লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৭৮/১১৫. মুশরিকের কুন্ইয়াত।
وَقَالَ مِسْوَرٌ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ إِلاَّ أَنْ يُرِيدَ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ
মিসওয়ার (রাঃ) বলেন যে, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কিন্তু যদি ইবনু আবূ তালিব চায়।
৬২০৭. উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার উপর সাওয়ার ছিলেন। তখন তাঁর গায়ে একখানা ফাদাকী চাদর ছিল এবং তাঁর পেছনে উসামাহ বসাছিলেন। তিনি বদরের যুদ্ধের পূর্বে সা’দ ইবনু ’উবাদাহ (রাঃ) এর শুশ্রূষা করার উদ্দেশে হারিস ইবনু খাযরাজ গোত্র অভিমুখে রওয়ানা হচ্ছিলেন। তাঁরা চলতে চলতে এক মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। সেখানে ’আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূল ছিল। এটা ছিল ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উবাইর এর (প্রকাশ্যে) ইসলাম গ্রহণের আগের ঘটনা। মজলিসটি ছিল মিশ্রিত। এতে ছিলেন মুসলিম, মুশরিক, মূর্তিপূজকও ইয়াহূদী।
মুসলিমদের মধ্যে ’আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা ও ছিলেন। সাওয়ারীর চলার কারণে যখন উড়ন্ত ধূলাবালি মজলিসকে ঢেকে ফেলেছিল, তখন ইবনু উবাই তার চাদর দিয়ে তার নাক ঢেকে নিয়ে বললঃ তোমরা আমাদের উপর ধূলি উড়িওনা। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সালাম করলেন এবং সাওয়ারী থামিয়ে নামলেন। তারপর তিনি তাদের আল্লাহর দিকে দা’ওয়াত দিয়ে কুরআন পড়ে শোনালেন। তখন ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উবাই ইবনু সালূল তাঁকে বললঃ হে ব্যক্তি! আপনি যা বলেছেন যদি তা ঠিক হয়ে থাকে তবে তার চেয়ে উত্তম কথা আর কিছুই নেই। তবে আপনি আমাদের মজলিসসমূহে এসে আমাদের কষ্ট দিবেন না। যে আপনার কাছে যাবে, তাকেই আপনি নাসীহাত করবেন।
তখন ’আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা বললেনঃ না, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাদের মজলিসসমূহে আসবেন। আমরা আপনার এ বক্তব্য পছন্দ করি। তখন মজলিসের মুসলিম, মুশরিক ও ইয়াহূদীরা পরস্পর গালমন্দ করতে লাগল। এমনকি তাদের মধ্যে হাঙ্গামা হবার জোগাড় হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিবৃত্ত করতে লাগলেন, অবশেষে তারা চুপ করল। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে রওয়ানা হয়ে গেলেন এবং সা’দ ইবনু ’উবাদাহ (রাঃ) এর নিকট পৌঁছলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে সা’দ! আবূ হুবাব অর্থাৎ ’আবদুল্লাহ ইবনু উবাই আমাকে যা বলেছে, তা কি তুমি শোননি? সে এমন এমন কথা বলেছে।
তখন সা’দ ইবনু ’উবাদাহ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা আপনার প্রতি কুরবান, আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন এবং তার কথা ছেড়ে দিন। সেই সত্তার কসম! যিনি আপনার উপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলার তরফ থেকে আপনার প্রতি হক এমন সময় অবতীর্ণ হয়েছে, যখন এই শহরের অধিবাসীরা পরস্পর পরামর্শ করে স্থির করেছিল যে, তারা তাকে রাজ মুকুট পরাবে এবং (রাজকীয়) পাগড়ী তার মাথায় বাঁধবে। কিন্তু যখন আল্লাহ আপনাকে যে সত্য দিয়েছেন তা দিয়ে সেই সিদ্ধান্তকে বানচাল করে দিলেন, তখন সে এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে। এজন্যই সে আপনার সাথে এ ধরনের আচরণ করেছে যা আপনি দেখছেন। তারপর তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন। আর আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ তো এমনিই মুশরিক ও কিতাবীদের ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদের নির্যাতনে ধৈর্য ধারণ করতেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণীঃ ’’তোমরা নিশ্চয়ই তোমাদের আগের কিতাবধারীদের ও মুশরিকদের নিকট হতে দুঃখজনক অনেক কথা শুনবে.....। ’’ (সূরাহ আলে ’ইমরান ৩ঃ ১৮৬) শেষ পর্যন্ত। আল্লাহ আরো বলেছেন, ’’কিতাবীরা অনেকেই কামনা করে.....।’’ (সূরাহ আল-বাকারাহ ২ঃ ১০৯) তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তাদের ক্ষমা করতে থাকেন। অবশেষে তাঁকে তাদের সাথে জিহাদ করার অনুমতি দেয়া হয়। তারপর যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর অভিযান চালালেন, তখন এর মাধ্যমে আল্লাহ কাফির বীর পুরুষদের এবং কুরাইশ সরদারদের মধ্যে যারা নিহত হবার তাদের হত্যা করেন।
তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ বিজয় বেশে গনীমত নিয়ে ফিরলেন। তাঁদের সাথে কাফিরদের অনেক বাহাদুর ও কুরাইশদের অনেক নেতাও বন্দী হয়ে আসে। সে সময় ইবনু ’উবাই ইবনু সালূল ও তাঁর সাথী মূর্তিপূজক মুশরিকরা বললঃ এ ব্যাপার (অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম) তো প্রবল হয়ে পড়ছে। সুতরাং এখন তোমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে ইসলামের বায়’আত গ্রহণ কর। তারপর তারা সবাই ইসলাম গ্রহণ করল। [২৯৮৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬৬১)
بَاب كُنْيَةِ الْمُشْرِكِ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَخِي، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي عَتِيقٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ عَلَى حِمَارٍ عَلَيْهِ قَطِيفَةٌ فَدَكِيَّةٌ وَأُسَامَةُ وَرَاءَهُ، يَعُودُ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ فِي بَنِي حَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ قَبْلَ وَقْعَةِ بَدْرٍ، فَسَارَا حَتَّى مَرَّا بِمَجْلِسٍ فِيهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ابْنُ سَلُولَ، وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ، فَإِذَا فِي الْمَجْلِسِ أَخْلاَطٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُشْرِكِينَ عَبَدَةِ الأَوْثَانِ وَالْيَهُودِ، وَفِي الْمُسْلِمِينَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ، فَلَمَّا غَشِيَتِ الْمَجْلِسَ عَجَاجَةُ الدَّابَّةِ خَمَّرَ ابْنُ أُبَىٍّ أَنْفَهُ بِرِدَائِهِ وَقَالَ لاَ تُغَبِّرُوا عَلَيْنَا. فَسَلَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ، ثُمَّ وَقَفَ فَنَزَلَ فَدَعَاهُمْ إِلَى اللَّهِ وَقَرَأَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنَ، فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ابْنُ سَلُولَ أَيُّهَا الْمَرْءُ لاَ أَحْسَنَ مِمَّا تَقُولُ إِنْ كَانَ حَقًّا، فَلاَ تُؤْذِنَا بِهِ فِي مَجَالِسِنَا، فَمَنْ جَاءَكَ فَاقْصُصْ عَلَيْهِ. قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ فَاغْشَنَا فِي مَجَالِسِنَا فَإِنَّا نُحِبُّ ذَلِكَ. فَاسْتَبَّ الْمُسْلِمُونَ وَالْمُشْرِكُونَ وَالْيَهُودُ حَتَّى كَادُوا يَتَثَاوَرُونَ فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَخْفِضُهُمْ حَتَّى سَكَتُوا، ثُمَّ رَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَابَّتَهُ فَسَارَ حَتَّى دَخَلَ عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَىْ سَعْدُ أَلَمْ تَسْمَعْ مَا قَالَ أَبُو حُبَابٍ ـ يُرِيدُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ ـ قَالَ كَذَا وَكَذَا ". فَقَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ أَىْ رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ، اعْفُ عَنْهُ وَاصْفَحْ، فَوَالَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ لَقَدْ جَاءَ اللَّهُ بِالْحَقِّ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ، وَلَقَدِ اصْطَلَحَ أَهْلُ هَذِهِ الْبَحْرَةِ عَلَى أَنْ يُتَوِّجُوهُ وَيُعَصِّبُوهُ بِالْعِصَابَةِ، فَلَمَّا رَدَّ اللَّهُ ذَلِكَ بِالْحَقِّ الَّذِي أَعْطَاكَ شَرِقَ بِذَلِكَ فَذَلِكَ فَعَلَ بِهِ مَا رَأَيْتَ. فَعَفَا عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ يَعْفُونَ عَنِ الْمُشْرِكِينَ وَأَهْلِ الْكِتَابِ كَمَا أَمَرَهُمُ اللَّهُ، وَيَصْبِرُونَ عَلَى الأَذَى، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى (وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ) الآيَةَ، وَقَالَ (وَدَّ كَثِيرٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ) فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَأَوَّلُ فِي الْعَفْوِ عَنْهُمْ مَا أَمَرَهُ اللَّهُ بِهِ حَتَّى أَذِنَ لَهُ فِيهِمْ، فَلَمَّا غَزَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَدْرًا، فَقَتَلَ اللَّهُ بِهَا مَنْ قَتَلَ مِنْ صَنَادِيدِ الْكُفَّارِ، وَسَادَةِ قُرَيْشٍ، فَقَفَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ مَنْصُورِينَ غَانِمِينَ مَعَهُمْ أُسَارَى مِنْ صَنَادِيدِ الْكُفَّارِ وَسَادَةِ قُرَيْشٍ قَالَ ابْنُ أُبَىٍّ ابْنُ سَلُولَ، وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ عَبَدَةِ الأَوْثَانِ هَذَا أَمْرٌ قَدْ تَوَجَّهَ فَبَايِعُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الإِسْلاَمِ فَأَسْلَمُوا.
