পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা
৪৫৯৪-[৩] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি- মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাগণের) একদল মেঘের দেশে (অর্থাৎ- পৃথিবী হতে নিকটতম আকাশমণ্ডলীতে) নেমে আসেন এবং আসমানে যার ফায়সালা হয়েছে পরস্পর তার আলোচনা করেন, সে সময় জীন-শয়তান কান লাগিয়ে রাখে। আর যখনই সে কোন কথা শুনতে পায়, তখনই তা গণকদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয় এবং তারা নিজেদের পক্ষ হতে শত শত মিথ্যা তার সাথে মিলিয়ে প্রকাশ করতে থাকে (যার দরুন সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ ঘটে)। (বুখারী)[1]
بَابُ الْكِهَانَةِ
وَعَنْهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَنْزِلُ فِي الْعَنَانِ وَهُوَ السَّحَابُ فَتَذْكُرُ الْأَمْرَ قُضِيَ فِي السَّماءِ فتسترق الشياطينُ السمعَ فَتُوحِيهِ إِلَى الْكُهَّانِ فَيَكْذِبُونَ مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ من عِنْد أنفسهم. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যাঃ (وَهُوَ السَّحَابُ) ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সম্ভবত এটা বর্ণনাকারীর কথা (عَنَانِ)-এর ব্যাখ্যা হবে। আর سحاب হলো سماء এর মাজায। যেমন سماء এর মাজায سحاب। মহান আল্লাহ বলেন, وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً ‘‘আর আমরা আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেছি’’- (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩ : ১৮)। মালায়িকাহ্ আসমানে অবতরণ করেন।
এখানে উদ্দেশ্য হলো দুনিয়ার আসমান, কারণ মালায়িকাহ্ থেকে জিনদের শ্রবণ করাটা মেঘমালার বেশি নিকটবর্তী হয়। আর এটিই বেশি ঠিক। আর এটি তার কথাকে নিষেধ করে না। আর তার মূল হলো মহান আল্লাহ প্রতিদিন দুনিয়ার ব্যাপারে যে নতুন নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন আসমানে তা মালায়িকাহ্ শোনেন। অতঃপর তাদের কতক কতকের সাথে আলোচনা করেন। সে সময় শয়তান চুরি করে শুনে জ্যোতিষীদের কাছে পৌঁছে দেয়।
আবূ দাঊদ (রহিমাহুল্লাহ) ইবনু মাস্‘ঊদ হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যখন মহান আল্লাহ ওয়াহীর মাধ্যমে কথা বলেন, তখন আসমানবাসী শিকলের মতো সারিবদ্ধভাবে সেটা শোনেন। এভাবে তারা আলোচনায় রত থাকেন জিবরীল (আ.) আগমনের পূর্ব পর্যন্ত। যখন জিবরীল (আ.) আগমন করেন তখন তাদের অন্তর কেঁপে উঠে। আর তারা বলতে থাকেন, হে জিবরীল! তোমাদের রব কী বলেছেন? তিনি বলেন, সত্য। (আবূ দাঊদ ৪৭৩৮ : সহীহ)
(مِائَةَ كَذْبَةٍ) অর্থাৎ ‘‘তার নিজের পক্ষ থেকে’’ এর অর্থ হলো কোন সংবাদ সত্য হওয়ার ফলে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে মিথ্যা কথা বলে প্রচার করে। সেজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দ্বারা উপকৃত হতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, إِنَّهُمْ لَيْسُوا بِشَيْءٍ ‘‘তারা কিছুই না’’। এটি মিথ্যাবাদীদের সাক্ষ্য দেয়ার মতো এমন, যে মিথ্যুক কখনও সত্য কথাও বলে। মহান আল্লাহ ভালো জানেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)