লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৬. “আন আন" পদ্ধতিতে বর্ণিত হাদীস দলীল হিসেবে গ্রহণ করা জায়িয যদি এর রাবীদের পারস্পরিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং তাদের কেউ তাদলীসকারী* না হয়।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, হে আবূ ইসহাক। আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করুন। হাদীসের সনদসমূহ নষ্ট করার জন্যে এ এমন একটি মনগড়া অভিমত, যা এর আগে কেউ বলেনি। আর তাতে হাদীস বিশারদ ’আলিমদের কারো সমর্থনও নেই। কেননা অতীত ও বর্তমান কালের হাদীস বর্ণনাকারীদের ঐকমত্য হচ্ছে, কোন নির্ভরযোগ্য রাবী যখন কোন নির্ভরযোগ্য রাবী থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেন এবং তারা দু’জন একই যুগের লোক হওয়ার দরুন তাদের মধ্যে পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ এবং কোন রিওয়ায়াত শুনার সম্ভাবনা থাকে; যদি কোন হাদীস বা খবর দ্বারা কখনো তাদের একত্রিত হওয়ার সঠিক কথা বা সামনাসামনি বসে আলোচনা করার কথা জানা নাও যায়, তবুও আলিমদের মতে এ জাতীয় হাদীস প্রামাণ্য বলে স্বীকৃত হবে এবং তা দলীল হিসেবে গৃহীত হবে। তবে হ্যা, যদি কোন স্থানে সুস্পষ্টভাবে এ প্রমাণ পাওয়া যায় যে, উক্ত রাবী যার থেকে বর্ণনা করে তার সাথে আদৌ তার সাক্ষাৎ হয়নি অথবা তার থেকে এ ব্যক্তি কোন কিছু শুনেওনি, তবে এ হাদীস দলীল হিসেবে গৃহীত হবে না। কিন্তু যেখানে ব্যাপারটি অস্পষ্ট এবং তাদের উভয়ের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ ও কথাবার্তার সম্ভাবনা বিদ্যমান, সেখানে অধঃস্তন রাবী তার উধ্বতন রাবীর কাছে হাদীসটি শুনেছে বলে ধরে নেয়া হবে। এ নব মতবাদের আবিষ্কারক যার মতামতের কথা আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি।
প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, অবশ্যই আপনি আলোচনায় এ অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, একজন নির্ভরযোগ্য রাবীর হাদীস অন্য একজন নির্ভরযোগ্য রাবী থেকে বর্ণিত হলে তা দলীল হিসেবে স্বীকৃত এবং তদনুযায়ী আমল করা অনস্বীকার্য। পরে আপনি এ কথার পিছনে এ শর্তটি যোগ করে দিয়েছেন যে, "যতক্ষণ পর্যন্ত না জানা যাবে, তারা দু’জন একবার কিংবা একাধিকবার পরস্পর মিলিত হয়েছেন অথবা একজন থেকে কিছু শুনেছেন।" এখন আপনার কাছে জিজ্ঞাস্য, এ শর্তটির সমর্থন আপনি কি এমন কোন ব্যক্তি থেকে পেয়েছেন, যার কথা মেনে নেয়া অপরিহার্য? তা না হলে, আপনি নিজেই আপনার এ দাবীর সমর্থনে অন্য কোন প্রমাণ উপস্থিত করুন।
অতঃপর তিনি যদি দাবী করেন যে, তার এ শর্তের সমর্থনে উলামায়ে সালফের অভিমত বর্তমান রয়েছে, তবে তা পেশ করার জন্য তার কাছে দাবী করা যেতে পারে। কিন্তু তিনি বা আর কেউ এ আবিষ্কারের সমর্থনে এমন প্রমাণ উপস্থাপন করার কোন পথ পাবেন না। আর যদি তিনি অন্য কোন যুক্তি পেশ করতে চান, তবে বলা যেতে পারে যে, সে কী? আর যদি তিনি এ কথা বলেন যে, আমি অতীত ও বর্তমানে সব রাবীদের দেখেছি, তাঁদের একজন অপরজন থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু যেখানে একজন কখনও অন্যজনকে স্বচক্ষে দেখেননি এবং তাদের একজন অন্যজন থেকে কোন কিছু শ্রবণও করেননি সে ক্ষেত্রে, আমি দেখতে পেয়েছি তারা ঐ হাদীসের মধ্যে শ্রবণ না থাকা সত্ত্বেও এটিকে হাদীসে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করে বলে রায় দিয়েছেন। আর মুরসাল হাদীসসমূহের ব্যাপারে আমাদের মুহাদ্দিসীনের অভিমত হচ্ছে মুরসাল হাদীস দলীল হিসেবে পরিগণিত নয়। এজন্য আমি হাদীসের কোন বর্ণনাকারীর জন্য তার ঊর্ধ্বতন রাবীর কাছ থেকে শ্রবণ করার শর্তারোপ করেছি। যখন আমি প্রমাণ পেয়ে যাব যে, সে তার ঊর্ধ্বতন রাবীর কাছ থেকে হাদীসটি সরাসরি শুনেছে তখন আমি ধরে নেব যে, সে তার ঊর্ধ্বতন রাবীর সূত্রে যতগুলো হাদীস বর্ণনা করেছে তা সবই তার কাছ থেকে শুনেছে। অর্থাৎ তার কাছ থেকে যতগুলো হাদীস মু’আন আন হিসেবে বর্ণিত হবে, তার সবগুলোই আমার মতে মারফু হাদীসের অন্তর্ভুক্ত মাওকুফ হাদীস নামে অভিহিত করবে। ফলে তা মুরসাল হওয়ার সম্ভাবনায় আমার নিকট দলীল হিসেবে পরিগণিত হবে না।
তাকে বলা যায়, কোন হাদীসের মুরসাল হওয়ার সম্ভাবনাই যদি সে হাদীসটি যাঈফ বলে পরিগণিত হওয়ার বা তা দলীল হিসেবে গৃহীত না হওয়ার কারণ হয়, তাহলে আপনাদের মত অনুযায়ী মু’আন আন হাদীসের সনদে উল্লেখিত প্রথম রাবী থেকে শেষ রাবী পর্যন্ত প্রত্যেকে তার উর্ধ্বতন রাবীর কাছে সরাসরি শুনেছেন বলে প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত সে সনদটি প্রামাণ্য বলে গ্রহণ করতে পারেন না।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, একটি হাদীস হিশাম ইবনু উরওয়াহ থেকে তার পিতার সূত্রে এবং তার পিতা থেকে আয়িশাহ (রাযিঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হয়ে আমাদের নিকট পৌছেছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস হিশাম নিশ্চিতই তার পিতার কাছ থেকে শুনেছেন এবং তার পিতা আয়িশাহ (রাযিঃ) এর কাছে শুনেছেন। যেমন আমরা জানি যে, আয়িশাহ্ (রাযিঃ) নিশ্চয়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে শুনেছেন।
এরূপ নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও যদি কোন বর্ণনায় হিশাম (রহঃ), "আমি আমার পিতার কাছে শুনেছি অথবা তিনি আমাকে খবর দিয়েছেন" না বলে যদি কেবল ’আন শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেন, যদি উরওয়াহ (রহঃ) এর কাছে শুনে হিশাম (রহঃ) কে খবর দিয়েছেন। হিশাম (রহঃ) সরাসরি তার পিতার কাছে এ হাদীস শুনেননি। কিন্তু হিশাম (রহঃ) কে খবর দিয়েছেন। হিশাম (রহঃ) সরাসরি তার পিতার কাছে এ হাদীস শুনেননি। কিন্তু হিশাম (রহঃ) এর হাদীসটি ’মুরলাল’ হিসেবে বর্ণনা করার ইচ্ছা করলেন। তিনি যার মাধ্যমে শুনেছেন তার নাম উল্লেখ করলেন না।
