৪৮৯৩

পরিচ্ছেদঃ ২০৫০. বাধ্য হয়ে, মাতাল ও পাগল অবস্থায় তালাক দেওয়া এবং এতদুভয়ের বিধান সম্বন্ধে। ভুলবশতঃ তালাক দেওয়া এবং শিরক্ ইত্যাদি সম্বন্ধে। (এসব নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল)। কেননা নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ প্রতিটি কাজ নিয়্যাত অনুসারে বিবেচিত হয়। প্রত্যেকে তা-ই পায়, যার সে নিয়্যাত করে। শা’বী (র) পাঠ করেনঃ لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا (হে আমাদের প্রতিপালক) আমরা যদি ভুল ভ্রান্তি বশতঃ কোন কাজ করে ফেলি, তবে সে জন্য আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। ওয়াসাওয়াসা সম্পন্ন ব্যক্তির স্বীকারোক্তিতে যা দুরস্ত হয়না। স্বীয় যিনার কথা স্বীকারকারী জনৈক ব্যক্তিকে নবী (সাঃ) বলেছিলেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ ? ‘আলী (রা) বলেন, হামযা (রা) আমার দু’টি উনীর পার্শ্বদেশ ফেঁড়ে ফেললে, নবী (সাঃ) হামযাকে তিরস্কার করতে থাকেন। হঠাৎ দেখা গেল নেশায় হামযার চক্ষুযুগল রক্তিম হয়ে গেছে। এরপর হামযা বললেন, তোমরা তো আমার বাবার গোলাম বৈ নও। তখন নবী (সাঃ) বুঝতে পারলেন, তিনি নেশাগ্রস্থ হয়েছেন। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন আমরাও তাঁর সাথে বেরিয়ে এলাম। ‘উসমান (রা) বলেনঃ পাগল ও নেশাগ্রস্থ ব্যক্তির তালাক প্রযোজ্য হয় না। ইবন আব্বাস (রা) বলেন, ওয়াসাওয়াসা সম্পন্ন (সন্দেহের বাতিকগ্রস্থ) ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না। ‘আতা (র) বলেনঃ তালাক শর্তযুক্ত করে তালাক দিলে শর্ত পাওয়ার পরই তালাক হবে। নাফি’ (র) জিজ্ঞেস করলেন, ঘর থেকে বের হওয়ার শর্তে স্বীয় স্ত্রীকে জনৈক ব্যহিক্ত তিন তালাক দিল- (এর হুকুম কি?)। ইবন ‘উমর (র) বললেনঃ যদি সে মহিলা ঘর থেকে বের হয়, তাহলে সে তিন তালাকপ্রাপ্তা হবে। আর যদি বের না হয়, তাহলে কিছুই হবে না। যুহরী (র) বলেন, যে ব্যক্তি বললঃ যদি আমি এরূপ না করি, তবে আমার স্ত্রীর প্রতি তিন তালাক প্রযোজ্য হবে। তার সমবন্ধে যুহ্রী (র) বলেন, উক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হবে, শপথকালে তার ইচ্ছা কি ছিল ? যদি সে ইচ্ছাকৃত সময়সীমা নির্ধারণ করে থাকে এবং শপথকালে তার এ ধরনের নিয়্যাত থাকে তাহলে এ বিষয়কে তার দীন ও আমানতের উপর ন্যস্ত করা হবে। ইবরাহীম (র) বলেন, যদি সে বলে, ‘‘তোমাকে আমার কোন প্রয়োজন নেই’’; তবে তার নিয়্যাত অনুসারে কাজ হবে। আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের লোক তাদের নিজস্ব ভাষায় তালাক দিতে পারে। কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ বলে তুমি গর্ভবতী হলে, তোমার প্রতি তিন, তালাক। তাহলে সে প্রত্যেক তুহরে স্ত্রীর সাথে একবার সংগম করবে। যখন গর্ভ প্রকাশ পাবে, তৎক্ষণাৎ সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। হাসান (র) বলেন, যদি কেউ বলে, ‘‘ তুমি তোমার পরিবারের কাছে চলে যাও’’, তবে তার নিয়্যাত অনুযায়ী কাজ হবে। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেনঃ প্রয়োজনের তাগিদে তালাক দেওয়া যায়। আর দাসমুক্তি আল্লাহর সুন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে থাকলেই করা যায়। যুহরী (র) বলেন, যদি কেউ বলেঃ তুমি আমার স্ত্রী নও, তবে তালাক হওয়া বা না হওয়া নিয়্যাতের উপর নির্ভর করবে। যদি সে তালাকের নিয়্যাত করে থাকে, তবে তাই হবে। ‘আলী (রা) (উমর (রা) কে সম্বোধন করে) বলেনঃ আপনি কি অবগত নন যে, তিন ধরনের লোক থেকে কসম তুলে নেয়া হয়েছে। এক পাগল ব্যক্তি যতক্ষণ না সে হুশ ফিরে পায়; দুই, শিশু যতক্ষণ না সে বালেগ হয়, তিন, ঘুমন্ত ব্যক্তি, যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়। ‘আলী (রা) (আরও) বলেনঃ পাগল লোক ব্যতীত অন্য সকলের তালাক কার্যকর হয়।

