পরিচ্ছেদঃ ১) ইখলাস, সত্যবাদিতা ও সৎ নিয়তের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ
১৬. (সহীহ্ লি গাইরিহী) আবু কাবশা আল আনমারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেনঃ
’’তিনটি বিষয়ের উপর আমি শপথ করছি এবং তোমাদের কাছে একটি হাদীছ বর্ণনা করছি, তোমরা তা মুখস্ত করে রাখ। তিনি বলেনঃ উক্ত তিনটি বিষয় হল (১) সাদকা করলে কোন বান্দার সম্পদ কমে না। (২) কোন বান্দার উপর জুলুম করা হলে সে যদি ধৈর্য ধারণ করে, তবে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (৩) যখনই কোন বান্দা ভিক্ষার দরজা খুলে দিবে তখনই আল্লাহ তার জন্য অভাবের দ্বার উন্মুক্ত করে দিবেন।’’ (অথবা তিনি এ জাতীয় একটা কথা বলেছেন) এবং তোমাদের নিকট আরেকটি হাদীছ বর্ণনা করছি, তোমরা উহা মুখস্ত করে রাখঃ
’’দুনিয়াটা চার প্রকার মানুষের জন্য। (১) একজন বান্দা, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন। সে তাতে তার পালনকর্তাকে ভয় করে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তাতে আল্লাহর হক আছে তাও বুঝে (এবং তা আদায় করে)। এব্যাক্তি সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী। (২) অপর এক বান্দা, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করেছেন, কিন্তু সম্পদ দেন নাই। কিন্তু সে সৎ নিয়তের অধিকারী। সে বলেঃ আমার যদি সম্পদ থাকত তবে উমুক (প্রথম) ব্যাক্তির ন্যায় তা ব্যবহার করতাম। সে তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। উভয়ে সমান প্রতিদান পাবে। (৩) তৃতীয় বান্দা, আল্লাহ তাকে সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু জ্ঞান দেন নাই। সে স্বীয় সম্পদ মূর্খতাবশতঃ অন্যায় কাজে ব্যয় করে। তাতে নিজ পালনকর্তাকেও ভয় করে না, আত্মীয়তার সম্পর্কও রক্ষা করে না, আল্লাহর কোন হকও আদায় করে না। এ ব্যাক্তি নিকৃষ্টতম মানের অধিকারী। (৪) চতুর্থ বান্দা, আল্লাহ তাকে কোন সম্পদও দেন নাই, জ্ঞানও দান করেন নাই। সে বলেঃ আমার যদি সম্পদ থাকত, তবে উমুক (তৃতীয়) ব্যাক্তির মত (অন্যায় কাজে) তা ব্যয় করতাম, সেও তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। আর উভয় ব্যাক্তির পাপ এক সমান।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, আহমাদ, তিরমিযী ২৩২৫ ও ইবনে মাজাহ ৪২২৮) তবে ইবনে মাজার বর্ণনা এভাবেঃ
(সহীহ্) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
مَثَلُ هَذِهِ الْأُمَّةِ كَمَثَلِ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا وَعِلْمًا فَهُوَ يَعْمَلُ بِعِلْمِهِ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي حَقِّهِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يُؤْتِهِ مَالًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُمَا فِي الْأَجْرِ سَوَاءٌ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا وَلَمْ يُؤْتِهِ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي غَيْرِ حَقِّهِ وَرَجُلٌ لَمْ يُؤْتِهِ اللَّهُ عِلْمًا وَلَا مَالًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُمَا فِي الْوِزْرِ سَوَاءٌ.
’’এ উম্মতের উদাহরণ চার ব্যাক্তির ন্যায়ঃ (১) এক ব্যাক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন। স্বীয় সম্পদে সে ইলম অনুযায়ী আমল করে থাকে। হক পথে তা ব্যয় করে। (২) অপর এক ব্যাক্তি, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করেছেন, কিন্তু কোন সম্পদ দেন নাই। সে বলেঃ এই ব্যাক্তির মত যদি আমার (সম্পদ) থাকত তবে তার মত আমি তা ব্যবহার করতাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ উভয় ব্যাক্তি প্রতিদানের ক্ষেত্রে বরাবর। (৩) তৃতীয় এক ব্যাক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু কোন জ্ঞান দান করেননি, ফলে সে তার সম্পদে মূর্খতা সুলভ আচরণ করে, নাহক পথে তা ব্যয় করে। (৪) চতুর্থ ব্যাক্তি, আল্লাহ তাকে না দিয়েছেন ধন-সম্পদ না দিয়েছেন জ্ঞান। সে বলেঃ এ ব্যাক্তির ন্যায় যদি আমার (সম্পদ) থাকত, তবে এমন ভাবে তা ব্যবহার করতাম, যেমন এ ব্যাক্তি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ উভয় ব্যাক্তি পাপের ক্ষেত্রে এক সমান।’’
الترغيب في الإخلاص والصدق والنية الصالحة
(16) (صحيح لغيره) وَعَنْ أَبي كَبْشَةَ الْأَنَّمَارِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ ثَلَاثَةٌ أُقْسِمُ عَلَيْهِنَّ وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ قَالَ مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ وَلَا ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلَمَةً فَصَبَرَ عَلَيْهَا إِلَّا زَادَهُ اللَّهُ عِزًّا وَلَا فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلَّا فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ. قَالَ إِنَّمَا الدُّنْيَا لِأَرْبَعَةِ نَفَرٍ عَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالًا وَعِلْمًا فَهُوَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ وَيَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ وَيَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقًّا فَهَذَا بِأَفْضَلِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يَرْزُقْهُ مَالًا فَهُوَ صَادِقُ النِّيَّةِ يَقُولُ لَوْ أَنَّ لِي مَالًا لَعَمِلْتُ بِعَمَلِ فُلَانٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهِ فَأَجْرُهُمَا سَوَاءٌ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالًا وَلَمْ يَرْزُقْهُ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ لَا يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ وَلَا يَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ وَلَا يَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقًّا فَهَذَا بِأَخْبَثِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ لَمْ يَرْزُقْهُ اللَّهُ مَالًا وَلَا عِلْمًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ أَنَّ لِي مَالًا لَعَمِلْتُ فِيهِ بِعَمَلِ فُلَانٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهِ فَوِزْرُهُمَا سَوَاءٌ رواه أحمد والترمذي واللفظ له وقال حديث حسن صحيح