আর তাছাড়া হিশাম (রহঃ) ও তার পিতার মাঝখানে যেমন অন্য কোন রাবী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অনুরূপভাবে উরওয়াহ ও “আয়িশাহ্ (রাযিঃ) এর মাঝখানেও অন্য কোন রাবী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এভাবে হাদীসের এমন প্রত্যেক সনদে যেখানে একে অন্যের কাছ থেকে শুনার কথা উল্লেখ নেই সেখানে ঐ একই সম্ভাবনা রয়েছে।
আর যদিও এ কথা জানা রয়েছে যে, এক রাবী অপর রাবীর কাছে অনেক হাদীস শুনেছেন, তবে এও হতে পারে যে, তিনি তার কতকগুলো বর্ণনা অন্য রাবীর কাছে শুনে তা মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এগুলো তিনি যার কাছে শুনেছেন কখনো তার নাম উল্লেখ করেননি; আবার কখনো অস্পষ্টতা দূর করার জন্য নাম উল্লেখ করে ইরসাল বাদ দিয়েছেন।
অধঃস্তন ও ঊর্ধ্বতন রাবীদ্বয়ের মধ্যে বারবার দেখা-সাক্ষাৎ হওয়া সত্ত্বেও তাদের বর্ণিত হাদীস মুরসাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আমরা যে অভিমত প্রকাশ করছি তা নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিস ও বিশেষজ্ঞ আলিমদের বর্ণনার মধ্যেও বিদ্যমান।
আর ইনশাআল্লাহ এ পর্যায়ে আমরা তাদের বর্ণিত হাদীস থেকে আমাদের বক্তব্যের সমর্থনে দলীল হিসেবে কিছু সংখ্যক হাদীস পেশ করছি।
অতঃপর এটা থেকে নিশ্চয়ই আইয়ুব সাখতিয়ানী ইবনু মুবারক, ওয়াকী’, ইবনু নুমায়র এবং আরো বহু রাবী হিশাম ইবনু উরওয়াহ থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেছেনঃ "আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে তার ইহরাম বাধার সময় ও ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার সময় সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি লাগিয়েছি যা আমার কাছে ছিল।"
অতঃপর হুবহু এ হাদীসটিই লায়স ইবনু সা’দ দাউদ আল আত তার ও হুমায়দ ইবনু আল আসওয়াদ উহায়ব ইবনু খালিদ ও আবূ উসামাহ্ (রহঃ) হিশামের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হিশাম বলেছেন, আমাকে উসমান ইবনু “উরওয়াহ অবহিত করেছেন, তিনি উরওয়াহ থেকে, তিনি ’আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
আর হিশাম তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি ’আয়িশাহ (রাযিঃ) এর থেকে। আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিকাফে থাকাকালীন অবস্থায় আমার দিকে তার মাথা ঝুঁকিয়ে দিতেন এবং আমি তার মাথা আঁচড়ে দিতাম। অথচ আমি ছিলাম ঋতুবতী।
অপরদিকে হুবহু এ হাদীসটিই মালিক ইবনু আনাস সূত্রে যুহরী থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
আর যুহরী ও সালিহ ও ইবনু আবূ হাস্সান (রহঃ) আবূ হাসসান (রহঃ) আবূ সালামাহ থেকে তিনি আয়িশাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সায়িম (রোযাদার) অবস্থায় চুমু খেতেন।
ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কালীর ’চুমু খাওয়া’ সম্পর্কিত এ হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করেছেন, আবূ সালামাহ আমাকে খবর দিয়েছেন, "উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তাকে খবর দিয়েছেন, উরওয়াহ তাকে খবর দিয়েছেন, ’আয়িশাহ (রাযিঃ) তাকে অবহিত করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সায়িম অবস্থায় তাকে চুমু দিতেন।
ইবনু উয়াইনাহ ও অপরাপর রাবীগণ আমর ইবনু দীনার থেকে, তিনি জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ঘোড়ার মাংস খাইয়েছেন। তিনি আমাদের গৃহপালিত গাধার মাংস খেতে নিষেধ করেছেন।
অতঃপর ঠিক এ হাদীসটিই হাম্মাদ ইবনু যায়দ আমর থেকে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু ’আলী থেকে, তিনি জাবির (রাযিঃ) থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
এ জাতীয় সনদে বর্ণিত অসংখ্য হাদীস রয়েছে। আমরা যে কয়টি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেছি বুদ্ধিমান, চিন্তাশীল ও বিবেকবান লোকেদের জন্য তাই যথেষ্ট।
ঊর্ধ্বতন রাবীর নিকট থেকে সরাসির ’শ্রুত না হওয়ার কারণে এতে ইরসাল এর সম্ভাবনা থাকে, হাদীস ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সম্পর্কে পূর্ববর্তী ব্যক্তিদের পেশকৃত এ যুক্তি যদি সঙ্গত বলে মেনে নিতে হয় তবে যে হাদীসটিতে ঊর্ধ্বতন রাবী থেকে শ্রুতির উল্লেখ আছে, সেটি ছাড়া অন্য সব রিওয়ায়াত বাতিল বলে গণ্য হয়, কেননা এ ক্ষেত্রেও অনুরূপ ইরসাল হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান। কেননা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি যে, হাদীসের রাবীদের বিভিন্ন অবস্থা হতে পারে। কখনো তারা স্বেচ্ছায় হাদীসকে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেন এবং যার কাছ থেকে হাদীস শুনেছেন তার নাম উল্লেখ করেন না। আবার কখনো তাদের পূর্ণ সনদ উল্লেখ করেন। ফলে তারা যদি নুযুল বা ইরসাল করতে চান, তখন তাই করেন। আবার যদি সুউদ বা মারফু করার ইচ্ছা করেন তখন তাই করেন।
পূর্বসূরী সালফে সালিহীন ইমামদের মধ্যে যারা হাদীসের প্রয়োগ ও ব্যবহার করতেন এবং সনদের বিশুদ্ধতা বা অবিশুদ্ধতা ও দুর্বলতা যাচাই করতেন, যেমন হাদীস বিশারদ আইয়ুব সাখতিয়ানী, ইবনু আওন, মালিক ইবনু আনাস, শুবাহ ইবনু হাজ্জাজ, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল কাত্তান, আবদুর রহমান ইবনু মাহদী এবং পরবর্তী স্তরের মুহাদ্দিসগণের কেউ সানাদে রাবীদের পরস্পরের ’শ্রবণস্থল’ সন্ধান করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। যেমন আমাদের পূর্বোক্ত আলোচক দাবী করেন।
আর অবশ্য যিনি মুদাল্লিস রাবী হিসেবে পরিচিত ও প্রসিদ্ধ, কেবল তার রিওয়ায়াত গ্রহণ করার সময়ই তারা "সরাসরি শুনার" ব্যাপার অনুসন্ধান করে দেখতেন এবং তা পর্যালোচনা করতেন যাতে সনদ থেকে তাদলীস করার বদ-অভ্যাস দূর করে।
