লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৯০/২. সালাত
৬৯৫৪. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বায়ু বের হলে ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ্ তোমাদের কারো সালাত কবুল করবেন না। [১৩৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ,৬৪৭১ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৪)
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
ইস্তিঞ্জার নিয়মাবলি
অযু ভঙ্গ হওয়ার অপর পরিভাষা হচ্ছে, ইস্তিঞ্জা করা: ইস্তিঞ্জা হলো পেশাব ও পায়খানার রাস্তা থেকে নির্গত অপবিত্রতা পানি দ্বারা দূর করা। আর যদি পানি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা হয় তবে তাকে বলা হয় ইস্তিজমার। এ ব্যাপারে ইসলামী শরী'আতে কিছু নিয়ম রয়েছে
পেশাব-পায়খানায় প্রবেশের সময় বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং এ দোআ পড়া, اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট অপবিত্র জিন নর-নারীর (অনিষ্ট) থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” (সহীহ বুখারী: ১৪২) আর বের হওয়ার সময় ডান পা আগে দিয়ে বের হওয়া এবং এ দোআ পড়া, غُفْرَانَكَ “হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি"। (তিরমিযী: ৭)
- পেশাব-পায়খানার সময় বাম পায়ের উপর ভর দিয়ে বসা মুস্তাহাব, তবে খালি জায়গায় পেশাব-পায়খানা করলে মানুষের দৃষ্টির বাহিরে নির্জন স্থানে বসা। পেশাব করার সময় নরম স্থান নির্বাচন করা, যাতে পেশাবের ছিটা থেকে পবিত্র থাকা যায়।
- অতি প্রয়োজন ছাড়া এমন কোনো কিছু সাথে নেয়া মাকরূহ যাতে আল্লাহর নাম রয়েছে। তাছাড়া যমীনের কাছাকাছি না হওয়ার আগে কাপড় তোলা, কথা বলা, গর্তে পেশাব করা, ডান হাত দিয়ে লজ্জাস্থান স্পর্শ করা এবং ডান হাত দিয়ে ঢিলা ব্যবহার মাকরূহ।
- উন্মুক্ত স্থানে পেশাব-পায়খানার সময় কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ ফিরিয়ে বসা হারাম, আর ঘরের মধ্যে বসা জায়েয, তবে না বসা উত্তম।
- চলাচলের রাস্তা, বসা ও বিশ্রামের জায়গায়, ফলদার ছায়াদার গাছ ইত্যাদির নিচে পেশাব-পায়খানা করা হারাম।
- পবিত্র পাথর দিয়ে তিনবার শৌচকর্ম করা মুস্তাহাব। এতে ভালোভাবে পবিত্র না হলে সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা যাবে। তবে বেজোড় সংখ্যা তিন বা পাঁচ বা ততোধিক বেজোড় সংখ্যা ব্যবহার করা দ্বারা কাজটি শেষ করা সুন্নাত।
- হাড়, গোবর, খাদ্য ও সম্মানিত জিনিস দ্বারা ঢিলা করা হারাম। পানি, টিস্যু ও পাতা ইত্যাদি দিয়ে ঢিলা করা জায়েয। তবে শুধু পানি ব্যবহার করার চেয়ে পাথর ও পানি একত্রে ব্যবহার করা উত্তম কাপড়ে অপবিত্রতা লাগলে তা পানি দিয়ে ধৌত করা ফরয। আর যদি অপবিত্র স্থান অজ্ঞাত থাকে তবে পুরো কাপড় পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে।
- বসে পেশাব করা সুন্নাত, তবে পেশাবের ছিটা থেকে নিরাপদ থাকলে দাঁড়িয়ে পেশাব করা মাকরূহ নয়।
অত্র হাদীসে 'অযু করা' বলতে শুধু অযুই উদ্দেশ্য নয়। যদি অযু করার পানি না পাওয়া যায় তবে 'তায়াম্মুম' সেখানে কার্যকর হয়ে যাবে।
হাদিস থেকে শিক্ষা
১. অপবিত্র ব্যক্তির সালাত পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত কবুল হবে না। সেটা ছোট অপবিত্রতা হোক কিংবা বড় অপবিত্রতা।
২. অপবিত্রতা অযু নষ্ট করে, অনুরূপভাবে তাতে সালাতও নষ্ট হয়, যদি সালাতরত অবস্থায় অপবিত্র হয়ে যায়।
৩. কবুল না হওয়ার অর্থ সালাত বিশুদ্ধ না হওয়া আদায় না হওয়া।
৪. হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, সালাতের জন্য পবিত্রতা শর্ত।
৫. পবিত্রতা ব্যতিত সালাত না হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত। অস্বাভাবিক অবস্থা এর ব্যতিক্রম। সুতরাং যারা পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি বা মাটি কিছুই পাবে না, তারা এ হাদীসের বাহ্যিক দাবি অনুযায়ী সালাত আদায় করবে না তা কিন্তু নয়। কারণ তখনও তাদেরকে সালাত আদায় করতে হবে; কারণ আল্লাহ তা'আলা বলেন, “তোমরা যতটুকু সম্ভব আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর।" [সূরা ৬৪; আত তাগাবুন ১৬]
بَاب فِي الصَّلاَةِ
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَقْبَلُ اللهُ صَلاَةَ أَحَدِكُمْ إِذَا أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said, "Allah does not accept prayer of anyone of you if he does Hadath (passes wind) till he performs the ablution (anew).