পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা
৪৬০১-[১০] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জনৈক আনসারী সাহাবী আমাকে বর্ণনা করেছেন যে, এক রাতে তাঁরা (সাহাবীরা) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বসেছিলেন। তখন হঠাৎ একটি তারকা (আকাশ হতে) ছুটল এবং তাতে চতুর্দিক আলোকিত হয়ে গেল। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আচ্ছা এভাবে তারকা ছোটাকে জাহিলিয়্যাতের যুগে তোমরা কি বলতে? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক অবগত। তবে আমরা বলতাম : আজ কোন একজন বড় লোকের জন্ম হয়েছে অথবা কোন একজন বড় লোকের মৃত্যু ঘটেছে।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যুর দরুন তারকা নিক্ষিপ্ত হয় না। প্রকৃত ব্যাপার হলো, আমাদের রব, যাঁর নাম অতীব বারাকাতময়, যখন কোন নির্দেশ দেন তখন সর্বপ্রথম আল্লাহর ’আরশ বহনকারী মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) তাসবীহ পাঠ করেন। অতঃপর তাঁদের নিকটবর্তী আসমানের মালায়িকাহ্ তাসবীহ পাঠ করেন, এভাবে তাসবীহ পাঠ করার সিলসিলাহ্ পর্যায়ক্রমে দুনিয়ার আকাশে অবস্থানরত মালায়িকাহ্ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
অতঃপর ’আরশ বহনকারী মালায়িকাহ্’র নিকটবর্তী মালায়িকাহ্ ’আরশ বহনকারীদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের রব্ কি বলেছেন? তখন তারা আল্লাহ যা বলেছেন তা তাদেরকে বলে দেন এবং সাথে সাথে পরস্পরের জানা-জানির মধ্যে দুনিয়ার আকাশে অবস্থানরত মালায়িকাহ্ পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং চোরাপথে খবর সংগ্রহকারী জীন-শয়তান ত্বরিত গতিতে সে খবরটি সংগ্রহ করে এবং তাদের বন্ধুদের কাছে পৌঁছে দেয়। সুতরাং যে সমস্ত কথা তারা অবিকল বর্ণনা করে, এটা সঠিক ও সত্য। কিন্তু গণক ও জাদুকররা তার সাথে আরো অনেক (মিথ্যা) মিশিয়ে প্রকাশ করতে থাকে। (মুসলিম)[1]
وَعَن ابنِ عبَّاسٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْأَنْصَارِ: أَنَّهُمْ بَيْنَا جُلُوسٌ لَيْلَةً مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رُمِيَ بِنَجْمٍ وَاسْتَنَارَ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا كُنْتُمْ تَقُولُونَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ إِذَا رُمِيَ بِمِثْلِ هَذَا؟» قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ كُنَّا نَقُولُ: وُلِدَ اللَّيْلَةَ رَجُلٌ عَظِيمٌ وَمَاتَ رَجُلٌ عَظِيمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَإِنَّهَا لَا يُرْمَى بِهَا لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّ رَبَّنَا تَبَارَكَ اسْمُهُ إِذَا قَضَى أَمر سَبَّحَ حَمَلَةُ الْعَرْشِ ثُمَّ سَبَّحَ أَهْلُ السَّمَاءِ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ التَّسْبِيحُ أَهْلَ هَذِهِ السَّمَاء الدُّنْيَا ثمَّ قَالَ الَّذِي يَلُونَ حَمَلَةَ الْعَرْشِ لِحَمَلَةِ الْعَرْشِ: مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ؟ فَيُخْبِرُونَهُمْ مَا قَالَ: فَيَسْتَخْبِرُ بَعْضُ أَهْلِ السَّمَاوَاتِ بَعْضًا حَتَّى يَبْلُغَ هَذِهِ السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَيَخْطَفُ الْجِنُّ السَّمْعَ فَيَقْذِفُونَ إِلَى أَوْلِيَائِهِمْ وَيُرْمَوْنَ فَمَا جاؤوا بِهِ عَلَى وَجْهِهِ فَهُوَ حَقٌّ وَلَكِنَّهُمْ يَقْرِفُونَ فِيهِ وَيزِيدُونَ . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যাঃ مَا كُنْتُمْ تَقُولُونَ لِمِثْلِ هٰذَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ إِذَا رَأَيْتُمُوهُ এখানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানার জন্য প্রশ্ন করেননি। কারণ তিনি তার উত্তর জানতেন। বরং তার উদ্দেশ্য ছিল, তারা জাহিলী যুগে যে বিশ্বাস করত তার আলোকে উত্তর দিবে। অতঃপর তিনি তা তাদের থেকে দূর করে দিবেন এবং তার মূলকে সমূলে উৎখাত করবেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৮ম খন্ড, হাঃ ৩২২৪)
আলোচ্য হাদীসটি হতে বুঝা গেল যে, নক্ষত্র নিক্ষেপের সাথে কোন মহান ব্যক্তির জন্ম-মৃত্যুর সম্পর্ক থাকার ধারণা সঠিক নয়। বরং চোর শয়তানদের বিতাড়িত করার জন্যই আসমান থেকে আগুনের ফুলকি নিক্ষেপ করা হয়। [সম্পাদক]