কিন্তু যিনি মুদাল্লিস রাবী নন তার বেলায়ও সাক্ষাতে শুনার ব্যাপারে উল্লেখিত মনীষীগণ অনুসন্ধান করেছেন বলে আমাদের জানা নেই; যেমন পূর্বোল্লিখিত আলোচক দাবী করে থাকেন।
অতঃপর এটা থেকে উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, নিশ্চয়ই আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ আল আনসারী (রাযিঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দেখেছেন। তা সত্ত্বেও তিনি (তার সমসাময়িক ও সমবয়সী) সাহাবা হুযাইফাহ ইবনু ইয়ামান (রাযিঃ) এবং আবূ মাসউদ (উকবাহ ইবনু আমির) আল আনসারী (রাযিঃ) এতদুভয় থেকে একটি করে হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং এর সনদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে সংযোজন করেছেন। অথচ তার কোথাও এ দু’জন সাহাবা থেকে সরাসরি শোনার কথা উল্লেখ নেই। তাছাড়া ’আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাযিঃ) কখনো হুযাইফাহ্ (রাযিঃ) এবং আবূ মাসউদ (রাযিঃ) এর সঙ্গে মুখোমুখী আলাপ করেছেন এবং তাদের কাছে হাদীস শুনেছেন বলেও উল্লেখ নেই। এমনকি, তিনি তাদের দু’জনকে চাক্ষুষ দেখেছেন বলেও সুনির্দিষ্ট বর্ণনা আমরা পাইনি।
আর আমরা হাদীস বিশারদগণের কারও থেকে শুনিনি। হাদীস বিশারদগণের মধ্যে যারা অতীত হয়েছেন এবং যাদেরকে আমরা পেয়েছি তাদের কেউই আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাযিঃ) এর সূত্রে বর্ণিত হুযাইফাহ (রাযিঃ) ও আবূ মাসউদ (রহঃ) এর বর্ণিত হাদীস দুটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে দোষারোপ করেননি বরং হাদীস বিশারদদের মধ্যে যাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে; তারা সকলে এ হাদীস দু’টো এবং এর অনুরূপ বর্ণনাগুলোকে সহীহ এবং সবল হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তারা এসব হাদীস প্রয়োগ করা এবং এগুলো দলীল হিসেবে গ্রহণ করা জায়িয বলেছেন। কিন্তু আমাদের পূর্বোক্ত সমালোচিত ব্যক্তির মতানুযায়ী এগুলো গৰ্হিত ও অকেজো হাদীসরূপে গণ্য হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সাক্ষাৎ’ এবং শ্রবণ প্রমাণিত না হবে।
মুহাদ্দিসীনে কিরামের নিকট যে সমস্ত হাদীস সহীহ ও নির্দোষ হিসেবে স্বীকৃত কিন্তু আমাদের সমালোচিত ব্যক্তির নিকট সে সব য’ঈফ (দুর্বল) হিসেবে চিহ্নিত, যদি আমরা সে সবের পরিপূর্ণ সংখ্যা হিসাব করার চেষ্টা করি তাহলে নিশ্চয়ই আমরা অক্ষম হয়ে পড়বো এবং সবগুলোর আলোচনা করাও আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। তবে নমুনা স্বরূপ এর কিছু আমরা এখানে উল্লেখ করতে চাই।
যেমন, আর এ আবূ উসমান আন নাহদী (আবদুর রহমান ইবনু মাল্লা, ১৩০ বছর বয়সে ইন্তিকাল করেছেন) এবং আবূ রাফি’ সায়িগ (নুফাই মাদানী)। তারা উভয়ে জাহিলী যুগ পেয়েছেন (কিন্তু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাক্ষাৎ লাভে সমর্থ হননি) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট সাহাবাদের সাহচর্য লাভ করেছেন এবং তাদের থেকে হাদীসও বর্ণনা করেছেন। এমনকি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ), ইবনু উমর (রাযিঃ) এবং তাদের মতো পরবর্তী যুগের আরো অনেকের সাহচর্য লাভ করেছেন। তারা উভয়ই উবাই ইবনু কা’ব (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর সূত্র বর্ণনা করেন বা সনদ প্রদান করেন। এতদসত্ত্বেও কোন নির্দিষ্ট বর্ণনার মাধ্যমে জানা যায়নি যে, তারা উবাই ইবনু কাব (রাযিঃ) কে দেখেছেন অথবা তার কাছে কিছু শুনেছেন।
আবূ আমর শাইবানী (সাদ ইবনু আইয়্যাশ) জাহিলী যুগও পেয়েছেন আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় তিনি ছিলেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। তিনি এবং আবূ মামার আবদুল্লাহ ইবনু সাখবারাহ উভয়ে আবূ মাসউদ আনসার (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দুটি করে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আর আবূ উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পত্নী উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) এর সূত্রে তার একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। অথচ উবায়দ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে জন্মগ্রহণ করেন।
কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রাযিঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগ পেয়েছেন। আবূ মাসউদ আনসারী (রাযিঃ)এর সূত্রে তার তিনটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আর আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) থেকে হাদীস লাভ করেছেন এবং আলী (রাযিঃ)-এর সাহচর্য পেয়েছেন। তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
বিরাঈ ইবনু হিরাশ (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দুটি হাদীস এবং আবূ বকরাহ নুফাই ইবনু হারিস কালাদাহ (রাযিঃ)-এর সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। অথচ রিবাঈ (রহঃ) আলী ইবনু আবূ তালিব (রাযিঃ) থেকে হাদীস শুনেছেন এবং বর্ণনা করেছেন।
নাফি ইবনু জুবায়র মুতাইম, আবূ শুরাইহ (খুওয়াইলিদ ইবনু আমর) আল খুযাঈ (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
নুমান ইবনু আবূ আইয়্যাশ (রহঃ) আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তিনটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আতা ইবনু ইয়াযীদ লাইলী তামীমুদ দারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
