লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১০. অপবাদ রটনার ঘটনা এবং অপবাদ রটনাকারীর তাওবা কবুল হওয়া
৬৭৬৩। হিব্বান ইবনু মূসা, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল-হানযালী, মুহাম্মদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব, উরওয়া ইবনু যুবায়র, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস এবং উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উতবা ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা সকলেই আয়িশা (রাঃ) এর ঐ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন, অপবাদ রটনাকারীরা তাঁর ব্যাপারে যে অপবাদ রটনা করে বলোছিল। তারপর রটানো অপবাদ থেকে আল্লাহ তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলেন। বর্ণনাকারী যুহরী (রহঃ) বলেন, তারা সকলেই আমার নিকট হাদীসের এক এক অংশ বর্ণনা করেছেন। তাঁদের কেউ কেউ অন্যের তুলনায় উক্ত হাদীসের সুদৃঢ় হাফিয ছিলেন এবং তা উত্তমরূপে বর্ণনা করতে সক্ষম ছিলেন। তারা আমার নিকট যা বর্ণনা করেছেন, তাদের প্রত্যেকের বর্ণনা আমি যথাযথভাবে মুখস্থ করে রেখেছি। একের হাদীস অন্যের হাদীসকে সত্যায়ন করে।
তারা সকলেই আলোচনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনা আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সফরে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন তখন তিনি তাঁর স্ত্রীদের মাঝে লটারী দিতেন। যার নাম আসত তাকেই তিনি তাঁর সঙ্গে সফরে নিতেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এক যুদ্ধ-সফরের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লটারী দিলেন এবং এতে আমার নাম উঠল। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করি। পর্দার হুকুম নাযিল হবার পর এ যুদ্ধে আমি অংশ গ্রহন করেছিলাম। সাওয়ারী অবস্থায় আমি হাওদার ভিতরে থাকতাম এবং অবতরণ কালেও হাওদার ভিতর থাকতাম।
পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধ থেকে অব্যাহতির পর প্রত্যাবর্তন করে মদীনার নিকটবর্তী স্থানে পৌছার পর এক রাত্রে তিনি রওয়ানা হবার নির্দেশ দিলেন। লোকজন যখন রওয়ানা হবার ব্যাপারে ঘোষণা দিল, তখন আমি পথ চলতে লাগলাম; এমনকি আমি সৈন্যদেরকে ছাড়িয়ে চলে গেলাম। এরপর আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজন (প্রস্রাব পায়খানা) সেরে সাওয়ারীর নিকট এলাম এবং স্বীয় বুকে হাত দিয়ে দেখলাম, যিফারী পুতির তৈরী আমার হারটি হারিয়ে গিয়েছে। তাই পূর্বস্থানে ফিরে গিয়ে আমি আমার হারটি তালাশ করলাম। এতে আমার বিলম্ব হয়ে গেল। এদিকে হাওদা বহনকারী লোকজন এসে হাওদা উঠিয়ে আমায় বহনকারী উটের উপর রেখে দিল। তারা মনে করেছিল আমি হাওদার ভিতরেই আছি।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখনকার মহিলারা হালকা-পাতলা গড়নেরই হতো। না অধিক ভারী, না অধিক মোটা। কারণ তারা কম খাবার খেত। তাই উত্তোলনকালে হাওদার ওযন তাদের নিকট সাধারণ অবস্থা থেকে ব্যতিক্রম মনে হয়নি। অধিকন্তু তখন আমি অল্প বয়স্কা ছিলাম। অবশেষে লোকেরা উট দাঁড় করিয়ে পথ চলতে আরম্ভ করে দিল। সৈন্যদের রওয়ানা হয়ে যাবার পর আমি আমার হার পেলাম। তারপর আমি পূর্ববর্তী স্থানে ফিরে এসে দেখলাম, তথায় কোন জন-মানুষের আওয়াজ নেই আর সাড়া দেওয়ার মত কোন ব্যক্তিও তথায় নেই। তখন আমি ইচ্ছা করলাম, আমি যেখানে বসা ছিলাম সেখনেই বসে থাকব এবং আমি ভাবলাম, লোকেরা যখন খুঁজে আমাকে পাবে না তখন অবশ্যই তারা আমার সন্ধানে আমার নিকট ফিরে আসবে।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি আমার জায়গায়, উপবিষ্ট অবস্থায় আমার ঘুম এল আর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। সাফওয়ান ইবনু মুয়াত্তাল আস-সুলামী আয যাকওয়ানী (রাঃ) নামক এক ব্যক্তি ছিল। (বিশেষ দায়িত্ব পালনে সে) সৈন্যদের পেছনে শেষ রাত্রে সে আগের জায়গায়ই রয়ে গিয়েছিল। পরে সে রওয়ানা হয়ে প্রত্যুষে আমার স্থানে পৌছল। দূর থেকে সে একটি মানব দেহ দেখতে পেয়ে আমার নিকট এলেন এবং আমাকে দেখে সে চিনে ফেলল। কেননা পর্দার হুকুম নাযিল হওযার পূর্বে সে আমাকে দেখেছিল। আমাকে চিনে সে “ইন্না লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজিঊন” পড়লে তাঁর ইন্না লিল্লাহ এর আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তৎক্ষনাৎ আমি আমার চাদর দিয়ে স্বীয় মুখমণ্ডল আবৃত করে নিলাম। আল্লাহর কসম! সে আমার সাথে কোন কথা বলেনি এবং “ইন্না লিল্লাহ” ... পাঠ ছাড়া তার কোন কথাই আমি শুনিনি।
তারপর সে তার উট বসিয়ে স্বীয় হস্ত বিছিয়ে দিলে আমি তার উটের পৃষ্ঠে উঠলাম। আর সে পায়ে হেঁটে আমাকে সহ উট হাকিয়ে চলল। যেতে যেতে আমরা সৈন্য দলের নিকট গিয়ে পৌছলাম। তখন তারা দ্বিপ্রহরের প্রচণ্ড রোদের মাঝে সাওয়ারী থেকে অবতরণ করে ভূমিতে অবস্থান করছিল। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমার বিষয়ে যারা ধ্বংস হবার তারা ধ্বংস হয়ে গেল। এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সাহল। অবশেষে আমরা মদীনায় পৌছলাম। মদীনায় পৌছার পর এক মাস পর্যন্ত আমি অসুস্থ ছিলাম। এদিকে মদীনার লোকজন অপবাদ রটনাকারীদের কথা গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখতে লাগল। এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানতে পারিনি। তবে এ রুগ্ন অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে পূর্বের ন্যায় স্নেহ না পাওয়ার ফলে আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছিল।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহে প্রবেশ করে কেবল সালাম করে বলতেন, তোমাদের সে (আয়শা) কেমন আছে? এ আচরণ আমাকে সন্দিহান করে তুলল। আমি সে (মন্দ) বিষয়টি সমন্ধে জানতাম না। তারপর রোগ মুক্ত হবার পর আমি বের হলাম। আমার সাথে মিসতাহ এর আম্মাও ’মানাসি’ প্রান্তরের দিকে বের হল। সেটি ছিল আমাদের শৌচাগার। আমরা রাত্রে বের হতাম এবং রাত্রেই চলে আসতাম। এ হল আমাদের ঘরের কাছে শৌচাগর নির্মাণের পূর্ববর্তী সময়ের ঘটনা। তখন আগের দিনের আরব লোকদের মত ময়দানে গিয়ে আমরা শৌচকার্য সারতাম। আর আমরা ঘরের কাছে শৌচাগার নির্মাণ করা অপছন্দ করতাম।
আমি এবং মিসতাহ-এর আম্মা যেতে লাগলাম। সে ছিল আবূ রুহম ইবনু মুত্তালিব ইবনু আবদ মানাফের কন্যা এবং তার মা ছিলেন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর খালা সাখর ইবনু আমির এর কন্যা। তার সন্তানের নাম ছিল মিসতাহ ইবনু উসাসা ইবনু আব্বাদ ইবনু মুত্তালিব। মোটকথা, আমি ও বিনতি আবূ রুহম (মিসতাহ এর আম্মা।) নিজ নিজ শৌচকার্য সেরে বাড়ীর দিকে রওয়ানা হলাম। এমন সময় মিসতাহ এর আম্মা নিজ চাঁদরে পেঁচ খেয়ে হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। আর সে বলে উঠে মিসতাহ ধ্বংস হোক। তখন আমি বললাম, তুমি অন্যায় কথা বলেছ। তুমি কি বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী ব্যক্তিকে মন্দ বকছ? সে বলল, হে অবলা নারী! মিসতাহ কি বলেছে তুমি কি শোননি? আমি বললাম, সে কি বলেছে?
