লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
১৯৫৮-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমাযান (রমজান) মাসে সিয়াম পালন করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় ’ইবাদাতে রাত কাটাবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় লায়লাতুল কদরে ’ইবাদাতে কাটাবে তারও আগের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ. وَمَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ. وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»
ব্যাখ্যা: (مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا) ‘‘বিশ্বাসের সাথে সিয়াম পালন করে’’ অর্থাৎ- এ বিশ্বাস রাখে যে, রমাযানের সিয়াম পালন করা তার জন্য বাধ্যতামূলক এবং তা ইসলামের অন্যতম একটি রূকন, আর তা পালনকারীর জন্য পুরস্কার রয়েছে।
(احْتِسَابًا) ‘‘সাওয়াবের আশায়’’, অর্থাৎ- এ কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে সে আল্লাহ তা‘আলার নিকট পুরস্কার প্রাপ্তির আশা করে। মানুষের ভয়ে বা সিয়াম পালন না করলে লজ্জিত হতে হবে এমন আশংকা থেকে নয় অথবা সিয়াম পালনের মাধ্যমে সুখ্যাতি অর্জনের উদ্দেশ্য না থাকে বরং ‘‘খালিস লিওয়াজহিল্লা-হ’’ অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য, সিয়াম পালন করে (غُفِرَ لَه مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه وَمَا تَأَخَّرَ) তার পূর্বাপর সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। এতে বুঝা যায় যে, তার সগীরাহ্ কাবীরাহ্ সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। তবে জমহূর ‘আলিমদের মতে শুধু সগীরাহ্ গুনাহ উদ্দেশ্য অর্থাৎ তার সকল প্রকার সগীরাহ্ গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। কেননা কাবীরাহ্ গুনাহ তাওবাহ্ ব্যতীত ক্ষমা করা হয় না।
(وَمَا تَأَخَّرَ) ‘‘তার পরবর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়’’ হাদীসের এ অংশটুকু প্রশ্নের সৃষ্টি করে যে, ক্ষমা করা বিষয়টি কৃত অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত। যে অপরাধ এখনও সংঘটিত হয়নি তা ক্ষমা করা হয় কিভাবে?
জওয়াবঃ
১. তার গুনাহ সংঘটিত হয় ক্ষমাকৃত অবস্থায় অর্থাৎ তার দ্বারা কোন গুনাহ সংঘটিত হলে তা ক্ষমা করে দেয়া হবে।
২. আল্লাহ তাকে ভবিষ্যতে গুনাহতে লিপ্ত হওয়া থেকে সংরক্ষণ করবেন। ফলে তার দ্বারা কোন কাবীরাহ্ গুনাহ সংঘটিত হবে না।
(قَامَ رَمَضَانَ) ‘‘রমাযানে কিয়াম করে’’ অর্থাৎ- রমাযানের পূর্ণরাত বা রাতের অধিকাংশ সময় সালাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত ও যিকিরের মাধ্যমে অতিবাহিত করে। ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ এর দ্বারা উদ্দেশ্য রমাযানের রাতে তারাবীহের সালাত আদায় করা। অর্থাৎ তারাবীহের সালাত দ্বারা قيام الليل (কিয়ামুল লায়ল)-এর উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়ে যায়। এর অর্থ এমন নয় যে, তারাবীহ ব্যতীত قيام الليل হয় না।
(مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ) ‘‘যে ব্যক্তি কদরের রাতে কিয়াম করে’’ অর্থাৎ- এ রাতে জেগে ‘ইবাদাত করে। চাই সে তা অবহিত হোক বা না হোক।
(غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه) ‘‘তার পূর্বের কৃতগুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়’’ অর্থাৎ ঐ ব্যক্তির যদি সগীরাহ্ গুনাহ থেকে থাকে তবে তা মুছে ফেলা হয়। আর যদি তার কাবীরাহ্ গুনাহ থাকে তবে তা হালকা করে দেয়া হয়। তার যদি কোন গুনাহ না তাকে তবে জান্নাতে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হয়।