পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হাশর
৫৫৪৮-[১৭] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সত্যবাদী সত্যায়নকারী (সা.) আমাকে বর্ণনা করেছেন, কিয়ামতের দিন মানুষদেরকে তিন দলে একত্রিত করা হবে। একদল হবে আরোহী, খাওয়াদাওয়ায় পরিতৃপ্ত ও পোশাকে আচ্ছাদিত। আরেক দল হবে এমন যাদেরকে ফেরেশতাকুল মুখের উপরে হেঁচড়িয়ে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে। আরেক দল হবে, যারা পায়ে হেঁটে চলবে এবং দৌড়াতে থাকবে। আল্লাহ তা’আলা বাহনের উপর বিপদে আপতিত করবেন। এটা থেকে কোনটিই নিরাপদ থাকবে না। এমনকি যে একটি বাগানের মালিক সে উক্ত বাগানের বিনিময়ে বাহনের জন্য হাওদাসহ একটি উট পেতে চাইলেও তা পেতে সক্ষম হবে না। (নাসায়ী)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب الْحَشْر)
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: إِنَّ الصَّادِقَ الْمَصْدُوقَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدَّثَنِي: أَنَّ النَّاسَ يُحْشَرُونَ ثَلَاثَةَ أَفْوَاجٍ: فَوْجًا رَاكِبِينَ طَاعِمِينَ كَاسِينَ وفوجا تسحبنهم الْمَلَائِكَةُ عَلَى وُجُوهِهِمْ وَتَحْشُرُهُمُ النَّارُ وَفَوْجًا يَمْشُونَ وَيَسْعَوْنَ وَيُلْقِي اللَّهُ الْآفَةَ عَلَى الظَّهْرِ فَلَا يَبْقَى حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ لَتَكُونُ لَهُ الْحَدِيقَةُ يُعْطِيهَا بِذَاتِ الْقَتَبِ لَا يَقْدِرُ عَلَيْهَا . رَوَاهُ النَّسَائِيّ اسنادہ حسن ، رواہ النسائی (4 / 116 ۔ 117 ح 2088) [و صححہ الحاکم (2 / 367 ، 4 / 564) و تعقبہ الذھبی مرۃ]
ব্যাখ্যা: (يَسْعَوْنَ) অর্থাৎ দ্রুত গতিতে জমিনে চলা। (الْآفَةَ) থেকে উদ্দেশ্য হলো (الْآفَةَ الموت) মৃত্যুর মহামারি। (بِذَاتِ الْقَتَبِ) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো উষ্ট্রী।
এ ব্যাপারটি আখিরাতের সাথে সামঞ্জস্যশীল নয়। (قطب) কফ ও ত্বো বর্ণে যবর যোগে এটা উটের অর্থে ব্যবহার হয়। যেমন অন্যদের ক্ষেত্রে (إكاف) ব্যবহার হয়।
(فَوْجًا يَمْشُونَ وَيَسْعَوْنَ ...لَا يَقْدِرُ عَلَيْهَا) কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এ বাক্যটি ইঙ্গিত করে যে, এসব কিছু দুনিয়াতে সংঘটিত হবে।
কাযী ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ)-ও অনুরূপ মত ব্যক্ত করেন। (শারহু সুনান আন্ নাসায়ী ২য় খণ্ড, হা. ২০৮৫)
এটা হাশর যা কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে সংঘটিত হবে। আর এগুলোই সর্বশেষ নিদর্শন। হাদীসের বর্ণনা প্রসঙ্গ ও হাদীসটির এ অধ্যায় উল্লেখ করার মাধ্যমে এ ইঙ্গিত বহন করে যে, এর দ্বারা কিয়ামতের হাশর উদ্দেশ্য কিন্তু রাসূল (সা.) -এর বাণী (إِنَّ الرَّجُلَ لَتَكُونُ لَهُ الْحَدِيقَةُ) “নিশ্চয় কোন ব্যক্তির বাগান থাকবে....” এ কথা দ্বারা স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, কিয়ামতের হাশর নয়। তেমনিভাবে নবী –(সা.) এর বাণী (طَاعِمِينَ كَاسِينَ) একদল খাওয়া-দাওয়া পরিতৃপ্ত ও পোশাকাচ্ছাদিত হয়ে উপস্থিত হবে, এটাও সুস্পষ্ট প্রমাণ যে, এর দ্বারা কিয়ামতের হাশর উদ্দেশ্য নয়। এ ব্যাপারে ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ)-ও বলেন, এ হাশর কিয়ামতের হাশর নয়। কারণ আখিরাতের হাশরে কেউ খাওয়া-দাওয়ায় পরিতৃপ্ত অবস্থায় এবং পোশাকাচ্ছাদিত হয়ে উপস্থিত হবে না। বরং এটা এমন হাশর যা কিয়ামতের আলামত। যেমনটি অধ্যায়ের অনুচ্ছেদের হাদীসের পূর্বে আলোচিত হয়েছে। অতএব এ অধ্যায়ে উল্লেখ করা অপ্রাসঙ্গিক। (মিশকাতুল মাসাবীহ - মুম্বাই ছাপা, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৮৮)