লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১৪. উম্মু যার'ই এর হাদীস
৬১৯৯-(১২/২৪৪৮) ’আলী ইবনু হুজুর সা’দী ও আহমাদ ইবনু জানাব (রহঃ) ..... আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এগারজন মহিলা একত্রে বসে অঙ্গীকার ও চুক্তিবদ্ধ হলো যে, তারা নিজ নিজ স্বামীর বিষয়ে কিছুই গোপন করবে না।
প্রথম মহিলা বললঃ আমার স্বামী দুর্বল উটের মাংসের মতো, যা দুর্গম এক পর্বতের চূড়ায় রক্ষিত। না ওখানে আরোহণ করা সম্ভব আর না এমন মোটা তাজা যা সংরক্ষণ করা যায়।
দ্বিতীয় মহিলা বললঃ আমি আমার স্বামীর সংবাদ প্রকাশ করতে পারব না। আমার আশঙ্কা হয়, আমি তাকে ছেড়ে না দেই। আমি যদি তার বর্ণনা দিতে যাই তবে তার প্রকাশ্য ও গোপনীয় সব ক্রটিই উল্লেখ করতে হবে।
তৃতীয় মহিলা বললঃ আমার স্বামী খুব লম্বা। ওর ক্রটি বললে আমি ত্যাজ্য হবো, আর চুপ থাকলে ঝুলে থাকবো।
চতুর্থ মহিলা বললঃ আমার স্বামী তিহামাহ্-এর রাত্রের মতো। নাতিশীতোষ্ণ (গরমও নয় আর ঠাণ্ডাও নয়) ভয়ও নেই, ক্লান্তিও নেই।
পঞ্চম মহিলা বললঃ আমার স্বামী যখন গৃহে প্রবেশ করে তখন চিতা বাঘ, আর যখন বাইরে যায় তখন সিংহ। সংরক্ষিত ধন-সম্পদ নিয়ে সে কোন প্রশ্ন করে না।
ষষ্ঠ মহিলা বললঃ আমার স্বামী খেতে বসলে সব খেয়ে ফেলে, পান করলে একেবারে শেষ করে ফেলে। আর ঘুমাতে গেলে একেবারে হাত পা গুটিয়ে নেয়। আমার প্রতি হাত বাড়ায় না, যাতে আমার অবস্থা বুঝতে পারে।
সপ্তম মহিলা বললঃ আমার স্বামী বোকা, অক্ষম ও বোবার মতো। সব ক্রটিই তার মধ্যে বিদ্যমান। ইচ্ছা করলে তোমার মাথায় আঘাত করবে কিংবা গায়ে মারবে অথবা উভয়টিই একত্রে সংঘটিত করবে।
অষ্টম মহিলা বললঃ আমার স্বামীর ’যারনাব’ নামক সুগন্ধির মতো, তার খরগোশের স্পর্শের ন্যায় কোমল।
নবম মহিলা বললঃ আমার স্বামী এমন যার প্রাসাদের খুঁটিগুলো সুউচ্চ, তরবারির খাপগুলো দীর্ঘ, বাড়ীর উঠোনে অধিক ছাই। মজলিসের পাশেই তার গৃহ।
দশম মহিলা বললঃ আমার স্বামী মালিক। আর মালিক এর কথা কি বলব, আমার এ প্রশংসার চেয়ে তিনি আরো শ্রেষ্ঠ। তার রয়েছে অনেক উট, উটশালায় উটের সংখ্যা অনেক, তবে চারণভূমিতে তার সংখ্যা কম। উটেরা যখন বাদ্য-বাজনার আওয়াজ শোনে তখন নিজেদের যাবাহের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে পড়ে।
একাদশ মহিলা বললঃ আমার স্বামীর নাম আবূ যার’ই। কী চমৎকার আবূ যার’ই। অলংকার দিয়ে সে আমার দু’কান বুলিয়ে দিয়েছে, বাহুদ্বয় ভরপুর করেছে চর্বিতে। আমাকে মর্যাদা দিয়েছে, আমিও নিজেকে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করছি। সে আমাকে পাহাড়ের কিনারায় ভেড়া ও বকরীওয়ালাদের ভিতরে পেয়েছিল। তারপর সে আমাকে উট, ঘোড়া, জমি-জমা ও ফসলাদির অধিকারী বানিয়েছে। তার নিকট আমি কথা বললে সে তা ফেলে না। আমি