আয়িশা (রাঃ) বলেন, তারপর সে অপবাদ রটনাকারীরা কি বলেছে, সে সম্পর্কে আমাকে সংবাদ দিল। এতে আমার রোগ কয়েক গুন বেড়ে গেল। আমি যখন বাড়ীতে ফিরে এলাম, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গৃহে প্রবেশ করে আমাকে সালাম করলেন এবং বললেন, সে কেমন আছে? তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি আমাকে আমার বাবা-মায়ের বাড়ীতে যাওয়ার অনুমতি দিবেন? আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আমি আমার বাবা-মায়ের বাড়ী গিয়ে এ বিষয়টির অনুসন্ধান করার ইচ্ছা করেছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি আমার মাতা-পিতার নিকট চলে এলাম।
তারপর আমি আমার আম্মাকে বললাম, আব্বা জান! লোকেরা কী কথা বলছে? তিনি বললেন, মা! (এদিকে কান দিয়োনা এবং) নিজের জন্য সহজভাবে গ্রহন কর (শান্ত থাক)। আল্লাহর কসম! কারো যদি কোন সুন্দরী স্ত্রী থাকে ও সে তাকে ভালবাসে আর ঐ মহিলার কোন সতীনও থাকে তবে সতীনরা তার দোষচর্চা করবেনা এরুপ খুব কমই হয়। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! লোকেরা এ কথা রটাতে আরম্ভ করেছে? তারপর কেঁদে কেঁদে আমি সারা রাত্র কাটালাম। এমনকি ভোরেও আমার অশ্রু বন্ধ হলো না। আমি ঘুমোতে পারিনি। সকালেও আমি কাঁদছিলাম। এদিকে আমাকে তালাক দেয়ার ব্যাপারে পরামর্শ করার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এবং উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) কে ডাকলেন। তখন ওয়াহী স্থগিত ছিল।
তিনি বলেন, উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবীদের সতীত্ব এবং তাদের সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালবাসা সম্পর্কে যা জানতেন সে দিকেই তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ইঙ্গিত দিলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আয়িশা আপনার স্ত্রী, ভাল ব্যতীত তাঁর সমন্ধে কোন কথাই আমাদের জানা নেই। আর আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তো আপনার উপর কোন সংকীর্ণতা চাপিয়ে দেননি। সর্বোপরি আয়িশা (রাঃ) ছাড়াও বহু স্ত্রীলোক আছে। আপনি যদি দাসী (বারীরা) কে জিজ্ঞাসা করেন তবে সে সত্য বলে দিবে।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারীরা (রাঃ) কে ডেকে বললেন, হে বারীরা! সন্দেহমূলক কোন কাজে আয়িশাকে তুমি কখনো দেখেছ কি? বারীরা (রাঃ) তাঁকে বললেন, ঐ সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য পয়গাম্বর হিসাবে প্রেরণ করেছেন, আমি যদি তার মাঝে কোন কিছু দেখতাম তবে অবশ্যই এর দোষ আমি বর্ণনা করতাম। তবে সে একজন অল্প বয়স্কা মেয়ে। পরিবারের জন্য আটার খামীর রেখেই সে ঘুমিয়ে পড়তো আর বকরী এসে তা খেয়ে ফেলতো। এ দোষ ব্যতীত অধিক কোন দোষ আয়িশার মধ্যে আছে বলে আমার জানা নেই।
তিনি বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূল এর আচরনের ব্যাপারে কে আমাকে সহায়তা করবে এবং শাস্তি দিলে কে আমাকে সমর্থন করবে......। তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়! আমার পরিবার সম্পর্কে যে ব্যক্তির পক্ষ থেকে কষ্টদায়ক কথা পৌঁছেছে তার প্রতিশোধ গ্রহণ করার ব্যপারে কে আমাকে সহায়তা (সহায়তা) করবে? আমি তো (তদন্ত করে) আমার পরিবার সম্পর্কে ভাল ব্যতীত অন্য কোন কথা জানি নি এবং যে ব্যক্তি সম্পর্কে তারা অপবাদ রটনা করছে তাকেও আমি নেক্বকার বলেই জানি। সে তো আমার সঙ্গ ব্যতীত আমার গৃহে কখনো প্রবেশ করতো না।
এ কথা শুনে সা’ন ইবনু মু’আয আনসারী (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আপনার পক্ষ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করব। অপবাদ রটনাকারী ব্যক্তি যদি আউস গোত্রের হয় তবে আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেব। আর যদি সে আমাদের ভ্রাতা খাযরাজ গোত্রের হয় তবে আপনি আমাদের নির্দেশ দিন। আমরা আপনার নির্দেশ পালন করব। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন খাযরাজ সর্দার সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) দাঁড়ালেন। তিনি একজন নেককার লোক ছিলেন। তবে তখন বংশীয় অহমিকা তাকে ক্রোধে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল।
তাই তিনি সা’দ ইবনু মু’আয কে বললেন, আল্লাহর কসম! তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি তাকে হত্যা করো না। তুমি তাকে হত্যা করতে পারবেনা। একথা শুনে সা’দ ইবনু মুআয (রাঃ) এর চাচাতো ভাই উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) দাঁড়িয়ে সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) কে বললেন, তুমি মিথ্যা বলছো। আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাকে হত্যা করব। অবশ্যই তুমি মুনাফিক। তাই মুনাফিকদের পক্ষে কথা বলছো। এ সময় আউস ও খাযরাজ উভয় গোত্রের লোকেরা পরস্পর উত্তেজিত হয়ে উঠল। এমনকি তারা যুদ্ধের সংকল্প করে বসলো। অথচ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখনও তাদের সামনে মিম্বরে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিলেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে থামিয়ে শান্ত করলেন। তারা চুপ হলো এবং তিনি নিজেও আর কোন কথা বললেন না। আয়িশা (রাঃ) বলেন, সেদিন আমি সারাক্ষণ কেঁদে কাটালাম। অবিরত ধারায় আমার অশ্রুপাত হচ্ছিল। রাত্রে একটুও আমার ঘুম আসল না। অতঃপর রাতেও আমি কেঁদে কাটালাম। এরাতেও অবিরত আমার অশ্রুপাত হল এবং একটুকুও ঘুমাতে পারলাম না। এ দেখে আমার আব্বা-আম্মা মনে করছিলেন যে, কান্নায় আমার হৃদপিন্ড বিদীর্ন হয়ে যাবে। আমি ক্রন্দনরত ছিলাম, আমার আব্বা-আম্মা আমার পাশে উপবিষ্ট ছিলেন। এমতাবস্থায় একজন আনসার স্ত্রীলোক আমার নিকট আসার অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি দিলাম। সে এসে বসে কাঁদতে লাগল।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমাদের যখন এ অবস্থা এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট প্রবেশ করলেন এবং আমাদেরকে সালাম করে বসলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, অথচ আমার সমন্ধে যা বলাবলি হচ্ছে তারপর থেকে তিনি আমার কাছে বসেননি। এভাবে এক মাস চলে গেল। আমার বিষয়ে তার নিকট কোন ওহী এল না। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে তাশাহুদ পাঠ করলেন। তারপর বললেন, যা হোক হে আয়িশা! তোমার সম্পর্কে আমার নিকট এমন এমন সংবাদ পৌছেছে। যদি তুমি এ ব্যাপারে নিষ্পাপ এবং পবিত্র হও তবে আল্লাহ তাআলা তোমার পবিত্রতার ব্যাপারে ঘোষণা করবেন। আর যদি তোমার দ্বারা কোন গুনাহ হয়ে থাকে তবে তুমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা এবং তাওবা কর। কেননা বান্দা গুনাহ স্বীকার করে তাওবা করলে আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার কথা শেষ করলেন, তখন আমার অশ্রুপাত বন্ধ হয়ে গেল। এমনকি এরপর আর এক ফোটা অশ্রুও আমি অনুভব করলাম না। এরপর আমি আমার পিতাকে বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বললেন, আমার পক্ষ থেকে তার জবাব দিন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কি জবাব দিব, আমি তা জানি না। তারপর আমি আমার আম্মাকে বললাম, আমার পক্ষ থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জবাব দিন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি জবাব দিব, আমি তা জানি না। আমি বললাম, তখন আমি ছিলাম অল্প বয়স্কা কিশোরী। কুরআন শরীফও খুব বেশী পড়িনি।
এ অবস্থা দেখে আমিই তখন বললাম, আল্লাহর কসম! আমি জানি, আপনারা এ অপবাদের কথা শুনেছেন, মনে তা গেঁখে গিয়েছে এবং আপনারা তা বিশ্বাস করে নিয়েছেন। সুতরাং এখন যদি আমি বলি, আমি নিষ্কলুষ তবে এ বিষয়ে আপনারা আমাকে বিশ্বাস করবেন না। আর যদি আমি স্বীকার করি, যে সম্পর্কে আল্লাহ জানেন যে, আমি নিস্পাপ, তবে আপনারা তা বিশ্বাস করবেন। আল্লাহর কসম! আমার ও আপনাদের জন্য (নবী) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর পিতার কথার উদাহরণ ব্যতীত অন্য কোন উদাহরণ আমি খুজে পাচ্ছি না। তিনি বলেছিলেন, “সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছো সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার আশ্রয়স্থল।” এ কথা বলে আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম এবং বিছানায় শুয়ে পড়লাম।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তো ঐ মুহুর্তেও জানেন যে, আমি অবশ্যই নিষ্পাপ এবং অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমার পবিত্রতা প্রকাশ করে দিবেন। তবে আল্লাহর কসম! আমি ধারণা করিনিম যে, আল্লাহ আমার এ বিষয়ে ওয়াহী নাযিল করবেন, যা পঠিত হবে। কেননাআল্লাহ কর্তৃক আমার সমন্ধে পঠিত হবার মত কোন আয়াত নাযিল করবেন আমার নিজের কাছে আমার অবস্থা এর চেয়ে তুচ্ছতর ছিল। তবে আমি আশা করেছিলাম যে, স্বপ্নের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমন কোন বিষয় দেখানো হবে যার দ্বারা আল্লাহ তা’আলা আমার পবিত্রতা জানিয়ে দিবেন।
আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখনো তাঁর স্থান ছেড়ে উঠেননি এবং বাড়ীর লোকও কেউ বাইরে যায়নি। এ সময় আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবীর উপর ওয়াহী নাযিল করেন। ওয়াহী নাযিলের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যে কষ্টকর অবস্থা দেখা দিত সে অবস্থা দেখা দিলো। এমনকি তার প্রতি নাযিলকৃত বাণীর ওযনের কারণে প্রচণ্ড শীতের দিনেও তার দেহ থেকে মুক্তার মত বিন্দু বিন্দু ঘাম গড়িয়ে পড়তো।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কষ্টকর অবস্থা চলে গেলে তিনি হাসতে লাগলেন এবং প্রথমে যে কথাটি বললেন তা হলোঃ হে আয়িশা! সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করেছেন। এ কথা শুনে আমার আম্মা আমাকে বললেন, তুমি উঠে তার (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে যাও। আমি বললাম, আমি উঠে তার কাছে যাব না এবং আল্লাহ ছাড়া আর কারো প্রশংসা করবো না। তিনই আমার পবিত্রতা সম্পর্কিত আয়াত নাযিল করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা আমার পবিত্রতা সম্বন্ধে দশটি আয়াত নাযিল করেছেন।
"যারা অপবাদ রটনা করেছে তারা তো তোমাদেরই একটি দল একে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করোনা; বরং এ তো তোমাদের জন্য কল্যাণকর।" (সূরা নুরঃ ১১-২১) ...... আয়িশা (রাঃ) বলেন, আত্নীয় বন্ধন ও দারিদ্র্যের কারণে আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) মিসতাহকে আর্থিক সহযোগিতা করতেন। কিন্ত্বু আয়িশা সম্পর্কে সে যা বলেছিল সে কারণে আবূ বকর (রাঃ) কসম করে বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আর কখনো মিসতাহকে আর্থিক সাহায্য দিবনা। তখন আল্লাহ তায়ালা নাযিল করলেনঃ “তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা দান করবে না আত্মীয় স্বজনকে ... ... ...। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করেন, পর্যন্ত।
হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক (রহঃ) বলেছেন, আল কুরআনের মাঝে এ আয়াত বড়ই আশাব্যঞ্জক। সুতরাং আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই পছন্দ করি যে, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিন। এরপর তিনি মিসতাহ (রাঃ) এর জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেন তা পূনরায় ব্যয় করতে আরম্ভ করলেন। আর বললেন, তাকে আমি এ অর্থ দেওয়া কখনো বন্ধ করবো না।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রী যয়নাব বিনত জাহশ (রাঃ) কে আমার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি যয়নাবকে বলেছিলেন, তুমি আয়িশা সম্পর্কে কি জানো বা দেখেছো? উত্তরে তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আমার কান ও চোখকে রক্ষা করেছি। আল্লাহর কসম! তাঁর সম্পর্কে আমি ভাল ছাড়া কিছুই জানিনা। আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সহধর্মিনাদের মধ্যে তিনি সমকক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ ভীতির দ্বারা আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছেন। অথচ তার বোন হামানা বিনত জাহশ তাঁর পক্ষ অবলম্বন করে বিবাদ-বিতণ্ডা করে, আর এভাবে সে ধ্বংসপ্রাপ্তদের সাথে ধ্বংস হয়ে যায়।
রাবী ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, ঐ লোকদের কাছ থেকে আমার নিকট যা পৌছেছে তা এই হাদীস। তবে রাবী ইউনূসের হাদীসের মধ্যে اجْتَملَتْهُ এর স্থলে احْتَمَلَتْهُ রয়েছে, গোত্রীয় অহমিকা তাকে উত্তেজিত করে।
باب فِي حَدِيثِ الإِفْكِ وَقَبُولِ تَوْبَةِ الْقَاذِفِ
