পরিচ্ছেদঃ ১৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আত্মসংযম ও কাজে ধীরস্থিরতা
৫০৫৫-[৩] সাহল ইবনু সা’দ আস্ সা’ইদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ধীরস্থিরভাবে কাজ করা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে আসে, আর তাড়াহুড়া করে কাজ করা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে।[তিরমিযী;[1]
আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ হাদীসটি গরীব। কোন কোন হাদীসবিদ এর অন্যতম রাবী ’আবদুল মুহায়মিন ইবনু ’আব্বাস এর স্মরণশক্তি সম্পর্কে মতভেদ করেছেন।]
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْأَنَاةُ مِنَ اللَّهِ وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ. وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي عَبْدِ الْمُهَيْمِنِ بْنِ عَبَّاس الرَّاوِي من قبل حفظه
ব্যাখ্যাঃ الْأَنَاةُ مِنَ اللهِ وَالْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ ‘‘ধীরস্থিরভাবে কাজ করা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে আর তাড়াহুড়া করে কাজ করা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে’’। ইমাম মানবী (রহিমাহুল্লাহ) শারহুল জামি‘উস্ সগীরে বলেনঃ ব্যক্তি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কোন কাজে তাড়াহুড়া করে। কারণ তাড়াহুড়া করা কোন কাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে ও শাস্তির প্রদানের ক্ষেত্রে কাউকে অবকাশ দিতে বাধা দেয়। যার ফলে কাজের শেষে আফসোস অনুশোচনা করতে হয়। আর এটাই হলো শয়তানের চক্রান্ত ও তার কুমন্ত্রণা।
‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) বলেন, মানুষ যতদিন তাড়াহুড়ার ফল ছিঁড়বে ততদিন সে আফসোস করবে। অর্থাৎ যতদিন তাড়াহুড়া করে কাজ করবে ততদিন তার আফসোস শেষ হবে না। অতঃপর নিন্দিত তাড়াহুড়া বলা হয়, যাতে আনুগত্য থাকে না। যাতে সুপ্রতিষ্ঠিত করা বা প্রমাণ করা পাওয়া যায় না এবং যাতে কোন কিছু ছুটে যাওয়ার ভয় থাকে না। কারণ তাড়াহুড়া করা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। অতঃপর তিনি বলেছিলেন, যদি সেটা মূসা (আ.)-এর কথার মতো হয়, وَعَجِلْتُ إِلَيْكَ رَبِّ لِتَرْضٰى ‘‘হে আমার রব্! আমি আপনার নিকট তাড়াতাড়ি এসেছি যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন’’- (সূরাহ্ ত্ব-হা- ২০ : ৮৪)। বলা হয়ে থাকে, যেটা কল্যাণ কাজে তাড়াহুড়া করা হয় তাকে এ থেকে আলাদা করা হয়েছে। অর্থাৎ কল্যাণ কাজে তাড়াহুড়া করা যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ ‘‘তারা কল্যাণ কাজে ছিল অগ্রগামী’’- (সূরাহ্ আল আম্বিয়া ২১ : ৯০)।
কারী বূন (بون) বলেনঃ আনুগত্যের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা ও তাড়াহুড়া করা প্রশংসনীয়। আর ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করে ফেলা দোষণীয়। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২০১২)