوْلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي عَنْ جَدِّي أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ قَالَ: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيَّ الْقَيُّومَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ غُفِرَ لَهُ وَإِنْ كَانَ قَدْ فَرَّ مِنَ الزَّحْفِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ لَكِنَّهُ عِنْدَ أَبِي دَاوُدَ هِلَالُ بْنُ يَسَارٍ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب
ব্যাখ্যা: (وَأَتُوبُ إِلَيْهِ) কারী বলেন, ব্যক্তির উচিত এ বাক্যটি এভাবে উচ্চারণ না করা তবে যখন সে এ বাক্যের ক্ষেত্রে সত্যবাদী হবে তখন উচ্চারণ করবে। আরো উচিত হবে আল্লাহর সামনে মিথ্যাবাদী না সাজা। আর এজন্য বর্ণণা করা হয়েছে গুনাহের উপর অটল থেকে গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনাকারী নিজ প্রভুর সাথে ঠাট্টাকারীর ন্যায়।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) কিতাবুল আযকার-এ রবী' বিন খয়সাম থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই রবী‘ বিন খায়সাম বলেন, তোমাদের কেউ যেন (استغفر الله) এবং (اتوب اليه) না বলে, কারণ যদি সে তা না করে তাহলে তা পাপের কাজ ও মিথ্যায় পরিণত হবে। বরং সে বলবে (اللهم اغفرلى وتب على) অর্থৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার ওপর তাওবাহ্ কবূল কর।
নাবাবী (রহঃ) বলেন, আর এটি যা তিনি তার (اللهم اغفرلى وتب على) উক্তি থেকে বলেছেন তা ভাল। পক্ষান্তরে (استغفر الله) অর্থাৎ- আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি- এ কথা বলার অপছন্দনীয়তা এবং তাকে মিথ্যা বলে আখ্যা দেয়ার ব্যাপারে আমরা একমত নই। কেননা (استغفر الله) এর অর্থ হল আমরা তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি বা অনুসন্ধান করছি। এতে কোন মিথ্যার আশ্রয় নেই। এ ধরনের মত প্রত্যাখ্যানকরণে যে ব্যক্তি এ হাদীসটি বলবে, (استغفر الله الذى لا اله الا هو الخ ‘‘আমি ঐ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই যিনি ছাড়া সত্যিকার কোন উপাস্য নেই ..... শেষ পর্যন্ত’’) অর্থাৎ- বিলাল বিন ইয়াসার-এর ঐ হাদীস যার ব্যাখ্যাতে আমরা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করছি।
হাফেয বলেন, এ আলোচনা ছিল (استغفر الله الذى لا اله الا هو الحى القيوم) এ শব্দের ব্যাপারে। পক্ষান্তরে (اتوب اليه) এর ক্ষেত্রে তাই উদ্দেশ্য যা রবী‘আহ্ উদ্দেশ্য করেছেন; অর্থাৎ, নিশ্চয়ই সে মিথ্যা বলল আর তা এভাবে যে, ব্যক্তি যখন (اتوب اليه) বলবে অথচ পৃকতপক্ষে সে তাওবাহ্ করবে না। রবী‘আহ্-এর কথা প্রত্যাখ্যানকরণে রবী‘আহ্-এর বর্ণিত হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করাতে দৃষ্টি দেয়ার আছে। আর তা এজন্য যে উক্তিকারী (اتوب اليه) থেকে তাওবাহ্ করা এবং তাওবার শর্তসমূহ সম্পন্ন করা উদ্দেশ্য নেয়াও জায়িয আছে। আরো সম্ভাবনা আছে, রবী‘আহ্ উভয় শব্দের সমষ্টিকে উদ্দেশ্য করেছেন বিশেষভাবে (استغفر الله)-কে উদ্দেশ্য করেননি। তখন তার সম্পূর্ণ কথা বিশুদ্ধ হবে। আল্লাহই সর্বজ্ঞাত। এরপর হাফেয হালাবিয়াত থেকে সুবকী-এর কথা উল্লেখ করেছেন আর তা ২৩৫৮ নং হাদীসের ব্যাখ্যাতে উল্লেখ করা হয়েছে (من الزحف), অর্থাৎ- জিহাদ এবং যুদ্ধে শত্রুর সাক্ষাৎ থেকে। যদিও সে কাবারীহ্ গুনাহে লিপ্ত হয়ে থাকে। কেননা যুদ্ধের ময়দান থেকে পালয়ন করা কাবীরাহ্ গুনাহ। এ ব্যাপারে আল্লাহ উল্লেখিত আয়াত দ্বারা ধমক দিয়েছেন- وَمَنْ يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهٗ إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلٰى فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِنَ اللّٰهِ অর্থাৎ- ‘‘আর সেদিন যে ব্যক্তি পৃষ্ঠপদর্শন করে পলায়ন করবে যুদ্ধ কৌশল বা স্বীয় কেন্দ্রস্থলে স্থান করে নেয়া ব্যতীত সে আল্লাহর ক্রোধ অর্জন করবে’’- (সূরা আল আনফাল ৮ : ১৬)।