শুইলে ভোর পর্যন্ত শুয়ে থাকি আর পান করলে আত্মতৃপ্ত লাভ করি। আবূ যার’ই এর মা, কতই না ভালো আবূ যার’ই এর মা। তার সম্পদ-কোষ অনেক বড় আকারের। তার কুঠরী প্রশস্ত। আবূ যার’ই এর ছেলে, কত ভালো আবূ যার’ই এর ছেলে, তার শয্যা যেন তলোয়ারের কোষ। বকরির একটি হাতা খেয়েই সে তৃপ্তি বোধ করে। আবূ যার’ই এর মেয়ে, কতই না ভাল আবূ যার’ই এর মেয়ে। সে তার বাবা মায়ের অনুগত পোশাক পরিচ্ছদে ভরপুর তার প্রতিবেশীদের ঈর্ষার পাত্র।
আবূ যার’ই এর দাসী, কতই না ভালো আবূ যার’ই এর দাসী। আমাদের কথা বলে বেড়ায় না। আমাদের খাদ্য বিনষ্ট করে না, বাড়ী-ঘর ময়লাস্তুপে পরিণত করে না। উম্মু যার’ই বলেন, একদিন আবূ যার’ই বাইরে বের হলেন। তখন আমাদের অবস্থা ছিল এই যে, বড় বড় দুধের মাখন উঠিয়ে নেয়া হত। সে সময় জনৈক নারীর সঙ্গে তার দেখা হয়। তার সঙ্গে ছিল দু’টো শিশু। শিশু দু’টো ছিল দু’টো চিতার মতো। তারা তার কোলের নীচ দিয়ে দুটি ডালিম নিয়ে খেলা করছিল। তখন আবূ যার’ই আমাকে তালাক দেয় এবং সে মহিলাকে বিবাহ করে। এরপর আমি জনৈক লোককে বিয়ে করলাম। সে ছিল সরদার, খুব ভালো ঘোড় সওয়ার ও বর্শা ধারণকারী। সে আমার আস্তাবলে বহু চতুস্পদ জন্তু জড়ো করে প্রত্যেক প্রকার হতে সে আমাকে একেক জোড়া দান করে এবং সে আমাকে বলে, হে উম্মু যার’ই! তুমি খাও এবং তোমার আপনজনকে বিলিয়ে দাও। অতঃপর দ্বিতীয় স্বামী আমায় যা কিছু দিয়েছে তার সব যদি জমা করি তবুও আবূ যার’ই এর ছোট্ট একটি পাত্রের সমতুল্য হবে না।
আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ তোমার জন্য আমি উম্মু যার’ই এর জন্য আবূ যার’ই-এর ন্যায়। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৮৫, ইসলামিক সেন্টার ৬১২৪)
باب ذِكْرِ حَدِيثِ أُمِّ زَرْعٍ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، وَأَحْمَدُ بْنُ جَنَابٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عِيسَى، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ حُجْرٍ - حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَخِيهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ جَلَسَ إِحْدَى عَشْرَةَ امْرَأَةً فَتَعَاهَدْنَ وَتَعَاقَدْنَ أَنْ لاَ يَكْتُمْنَ مِنْ أَخْبَارِ أَزْوَاجِهِنَّ شَيْئًا قَالَتِ الأُولَى زَوْجِي لَحْمُ جَمَلٍ غَثٌّ عَلَى رَأْسِ جَبَلٍ وَعْرٍ لاَ سَهْلٌ فَيُرْتَقَى وَلاَ سَمِينٌ فَيُنْتَقَلَ . قَالَتِ الثَّانِيَةُ زَوْجِي لاَ أَبُثُّ خَبَرَهُ إِنِّي أَخَافُ أَنْ لاَ أَذَرَهُ إِنْ أَذْكُرْهُ أَذْكُرْ عُجَرَهُ وَبُجَرَهُ . قَالَتِ الثَّالِثَةُ زَوْجِي الْعَشَنَّقُ إِنْ أَنْطِقْ أُطَلَّقْ وَإِنْ أَسْكُتْ أُعَلَّقْ . قَالَتِ الرَّابِعَةُ زَوْجِي