লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৬৭/১০৮. আত্মমর্যাদাবোধ।
وَقَالَ وَرَّادٌ عَنِ الْمُغِيرَةِ قَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ لَوْ رَأَيْتُ رَجُلاً مَعَ امْرَأَتِي لَضَرَبْتُه“ بِالسَّيْفِ غَيْرَ مُصْفَحٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَتَعْجَبُونَ مِنْ غَيْرَةِ سَعْدٍ لأنَا أَغْيَرُ مِنْه“ وَاللهُ أَغْيَرُ مِنِّي.
সা’দ ইবনু ’উবাদাহ (রাঃ) বললেন, আমি যদি অন্য কোন পুরুষকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে দেখতে পাই; তাহলে আমি তাকে তরবারির ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব অর্থাৎ হত্যা করব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিগণকে বললেন, তোমরা কি সা’দের আত্মমর্যাদাবোধের কারণে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ? (আল্লাহর কসম!) আমার আত্মমর্যাদাবোধ তার চেয়েও অনেক অধিক এবং আল্লাহর আত্মমর্যাদাবোধ আমার চেয়েও অনেক অধিক।
৫২২০. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাশীল কেউ নয় এবং এ কারণেই তিনি সকল অশ্লীল কাজ হারাম করেছেন আর (আল্লাহর) প্রশংসার চেয়ে আল্লাহর অধিক প্রিয় কিছু নেই। [৪৬৩৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪০)
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। নিশ্চয় সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা তাঁর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা করা ভালবাসেন। এবং তিনি তাঁর আনুগত্য, উপাসনা এবং স্মরণের মাধ্যমে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার বিষয়টিকেও ভালবাসেন; তাই মুসলিম ব্যক্তির একটি উত্তম কাজ হলো এই যে, সে যেন তার পালনকর্তার অধিকতর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার কর্মে রত থাকে। যাতে তার পালনকর্তার সাথে তার সুসম্পর্ক সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত থাকে।
২। কোনো ব্যক্তি যখন সর্বশক্তিমান আল্লাহর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা করতে থাকে, আল্লাহ তখন তাকে পুণ্যবাণ বা পুণ্যাত্মা করে দেন; সুতরাং সেই ব্যক্তি এর দ্বারা নিজেই উপকৃত হয়ে থাকে। কেননা মহান আল্লাহ তো সৃষ্টিজগৎ হতে অভাবমুক্ত। কোনো ব্যক্তি মহান আল্লাহর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা করলে বা না করলে তাতে আল্লাহর কোনো মঙ্গলসাধন বা ক্ষতিসাধন হয় না।
৩। পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ কঠিন তীব্র ঈর্ষাপরায়ণ; সুতরাং তাঁর চেয়ে অধিকতর কঠিন তীব্র ঈর্ষাপরায়ণ আর কেউ নেই।
মহান আল্লাহ প্রকৃতপক্ষে ঈর্ষাপরায়ণ, এর মানে হলো এই যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ পছন্দ করেন না যে, কোনো মানুষের কোনো প্রকার অকল্যাণ হোক কিংবা ক্ষতিসাধন হোক অথবা তার প্রতি কোনো প্রকার আক্রমণ হোক বা তার কষ্ট হোক, তার ধর্মের দিক দিয়ে বা জানও মানের দিক দিয়ে কিংবা তার মন বা বুদ্ধির দিক দিয়ে; তাই মহান আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন: ব্যভিচার, চুরি, অপহরণ, সুদ, মাদক দ্রব্য সেবন করা এবং সমস্ত প্রকারের অশালীন আচরণ ও অনৈতিক পথ অবলম্বন করা।
৪। ন্যায় পন্থায় ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে সৎলোক এবং পুণ্যবান লোকের প্রশংসা করা একটি পুণ্যের কাজ এবং সৎকর্ম; সৎলোক এবং পুণ্যবান লোকের মর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।
৫। যখন অন্যায় পন্থায় অন্ধভাবে আন্দাজ করে কোনো অসৎলোকের প্রশংসা করা হবে কিংবা যে ব্যক্তি নিজের প্রশংসা শুনলে অহংকারে পড়ে যাবে, সেই লোকের বা ব্যক্তির প্রশংসা করা কোনো সময় বৈধ নয়; কেননা এই অন্যায় প্রশংসার দ্বারা সমাজের ক্ষতিসাধন হবে এবং যে ব্যক্তির কোনো মর্যাদা নেই বা সম্মান নেই, তাকে অন্যায়ভাবে মর্যাদা বা সম্মান দেওয়া হবে; এই অবস্থার কারণে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"إذَا رَأَيْتُمُ الْمَدََّاحِيْنَ فَاحْثُوْا فِيْ وُجُوْهِهِمُ التُّرَابَ".
(صحيح مسلم, رقم الحديث ৬৯- (৩০০২),).
অর্থ: “তোমরা যখন মানুষের সামনে প্রশংসাকারীদেরকে দেখতে পাবে, তখন তাদের মুখে মাটি রেখে দিবে”।
[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯ -(৩০০২) ]।
কিন্তু কোনো সৎলোক এবং পুণ্যবান লোকের সামনে ন্যায় পন্থায় তাঁর প্রশংসা করলে কোনো বাধা নেই; কেননা তিনি তো নিজের প্রশংসা শুনলে অহংকারে পড়ে যাবেন না; যেহেতু তাঁর মধ্যে পূর্ণরূপে তাকওয়া (অর্থাৎ: আল্লাহকে ভক্তিসহকারে ভয় করে তাঁর সঠিক ভক্ত হওয়ার বিষয়টি), বুদ্ধি এবং আল্লাহ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান বিদ্যমান রয়েছে।
بَاب الْغَيْرَةِ
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ شَقِيقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا مِنْ أَحَدٍ أَغْيَرُ مِنَ اللهِ مِنْ أَجْلِ ذ‘لِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ وَمَا أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ الْمَدْحُ مِنَ الله.ِ
Narrated `Abdullah bin Masud:
The Prophet, said, "There is none having a greater sense of Ghira than Allah. And for that He has forbidden the doing of evil actions (illegal sexual intercourse etc.) There is none who likes to be praised more than Allah does."