حَدَّثَنَا حَبَّانُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، الأَيْلِيُّ ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، وَالسِّيَاقُ، حَدِيثُ مَعْمَرٍ مِنْ رِوَايَةِ عَبْدٍ وَابْنِ رَافِعٍ قَالَ يُونُسُ وَمَعْمَرٌ جَمِيعًا عَنِ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ وَعُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ وَعَلْقَمَةُ بْنِ وَقَّاصٍ وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَالَ لَهَا أَهْلُ الإِفْكِ مَا قَالُوا فَبَرَّأَهَا اللَّهُ مِمَّا قَالُوا وَكُلُّهُمْ حَدَّثَنِي طَائِفَةً مِنْ حَدِيثِهَا وَبَعْضُهُمْ كَانَ أَوْعَى لِحَدِيثِهَا مِنْ بَعْضٍ وَأَثْبَتَ اقْتِصَاصًا وَقَدْ وَعَيْتُ عَنْ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمُ الْحَدِيثَ الَّذِي حَدَّثَنِي وَبَعْضُ حَدِيثِهِمْ يُصَدِّقُ بَعْضًا ذَكَرُوا أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ سَفَرًا أَقْرَعَ بَيْنَ نِسَائِهِ فَأَيَّتُهُنَّ خَرَجَ سَهْمُهَا خَرَجَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَعَهُ - قَالَتْ عَائِشَةُ - فَأَقْرَعَ بَيْنَنَا فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا فَخَرَجَ فِيهَا سَهْمِي فَخَرَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَذَلِكَ بَعْدَ مَا أُنْزِلَ الْحِجَابُ فَأَنَا أُحْمَلُ فِي هَوْدَجِي وَأُنْزَلُ فِيهِ مَسِيرَنَا حَتَّى إِذَا فَرَغَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوِهِ وَقَفَلَ وَدَنَوْنَا مِنَ الْمَدِينَةِ آذَنَ لَيْلَةً بِالرَّحِيلِ فَقُمْتُ حِينَ آذَنُوا بِالرَّحِيلِ فَمَشَيْتُ حَتَّى جَاوَزْتُ الْجَيْشَ فَلَمَّا قَضَيْتُ مِنْ شَأْنِي أَقْبَلْتُ إِلَى الرَّحْلِ فَلَمَسْتُ صَدْرِي فَإِذَا عِقْدِي مِنْ جَزْعِ ظَفَارِ قَدِ انْقَطَعَ فَرَجَعْتُ فَالْتَمَسْتُ عِقْدِي فَحَبَسَنِي ابْتِغَاؤُهُ وَأَقْبَلَ الرَّهْطُ الَّذِينَ كَانُوا يَرْحَلُونَ لِي فَحَمَلُوا هَوْدَجِي فَرَحَلُوهُ عَلَى بَعِيرِيَ الَّذِي كُنْتُ أَرْكَبُ وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنِّي فِيهِ - قَالَتْ - وَكَانَتِ النِّسَاءُ إِذْ ذَاكَ خِفَافًا لَمْ يُهَبَّلْنَ وَلَمْ يَغْشَهُنَّ اللَّحْمُ إِنَّمَا يَأْكُلْنَ الْعُلْقَةَ مِنَ الطَّعَامِ فَلَمْ يَسْتَنْكِرِ الْقَوْمُ ثِقَلَ الْهَوْدَجِ حِينَ رَحَلُوهُ وَرَفَعُوهُ وَكُنْتُ جَارِيَةً حَدِيثَةَ السِّنِّ فَبَعَثُوا الْجَمَلَ وَسَارُوا وَوَجَدْتُ عِقْدِي بَعْدَ مَا اسْتَمَرَّ الْجَيْشُ فَجِئْتُ مَنَازِلَهُمْ وَلَيْسَ بِهَا دَاعٍ وَلاَ مُجِيبٌ فَتَيَمَّمْتُ مَنْزِلِي الَّذِي كُنْتُ فِيهِ وَظَنَنْتُ أَنَّ الْقَوْمَ سَيَفْقِدُونِي فَيَرْجِعُونَ إِلَىَّ فَبَيْنَا أَنَا جَالِسَةٌ فِي مَنْزِلِي غَلَبَتْنِي عَيْنِي فَنِمْتُ وَكَانَ صَفْوَانُ بْنُ الْمُعَطَّلِ السُّلَمِيُّ ثُمَّ الذَّكْوَانِيُّ قَدْ عَرَّسَ مِنْ وَرَاءِ الْجَيْشِ فَادَّلَجَ فَأَصْبَحَ عِنْدَ مَنْزِلِي فَرَأَى سَوَادَ إِنْسَانٍ نَائِمٍ فَأَتَانِي فَعَرَفَنِي حِينَ رَآنِي وَقَدْ كَانَ يَرَانِي قَبْلَ أَنْ يُضْرَبَ الْحِجَابُ عَلَىَّ فَاسْتَيْقَظْتُ بِاسْتِرْجَاعِهِ حِينَ عَرَفَنِي فَخَمَّرْتُ وَجْهِي بِجِلْبَابِي وَوَاللَّهِ مَا يُكَلِّمُنِي كَلِمَةً وَلاَ سَمِعْتُ مِنْهُ كَلِمَةً غَيْرَ اسْتِرْجَاعِهِ حَتَّى أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ فَوَطِئَ عَلَى يَدِهَا فَرَكِبْتُهَا فَانْطَلَقَ يَقُودُ بِي الرَّاحِلَةَ حَتَّى أَتَيْنَا الْجَيْشَ بَعْدَ مَا نَزَلُوا مُوغِرِينَ فِي نَحْرِ الظَّهِيرَةِ فَهَلَكَ مَنْ هَلَكَ فِي شَأْنِي وَكَانَ الَّذِي تَوَلَّى كِبْرَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ابْنُ سَلُولَ فَقَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فَاشْتَكَيْتُ حِينَ قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ شَهْرًا وَالنَّاسُ يُفِيضُونَ فِي قَوْلِ أَهْلِ الإِفْكِ وَلاَ أَشْعُرُ بِشَىْءٍ مِنْ ذَلِكَ وَهُوَ يَرِيبُنِي فِي وَجَعِي أَنِّي لاَ أَعْرِفُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اللُّطْفَ الَّذِي كُنْتُ أَرَى مِنْهُ حِينَ أَشْتَكِي إِنَّمَا يَدْخُلُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيُسَلِّمُ ثُمَّ يَقُولُ " كَيْفَ تِيكُمْ " . فَذَاكَ يَرِيبُنِي وَلاَ أَشْعُرُ بِالشَّرِّ حَتَّى خَرَجْتُ بَعْدَ مَا نَقِهْتُ وَخَرَجَتْ مَعِي أُمُّ مِسْطَحٍ قِبَلَ الْمَنَاصِعِ وَهُوَ مُتَبَرَّزُنَا وَلاَ نَخْرُجُ إِلاَّ لَيْلاً إِلَى لَيْلٍ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنَّ نَتَّخِذَ الْكُنُفَ قَرِيبًا مِنْ بُيُوتِنَا وَأَمْرُنَا أَمْرُ الْعَرَبِ الأُوَلِ فِي التَّنَزُّهِ وَكُنَّا نَتَأَذَّى بِالْكُنُفِ أَنْ نَتَّخِذَهَا عِنْدَ بُيُوتِنَا فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ وَهِيَ بِنْتُ أَبِي رُهْمِ بْنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ مَنَافٍ وَأُمُّهَا ابْنَةُ صَخْرِ بْنِ عَامِرٍ خَالَةُ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَابْنُهَا مِسْطَحُ بْنُ أُثَاثَةَ بْنِ عَبَّادِ بْنِ الْمُطَّلِبِ فَأَقْبَلْتُ أَنَا وَبِنْتُ أَبِي رُهْمٍ قِبَلَ بَيْتِي حِينَ فَرَغْنَا مِنْ شَأْنِنَا فَعَثَرَتْ أُمُّ مِسْطَحٍ فِي مِرْطِهَا فَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ . فَقُلْتُ لَهَا بِئْسَ مَا قُلْتِ أَتَسُبِّينَ رَجُلاً قَدْ شَهِدَ بَدْرًا . قَالَتْ أَىْ هَنْتَاهُ أَوَلَمْ تَسْمَعِي مَا قَالَ قُلْتُ وَمَاذَا قَالَ قَالَتْ فَأَخْبَرَتْنِي بِقَوْلِ أَهْلِ الإِفْكِ فَازْدَدْتُ مَرَضًا إِلَى مَرَضِي فَلَمَّا رَجَعْتُ إِلَى بَيْتِي فَدَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ " كَيْفَ تِيكُمْ " . قُلْتُ أَتَأْذَنُ لِي أَنْ آتِيَ أَبَوَىَّ قَالَتْ وَأَنَا حِينَئِذٍ أُرِيدُ أَنْ أَتَيَقَّنَ الْخَبَرَ مِنْ قِبَلِهِمَا . فَأَذِنَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُ أَبَوَىَّ فَقُلْتُ لأُمِّي يَا أُمَّتَاهْ مَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ فَقَالَتْ يَا بُنَيَّةُ هَوِّنِي عَلَيْكِ فَوَاللَّهِ لَقَلَّمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ قَطُّ وَضِيئَةٌ عِنْدَ رَجُلٍ يُحِبُّهَا وَلَهَا ضَرَائِرُ إِلاَّ كَثَّرْنَ عَلَيْهَا - قَالَتْ - قُلْتُ سُبْحَانَ اللَّهِ وَقَدْ تَحَدَّثَ النَّاسُ بِهَذَا قَالَتْ فَبَكَيْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ حَتَّى أَصْبَحْتُ لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ ثُمَّ أَصَبَحْتُ أَبْكِي وَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ وَأُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ حِينَ اسْتَلْبَثَ الْوَحْىُ يَسْتَشِيرُهُمَا فِي فِرَاقِ أَهْلِهِ - قَالَتْ - فَأَمَّا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَأَشَارَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالَّذِي يَعْلَمُ مِنْ بَرَاءَةِ أَهْلِهِ وَبِالَّذِي يَعْلَمُ فِي نَفْسِهِ لَهُمْ مِنَ الْوُدِّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هُمْ أَهْلُكَ وَلاَ نَعْلَمُ إِلاَّ خَيْرًا . وَأَمَّا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ لَمْ يُضَيِّقِ اللَّهُ عَلَيْكَ وَالنِّسَاءُ سِوَاهَا كَثِيرٌ وَإِنْ تَسْأَلِ الْجَارِيَةَ تَصْدُقْكَ - قَالَتْ - فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَرِيرَةَ فَقَالَ " أَىْ بَرِيرَةُ هَلْ رَأَيْتِ مِنْ شَىْءٍ يَرِيبُكِ مِنْ عَائِشَةَ " . قَالَتْ لَهُ بَرِيرَةُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ إِنْ رَأَيْتُ عَلَيْهَا أَمْرًا قَطُّ أَغْمِصُهُ عَلَيْهَا أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ تَنَامُ عَنْ عَجِينِ أَهْلِهَا فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ - قَالَتْ - فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمِنْبَرِ فَاسْتَعْذَرَ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ ابْنِ سَلُولَ - قَالَتْ - فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ " يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ مَنْ يَعْذِرُنِي مِنْ رَجُلٍ قَدْ بَلَغَ أَذَاهُ فِي أَهْلِ بَيْتِي فَوَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِي إِلاَّ خَيْرًا وَلَقَدْ ذَكَرُوا رَجُلاً مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ إِلاَّ خَيْرًا وَمَا كَانَ يَدْخُلُ عَلَى أَهْلِي إِلاَّ مَعِي " . فَقَامَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ الأَنْصَارِيُّ فَقَالَ أَنَا أَعْذِرُكَ مِنْهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ كَانَ مِنَ الأَوْسِ ضَرَبْنَا عُنُقَهُ وَإِنْ كَانَ مِنْ إِخْوَانِنَا الْخَزْرَجِ أَمَرْتَنَا فَفَعَلْنَا أَمْرَكَ - قَالَتْ - فَقَامَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ وَهُوَ سَيِّدُ الْخَزْرَجِ وَكَانَ رَجُلاً صَالِحًا وَلَكِنِ اجْتَهَلَتْهُ الْحَمِيَّةُ فَقَالَ لِسَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللَّهِ لاَ تَقْتُلُهُ وَلاَ تَقْدِرُ عَلَى قَتْلِهِ . فَقَامَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ وَهُوَ ابْنُ عَمِّ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فَقَالَ لِسَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ كَذَبْتَ لَعَمْرُ اللَّهِ لَنَقْتُلَنَّهُ فَإِنَّكَ مُنَافِقٌ تُجَادِلُ عَنِ الْمُنَافِقِينَ فَثَارَ الْحَيَّانِ الأَوْسُ وَالْخَزْرَجُ حَتَّى هَمُّوا أَنْ يَقْتَتِلُوا وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ عَلَى الْمِنْبَرِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُخَفِّضُهُمْ حَتَّى سَكَتُوا وَسَكَتَ - قَالَتْ - وَبَكَيْتُ يَوْمِي ذَلِكَ لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ ثُمَّ بَكَيْتُ لَيْلَتِي الْمُقْبِلَةَ لاَ يَرْقَأُ لِي دَمْعٌ وَلاَ أَكْتَحِلُ بِنَوْمٍ وَأَبَوَاىَ يَظُنَّانِ أَنَّ الْبُكَاءَ فَالِقٌ كَبِدِي فَبَيْنَمَا هُمَا جَالِسَانِ عِنْدِي وَأَنَا أَبْكِي اسْتَأْذَنَتْ عَلَىَّ امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَأَذِنْتُ لَهَا فَجَلَسَتْ تَبْكِي - قَالَتْ - فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ ثُمَّ جَلَسَ - قَالَتْ - وَلَمْ يَجْلِسْ عِنْدِي مُنْذُ قِيلَ لِي مَا قِيلَ وَقَدْ لَبِثَ شَهْرًا لاَ يُوحَى إِلَيْهِ فِي شَأْنِي بِشَىْءٍ - قَالَتْ - فَتَشَهَّدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ جَلَسَ ثُمَّ قَالَ " أَمَّا بَعْدُ يَا عَائِشَةُ فَإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنِي عَنْكِ كَذَا وَكَذَا فَإِنْ كُنْتِ بَرِيئَةً فَسَيُبَرِّئُكِ اللَّهُ وَإِنْ كُنْتِ أَلْمَمْتِ بِذَنْبٍ فَاسْتَغْفِرِي اللَّهَ وَتُوبِي إِلَيْهِ فَإِنَّ الْعَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ بِذَنْبٍ ثُمَّ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ " . قَالَتْ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَقَالَتَهُ قَلَصَ دَمْعِي حَتَّى مَا أُحِسُّ مِنْهُ قَطْرَةً فَقُلْتُ لأَبِي أَجِبْ عَنِّي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيمَا قَالَ . فَقَالَ وَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا أَقُولُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لأُمِيِّ أَجِيبِي عَنِّي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ وَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا أَقُولُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ وَأَنَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ لاَ أَقْرَأُ كَثِيرًا مِنَ الْقُرْآنِ إِنِّي وَاللَّهِ لَقَدْ عَرَفْتُ أَنَّكُمْ قَدْ سَمِعْتُمْ بِهَذَا حَتَّى اسْتَقَرَّ فِي نُفُوسِكُمْ وَصَدَّقْتُمْ بِهِ فَإِنْ قُلْتُ لَكُمْ إِنِّي بَرِيئَةٌ وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنِّي بَرِيئَةٌ لاَ تُصَدِّقُونِي بِذَلِكَ وَلَئِنِ اعْتَرَفْتُ لَكُمْ بِأَمْرٍ وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنِّي بَرِيئَةٌ لَتُصَدِّقُونَنِي وَإِنِّي وَاللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلَكُمْ مَثَلاً إِلاَّ كَمَا قَالَ أَبُو يُوسُفَ فَصَبْرٌ جَمِيلٌ وَاللَّهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ . قَالَتْ ثُمَّ تَحَوَّلْتُ فَاضْطَجَعْتُ عَلَى فِرَاشِي - قَالَتْ - وَأَنَا وَاللَّهِ حِينَئِذٍ أَعْلَمُ أَنِّي بَرِيئَةٌ وَأَنَّ اللَّهَ مُبَرِّئِي بِبَرَاءَتِي وَلَكِنْ وَاللَّهِ مَا كُنْتُ أَظُنُّ أَنْ يُنْزَلَ فِي شَأْنِي وَحْىٌ يُتْلَى وَلَشَأْنِي كَانَ أَحْقَرَ فِي نَفْسِي مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيَّ بِأَمْرٍ يُتْلَى وَلَكِنِّي كُنْتُ أَرْجُو أَنْ يَرَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّوْمِ رُؤْيَا يُبَرِّئُنِي اللَّهُ بِهَا قَالَتْ فَوَاللَّهِ مَا رَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَجْلِسَهُ وَلاَ خَرَجَ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ أَحَدٌ حَتَّى أَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخَذَهُ مَا كَانَ يَأْخُذُهُ مِنَ الْبُرَحَاءِ عِنْدَ الْوَحْىِ حَتَّى إِنَّهُ لَيَتَحَدَّرُ مِنْهُ مِثْلُ الْجُمَانِ مِنَ الْعَرَقِ فِي الْيَوْمِ الشَّاتِ مِنْ ثِقَلِ الْقَوْلِ الَّذِي أُنْزِلَ عَلَيْهِ - قَالَتْ - فَلَمَّا سُرِّيَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَضْحَكُ فَكَانَ أَوَّلَ كَلِمَةٍ تَكَلَّمَ بِهَا أَنْ قَالَ " أَبْشِرِي يَا عَائِشَةُ أَمَّا اللَّهُ فَقَدْ بَرَّأَكِ " . فَقَالَتْ لِي أُمِّي قُومِي إِلَيْهِ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لاَ أَقُومُ إِلَيْهِ وَلاَ أَحْمَدُ إِلاَّ اللَّهَ هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ بَرَاءَتِي - قَالَتْ - فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِنْكُمْ) عَشْرَ آيَاتٍ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ بَرَاءَتِي - قَالَتْ - فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى مِسْطَحٍ لِقَرَابَتِهِ مِنْهُ وَفَقْرِهِ وَاللَّهِ لاَ أُنْفِقُ عَلَيْهِ شَيْئًا أَبَدًا بَعْدَ الَّذِي قَالَ لِعَائِشَةَ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( وَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَى) إِلَى قَوْلِهِ ( أَلاَ تُحِبُّونَ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَكُمْ) قَالَ حِبَّانُ بْنُ مُوسَى قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ هَذِهِ أَرْجَى آيَةٍ فِي كِتَابِ اللَّهِ . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَاللَّهِ إِنِّي لأُحِبُّ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لِي . فَرَجَعَ إِلَى مِسْطَحٍ النَّفَقَةَ الَّتِي كَانَ يُنْفِقُ عَلَيْهِ وَقَالَ لاَ أَنْزِعُهَا مِنْهُ أَبَدًا . قَالَتْ عَائِشَةُ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَأَلَ زَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَمْرِي " مَا عَلِمْتِ أَوْ مَا رَأَيْتِ " . فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَحْمِي سَمْعِي وَبَصَرِي وَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ إِلاَّ خَيْرًا . قَالَتْ عَائِشَةُ وَهِيَ الَّتِي كَانَتْ تُسَامِينِي مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَصَمَهَا اللَّهُ بِالْوَرَعِ وَطَفِقَتْ أُخْتُهَا حَمْنَةُ بِنْتُ جَحْشٍ تُحَارِبُ لَهَا فَهَلَكَتْ فِيمَنْ هَلَكَ . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَهَذَا مَا انْتَهَى إِلَيْنَا مِنْ أَمْرِ هَؤُلاَءِ الرَّهْطِ . وَقَالَ فِي حَدِيثِ يُونُسَ احْتَمَلَتْهُ الْحَمِيَّةُ .
Sa'id b. Musayyib, 'Urwa b. Zubair, 'Alqama b. Waqqas and 'Ubaidullah b. Abdullah b. 'Utba b. Mas'ud--all of them reported the story of the false allegation against 'A'isha, the wife of Allah's Apostle (ﷺ). And they (the slanderers) said what they had to say, but Allah exonerated her of this charge and all of them reported a part of the hadith and some of them who had better memories reported more and with better retention, and I tried to retain this hadith (listening) from every one of them that they reported to me and some of them attested the other. (The sumaried substance of the false allegation is this):
'A'isha said: Whenever Allah's Messenger (ﷺ) intended to set out on a journey he cast lots amongst his wives and he took one with him in whose favour the lot was cast. It so happened that he cast lots amongst us while setting out on a battle and it was cast in my favour, so I set out along with Allah's Messenger (ﷺ). This relates to the period when the revelation concerning the commands of veil had been made. I was carried in a haudaj and I was brought down where we had to stay. In short, when we set out for return journey from the expedition and our caravan was near Medina, Allah's Messenger (ﷺ) commanded one night to march forward. I also got up when the command for the march was given and moved on until I went out of the encampments of the army and after relieving myself I came to my place. I touched my chest and found that my necklace which had been made of the stones of zafar had been broken. I retraced my steps and tried to search my necklace and this detained me there. The group of people who saddled my ride and placed my haudaj carrying me upon the camels marched on. They were under the impression that I was in it. The women in those days were light of weight and they did not wear much flesh, as they ate less food; so they did not perceive the weight of my haudaj as they placed it upon the camel as I was a young girl at that time. So they drove the camel and Eet out and I found my necklace after the army had marched. I came to my place and there was none to call and none to respond (the call). I waited at my place under the impression that when the people would riot find me they would come back. So I kept sitting at my place. I was overpowered by sleep and slept. Safwan b. Mu'attal Sulami Dhakwini, who had lagged behind the army because of taking rest