লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯০০-[১৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম যে গাছ লাগায় অথবা ফসল ফলায় অতঃপর কোন মানুষ অথবা পশু, পাখী (মালিক-এর বিনানুমতিতে) এর থেকে কিছু খেয়ে ফেলে, তাহলে (এ ক্ষতি) মালিক-এর জন্য সদাক্বাহ্ (সাদাকা) গণ্য হবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ فَضْلِ الصَّدَقَةِ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا أَوْ يَزْرَعُ زَرْعًا فَيَأْكُلُ مِنْهُ إِنْسَانٌ أَوْ طَيْرٌ أَوْ بَهِيمَةٌ إِلَّا كَانَت لَهُ صَدَقَة»
ব্যাখ্যা: (مَا مِنْ مُسْلِمٍ) এ কথা বলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত কাফিরদেকে সাওয়াবের আওতামুক্ত করেছেন এবং হাদীসে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দ্বারা আখিরাতের সাওয়াব উদ্দেশ্য আর এ বিষয়টি মুসলিমের জন্য নির্দিষ্ট কাফিরের জন্য নয়। সুতরাং কাফির যদি সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করে অথবা কোন প্রকার কল্যাণকর কাজ করে থাকে এর বিনিময়ে ক্বিয়ামাতে কোন নেকী সে পাবে না। হ্যাঁ তবে যা কিছু কাফিরের শস্যক্ষেত্র থেকে প্রাণীকূল খেয়েছে এর জন্য দুনিয়াতেই তাকে বিনিময় দেয়া হয় যেমন এ বিষয়টি দলীল দ্বারা প্রমাণিত। অপরদিকে যারা বলেন, এ ভাল কাজগুলো করার কারণে অখিরাতে তার ‘আযাব হালকা করা হবে তাদের এ কথার পক্ষে কোনই দলীল প্রমাণ নেই। সুতরাং এ জাতীয় কথা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
ক্বাযী ‘আয়ায (রহঃ) বলেছেন, সকল বিজ্ঞ ‘আলিম এ ব্যাপারে একমত যে, নিশ্চয় কাফিরের জন্য তার ভালকাজ কোনই উপকার দিবে না, না কোন নি‘আমাত প্রাপ্ত করা, না কোন শাস্তি রহিত করা। তাদের একে অন্যের তুলনায় পাপ অনুপাতে শাস্তি প্রাপ্তির দিক দিয়ে বেশ কঠিন হবে।
অপরদিকে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল মারফূ‘ সূত্রে আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর মাধ্যমে এবং অপর একটি হাদীসে যথক্রমে ما من رجل তথা যে কোন ব্যক্তি এবং ما من عبد যে কোন বান্দার কথা উল্লেখ আছে এ বর্ণনা দু’টির مطلق তথা শর্তহীন অর্থকে مقيد তথা শর্তযুক্ত অর্থাৎ رجل এবং عبد-এর ব্যাখ্যা হিসেবে এ হাদীসটি নিতে হবে যে হাদীসে مسلم উল্লেখ আছে। এখানে مسلم বলে জাতি উদ্দেশ্য। সুতরাং পুরুষ নারী সকলেই এর অন্তর্ভুক্ত হবে।
আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, হাদীসটিতে مسلم শব্দটি অনির্দিষ্টভাবে আসায় এদিকে ইঙ্গিত বহন করে যে, যে কোন মুসলিম তিনি স্বাধীন হোন অথবা দাস হোন আনুগত্যশীল হোন আর পাপী হোন তিনি যদি হাদীস মোতাবেক ‘আমল করেন তাহলে হাদীসে বর্ণিত সাওয়াবের হকদার হবেন। অত্র হাদীস থেকে এ বিষয়টি বুঝা যায় যে, শস্য উৎপাদনের বিষয়টি মানুষের সাথে সম্পৃক্ত করা বৈধ।
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি যেখানে বলা হয়েছে, (لَا يَقُلْ أَحَدُكُمْ زَرَعْتُ، وَلكِنْ لِيَقُلْ حَرَثْتُ) অর্থাৎ তোমাদের কেউ যেন زرعت তথা আমি উৎপাদন করেছি বা চাষাবাদ করেছি এ কথা না বলে বরং حَرَثْتُ তথা আমি রোপন করেছি এ কথা বলে, غير قوى তথা শক্তিশালী নয় এবং زرع উৎপাদন করাকে যে, মানুষের প্রতি সম্পৃক্ত করা যাবে এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর বাণীই প্রমাণ দেয় যেখানে তিনি বলেছেন, أَأَنْتُمْ تَزْرَعُوْنَهٗ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُوْنَ
‘‘তোমরা কি ফসল উৎপাদন করো নাকি আমিই উৎপাদন করি?’’ (সূরাহ্ আল ওয়াক্বি‘আহ্ ৫৬ : ৬৪)