সুলাইমান ইবনু ইয়াসার, রাফি ইবনু খাদীজ (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আর হুমায়দ ইবনু ’আবদুর রহমান হিম্ইয়ারী, আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনেকগুলো হাদীস বর্ণনা করেছেন। যে ক’জন তাবিঈর নাম আমরা এখানে উল্লেখ করলাম, তারা সাহাবাদের সূত্রেই হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তারা সাহাবাদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ হয়েছে বলেও কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও এসব হাদীস এবং এর সনদ হাদীস বিশারদদের নিকট সহীহ বলে গৃহীত।
আর তাদের কেউ এর কোন একটি বর্ণনাকে য’ঈফ (দুর্বল) বলেছেন বলে অথবা বর্ণনাকারী সরাসরি শুনেছেন কি-না তা অনুসন্ধান করেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
যখন তারা رواي ومروي عنه (রাবী ও মারবী আনহু যার থেকে বর্ণিত) একই যুগের লোক হওয়ার কারণে তাদের পরস্পরের মধ্যে সাক্ষাতের সম্ভাবনা ছিল, আর তা অস্বাভাবিক নয়।
কিন্তু আমাদের সমালোচিত ব্যক্তি হাদীসকে দুর্বল ও হেয় করার জন্য যে কারণ দাড় করেছেন, তা বিবেচনারও যোগ্য নয়।
কেননা, এটা একটা নতুন মতবাদ এবং বানোয়াট কথা। পূর্বসূরী সালফে সালিহীনের কেউই এমন কথা বলেননি। পরবর্তীকালের বিশেষজ্ঞগণও এ মত প্রত্যাখ্যান করেছেন। সুতরাং যা উল্লেখিত হলো তার চাইতে বেশি প্রতিবাদ করার প্রয়োজন নেই।
আর সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই জন্য, আমাদের নেতা মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার ও সাথীদের উপর আল্লাহ দুরূদ ও সালাম বর্ষণ করুন।
باب صِحَّةِ الاِحْتِجَاجِ بِالْحَدِيثِ الْمُعَنْعَنِ
وَهَذَا الْقَوْلُ- يَرْحَمُكَ اللَّهُ- فِي الطَّعْنِ فِي الأَسَانِيدِ قَوْلٌ مُخْتَرَعٌ مُسْتَحْدَثٌ غَيْرُ مَسْبُوقٍ صَاحِبُهُ إِلَيْهِ وَلاَ مُسَاعِدَ لَهُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَيْهِ وَذَلِكَ أَنَّ الْقَوْلَ الشَّائِعَ الْمُتَّفَقَ عَلَيْهِ بَيْنَ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالأَخْبَارِ وَالرِّوَايَاتِ قَدِيمًا وَحَدِيثًا أَنَّ كُلَّ رَجُلٍ ثِقَةٍ رَوَى عَنْ مِثْلِهِ حَدِيثًا وَجَائِزٌ مُمْكِنٌ لَهُ لِقَاؤُهُ وَالسَّمَاعُ مِنْهُ لِكَوْنِهِمَا جَمِيعًا كَانَا فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ وَإِنْ لَمْ يَأْتِ فِي خَبَرٍ قَطُّ أَنَّهُمَا اجْتَمَعَا وَلاَ تَشَافَهَا بِكَلاَمٍ فَالرِّوَايَةُ ثَابِتَةٌ وَالْحُجَّةُ بِهَا لاَزِمَةٌ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ هُنَاكَ دَلاَلَةٌ بَيِّنَةٌ أَنَّ هَذَا الرَّاوِيَ لَمْ يَلْقَ مَنْ رَوَى عَنْهُ أَوْ لَمْ يَسْمَعْ مِنْهُ شَيْئًا فَأَمَّا وَالأَمْرُ مُبْهَمٌ عَلَى الإِمْكَانِ الَّذِي فَسَّرْنَا فَالرِّوَايَةُ عَلَى السَّمَاعِ أَبَدًا حَتَّى تَكُونَ الدَّلاَلَةُ الَّتِي بَيَّنَّا. فَيُقَالُ لِمُخْتَرِعِ هَذَا الْقَوْلِ الَّذِي وَصَفْنَا مَقَالَتَهُ أَوْ لِلذَّابِّ عَنْهُ قَدْ أَعْطَيْتَ فِي جُمْلَةِ قَوْلِكَ أَنَّ خَبَرَ الْوَاحِدِ الثِّقَةِ عَنِ الْوَاحِدِ الثِّقَةِ حُجَّةٌ يَلْزَمُ بِهِ الْعَمَلُ ثُمَّ أَدْخَلْتَ فِيهِ الشَّرْطَ بَعْدُ فَقُلْتَ حَتَّى نَعْلَمَ أَنَّهُمَا قَدْ كَانَا الْتَقَيَا مَرَّةً فَصَاعِدًا أَوْ سَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا فَهَلْ تَجِدُ هَذَا الشَّرْطَ الَّذِي اشْتَرَطْتَهُ عَنْ أَحَدٍ يَلْزَمُ قَوْلُهُ وَإِلاَّ فَهَلُمَّ دَلِيلاً عَلَى مَا زَعَمْتَ. فَإِنِ ادَّعَى قَوْلَ أَحَدٍ مِنْ عُلَمَاءِ السَّلَفِ بِمَا زَعَمَ مِنْ إِدْخَالِ الشَّرِيطَةِ فِي تَثْبِيتِ الْخَبَرِ طُولِبَ بِهِ وَلَنْ يَجِدَ هُوَ وَلاَ غَيْرُهُ إِلَى إِيجَادِهِ سَبِيلاً وَإِنْ هُوَ ادَّعَى فِيمَا زَعَمَ دَلِيلاً يَحْتَجُّ بِهِ قِيلَ لَهُ وَمَا ذَاكَ الدَّلِيلُ فَإِنْ قَالَ قُلْتُهُ لأَنِّي وَجَدْتُ رُوَاةَ الأَخْبَارِ قَدِيمًا وَحَدِيثًا يَرْوِي أَحَدُهُمْ عَنِ الآخَرِ الْحَدِيثَ وَلَمَّا يُعَايِنْهُ وَلاَ سَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا قَطُّ فَلَمَّا رَأَيْتُهُمُ اسْتَجَازُوا رِوَايَةَ الْحَدِيثِ بَيْنَهُمْ هَكَذَا عَلَى الإِرْسَالِ مِنْ غَيْرِ سَمَاعٍ- وَالْمُرْسَلُ مِنَ الرِّوَايَاتِ فِي أَصْلِ قَوْلِنَا وَقَوْلِ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالأَخْبَارِ لَيْسَ بِحُجَّةٍ- احْتَجْتُ لِمَا وَصَفْتُ مِنَ الْعِلَّةِ إِلَى الْبَحْثِ عَنْ سَمَاعِ رَاوِي كُلِّ خَبَرٍ عَنْ رَاوِيهِ فَإِذَا أَنَا هَجَمْتُ عَلَى سَمَاعِهِ مِنْهُ لأَدْنَى شيء ثَبَتَ عِنْدِي بِذَلِكَ جَمِيعُ مَا يَرْوِي عَنْهُ بَعْدُ فَإِنْ عَزَبَ عَنِّي مَعْرِفَةُ ذَلِكَ أَوْقَفْتُ الْخَبَرَ وَلَمْ يَكُنْ عِنْدِي مَوْضِعَ حُجَّةٍ لإِمْكَانِ الإِرْسَالِ فِيهِ. فَيُقَالُ لَهُ فَإِنْ كَانَتِ الْعِلَّةُ فِي تَضْعِيفِكَ الْخَبَرَ وَتَرْكِكَ الاِحْتِجَاجَ بِهِ إِمْكَانَ الإِرْسَالِ فِيهِ لَزِمَكَ أَنْ لاَ تُثْبِتَ إِسْنَادًا مُعَنْعَنًا حَتَّى تَرَى فِيهِ السَّمَاعَ مِنْ أَوَّلِهِ إِلَى آخِرِهِ? وَذَلِكَ أَنَّ الْحَدِيثَ الْوَارِدَ عَلَيْنَا بِإِسْنَادِ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ فَبِيَقِينٍ نَعْلَمُ أَنَّ هِشَامًا قَدْ سَمِعَ مِنْ أَبِيهِ وَأَنَّ أَبَاهُ قَدْ سَمِعَ مِنْ عَائِشَةَ كَمَا نَعْلَمُ أَنَّ عَائِشَةَ قَدْ سَمِعَتْ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ يَجُوزُ إِذَا لَمْ يَقُلْ هِشَامٌ فِي رِوَايَةٍ يَرْوِيهَا عَنْ أَبِيهِ سَمِعْتُ أَوْ أَخْبَرَنِي أَنْ يَكُونَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَبِيهِ فِي تِلْكَ الرِّوَايَةِ إِنْسَانٌ آخَرُ أَخْبَرَهُ بِهَا عَنْ أَبِيهِ وَلَمْ يَسْمَعْهَا هُوَ مِنْ أَبِيهِ لَمَّا أَحَبَّ أَنْ يَرْوِيَهَا