كَلَيْلِ تِهَامَةَ لاَ حَرٌّ وَلاَ قُرٌّ وَلاَ مَخَافَةَ وَلاَ سَآمَةَ . قَالَتِ الْخَامِسَةُ زَوْجِي إِنْ دَخَلَ فَهِدَ وَإِنْ خَرَجَ أَسِدَ وَلاَ يَسْأَلُ عَمَّا عَهِدَ . قَالَتِ السَّادِسَةُ زَوْجِي إِنْ أَكَلَ لَفَّ وَإِنْ شَرِبَ اشْتَفَّ وَإِنِ اضْطَجَعَ الْتَفَّ وَلاَ يُولِجُ الْكَفَّ لِيَعْلَمَ الْبَثَّ . قَالَتِ السَّابِعَةُ زَوْجِي غَيَايَاءُ أَوْ عَيَايَاءُ طَبَاقَاءُ كُلُّ دَاءٍ لَهُ دَاءٌ شَجَّكِ أَوْ فَلَّكِ أَوْ جَمَعَ كُلاًّ لَكِ . قَالَتِ الثَّامِنَةُ زَوْجِي الرِّيحُ رِيحُ زَرْنَبٍ وَالْمَسُّ مَسُّ أَرْنَبٍ . قَالَتِ التَّاسِعَةُ زَوْجِي رَفِيعُ الْعِمَادِ طَوِيلُ النِّجَادِ عَظِيمُ الرَّمَادِ قَرِيبُ الْبَيْتِ مِنَ النَّادِي . قَالَتِ الْعَاشِرَةُ زَوْجِي مَالِكٌ وَمَا مَالِكٌ مَالِكٌ خَيْرٌ مِنْ ذَلِكِ لَهُ إِبِلٌ كَثِيرَاتُ الْمَبَارِكِ قَلِيلاَتُ الْمَسَارِحِ إِذَا سَمِعْنَ صَوْتَ الْمِزْهَرِ أَيْقَنَّ أَنَّهُنَّ هَوَالِكُ . قَالَتِ الْحَادِيَةَ عَشْرَةَ زَوْجِي أَبُو زَرْعٍ فَمَا أَبُو زَرْعٍ أَنَاسَ مِنْ حُلِيٍّ أُذُنَىَّ وَمَلأَ مِنْ شَحْمٍ عَضُدَىَّ وَبَجَّحَنِي فَبَجِحَتْ إِلَىَّ نَفْسِي وَجَدَنِي فِي أَهْلِ غُنَيْمَةٍ بِشَقٍّ فَجَعَلَنِي فِي أَهْلِ صَهِيلٍ وَأَطِيطٍ وَدَائِسٍ وَمُنَقٍّ فَعِنْدَهُ أَقُولُ فَلاَ أُقَبَّحُ وَأَرْقُدُ فَأَتَصَبَّحُ وَأَشْرَبُ فَأَتَقَنَّحُ . أُمُّ أَبِي زَرْعٍ فَمَا أُمُّ أَبِي زَرْعٍ عُكُومُهَا رَدَاحٌ وَبَيْتُهَا فَسَاحٌ . ابْنُ أَبِي زَرْعٍ فَمَا ابْنُ أَبِي زَرْعٍ مَضْجِعُهُ كَمَسَلِّ شَطْبَةٍ وَيُشْبِعُهُ ذِرَاعُ الْجَفْرَةِ . بِنْتُ أَبِي زَرْعٍ فَمَا بِنْتُ أَبِي زَرْعٍ طَوْعُ أَبِيهَا وَطَوْعُ أُمِّهَا وَمِلْءُ كِسَائِهَا وَغَيْظُ جَارَتِهَا . جَارِيَةُ أَبِي زَرْعٍ فَمَا جَارِيَةُ أَبِي زَرْعٍ لاَ تَبُثُّ حَدِيثَنَا تَبْثِيثًا وَلاَ تُنَقِّثُ مِيرَتَنَا تَنْقِيثًا وَلاَ تَمْلأُ بَيْتَنَا تَعْشِيشًا . قَالَتْ خَرَجَ أَبُو زَرْعٍ وَالأَوْطَابُ تُمْخَضُ فَلَقِيَ امْرَأَةً مَعَهَا وَلَدَانِ لَهَا كَالْفَهْدَيْنِ يَلْعَبَانِ مِنْ تَحْتِ خَصْرِهَا بِرُمَّانَتَيْنِ فَطَلَّقَنِي وَنَكَحَهَا فَنَكَحْتُ بَعْدَهُ رَجُلاً سَرِيًّا رَكِبَ شَرِيًّا وَأَخَذَ خَطِّيًّا وَأَرَاحَ عَلَىَّ نَعَمًا ثَرِيًّا وَأَعْطَانِي مِنْ كُلِّ رَائِحَةٍ زَوْجًا . قَالَ كُلِي أُمَّ زَرْعٍ وَمِيرِي أَهْلَكِ فَلَوْ جَمَعْتُ كُلَّ شَىْءٍ أَعْطَانِي مَا بَلَغَ أَصْغَرَ آنِيَةِ أَبِي زَرْعٍ . قَالَتْ عَائِشَةُ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُنْتُ لَكِ كَأَبِي زَرْعٍ لأُمِّ زَرْعٍ " .
