২২২৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

২২২৭-[৫] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বান্দার (প্রতিটি) দু’আ কবূল করা হয়, যে পর্যন্ত না সে গুনাহের কাজের জন্য অথবা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার জন্য এবং তাড়াহুড়া করে দু’আ করে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! তাড়াহুড়া কি? তিনি বললেন, (দু’আ করে) এমনভাবে বলা যে, আমি (এই) দু’আ করেছি। আমি (তার জন্য) দু’আ করেছি। আমার দু’আ তো কবূল হতে দেখছি না। অতঃপর সে নিরাশ হয়ে পড়ে এবং দু’আ করা ছেড়ে দেয়। (মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُسْتَجَابُ لِلْعَبْدِ مَا لَمْ يَدْعُ بِإِثْمٍ أَوْ قَطِيعَةِ رَحِمٍ مَا لَمْ يَسْتَعْجِلْ» . قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الِاسْتِعْجَالُ؟ قَالَ: يَقُولُ: قَدْ دَعَوْتُ وَقَدْ دَعَوْتُ فَلَمْ أَرَ يُسْتَجَابُ لِي فَيَسْتَحْسِرُ عِنْدَ ذَلِكَ وَيَدَعُ الدُّعاءَ . رَوَاهُ مُسلم

ব্যখ্যা: (لَمْ يَدْعُ بِإِثْمٍ) অর্থাৎ- কোন পাপ কাজ করার সুযোগ চেয়ে দু‘আ করা যাবে না। যেমন কেউ বললো, হে আল্লাহ! আমাকে অমুককে হত্যা করার ক্ষমতা প্রদান করুন। অথচ সে মুসলিম তাকে হত্যা করার কোন কারণ বিদ্যমান নেই। হে আল্লাহ! আমাকে মদ দান করুন ইত্যাদি পাপের কাজে দু‘আ করা নিষেধ।

(قَطِيعَةِ رَحِمٍ) অর্থাৎ- ইমাম জাযরী বলেন, কোন ব্যক্তি যদি এ দু‘আ করে, হে আল্লাহ! আমার ও আমার পিতা-মাতার মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দাও যাতে করে আমার তাদের পিছনে কোন খরচ না করা লাগে- এমন দু‘আ করা জায়িয নেই।

(فَلَمْ أَرَ يُسْتَجَابُ لِي) ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, দু‘আকারী এভাবে বলবে যে, অর্থাৎ- আমি বহুবার দু‘আ করেছি কিন্তু দু‘আ কবূল হওয়ার কোনই আলামত দেখছি না। এ জাতীয় কথা হয়তো দু‘আ কারী আল্লাহকে দু‘আ কবূলের ক্ষেত্রে ধীরুজ মনে করে বা নিরাশ হয়ে বলতে পারে আর এ দু’শ্রেণীর বিষয়ই তার জন্য জায়িয হবে না। প্রথমটি এজন্য জায়িয হবে না যে, দু‘আ কবূল হওয়া একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে, যেমন : বর্ণিত হয়েছে মূসা (আঃ) ও হারূন (আঃ) ফির‘আওন-এর ওপর যে বদ্দু‘আ করেছিলেন তা কবূল হয়েছিল তাদের দু‘আ করার ৪০ বছর পর। আর দ্বিতীয়টি অর্থাৎ- নিরাশ হয়ে যাওয়া এজন্য জায়িয হবে না যে, আল্লাহর রহমাত থেকে কেবল তারাই নিরাশ হয় যারা বেঈমান।

পাশাপাশি আরো একটি বিষয় মনে করতে হবে। আর তা হলো, দু‘আ কবূলের অনেকগুলো প্রকার আছে যেমনঃ

১. কাঙ্ক্ষিত বস্ত্ত কাঙ্ক্ষিত সময়ে অর্জন হয়।

২. কাঙ্খিত বস্ত্ত অর্জিত হয় তবে কাঙ্ক্ষিত সময়ে নয় বরং কোন রহস্যের কারণে বিলম্বে অর্জিত হয়।

৩. কাঙ্ক্ষিত বস্ত্ত অর্জিত হয় না বরং কাঙ্ক্ষিত বস্তুর পরিবের্ত কোন অনিষ্ট দূরীভূত হয় অথবা তার চেয়ে আরো ভালো কিছু প্রদান করা হয়।

৪. বিচারের কঠিন দিনের জন্য জমা করে রাখা হয়। অর্থাৎ- দুনিয়াতে নয় এর প্রতিদান পাওয়া যাবে আখিরাতে।

আমি [‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী] বলবো, ‘‘হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে দু‘আ কবূল করা হবে’’ এর দ্বারা এবং পবিত্র কুরআনে যেখানে বলা হয়েছে, ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ অর্থাৎ- ‘‘আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব।’’ (সূরা মু’মিন/গাফির ৪০ : ৬০)

মহান আল্লাহর আরো বাণীঃ أُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ অর্থাৎ- ‘‘আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই যখন সে আমাকে ডাকে।’’ (সূরা আল বাকারাহ্ ২ : ১৮৬)

এসবগুলো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, দু‘আ করলে তা কবূল হয়। হয়তো বা কখনো যা চাওয়া হয় তাই পাওয়া যায় আবার কখনো তার পরিবর্তে অন্য কিছু পাওয়া যায় বা তার চেয়ে বেশী পাওয়া যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