مُرْسَلاً وَلاَ يُسْنِدَهَا إِلَى مَنْ سَمِعَهَا مِنْهُ. وَكَمَا يُمْكِنُ ذَلِكَ فِي هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ فَهُوَ أَيْضًا مُمْكِنٌ فِي أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ. وَكَذَلِكَ كُلُّ إِسْنَادٍ لِحَدِيثٍ لَيْسَ فِيهِ ذِكْرُ سَمَاعِ بَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ. وَإِنْ كَانَ قَدْ عُرِفَ فِي الْجُمْلَةِ أَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ قَدْ سَمِعَ مِنْ صَاحِبِهِ سَمَاعًا كَثِيرًا فَجَائِزٌ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ أَنْ يَنْزِلَ فِي بَعْضِ الرِّوَايَةِ فَيَسْمَعَ مِنْ غَيْرِهِ عَنْهُ بَعْضَ أَحَادِيثِهِ ثُمَّ يُرْسِلَهُ عَنْهُ أَحْيَانًا وَلاَ يُسَمِّيَ مَنْ سَمِعَ مِنْهُ وَيَنْشَطَ أَحْيَانًا فَيُسَمِّيَ الرَّجُلَ الَّذِي حَمَلَ عَنْهُ الْحَدِيثَ وَيَتْرُكَ الإِرْسَالَ. وَمَا قُلْنَا مِنْ هَذَا مَوْجُودٌ فِي الْحَدِيثِ مُسْتَفِيضٌ مِنْ فِعْلِ ثِقَاتِ الْمُحَدِّثِينَ وَأَئِمَّةِ أَهْلِ الْعِلْمِ. وَسَنَذْكُرُ مِنْ رِوَايَاتِهِمْ عَلَى الْجِهَةِ الَّتِي ذَكَرْنَا عَدَدًا يُسْتَدَلُّ بِهَا عَلَى أَكْثَرَ مِنْهَا إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى. فَمِنْ ذَلِكَ أَنَّ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيَّ وَابْنَ الْمُبَارَكِ وَوَكِيعًا وَابْنَ نُمَيْرٍ وَجَمَاعَةً غَيْرَهُمْ رَوَوْا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ كُنْتُ أُطَيِّبُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِحِلِّهِ وَلِحُرْمِهِ بِأَطْيَبِ مَا أَجِدُ. فَرَوَى هَذِهِ الرِّوَايَةَ بِعَيْنِهَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ وَدَاوُدُ الْعَطَّارُ وَحُمَيْدُ بْنُ الأَسْوَدِ وَوُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي عُثْمَانُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَرَوَى هِشَامٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اعْتَكَفَ يُدْنِي إِلَيَّ رَأْسَهُ فَأُرَجِّلُهُ وَأَنَا حَائِضٌ. فَرَوَاهَا بِعَيْنِهَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَرَوَى الزُّهْرِيُّ وَصَالِحُ بْنُ أَبِي حَسَّانَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُ وَهُوَ صَائِمٌ. فَقَالَ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ فِي هَذَا الْخَبَرِ فِي الْقُبْلَةِ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ أَخْبَرَهُ أَنَّ عُرْوَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُقَبِّلُهَا وَهُوَ صَائِمٌ. وَرَوَى ابْنُ عُيَيْنَةَ وَغَيْرُهُ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ أَطْعَمَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لُحُومَ الْخَيْلِ وَنَهَانَا عَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ. فَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَهَذَا النَّحْوُ فِي الرِّوَايَاتِ كَثِيرٌ يَكْثُرُ تَعْدَادُهُ وَفِيمَا ذَكَرْنَا مِنْهَا كِفَايَةٌ لِذَوِي الْفَهْمِ. فَإِذَا كَانَتِ الْعِلَّةُ عِنْدَ مَنْ وَصَفْنَا قَوْلَهُ مِنْ قَبْلُ فِي فَسَادِ الْحَدِيثِ وَتَوْهِينِهِ إِذَا لَمْ يُعْلَمْ أَنَّ الرَّاوِيَ قَدْ سَمِعَ مِمَّنْ رَوَى عَنْهُ شَيْئًا إِمْكَانَ الإِرْسَالِ فِيهِ لَزِمَهُ تَرْكُ الاِحْتِجَاجِ فِي قِيَادِ قَوْلِهِ بِرِوَايَةِ مَنْ يُعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ سَمِعَ مِمَّنْ رَوَى عَنْهُ إِلاَّ فِي نَفْسِ الْخَبَرِ الَّذِي فِيهِ ذِكْرُ السَّمَاعِ لِمَا بَيَّنَّا مِنْ قَبْلُ عَنِ الأَئِمَّةِ الَّذِينَ نَقَلُوا الأَخْبَارَ أَنَّهُمْ كَانَتْ لَهُمْ تَارَاتٌ يُرْسِلُونَ فِيهَا الْحَدِيثَ إِرْسَالاً وَلاَ يَذْكُرُونَ مَنْ سَمِعُوهُ مِنْهُ وَتَارَاتٌ يَنْشَطُونَ فِيهَا فَيُسْنِدُونَ الْخَبَرَ عَلَى هَيْئَةِ مَا سَمِعُوا فَيُخْبِرُونَ بِالنُّزُولِ فِيهِ إِنْ نَزَلُوا وَبِالصُّعُودِ إِنْ صَعِدُوا كَمَا شَرَحْنَا ذَلِكَ عَنْهُمْ. وَمَا عَلِمْنَا أَحَدًا مِنْ أَئِمَّةِ السَّلَفِ مِمَّنْ يَسْتَعْمِلُ الأَخْبَارَ وَيَتَفَقَّدُ صِحَّةَ الأَسَانِيدِ وَسَقَمَهَا مِثْلَ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ وَابْنِ عَوْنٍ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَشُعْبَةَ بْنِ الْحَجَّاجِ وَيَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْقَطَّانِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَهْدِيٍّ وَمَنْ بَعْدَهُمْ مِنْ أَهْلِ الْحَدِيثِ فَتَّشُوا عَنْ مَوْضِعِ السَّمَاعِ فِي الأَسَانِيدِ كَمَا ادَّعَاهُ الَّذِي وَصَفْنَا قَوْلَهُ مِنْ قَبْلُ. وَإِنَّمَا كَانَ تَفَقُّدُ مَنْ تَفَقَّدَ مِنْهُمْ سَمَاعَ رُوَاةِ الْحَدِيثِ مِمَّنْ رَوَى عَنْهُمْ إِذَا كَانَ الرَّاوِي مِمَّنْ عُرِفَ بِالتَّدْلِيسِ فِي الْحَدِيثِ وَشُهِرَ بِهِ فَحِينَئِذٍ يَبْحَثُونَ عَنْ سَمَاعِهِ فِي رِوَايَتِهِ وَيَتَفَقَّدُونَ ذَلِكَ مِنْهُ كَيْ تَنْزَاحَ عَنْهُمْ عِلَّةُ التَّدْلِيسِ. فَمَنِ ابْتَغَى ذَلِكَ مِنْ غَيْرِ مُدَلِّسٍ عَلَى الْوَجْهِ الَّذِي زَعَمَ مَنْ حَكَيْنَا قَوْلَهُ فَمَا سَمِعْنَا ذَلِكَ عَنْ أَحَدٍ مِمَّنْ سَمَّيْنَا وَلَمْ نُسَمِّ مِنَ الأَئِمَّةِ. فَمِنْ ذَلِكَ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ يَزِيدَ الأَنْصَارِيَّ وَقَدْ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ رَوَى عَنْ حُذَيْفَةَ وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ وَعَنْ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا حَدِيثًا يُسْنِدُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَيْسَ فِي رِوَايَتِهِ عَنْهُمَا ذِكْرُ السَّمَاعِ مِنْهُمَا وَلاَ حَفِظْنَا فِي شيء مِنَ الرِّوَايَاتِ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ يَزِيدَ شَافَهَ حُذَيْفَةَ وَأَبَا مَسْعُودٍ بِحَدِيثٍ قَطُّ وَلاَ وَجَدْنَا ذِكْرَ رُؤْيَتِهِ إِيَّاهُمَا فِي رِوَايَةٍ بِعَيْنِهَا. وَلَمْ نَسْمَعْ عَنْ أَحَدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِمَّنْ مَضَى وَلاَ مِمَّنْ أَدْرَكْنَا أَنَّهُ طَعَنَ فِي هَذَيْنِ الْخَبَرَيْنِ اللَّذَيْنِ رَوَاهُمَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ عَنْ حُذَيْفَةَ وَأَبِي مَسْعُودٍ بِضَعْفٍ فِيهِمَا بَلْ هُمَا وَمَا أَشْبَهَهُمَا عِنْدَ مَنْ لاَقَيْنَا مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالْحَدِيثِ مِنْ صِحَاحِ الأَسَانِيدِ وَقَوِيِّهَا يَرَوْنَ اسْتِعْمَالَ مَا نُقِلَ بِهَا وَالاِحْتِجَاجَ بِمَا أَتَتْ مِنْ سُنَنٍ وَآثَارٍ وَهِيَ فِي زَعْمِ مَنْ حَكَيْنَا قَوْلَهُ مِنْ قَبْلُ وَاهِيَةٌ مُهْمَلَةٌ حَتَّى يُصِيبَ سَمَاعَ الرَّاوِي عَمَّنْ رَوَى وَلَوْ ذَهَبْنَا نُعَدِّدُ الأَخْبَارَ الصِّحَاحَ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِمَّنْ يَهِنُ بِزَعْمِ هَذَا الْقَائِلِ وَنُحْصِيهَا لَعَجَزْنَا عَنْ تَقَصِّي ذِكْرِهَا وَإِحْصَائِهَا كُلِّهَا وَلَكِنَّا أَحْبَبْنَا أَنْ نَنْصِبَ مِنْهَا عَدَدًا يَكُونُ سِمَةً لِمَا سَكَتْنَا عَنْهُ مِنْهَا. وَهَذَا أَبُو عُثْمَانَ النَّهْدِيُّ وَأَبُو رَافِعٍ الصَّائِغُ وَهُمَا مِمَّنْ أَدْرَكَ الْجَاهِلِيَّةَ وَصَحِبَا أَصْحَابَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْبَدْرِيِّينَ هَلُمَّ جَرًّا وَنَقَلاَ عَنْهُمُ الأَخْبَارَ حَتَّى نَزَلاَ إِلَى مِثْلِ أَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَذَوِيهِمَا قَدْ أَسْنَدَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا وَلَمْ نَسْمَعْ فِي رِوَايَةٍ بِعَيْنِهَا أَنَّهُمَا عَايَنَا أُبَيًّا أَوْ سَمِعَا مِنْهُ شَيْئًا. وَأَسْنَدَ أَبُو عَمْرٍو الشَّيْبَانِيُّ وَهُوَ مِمَّنْ أَدْرَكَ الْجَاهِلِيَّةَ وَكَانَ فِي زَمَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلاً وَأَبُو مَعْمَرٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَخْبَرَةَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبَرَيْنِ وَأَسْنَدَ عُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا وَعُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ وُلِدَ فِي زَمَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَأَسْنَدَ قَيْسُ بْنُ أَبِي حَازِمٍ وَقَدْ أَدْرَكَ زَمَنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاَثَةَ أَخْبَارٍ. وَأَسْنَدَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي لَيْلَى وَقَدْ حَفِظَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَصَحِبَ عَلِيًّا عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا. وَأَسْنَدَ رِبْعِيُّ بْنُ حِرَاشٍ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثَيْنِ وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا وَقَدْ سَمِعَ رِبْعِيٌّ مِنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ وَرَوَى عَنْهُ. وَأَسْنَدَ نَافِعُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا. وَأَسْنَدَ النُّعْمَانُ بْنُ أَبِي عَيَّاشٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ثَلاَثَةَ أَحَادِيثَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَأَسْنَدَ عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا. وَأَسْنَدَ سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثًا. وَأَسْنَدَ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحَادِيثَ. فَكُلُّ هَؤُلاَءِ التَّابِعِينَ الَّذِينَ نَصَبْنَا رِوَايَتَهُمْ عَنِ الصَّحَابَةِ الَّذِينَ سَمَّيْنَاهُمْ لَمْ يُحْفَظْ عَنْهُمْ سَمَاعٌ عَلِمْنَاهُ مِنْهُمْ فِي رِوَايَةٍ بِعَيْنِهَا وَلاَ أَنَّهُمْ لَقُوهُمْ فِي نَفْسِ خَبَرٍ بِعَيْنِهِ. وَهِيَ أَسَانِيدُ عِنْدَ ذَوِي الْمَعْرِفَةِ بِالأَخْبَارِ وَالرِّوَايَاتِ مِنْ صِحَاحِ الأَسَانِيدِ لاَ نَعْلَمُهُمْ وَهَّنُوا مِنْهَا شَيْئًا قَطُّ وَلاَ الْتَمَسُوا فِيهَا سَمَاعَ بَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ. إِذِ السَّمَاعُ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ مُمْكِنٌ مِنْ صَاحِبِهِ غَيْرُ مُسْتَنْكَرٍ لِكَوْنِهِمْ جَمِيعًا كَانُوا فِي الْعَصْرِ الَّذِي اتَّفَقُوا فِيهِ. وَكَانَ هَذَا الْقَوْلُ الَّذِي أَحْدَثَهُ الْقَائِلُ الَّذِي حَكَيْنَاهُ فِي تَوْهِينِ الْحَدِيثِ بِالْعِلَّةِ الَّتِي وَصَفَ أَقَلَّ مِنْ أَنْ يُعَرَّجَ عَلَيْهِ وَيُثَارَ ذِكْرُهُ. إِذْ كَانَ قَوْلاً مُحْدَثًا وَكَلاَمًا خَلْفًا لَمْ يَقُلْهُ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ سَلَفَ وَيَسْتَنْكِرُهُ مَنْ بَعْدَهُمْ خَلَفَ فَلاَ حَاجَةَ بِنَا فِي رَدِّهِ بِأَكْثَرَ مِمَّا شَرَحْنَا. إِذْ كَانَ قَدْرُ الْمَقَالَةِ وَقَائِلِهَا الْقَدْرَ الَّذِي وَصَفْنَاهُ. وَاللَّهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى دَفْعِ مَا خَالَفَ مَذْهَبَ الْعُلَمَاءِ وَعَلَيْهِ التُّكْلاَنُ.