৪৮৯৩। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটি তাকে ডেকে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হতভাগ্য ব্যভিচার করেছে। সে একথা দিয়ে নিজেকে বোঝাতে চাইল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনি যে দিক ফিরলেন সে সেদিকে গিয়ে আবার বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হতভাগ্য যিনা করেছে। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর সেও সে দিকে গেল যে দিকে তিনি মুখ ফিরালেন এবং পুনরায় সে কথা বলল। তিনি চতুর্থবার মুখ ফিরিয়ে নিলে সেও সেদিকে গেল।

যখন সে নিজের সম্পর্কে চারবার সাক্ষী দিল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ? সে বলল, না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে নিয়ে যাও এবং রজম কর। (পাথর মেরে হত্যা কর) লোকটি ছিল বিবাহিত। যুহরী (রহঃ) বলেন, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে যিনি শুনেছেন, তিনি আমাকে বলেছেনঃ রজমকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা মদিনার মুসল্লায় (ঈদগাহে) তাকে রজম করলাম। পাথর যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুললো, সে তখন পালিয়ে গেল। হাররা নামক স্থানে আমরা তাকে ধরলাম এবং রজম করলাম। অবশেষে সে মারা গেল।

باب الطَّلاَقِ فِي الإِغْلاَقِ وَالْكُرْهِ وَالسَّكْرَانِ وَالْمَجْنُونِ وَأَمْرِهِمَا، وَالْغَلَطِ وَالنِّسْيَانِ فِي الطَّلاَقِ وَالشِّرْكِ وَغَيْرِهِ، لِقَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الأَعْمَالُ بِالنِّيَّةِ وَلِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى». وَتَلاَ الشَّعْبِيُّ: {لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا} وَمَا لاَ يَجُوزُ مَنْ إِقْرَارِ الْمُوَسْوِسِ. وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلَّذِي أَقَرَّ عَلَى نَفْسِهِ: «أَبِكَ جُنُونٌ». وَقَالَ عَلِيٌّ بَقَرَ حَمْزَةُ خَوَاصِرَ شَارِفَيَّ، فَطَفِقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلُومُ حَمْزَةَ، فَإِذَا حَمْزَةُ قَدْ ثَمِلَ مُحْمَرَّةٌ عَيْنَاهُ، ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ هَلْ أَنْتُمْ إِلاَّ عَبِيدٌ لأَبِي فَعَرَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَدْ ثَمِلَ، فَخَرَجَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ، وَقَالَ عُثْمَانُ لَيْسَ لِمَجْنُونٍ وَلاَ لِسَكْرَانَ طَلاَقٌ. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ طَلاَقُ السَّكْرَانِ وَالْمُسْتَكْرَهِ لَيْسَ بِجَائِزٍ. وَقَالَ عُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ الْمُوَسْوِسِ. وَقَالَ عَطَاءٌ إِذَا بَدَا بِالطَّلاَقِ فَلَهُ شَرْطُهُ. وَقَالَ نَافِعٌ طَلَّقَ رَجُلٌ امْرَأَتَهُ الْبَتَّةَ إِنْ خَرَجَتْ، فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ إِنْ خَرَجَتْ فَقَدْ بُتَّتْ مِنْهُ، وَإِنْ لَمْ تَخْرُجْ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ. وَقَالَ الزُّهْرِيُّ فِيمَنْ قَالَ إِنْ لَمْ أَفْعَلْ كَذَا وَكَذَا فَامْرَأَتِي طَالِقٌ ثَلاَثًا يُسْئَلُ عَمَّا قَالَ، وَعَقَدَ عَلَيْهِ قَلْبُهُ، حِينَ حَلَفَ بِتِلْكَ الْيَمِينِ، فَإِنْ سَمَّى أَجَلاً أَرَادَهُ وَعَقَدَ عَلَيْهِ قَلْبُهُ حِينَ حَلَفَ، جُعِلَ ذَلِكَ فِي دِينِهِ وَأَمَانَتِهِ. وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ إِنْ قَالَ لاَ حَاجَةَ لِي فِيكِ. نِيَّتُهُ، وَطَلاَقُ كُلِّ قَوْمٍ بِلِسَانِهِمْ. وَقَالَ قَتَادَةُ إِذَا قَالَ إِذَا حَمَلْتِ فَأَنْتِ طَالِقٌ. ثَلاَثًا، يَغْشَاهَا عِنْدَ كُلِّ طُهْرٍ مَرَّةً، فَإِنِ اسْتَبَانَ حَمْلُهَا فَقَدْ بَانَتْ. وَقَالَ الْحَسَنُ إِذَا قَالَ الْحَقِي بِأَهْلِكِ. نِيَّتُهُ. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الطَّلاَقُ عَنْ وَطَرٍ، وَالْعَتَاقُ مَا أُرِيدَ بِهِ وَجْهُ اللَّهِ. وَقَالَ الزُّهْرِيُّ إِنْ قَالَ مَا أَنْتِ بِامْرَأَتِي. نِيَّتُهُ، وَإِنْ نَوَى طَلاَقًا فَهْوَ مَا نَوَى. وَقَالَ عَلِيٌّ أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ الْقَلَمَ رُفِعَ عَنْ ثَلاَثَةٍ عَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يُفِيقَ، وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يُدْرِكَ، وَعَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ. وَقَالَ عَلِيٌّ وَكُلُّ الطَّلاَقِ جَائِزٌ إِلاَّ طَلاَقَ الْمَعْتُوهِ

