পরিচ্ছেদঃ ২১. প্রথম অনুচ্ছেদ - অত্যাচার
৫১২৭-[৫] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জানো, (প্রকৃত) গরীব কে? সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ আমরা তো মনে করি, আমাদের মধ্যে যার টাকা-পয়সা, ধনদৌলত নেই, সে-ই গরীব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি গরীব হবে, যে ব্যক্তি দুনিয়া থেকে সালাত, সিয়াম ও যাকাত আদায় করে আসবে; কিন্তু সাথে সাথে সেসব লোকেদেরকেও নিয়ে আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কারো অপবাদ রটিয়েছে, কারো সম্পদ খেয়েছে, কাউকে হত্যা করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে; এমন ব্যক্তিদেরকে তার নেকীগুলো দিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর যখন তার পুণ্য শেষ হয়ে যাবে অথচ পাওনাদারদের পাওনা তখনো বাকি, তখন পাওনাদারদের গুনাহ তথা পাপ তার ওপর ঢেলে দেয়া হবে, আর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (মুসলিম)[1]
بَابُ الظُّلْمِ
وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ؟» . قَالُوا: الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لَا دِرْهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ. فَقَالَ: «إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ يَأْتِي يَوْم الْقِيَامَة بِصَلَاة وَصِيَام وَزَكَاة وَيَأْتِي وَقَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا. وَأَكَلَ مَالَ هَذَا. وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يَقْضِيَ مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرح فِي النَّار» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي) উল্লেখিত হাদীসে যে নিঃস্ব বা দেউলিয়া ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে সে হলো প্রকৃত নিঃস্ব বা দেউলিয়া। পক্ষান্তরে যার সম্পদ নেই বা থাকলেও খুব কম লোকেরা তাকে নিঃস্ব বলে কিন্তু প্রকৃত পক্ষ সে নিঃস্ব নয়। কারণ তার এ অবস্থা ক্ষণস্থায়ী। সে কোন সময় ধনবানও হতে পারে যদি তা নাও হতে পারে তবে মৃত্যুর মাধ্যমে তার এ অবস্থা দূর হয়ে যাবে। কিন্তু স্থায়িত্বের দিক থেকে হাদীসে উল্লেখিত ব্যক্তিই হলো প্রকৃত নিঃস্ব। এ প্রসঙ্গে ইমাম মাযিয়ী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ কোন কোন বিদ্‘আতী মনে করে যে, উক্ত হাদীসটি কুরআনের এ আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক। আল্লাহ বলেন,
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرٰى
অর্থাৎ- ‘‘একজনের পাপ অন্যজন বহন করবে না।’’ (সূরাহ্ আল ফা-ত্বির ৩৫ : ১৮)
কিন্তু এ ধরনের আপত্তি তার অজ্ঞতাপূর্ণ এবং তা প্রত্যাখ্যাত। কারণ হাদীসে উল্লেখিত ব্যবস্থাই হলো যালিমের একমাত্র শাস্তি যা তার জন্য ন্যায্য পাওনা।
(শারহুন নাবাবী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৫৮১/৫৯; তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৪১৮)