Chapter: The Soundness of Relying on Ḥadīth Related with the Term Meaning ‘On Authority of’
This statement, may Allah have mercy on you, of accusation regarding the [Mu’an’an] chains is an invented one, produced without precedent, and there is no one who supports him from Ahl ul-Ilm in that. The widespread opinion, which is agreed upon between Ahl ul-Ilm, with reports and transmissions early and recent, is that each trustworthy narrator who transmits a Ḥadīth from his equal, with the feasible probability for [the transmitter] to meet [who he transmits from] and hear from him due to their being together in the same era, even if there never came a report that they met or spoke face to face, then the transmission is affirmed, and [using it as a] proof is appropriate, unless there is clear evidence that this transmitter did not meet who he transmits from or that he did not hear anything from him.
Then as for when the matter is ambiguous regarding the possibility which we explained previously, then the transmission is always [accepted ]as coming by way of ‘hearing’ until there is evidence [otherwise] which we pointed out. Thus it is said to the inventor of this opinion whose speaker is as we have described, or to his defender- you have provided in the sum total of your statement that the report of the single trustworthy narrator on authority of the single trustworthy narrator is a proof which is required to act upon, then you introduced into it the condition afterwards, and you said ‘until we know that [the transmitter] had met once or more and heard something from [the one he transmits from]’. So have you found this condition which you stipulated from anyone [of Ahl ul-Ilm] who also required it? And if not then bring me evidence of what you allege. Thus if he claims there is a statement from one of the scholars of the Salaf for what he alleged in introducing the condition in affirming reports, [then] confirm it; [however] neither he, nor others, will ever find a way to produce it, even though he claims about what he alleges there is evidence to rely on. It is said ‘What is that evidence?’
Thus if he said: ‘I said it since I found transmitters of reports, early and recent, transmitting Ḥadīth from each other, and [the transmitter] did not ever see or hear anything from [from the one he transmits from]. Thus when I saw them permitting the transmission of Ḥadīth between them like this, Irsāl, without hearing [between transmitters], while the Mursal from the transmissions, in the foundation of our view and that of Ahl ul-Ilm in reports, is that it is not a proof; on account of what I described from the weakness, I rely on researching the hearing of the transmitter in each report on authority of [who he transmits from]. Thus when I unexpectedly come upon his hearing from [the one he transmits from] due to the low amount of a thing [i.e. transmissions on his authority], all of what he transmits on his authority becomes fixed to me thereafter. And if knowledge of [his actually hearing from whom he transmits from] is too distant from me, I withhold from the report and according to me it does not have a position of proof due to the possibility of Irsāl in it.’
Thus it is said to him: Then if the reason for your weakening the [Mu’an’an] report and your abandoning relying on it is due to the possibility of Irsāl in it, it obligates you to not affirm a chain of Mu’an’an until you see it has hearing [Simā’] from its first [transmitter] to its last.
And according to us it is possible that the Ḥadīth [you described] which has come to us on authority of Hishām bin Urwah, on authority of his father, on authority of Ā’ishah- we know with certainty that Hishām heard from his father and that his father heard from Ā’ishah, just as we know that Ā’ishah heard from the Prophet, peace and blessings upon him- it is possible that when Hishām does not say in the transmission that he transmits on authority of his father the words ‘I heard’ or ‘He informed me’, that there could be between him and his father another person who informed [Hishām] of it on authority of his father in this transmission, and he did not hear it from his father when he preferred transmitting it Mursal, and it is not attributed to who he really heard it from.
Just as that is possible from Hishām, on authority of his father, then it is also possible for his father on authority of Ā’ishah, and like that all chains for Ḥadīth in which the ‘hearing’ [of each transmitter] from the other is not mentioned. And if it was known in some transmissions that every single one of them did hear from his companion a great deal, then it is still possible for each one of them to drop in some of the transmissions, such that he hears from someone else some of his Ḥadīth, then expedites on authority [of his most famous companion] occasionally, while not designating who he [actually] heard from. And at times he is afraid and designates who he [actually] related the Ḥadīth from and abandons Irsāl. What we mention from this is found in Ḥadīth, from the actions of trustworthy Muhaddithīn and A’immah of Ahl ul-Ilm; and we will mention several of their transmissions upon the pathway which we mentioned demonstrating through them the great amount of [the above], if Allah, exalted is He, wills. Thus from that [are the following]:
That Ayyūb as-Sakhtiyānī, Ibn al-Mubārak, Wakī’, Ibn Numayr, and a group of others transmitted on authority of Hishām bin Urwah, on authority of his father, on authority of Ā’ishah, may Allah be pleased with her, she said: ‘I applied scent to the Messenger of Allah, peace and blessings upon him, at the time of entering and leaving Ihrām, with the most pleasant [scent] I found’.
Thus Layth bin Sa’d, Dāwud al-Attār, Humayd bin al-Aswad, Wuhayb bin Khālid, and Abū Usāmah transmitted this transmission on authority of none other than Hishām, he said, Uthmān bin Urwah informed me, on authority of Urwah, on authority of Ā’ishah, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him; and Hishām transmitted, on authority of his father, on authority of Ā’ishah, she said: ‘The Prophet, peace and blessings upon him, when he was in ‘Itikaf lowered his head towards me, then I combed [his hair] and I was menstruating’. Then Mālik bin Anas transmitted the exact narration, on authority of az-Zuhrī, on authority of Urwah, on authority of Amrah , on authority of Ā’ishah, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him.
Az-Zuhrī and Sālih bin Abī Hassān transmitted on authority of Abī Salamah, on authority of Ā’ishah: ‘The Prophet, peace and blessings upon him, would kiss while fasting’.
Thus Yahyā bin Abī Kathīr said about this report regarding ‘kissing’, Abū Salamah bin Abd ar-Rahman informed me that Umar bin Abd al-Azīz informed him that Urwah informed him that Ā’ishah informed him that: ‘The Prophet, peace and blessings upon him, would kiss her while fasting’.