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَسَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَى رَجُلٌ مِنْ أَسْلَمَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ فِي الْمَسْجِدِ فَنَادَاهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الأَخِرَ قَدْ زَنَى ـ يَعْنِي نَفْسَهُ ـ فَأَعْرَضَ عَنْهُ فَتَنَحَّى لِشِقِّ وَجْهِهِ الَّذِي أَعْرَضَ قِبَلَهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الأَخِرَ قَدْ زَنَى فَأَعْرَضَ عَنْهُ فَتَنَحَّى لِشِقِّ وَجْهِهِ الَّذِي أَعْرَضَ قِبَلَهُ فَقَالَ لَهُ ذَلِكَ فَأَعْرَضَ عَنْهُ فَتَنَحَّى لَهُ الرَّابِعَةَ، فَلَمَّا شَهِدَ عَلَى نَفْسِهِ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ دَعَاهُ فَقَالَ ‏"‏ هَلْ بِكَ جُنُونٌ ‏"‏‏.‏ قَالَ لاَ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ اذْهَبُوا بِهِ فَارْجُمُوهُ ‏"‏‏.‏ وَكَانَ قَدْ أُحْصِنَ‏.‏ وَعَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَنْ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ كُنْتُ فِيمَنْ رَجَمَهُ فَرَجَمْنَاهُ بِالْمُصَلَّى بِالْمَدِينَةِ، فَلَمَّا أَذْلَقَتْهُ الْحِجَارَةُ جَمَزَ حَتَّى أَدْرَكْنَاهُ بِالْحَرَّةِ، فَرَجَمْنَاهُ حَتَّى مَاتَ‏.‏


Narrated Abu Huraira: A man from Bani Aslam came to Allah's Messenger (ﷺ) while he was in the mosque and called (the Prophet (ﷺ) ) saying, "O Allah's Messenger (ﷺ)! I have committed illegal sexual intercourse." On that the Prophet (ﷺ) turned his face from him to the other side, whereupon the man moved to the side towards which the Prophet (ﷺ) had turned his face, and said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! I have committed illegal sexual intercourse." The Prophet turned his face (from him) to the other side whereupon the man moved to the side towards which the Prophet (ﷺ) had turned his face, and repeated his statement. The Prophet (ﷺ) turned his face (from him) to the other side again. The man moved again (and repeated his statement) for the fourth time. So when the man had given witness four times against himself, the Prophet (ﷺ) called him and said, "Are you insane?" He replied, "No." The Prophet (ﷺ) then said (to his companions), "Go and stone him to death." The man was a married one. Jabir bin `Abdullah Al-Ansari said: I was one of those who stoned him. We stoned him at the Musalla (`Id praying place) in Medina. When the stones hit him with their sharp edges, he fled, but we caught him at Al-Harra and stoned him till he died.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