২১৮৮

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)

২১৮৮-[২] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির জন্য এ কথা বলা খুবই খারাপ যে, আমি কুরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি। বরং সে যেন বলে, তাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা বার বার কুরআন পড়তে থাকবে। কারণ কুরআন মানুষের মন হতে চতুষ্পদ জন্তু হতেও দ্রুত পালিয়ে যায়। (বুখারী, মুসলিম। ইমাম মুসলিম, ’রশিতে বাঁধা চার পা জন্তু’ বাড়িয়ে বলেছেন।)[1]

بَابٌ [اٰدٰبُ التِّلَاوَةِ وَدُرُوْسُ الْقُرْاٰنِ]

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: بئس مالأحدهم أَنْ يَقُولَ: نَسِيتُ آيَةَ كَيْتَ وَكَيْتَ بَلْ نُسِّيَ وَاسْتَذْكِرُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ أَشَدُّ تَفَصِّيًا مِنْ صُدُورِ الرِّجَالِ مِنَ النَّعَمِ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَزَادَ مُسلم: «بعقلها»

ব্যাখ্যা: এখানে نُسِّىَ (অর্থাৎ- ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে) এর অর্থ হলো কুরআন সংরক্ষণ করা ও স্মরণ করাতে তার শিথিলতা থাকার কারণে কুরআন ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তখন সে বুঝতে পারে যে, কুরআন থেকে সরে যাওয়া ও অমনোযোগিতার কারণে তাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর অর্থ হলো রহমাত থেকে দূরে সরানো। যেমন কুরআন মাজীদে আছে, نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ অর্থাৎ- ‘‘তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে, সুতরাং তিনিও তাদেরকে ভুলে গিয়েছেন’’- (সূরা আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৬৭)। এটা মূলত কুরআনের প্রতি আদব, এর সৌভাগ্য অর্জনে শৈথিল্যতা থাকায় আফসোস করা ও স্পষ্টভাবে পাপকার্যের সাথে জড়িত হওয়া থেকে সতর্ক হওয়ার জন্য এরূপ বলা হয়ে থাকে। আর সে এর দ্বারা যেন তার বিরুদ্ধে অবহেলার কথা স্বীকার করে।

ইবনু হাজার (রহঃ) তাঁর ফাতহুল বারী গ্রন্থে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এখানে الذم (দোষারোপ)-এর কারণ বলতে কুরআনের প্রতি অমনোযোগিতাকে বুঝা যায়। কেননা এর প্রতি যত্নবান না হওয়া ও অধিক অবহেলার কারণে ভুল হয়ে থাকে। তাই যদি সে তিলাওয়াত ও সালাতে বেশি বেশি পড়ার মাধ্যমে কুরআনের প্রতি মনোযোগী হয় তাহলে তার হিফয স্থায়ী থাকবে।

কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন মুখস্থ করল। অতঃপর গাফেল হয়ে ভুলে গেলে তার অবস্থা নিন্দনীয়। অর্থাৎ- এখানে (ذم الحال) নিন্দনীয় অবস্থা উদ্দেশ্য, (ذم القول) নিন্দনীয় কথা নয়।