Ibn Uyaynah and others transmitted on authority of Amr bin Dīnār, on authority of Jābir, he said ‘The Messenger of Allah, peace and blessings upon him, [allowed us] to eat horse meat and prohibited us from donkey meat’. And Hammād bin Zayd transmitted it, on authority of Amr, on authority of Muhammad bin Alī, on authority of Jābir, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him. And this manner of transmitting narrations is abundant, its enumeration being much, and what we mentioned is sufficient for those who possess understanding. Thus when the reason [for weakening these types of transmissions]- according to the one whose opinion we described before in terms of the invalidation of Ḥadīth and weakening them when it is not known that the transmitter heard anything through the one he transmits from- is that Irsāl is possible in them, his opinion leads to his being obligated to abandon relying on transmissions of those who are known to have heard through who they transmit from unless there is mention of ‘hearing’ in the report itself, due to what we clarified before of the A’immah who related reports that at times they would expedite the Ḥadīth as Irsāl, and not mention who they heard it from, and at times they would be so inclined, so they would provide the chain for the report in the form that they heard it- they would report [a narration] through ‘descent’ [from a peer or someone below them in age or status] if it was descended and with ‘elevation’ [with less narrators between them and the Prophet, peace and blessings upon him] if it was elevated, just as we explained about them. We are not aware of anyone from the A’immah of the Salaf who when he sought to act upon reports and investigate the soundness or weakness of the chains of transmission like [those of] Ayyūb as-Sakhtiyānī, Ibn Awn, Mālik bin Anas, Shu’bah bin al-Hajjāj, Yahyā bin Sa’īd al-Qattān, Abd ar-Rahman bin Mahdī and those after them from the people of Ḥadīth, he examined the situation regarding [the manner of] ‘hearing’ in the chains, like what is claimed in the opinion of the one we described previously.
Those who investigated among [the scholars of Ḥadīth] would only investigate the ‘hearing’ of the transmitters of Ḥadīth they transmitted from when the transmitter was among those who were known for Tadlīs in Ḥadīth and famous for it. Thus when they investigated [a transmitter’s manner of] ‘hearing’ in his transmissions and they would research that about him in order to distance themselves from the defect of Tadlīs. Thus to research that about the non-Mudallis, from the perspective of the one who alleged what he did in the opinion we related, then we have not heard of that from anyone we designated and do not designate from the A’immah.
Thus from that is Abd Allah bin Yazīd al-Ansārī , who saw the Prophet, peace and blessings upon him; he transmitted a Ḥadīth on authority of Hudhayfah and Abī Mas’ūd al-Ansārī attributing it to the Prophet, peace and blessings upon him, and there is no mention of ‘hearing’ in his transmission from either of them . Also, we have not preserved in any of the transmissions that Abd Allah bin Yazīd ever met Hudhayfah or Abū Mas’ūd face to face for Ḥadīth. We have not found mention in an actual transmission his seeing either of them and we have not heard from any of Ahl ul-Ilm who have passed or who we have met who charged with weakness these two reports who Abd Allah bin Yazīd transmitted on authority of Hudhayfah and Abū Mas’ūd. Rather according to those we met from Ahl ul-Ilm in Ḥadīth those two [reports] and whatever is similar to them are among the authentic and strong chains; they held the view of acting by what was related by them, and relied upon what came from the Sunan and Āthār [in that manner]. And it is weak and abandoned in the allegation of the one whose view we related before, until ‘hearing’ of the transmitter is obtained from whoever transmits [them]. And even if we took to enumerating the authentic reports according to Ahl ul-Ilm whereof they are weak in the allegation of this speaker and we counted them, truly we would not be able to fully examine its mention and enumerate all of them; rather we prefer to place several as a symbol for what we remain silent on.
Abū Uthmān an-Nahdī and Abū Rāfi’ as-Sā’igh both were from among those who witnessed the age of Jahiliyyah [the time before Islam in the Arabian Peninsula] and were among the Companions of the Messenger of Allah, peace and blessings upon him, who witnessed the battle of Badr, and so on and so forth. They both related reports on authority of [the Companions] until they [related Ḥadīth from younger Companions] the likes of Abū Hurayrah and Ibn Umar. Each of these two transmitted a single Ḥadīth on authority of Ubayy bin K’ab, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him, and we did not hear in an actual transmission that they had seen Ubayy with their own eyes, or heard anything from him.
Abū Amr ash-Shaybānī witnessed al-Jahiliyyah and was an adult during the time of the Prophet, peace and blessings upon him, and Abū Ma’mar Abd Allah bin Sakhbarah each transmitted two reports on authority of Abū Mas’ūd al-Ansārī, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him.
Ubayd bin Umayr transmitted a Ḥadīth on authority of Umm Salamah, wife of the Prophet, peace and blessings upon him, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him, and Ubayd bin Umayr was born in the time of the Prophet, peace and blessings upon him.
Qays bin Abī Hāzim transmitted three reports on authority of Abū Mas’ūd al-Ansārī, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him and he witnessed the time of the Prophet, peace and blessings upon him.
Abd ar-Rahman bin Abī Laylā transmitted a Ḥadīth on authority of Anas bin Mālik, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him, and he heard from Umar bin al-Khattāb and accompanied Alī.
Rib’ī bin Hirāsh transmitted two Ḥadīth on authority of Imrān bin Husayn, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him; and a Ḥadīth on authority of Abū Bakrah, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him. Rib’ī heard from Alī bin Abī Tālib and transmitted on his authority.
Nāfi’ bin Jubayr bin Mut’im transmitted a Ḥadīth on authority of Abī Shurayh al-Khuzā’ī, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him.
An-Nu’mān bin Abī Ayyāsh transmitted three Ahādīth on authority of Abū Sa’īd al-Khudrī, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him.
Atā’ bin Yazīd al-Laythī transmitted a Ḥadīth on authority of Tamīm ad-Dārī, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him.
Sulaymān bin Yasār transmitted a Ḥadīth on authority of Rāfi’ bin Khadīj, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him.
Humayd bin Abd ar-Rahman al-Himyarī transmitted narrations on authority of Abū Hurayrah, on authority of the Prophet, peace and blessings upon him. Thus all of these Tabi’īn we named, whose transmissions are on authority of Companions, are not recorded in separate transmissions to have heard directly from them, to our knowledge, and are not recorded to have met them in the course of the actual report. They are sound chains of transmission according to those who possess knowledge of reports and transmissions; we do not know of them ever weakening anything of them or asking about whether they heard from each other, since the ‘hearing’ of each one of them from his companion is possible, without anyone rejecting [that], due to them all being together in the same time period.
This opinion that the speaker invented, which we related, regarding weakening the Ḥadīth, for the reason which he described, is too inferior to be relied upon or [too inferior] for its mention to be stirred up since it was an invented opinion and a backward discussion which no one from Ahl ul-Ilm stated before and those who came after them denounced it. Thus there is no need to for us to refute it with more than what we have already explained since the standing of the speech and its speaker is that which we described, and Allah is the one with whom aid is sought in repelling what differs from the school of the scholars and in Him alone complete trust is placed.