লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ২৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - ইমাম ও মুক্তাদীর দাঁড়াবার স্থান
১১০৭-[২] জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার জন্যে দাঁড়ালেন। আমি এসে তাঁর বাম পাশে দাঁড়িয়ে গেলাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পেছন দিয়ে আমার ডান হাত ধরলেন। (পেছন দিয়ে টেনে এনেই) আমাকে ডান পাশে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তারপর জাব্বার ইবনু সাখর আসলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাম পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন। (এরপর) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের দু’জনের হাত একসাথে ধরলেন। আমাদেরকে (নিজ নিজ স্থান হতে) সরিয়ে এনে নিজের পেছনে দাঁড় করিয়ে দিলেন। (মুসলিম)[1]
بَابُ الْمَوْقِفِ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيُصَلِّيَ فَجِئْتُ حَتَّى قُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِيَدِي فَأَدَارَنِي حَتَّى أَقَامَنِي عَن يَمِينه ثُمَّ جَاءَ جَبَّارُ بْنُ صَخْرٍ فَقَامَ عَنْ يَسَارِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخَذَ بيدينا جَمِيعًا فدفعنا حَتَّى أَقَمْنَا خَلفه. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: হাদীস থেকে বুঝা যায়, যখন ইমামের ডানদিকে কোন মুক্তাদী থাকবে তারপর আরেকজন মুক্তাদী এসে তার বামদিকে দাঁড়াবে তখন ইমামের পিছনে জায়গা থাকলে তার পক্ষে মুক্তাদীদ্বয়কে পেছনে ঠেলে দেয়া জায়িয রয়েছে। অতবা সামনে জায়গা থাকলে ইমাম নিজেই সামনে চলে যাওয়া জায়িয রয়েছে। এ ব্যাপারে দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে আগত সামুরার হাদীস প্রমাণ বহন করছে। তাতে সালাতে ইমামের পেছনে দু’ব্যক্তির দাঁড়ানোর কথা আছে। ইমাম নাবাবী বলেন, হাদীসে অনেক উপকারিতা রয়েছেঃ
১। সালাতরত অবস্থায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বহির্ভূত অল্প কাজ করা বৈধ। প্রয়োজন সাপেক্ষে তা করা মাকরূহ নয়। তবে বিনা প্রয়োজনে মাকরূহ।
২। একজন মুক্তাদী হলে সে ইমামের ডানদিকে দাঁড়াবে। অন্যথায় বাম দিকে দাঁড়ালে ইমাম ডানদিকে করে দিবে।
৩। দু’জন মুক্তাদী হলে ইমামের পেছনে আলাদা কাতার করবে যেমন তিন বা ততোধিক মুক্তাদী হলে করতে হয়। এটি সকল ‘আলিমগণের অভিমত; ইবনু মাস্‘ঊদ এবং তার দুই সাথী ‘আলক্বামাহ্ ও আসওয়াদ ছাড়া। তাদের অভিমত মুক্তাদী দু’জন হলে তারা ইমামের ডানে বামে দাঁড়াবে তবে মুক্তাদী তিনজন হলে তারা ইমামের পেছনে দাঁড়াবে এ ব্যাপারে তারা একমত। ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেন, আমি বলবঃ ইমাম মুসলিম তাঁর সহীহ গ্রন্থে ‘আলক্বামাহ্ ও আসওয়াদ কর্তৃক যা বর্ণনা করেছেন তা হল তারা উভয়ে ‘আবদুল্লাহর কাছে পৌঁছলে অতঃপর ‘আবদুল্লাহ বলেন, তোমাদের পেছনে যারা রয়ে গেছে তারা কি সালাত পড়েছে? তারা উভয়ে বলল, হ্যাঁ, অতঃপর ‘আবদুল্লাহ তাদের মাঝে দাঁড়াল এবং তাদের একজনকে তার ডানদিকে ও অপরজনকে তার বামদিকে দাঁড় করালো। এরপর আমরা রুকূ‘তে গিয়ে আমাদের হাতগুলোকে আমাদের হাঁটুর উপর রাখলাম তখন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) আমাদের হাতগুলোতে মারলেন, অতঃপর তার দুই হাত একত্র করে তার দুই উরুর মাঝে করলেন।
অতঃপর যখন সালাত সমাপ্ত করলেন তখন বললেন এভাবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন। ইমাম আহমাদ আসওয়াদ থেকে বর্ণনা করেন। আসওয়াদ বলেন, আমি এবং আমার চাচা ‘আলক্বামাহ্ দ্বিপ্রহরে ইবনু মাস্‘ঊদ-এর কাছে পৌঁছলাম। আসওয়াদ বলেন, অতঃপর আমরা তার পেছনে দাঁড়ালাম, অতঃপর তিনি আমার হাত এবং আমার চাচার হাত ধরলেন ও আমাদের একজনকে তার ডানদিকে ও অন্যজনকে তার বামদিকে করলেন, তারপর আমরা এক কাতার করলাম; এরপর তিনি বললেন, মানুষ যখন তিনজন হত তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন করতেন। ইবনু সীরীন উল্লেখিত বর্ণনা সম্পর্কে উত্তর প্রদান করেন নিশ্চয়ই তা জায়গা সংকীর্ণ হওয়া বা অন্য কোন আপত্তির কারণে তা মূলত সুন্নাত নয়। ত্বহাবী একে বর্ণনা করেন। হাযমী বলেন, নিশ্চয় তা রহিত হয়ে গেছে। কেননা ইবনু মাস্‘ঊদ এ সালাত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মক্কা নগরীতে শিক্ষা করেছিলেন।
আর মক্কা নগরীতে দু’হাটুর মাঝে হাত রাখারও অন্যান্য বিধান ছিল। এখন তা বর্জনযোগ্য। এর সামষ্টিক কথা, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনাতে আগমন করলেন তখন তা ছেড়ে দিলেন। দলীল জাবির (রাঃ)-এর হাদীস। ইবনু হুমাম বলেন, ‘আবদুল্লাহর কাছে নাসেখের বিষয়টি গোপন আর এটা অসম্ভব নয় কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সঙ্গে অনেকের ইমামতি করতেন দু’জনের নয় তবে দু’জনের ইমামতির উল্লেখ রয়েছে আর তা বিরল। যেমন উল্লেখিত হাদীসের ঘটনা এবং ইয়াতীমের হাদীস আর তা মহিলার গৃহে ছিল ফলে ‘আবদুল্লাহ মাস্‘ঊদ যা জানত তার বিপরীত হাদীস ‘আবদুল্লাহর জানা ছিল না।
ইবনু সায়্যিদিন নাস বলেন, বিষয়টি এমন নয় অর্থাৎ ইমামের পেছনে দাঁড়ানো কারো নিকট শর্ত নয় তবে উত্তমতার ক্ষেত্রে মতভেদ রয়েছে। আহমাদ জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের সালাত আদায় করতে দাঁড়ালেন, তারপর আমি এসে তার বামপাশে দাঁড়ালাম তখন তিনি আমাকে নিষেধ করলেন ও আমাকে তার ডানপাশে দাঁড় করালেন, অতঃপর আমার অপর একজন সাথী আসলে আমরা তাঁর পেছনে দাঁড়ালাম।