came to my place walking in the latter part of the night and he saw the body of a person who was asleep. He came to me and recognised me as he had seen rue before it was enjoined to observe purda. I got ap by his voice as he recited Inna lillahi wa inna ilaihi raji'un [we are for Allah and to Him we have to return. ] and I covered my head with my headdress. By Allah, he did not speak to me a word and I did not hear a word from him except Inna lillahi. He made his camel kneel down and I amounted the camel as he pressed tLe camel's foreleg and he moved on leaning the camel by the nose string on which I was riding until we came to the army where it had encamped for rest because of extreme heat. Woe be upon those who harboured doubts about me and the most notorious among them was 'Abdullah b. Ubayy, the great hypocrite. We came to Medina and I fell sick for a month. The people had been deliberating over the statements of those who had brought these calumnies against me. I was absolutely unaware of anything concerning that. This, however, caused doubt in my mind that I did not see Allah's Messenger (may peace be upon him.) treating me with such kindness with which he treated me as I fell ill before this. The Prophet (ﷺ) would coome and greet me with Assalam-o-'Alaikum and only ask me how I was. This caused doubt in my mind, but I was unaware of the evil. I wept outside despite my failing health and there went along with me Umm Mistah and she said the daughter of Abu Rhm b. Muttalib b. 'Abd Manaf and his mother was the daughter of Sakhr b. 'Amir, the sister of the mother of Abu Bakr Sidiq and his son was Mistah b. Uthatha b. 'Abbad b. Muttalib. I and the daughter of Abu Rahm set towards the direction of my house. Something got into the head dress of Umm Mistah and she said: Woe be upon Mistah. And I said. Woe be upon what you say. Do you curse people who had participated in Badr? She said: Innocent woman, have you not heard what he said? I said: What did he say? She conveyed to me the statement of those who had brought false allegations against me. So my illness was aggravated. I went to my house and Allah's Messenger (ﷺ) came to me and he greeted me and then said: How is that woman? I said: Do you permit me to go to the (house) of my parents? She (further) said: I had at that time made up my mind to confirm this news from them. Allah's Messenger (ﷺ) permitted me. So I came to (the house of) my parents and said to my mother: Mother, do you know what the people are talking about? She said: My daughter, you should not worry. By Allah, if there is a handsome woman who is loved by her husband and he has co-wives also they talk many a thing about her. I said: Hallowed be Allah, what are the people talking about? I wept during the whole night until it was morning and I did not have a wink of sleep and I wept even in the morning. As the revelation was delayed (in regard to this matter), so Allah's Messenger (ﷺ) called 'Ali ibn Abi 'Talib and Usama b. Zaid in order to seek their advice in regard to the separation of his wife. Usama b. Zaid told Allah's Messenger (may peace be apen him) about the innocence of his wives and what he knew about his love for them. He said: Allah's Messenger, they are your wives and we know nothing else about thembut goodness. And as for 'Ali b. Abu Talib, he said: Allah has not put any unnecessary burden upon you (in regard to your wives). There are a number of women besides her and if you ask that maidservant (Barira) she will tell you the truth. So, Allah's Messenger (ﷺ) called Bailra and said: Barira, did you see anything in 'A'isha which can cause doubt about her? Barira said: By Him Who sent thee with the truth, I have seen nothing objectionable in her but only this much that she is a young girl and she goes to sleep while kneading the flour and the lamb eats that. Thereupon Allah's Messenger (ﷺ) mounted the pulpit and sought vindication against 'Abdullah b. Ubayy b. Salul, and he further said: Who would exonerate me from imputations of that person who has troubled (me) in regard to my family? By Allah, I find nothing in my wife but goodness and the person whom the people have mentioned in this connection is, according to my knowledge, a thoroughly pious person, and he did never get into my house but along with me. Sa'd b. Mu'adh stood up and said: Allah's Messenger, I defend your honour against him. If he belong to the tribe of Aus we would strike his neck and if he belongs to the tribe of our brother Khazraj and you order us we would comply with your order. Then Sa'd b. 'Ubada stood up. He was chief of the Khazraj tribe. He was otherwise a pioas man but he had some what tribal partisanship in him and he said to Sa'd b. Mu'adh: By the everlasting existence of Allah. you are not stating the fact, you will not be able to kill him and you will not have the power to do so. Thereupon, Usaid b. Hudair stood up, and he was the first cousin of Sa'd b. Mu'adh and said to Sa'd b. 'Ubada: By the everlasting existence of Allah, you are not stating the fact. We would kill him. You are a hypocrite and so you argue in defence of the hypocrites, and thus both the tribes Aus and Khazraj were flared up, until they were about to fall upon one another and Allah's Messenger (ﷺ) kept standing upon the pulpit and Allah's Messenger (ﷺ) tried to subside their anger until they became silent and thus there was silence. 