লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৩৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিতরের সালাত
১২৬১-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রের প্রতি অংশেই বিতরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেছেন- প্রথম রাতেও (’ইশার সালাতের পরপর), মধ্য রাতেও এবং শেষ রাতেও। কিন্তু শেষ জীবনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিতরের সালাতের জন্যে রাতের সাহরীর সময় (শেষভাগ) নির্ধারিত করে নিয়েছিলেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ الْوِتْرِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: مِنْ كُلَّ اللَّيْلِ أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَوَّلِ اللَّيْلِ وَأَوْسَطِهِ وَآخِرِهِ وَانْتَهَى وَتْرُهُ إِلَى السَّحَرِ
ব্যাখ্যা: وَانْتَهى وَتْرُه إِلَى السَّحَرِ দ্বারা ফাজ্রের (ফজরের) পূর্ববর্তী সময়কে বুঝানো হয়। ইমাম নাবাবী বলেন যে, এর অর্থ বিতরের শেষ সময় আর তা হলো সাহরীর সময়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রাতের শেষ ভাগ, যেমন তিনি [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] অন্য রিওয়ায়াতগুলোতে বর্ণনা করেছেন সেখানেও রয়েছে যে, শেষ রাতে বিতর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা মুস্তাহাব। অবশ্য একাধিক সহীহ হাদীস এর বিপরীত বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, তাতে বিতরের ওয়াক্ত আসার পর থেকে সমস্ত রাত্রি বিতর সালাত আদায় করা বৈধতার বিবরণ রয়েছে। জাবির (রাঃ) এবং ইবনু ‘উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস যা পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে এবং ইবনু মাজায় বর্ণিত ‘আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। এছাড়াও আহমাদ ও ত্ববারানীতে ইবনু মাস্‘ঊদ-এর বর্ণিত হাদীস রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের প্রথম, মধ্যম ও শেষাংশে বিতরের সালাত আদায় করতেন।
আল্লামা ইরাক্বী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, আল্লামা হায়সামী বলেছেন এর রাবীগণ নির্ভরযোগ্য। এছাড়াও ত্ববারানীতে ‘উক্ববাহ্ ইবনু ‘আমির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসসহ আরো অনেকের বর্ণিত হাদীস পাওয়া যায়। এ সবগুলোতে সারারাত্রি বিতর সালাতের ওয়াক্ত এ কথারই বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু তা الشفق বা লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পরে ‘ইশার সালাতের পর থেকে শুরু হবে, কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘ইশার সালাতের পূর্বে বিতর আদায় করেছেন মর্মে কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি। এক্ষেত্রে খারিজাহ্ ইবনু ইযাফাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি তার স্পষ্ট প্রমাণ, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য বিতর সালাত নির্ধারণ করেছেন ‘ইশার সালাত এবং ফাজ্র (ফজর) উদয় হওয়ার মাঝামাঝি সময়ে’’। আল্লামা শাওকানী বলেন, এ অধ্যায়ের হাদীসগুলো প্রমাণ করে যে, ‘ইশার সালাতের পূর্ব সময় ব্যতীত সারারাত্রিই বিতরের ওয়াক্ত। এ বিষয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করেননি, তবে ইমাম শাফি‘ঈর অনুসারীদের মত অনুযায়ী ‘ইশার সালাতের পূর্বে ও বিতর সালাত বৈধ, তবে এ মতটি নিতান্তই দুর্বল। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন যে, এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে যে, বিতরের ওয়াক্ত শুরু হবে লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পর ‘ইশার সালাতের পর থেকে, এবং ইবনুল মুনযির অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
মির্‘আত প্রণেতা বলেনঃ আমার নিকট সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো, বিতর সালাতের ওয়াক্ত হলো লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পর ‘ইশার সালাতের পর থেকে শুরু, তবে সালাত একত্রিত করে লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পূর্বেই ‘ইশার সালাত আদায় করলে লালিমা অদৃশ্য হওয়ার পূর্বেই বিতর সালাত বৈধ। আর বিতর সালাতের শেষ সময় হলো ফাজ্র (ফজর) উদয় হওয়া পর্যন্ত।