Narrated Usama bin Zaid:
That Allah's Messenger (ﷺ) rode over a donkey covered with a Fadakiya (velvet sheet) and Usama was riding behind him. He was visiting Sa`d bin 'Ubada (who was sick) in the dwelling place of Bani Al-Harith bin Al-Khazraj and this incident happened before the battle of Badr. They proceeded till they passed by a gathering in which `Abdullah bin Ubai bin Salul was present., and that was before `Abdullah bin Ubat embraced Islam. In that gathering there were Muslims, pagan idolators and Jews, and among the Muslims there was `Abdullah bin Rawaha. When a cloud of dust raised by (the movement of ) the animal covered that gathering, `Abdullah bin Ubai covered his nose with his garment and said, "Do not cover us with dust." Allah's Messenger (ﷺ) greeted them, stopped, dismounted and invited them to Allah (i.e. to embrace Islam) and recited to them the Holy Qur'an. On that `Abdullah bin Ubai bin Salul said to him, "O man! There is nothing better than what you say, if it is the truth. So do not trouble us with it in our gatherings, but if somebody comes to you, you can preach to him." On that `Abdullah bin Rawaha said "Yes, O Allah's Messenger (ﷺ)! Call on us in our gathering, for we love that." So the Muslims, the pagans and the Jews started abusing one another till they were about to fight with one another. Allah's Messenger (ﷺ) kept on quietening them till all of them became quiet, and then Allah's Messenger (ﷺ) rode his animal and proceeded till he entered upon Sa`d bin 'Ubada. Allah's Messenger (ﷺ) said, "O Sa`d! Didn't you hear what Abu Habab said?" (meaning `Abdullah bin Unbar). "He said so-and-so." Sa`d bin Ubada said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! Let my father be sacrificed for you ! Excuse and forgive him for, by Him Who revealed to you the Book, Allah sent the Truth which was revealed to you at the time when the people of this town had decided to crown him (`Abdullah bin Ubai) as their ruler. So when Allah had prevented that with the Truth He had given you, he was choked by that, and that caused him to behave in such an impolite manner which you had noticed." So Allah's Messenger (ﷺ) excused him. (It was the custom of) Allah's Messenger (ﷺ) and his companions to excuse the pagans and the people of the scripture (Christians and Jews) as Allah ordered them, and they used to be patient when annoyed (by them). Allah said: 'You shall certainly hear much that will grieve you from those who received the Scripture before you.....and from the pagans (3.186) He also said: 'Many of the people of the scripture wish that if they could turn you away as disbelievers after you have believed. .... (2.109) So Allah's Messenger (ﷺ) used to apply what Allah had ordered him by excusing them till he was allowed to fight against them. When Allah's Messenger (ﷺ) had fought the battle of Badr and Allah killed whomever He killed among the chiefs of the infidels and the nobles of Quraish, and Allah's Messenger (ﷺ) and his companions had returned with victory and booty, bringing with them some of the chiefs of the infidels and the nobles of the Quraish as captives. `Abdullah bin Ubai bin Salul and the pagan idolators who were with him, said, "This matter (Islam) has now brought out its face (triumphed), so give Allah's Messenger (ﷺ) the pledge of allegiance (for embracing Islam.)". Then they became Muslims.