'A'isha reported that (one day) there sat together eleven women making an explicit promise amongst themselves that they would conceal nothing about their spouses. The first one said:
My husband is a sort of the meat of a lean camel placed at the top of a hill, which it is difficult to climb up, nor (the meat) is good enough that one finds in oneself the urge to take it away (from the top of that mountain). The second one said: My husband (is so bad) that I am afraid I would not be able to describe his faults-both visible and invisible completely. The third one said: My husband is a long-statured fellow (i. e. he lacks intelligence). If I give vent to my feelings about him, he would divorce me, and if I keep quiet I would be made to live in a state of suspense (neither completely abandoned by him nor entertained as wife). The fourth one said: My husband is like the night of Tihama (the night of Hijaz and Mecca), neither too cold nor hot, neither there is any fear of him nor grief. The fifth one said: My husband is (like) a leopard as he enters the house, and behaves like a lion when he gets out, and he does not ask about that which he leaves in the house. The sixth one said: So far as my husband is concerned, he eats so much that nothing is left back and when he drinks he drinks that no drop is left behind. And when he lies down he wraps his body and does not touch me so that he may know my grief. The seventh one said: My husband is heavy in spirit, having no brightness in him, impotent, suffering from all kinds of conceivable diseases, heaving such rough manners that he may break my head or wound my body, or may do both. The eighth one said: My husband is as sweet as the sweet-smelling plant, and as soft as the softness of the hare. The ninth one said: My husband is the master of a lofty building, long-statured, having heaps of ashes (at his door) and his house is near the meeting place and the inn. The tenth one said: My husband is Malik, and how fine Malik is, much above appreciation and praise (of mine). He has many folds of his camel, more in number than the pastures for them. When they (the camels) hear the sound of music they become sure that they are going to be slaughtered. The eleventh one said: My husband is Abu Zara'. How fine Abu Zara' is! He has suspended in my ears heavy ornaments and (fed me liberally) that my sinews and bones are covered with fat. So he made me happy. He found me among the shepherds living in the side of the mountain, and he made me the owner of the horses, camels and lands and heaps of grain and he finds no fault with me. I sleep and get up in the morning (at my own sweet will) and drink to my heart's content. The mother of Abu Zara', how fine is the mother of Abu Zara'! Her bundles are heavily packed (or receptacles in her house are filled to the brim) and the house quite spacious. So far as the son of Abu Zara' is concerned, his bed is as soft as a green palm-stick drawn forth from its bark, or like a sword drawn forth from its scabbard, and whom just an arm of a lamb is enough to satiate. So far as the daughter of Abu Zara' is concerned, how fine is the daughter of Abu Zara', obedient to her father, obedient to her mother, wearing sufficient flesh and a source of jealousy for her co-wife. As for the slave-girl of Abu Zara', how fine is she; she does not disclose our affairs to others (outside the four walls of the house). She does not remove our wheat, or provision, or take it forth, or squander it, but she preserves it faithfully (as a sacred trust). And she does not let the house fill with rubbish. One day Abu Zara' went out (of his house) when the milk was churned in the vessels, that he met a woman, having two children like leopards playing with her pomegranates (chest) under her vest. He divorced me (Umm Zara') and married that woman (whom Abu Zara') met on the way. I (Umm Zara') later on married another person, a chief, who was an expert rider, and a fine archer: he bestowed upon me many gifts and gave me one pair of every kind of animal and said: Umm Zara', make use of everything (you need) and send forth to your parents (but the fact) is that even if I combine all the gifts that he bestowed upon me, they stand no comparison to the least gift of Abu Zara'. 'A'isha reported that Allah's Messenger (ﷺ) said to me: I am for you as Abu Zara' was for Umm Zara'.