পরিচ্ছেদঃ ১৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সাক্ষাৎ ত্যাগ, সম্পর্কচ্ছেদ ও দোষান্বেষণে নিষেধাজ্ঞা
৫০৪৯-[২৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী সফিয়্যাহ্ (রাঃ)-এর উটটি পীড়াগ্রস্ত হয়ে পড়ল। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অপর স্ত্রী যায়নাব (রাঃ)-এর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত একটি সওয়ারী ছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবি যায়নাবকে বললেনঃ তাঁকে একটি উট দাও। তখন তিনি বললেনঃ আমি ঐ ইয়াহূদীনীকে উট দেবো? এতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মনোক্ষুণ্ণ হলেন এবং যিলহজ্জ, মুহাররম ও সফর মাসের কিছুদিন তাঁর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলেন। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَن عائشةَ قَالَتْ: اعْتَلَّ بَعِيرٌ لِصَفِيَّةَ وَعِنْدَ زَيْنَبَ فَضْلُ ظَهْرٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِزَيْنَبَ: «أَعْطِيهَا بَعِيرًا» . فَقَالَتْ: أَنَا أُعْطِي تِلْكَ الْيَهُودِيَّةَ؟ فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهَجَرَهَا ذَا الْحُجَّةِ وَالْمُحَرَّمَ وَبَعْضَ صَفَرٍ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَذُكِرَ حَدِيثُ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ: «مَنْ حَمَى مُؤْمِنًا» فِي «بَابِ الشَّفَقَة وَالرَّحْمَة»
ব্যাখ্যাঃ لِصَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيٍّ সফিয়্যাহ্ বিনতু হুয়াইয়ি (রাঃ) ছিলেন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী।
(وَعِنْدَ زَيْنَبَ) ইনি যায়নাব বিনতু জাহশ (রাঃ)-ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী ছিলেন।
(أَنَا أُعْطِي تِلْكَ الْيَهُودِيَّةَ؟) এর ব্যাখ্যাঃ সফিয়্যাহ্ (রাঃ) ছিলেন খায়বার এলাকার ইয়াহূদী সর্দার হুয়াই ইবনু আখতার-এর কন্যা। বংশ পরম্পরায় তিনি ছিলেন মূসা (আ.)-এর বড় ভাই হারূন (আ.)-এর বংশের মহিলা। সপ্তম হিজরীতে খায়বার বিজয়ের সময় সফিয়্যাহ্ (রাঃ) দাসী হিসেবে বন্দি হয়ে মুসলিমদের হাতে আসলে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মুক্ত করে দিয়ে নিজের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। এ হিসেবে যায়নাব (রাঃ) তাকে ইয়াহূদিনী হিসেবে তিরস্কার করেছিলেন।
(فَهَجَرَهَا ذَا الْحُجَّةِ وَالْمُحَرَّمَ وَبَعْضَ صَفَرٍ) ‘‘যিলহজ্জ মুহার্রম ও সফর মাসের কিছুদিন তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলেন’’।
ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসের এ অংশ দ্বারা বুঝা গেল যে, মন্দ কাজের জন্য তিনদিনের বেশি সময় কথাবার্তা বন্ধ রাখা বৈধ আছে। অর্থাৎ ধমক দেয়া ও আদব শিক্ষা দেয়ার ইচ্ছায়; শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টির ইচ্ছায় না। এখান থেকে আমরা পূর্ববর্তী হাদীস তথা তিনদিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা জায়িয না হাদীসটি ও অত্র হাদীসটির মধ্যে সমন্বয় বুঝতে পারলাম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৫৯১)