লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৪৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত
১৪০৫-[৫] জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (জুমু’আর দিন) দু’টি খুতবাহ্ (ভাষণ) দিতেন। উভয় খুতবার মধ্যখানে তিনি কিছু সময় বসতেন। তিনি (খুতবায়) কিছু কুরআন তিলাওয়াত করতেন এবং লোকদেরকে উপদেশ শুনাতেন। সুতরাং তাঁর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও খুতবাহ্ উভয়ই ছিল নাতিদীর্ঘ। (মুসলিম)[1]
بَابُ الْخُطْبَةِ وَالصَّلَاةِ
وَعَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: كَانَتْ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خُطْبَتَانِ يَجْلِسُ بَيْنَهُمَا يقْرَأ الْقُرْآن وَيذكر النَّاس فَكَانَت صلَاته قصدا وخطبته قصدا. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে যিকর বলতে উপদেশ ও নাসীহাত উদ্দেশ্য। আর যা ভয়, আশা, উৎসাহ ও উদ্দীপনা আবশ্যক করে তাই যিকর। সেটার দ্বারা (আলোচ্য হাদীস) দলীল গ্রহণ করা যায় যে, খুতবায় উপদেশমূলক বক্তৃতা ও কুরআন তিলাওয়াত শারী‘আত সম্মত, এ ব্যাপারে কোন মতবিরোধ নেই, তবে আবশ্যকতা নিয়ে ‘উলামাগণের মাঝে মত-বিরোধ রয়েছে।
ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মতে খুতবায় তিলাওয়াত ও ওয়াজ বা নাসীহাত শর্ত। আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেন যে, ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেনঃ আল্লাহর প্রশংসা ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পাঠ এবং ওয়াজ বা নাসীহাত ছাড়া জুমু‘আর দু’ খুতবাহ্ বিশুদ্ধ হবে না। এ তিনটি জুমু‘আর দু’ খুতবার জন্য আবশ্যক এবং দু’য়ের একটিতে কুরআন তিলাওয়াত সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতানুযায়ী আবশ্যক। আর দ্বিতীয় খুতবায় বিশ্ব মু’মিনদের জন্য দু‘আ করাও আবশ্যক। ইমাম মালিক, আবূ হানীফাহ্ ও জমহূরগণ বলেনঃ যতটুকু বিষয় খুতবাহ্ হিসেবে নামকরণ করা যায় তাই খুতবাহ্ হিসেবে যথেষ্ট হবে। আবূ হানীফাহ্, ইউসুফ ও মালিক (রহঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছেঃ হামদ, তাসবীহ ও তাহলীল (লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ)-ই খুতবার জন্য যথেষ্ট। তবে এটা নিতান্তই দুর্বল মত। কেননা এটাকে খুতবাহ্ বলা যায় না এবং এর দ্বারা খুতবার চাহিদাও পূরণ হবে না।
তবে মির‘আত প্রণেতার মত অনুযায়ী অধিক বিশুদ্ধ মত হলো জুমু‘আর ক্ষেত্রে হামদ ও নাসীহাত ছাড়া কোন কিছুই ওয়াজিব নয়, কেননা সেটাকে খুতবাহ্ হিসেবে গণ্য করা যায় এবং খুতবার উদ্দেশ্য অর্জন হয়। এছাড়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ, কুরআন তিলাওয়াত ও মানুষদের জন্য দু‘আ করা খুতবার জন্য শর্ত ও ওয়াজিব কোনটি নয়।
কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় তিলাওয়াত করতেন, তা ওয়াজিব করেননি, কিন্তু তিলাওয়াত মুস্তাহাব হবে। যেমন উম্মু হিশাম (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ আমি সূরাহ্ আল ক্বাফ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ থেকে (শ্রবণ করার মাধ্যমে) মুখস্থ করেছি। সেটার দ্বারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি জুমু‘আয় খুতবাহ্ দিতেন।