'A'isha further reported: I spent the whole day in weeping and even the night and could not have a wink of sleep even next night. My parents thought that this constant weeping of mine would break my heart. I wept and they sat beside me. In the meanwhile a woman of the Ansar came to see me. I permitted her to see me and she also began to weep. And we were in this very state that Allah's Messenger (ﷺ) came and he greeted me and then sat down. He had never sat with me since a month when this rumour was afloat, and there was no revelation (to clarity) my case. Allah's Messenger (ﷺ) recited Tashahhud (there is no god but Allah and Muhammad is His Apostle) and then said: Coming to the point, 'A'isha, this is what has reached me about you and if you are innocent, Allah would Himself vindicate your honour, and if accidentally there has been a lapse on your part sock forgiveness of Allah; He will pardon thee for when a servant makes a confession of his fault and turns (to Him) penitently, Allah also turns to him (mercifully) accepting his repentance. When Allah's Messenger (ﷺ) talked, my tears dried up and not even a single drop of tear was perceived by me (rolling out of my eyes). I said to my father: You give a reply to Allah's Messenger (ﷺ) on my behalf. He said: By Allah, I do not know what I should say to Allah's Messenger (ﷺ). I then said to my mother: Give a reply to Allah's Messenger (ﷺ) on my behalf, but she said: By Allah, I do not know what I should say to Allah's Messenger (ﷺ). I was a small girl at that time and I had not read much of the Qur'an (but I said): By Allah, I perceive that you have heard about this and it has settled down in your mind and you have taken it to be true, so if I say to you that I am quite innocent, and Allah knows that I am innocent, you would never believe me to be true, and if I confess to (the alleged) lapse before you, whereas Allah knows that I am completely innocent (and I have not committed this sin at all), in that case You will take me to be true and, by Allah, I, therefore, find no other alternative for me and for you except that what the father of Yousuf said:, (My course is) comely patience. And Allah it is Whose help is to be sought for in that (predicament) which ye describe" (xii 18). After this I turned my face to the other side and lay down on my bed. By Allah, I was fully aware of this fact that I was innocent but I did not expect that Allah would descend Wahy Matlu (Qur'anic Wahy) in my case as I did not think myself so much important that Allah, the Exalted and Glorious, would speak in this matter in words to be recited. I only hoped that Allah would in vision give an indication of my innocence to Allah's Messenger (ﷺ) during his sleep. And, by Allah, Allah's Messenger (ﷺ) had not moved an inch from where he had been sitting and none from the members of my family had gone that Allah, the Exalted and Glorious, descended revelation upon Allah's Messenger (ﷺ) there and then and he felt the burden which he used to feel at the time of receiving revelation. He began to perspire because of the burden of words of Allah as they descended upon him even during the winter season and there fell the drops of his sweat like silvery beads. When this state of receiving revelation was over, the Messenger of Allah (ﷺ) smiled and the first words which he spoke to me were that he said: 'A'isha, there is glad tidings for you. Verily, Allah has vindicated your honour, and my mother who had been standing by me said: Get up (and thank him, i. e. the Holy Prophet). I said: By Allah, I shall not thank him and laud him but Allah Who has descended revelation vindicating my honour. She ('A'isha) said: Allah, the Exalted and Glorious, revealed:" 'Verily, those who spread the slander are a gang among you" (and) ten (subsequent) verses in regard to my innocence. She further said: Abu Bakr used to give to Mistah (some stipend) as a token of kinship with him and for his poverty and he (Abu Bakr) said: By Allah, now I would not spend anything for him. 'A'isha said: It was upon this that Allah the Exalted and Glorious revealed this verse:" And let not those who possess dignity and ease among you swear to give to the near of the kin" up to" Yearn ye not that Allah may forgive you?" Hibban b. Musa' said that 'Abdullah b. Mubarak used to say: It is a verse contained in the Book which most (eminently) brightens the hope. Abu Bakr said: By Allah, I wish that Allah should pardon me. I shall never stop this stipend. So he continued to give him the stipend which he had withdrawn. 'A'isha said that Allah's Messenger (ﷺ) asked Zainab, daughter of Jahsh, the wife of Allah's Apostle (ﷺ), about me what she knew or what she had seen in me, and she said: Allah's Messenger, I shall not say anything without hearing (with my ears) and seeing with my eyes. By Allah, I find nothing in her but goodness. (And she stated this in spite of the fact) that she was the only lady who amongst the wives of Allah's Apostle (ﷺ) used to vie with me but Allah saved her in bringing false allegation against me because of her God-consciousness. Her sister Hamna bint Jahsh, however, opposed her and she was undone along with others.