পরিচ্ছেদঃ
১১৭১। কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার জন্য বাহাত্তরটি মন্দ চরিত্র রয়েছে। তোমরা যখন লোকদেরকে দেখবে তারা সালাতকে মেরে ফেলছে (ছেড়ে দিচ্ছে), আমানাতকে নষ্ট করছে, সুদ খাচ্ছে, মিথ্যা বলাকে বৈধ মনে করছে, রক্ত প্রবাহিত করাকে হালকা মনে করছে, উঁচু উঁচু বিল্ডিং নির্মাণ করছে, দুনিয়ার বিনিময়ে দ্বীনকে বিক্রি করে দিচ্ছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে, বিচার ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে, মিথ্যাটাই সত্য হয়ে যাচ্ছে, রেশমী কাপড় দ্বারাই পোষাক বানানো হচ্ছে, অত্যাচার বেড়ে যাচ্ছে, ত্বলাক (তালাক) প্রদান এবং হঠাৎ মৃত্যু বেশী বেশী ঘটছে, খিয়ানাতকারীর নিকট আমানাত রাখা হচ্ছে আর সত্যিকারের আমানাত রক্ষাকারীকে খিয়ানাতকারী বানানো হচ্ছে, মিথ্যুককে সত্যবাদী আখ্যা দেয়া হচ্ছে আর সত্যবাদীকে মিথুক বানানো হচ্ছে, অপবাদ প্রদান বেশী বেশী হচ্ছে, বৃষ্টি হবে গরম আর সন্তান হবে ক্রোধাম্বিত, কৃপণতা অত্যধিক বৃদ্ধি পাবে আর দয়া প্রদর্শন কমে যাবে, রাষ্ট্রের প্রধানগণ হবে পাপাচারী আর মন্ত্রীগণ হবে মিথ্যাচারী, আমানত রক্ষাকারীরা হবে খিয়ানাতকারী, উপদেষ্টাগণ হবে অত্যাচারী, কারীগণ হবে ফাসেক, তারা যখন মেষের চামড়া পরিধান করবে তখন তাদের অন্তরগুলো হবে মৃত দেহের চেয়েও বেশী দুর্গন্ধযুক্ত এবং তিক্ত বস্তুর চেয়েও বেশী তিক্ত।
আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে এমন ফেতনা দ্বারা ছেয়ে দিবেন যার মধ্যে তারা অত্যাচারী ইয়াহুদদের অস্থিরতার ন্যায় পরস্পরে অস্থিরতায় হাবুডুবু খাবে। দীনারের প্রচলন প্রাধান্য পাবে আর দেরহাম অনুসন্ধান করা হবে। বেশী বেশী ভুল সংঘটিত হবে, রাষ্ট্রীয় নেতারা খিয়ানাত করবে। কুরআনকে অলঙ্কৃত করা হবে, মসজিদসমূহের ছবি তোলা হবে (সৌন্দর্য মণ্ডিত হওয়ার কারণে), উচু উঁচু মিনার নির্মান করা হবে। হৃদয়সমূহ মন্দ হয়ে যাবে, মদ্য পান করা হবে, হুদুদ (অপরাধীর শাস্তিকে) বাতিল করে দেয়া হবে, দাসী (মা) তার মুনিবকে জন্ম দিবে, তুমি খালি পা আর উলঙ্গ বদনে থাকা দরিদ্র ব্যক্তিদেরকে দেখবে তারা দেশের রাজা-বাদশা হয়ে যাচ্ছে।
স্ত্রী তার স্বামীর সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যে অংশ গ্রহণ করবে, পুরুষরা মহিলাদের সাদৃশ্য আর মহিলারা পুরুষদের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে। শপথ পাঠ করতে বলা ব্যতীতই আল্লাহর নামে শপথ পাঠ করা হবে। পরিচিতজনকেই সালাম দেয়া হবে, দ্বীনহীন জ্ঞান অর্জন করা হবে, আখেরাতের কর্মের দ্বারা দুনিয়াকে অনুসন্ধান করা হবে। গানীমাত যখন একটি সম্প্রদায়ের মাঝেই ঘুরপাক করবে, রক্ষিত আমানাতকে যখন গানীমাত মনে করে নিজের সম্পদ ভেবে নেয়া হবে, যাকাত বের করাকে যখন মুশকিল মনে করা হবে, সম্প্রদায়ের নিম্ন শ্রেণীর লোক যখন নেতৃত্বদানকারী হবে। ব্যক্তি যখন তার পিতার অবাধ্য হবে, মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করবে আর তার বন্ধুর সাথে সদ্ব্যবহার করবে, তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে। ফাসিকরা মসজিদসমূহে উঁচু আওয়াজে কথা বলবে, নর্তকী বা গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হবে, রাস্তা-ঘাটে মদ্য পান করা হবে, অত্যাচার করাকে অহংকার হিসেবে গণ্য করা হবে, বিচারকার্য ক্রয়-বিক্রয় করা হবে, পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, কুরআনকে সঙ্গীত হিসেৰে গণ্য করা হবে। পশুর চামড়াকে মুদ্রণ কাজে ব্যবহার করা হবে, মসজিদগুলো রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবং এ উম্মাতের শেষের লোকেরা যখন প্রথম যুগের লোকদের অভিশাপ দিবে সে সময় তারা যেন লাল বায়ু অথবা ভূমি ধস এবং রূপ (আকৃতি) পরিবর্তন ও বহু নিদর্শনের অপেক্ষা করে।
হাদীসটি দুর্বল।
হাদীসটি আবু নুয়াইম "আল-হিলইয়াহ" গ্রন্থে (৩/৩৫৮) সুওয়াইদ ইবনু সাঈদ সূত্রে ফারাজ ইবনু ফুযালাহ্ হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু ওবাইদ লাইসী হতে, তিনি হুযাইফাহ ইবনুল ইয়ামান হতে মারফু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আবু নুয়াইম বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবনু ওবায়েদ ইবনে ওমায়ের কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি গারীব। আমার জানা মতে তার থেকে একমাত্র ফারাজ ইবনু ফুযালাহ-ই বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটি দুর্বল যেমনটি হাফিয ইরাকী (৩/২৯৭) বলেছেন। এ হাদীসের সনদে দ্বিতীয় আরেকটি সমস্যা হচ্ছে এই যে, এটি মুনকাতি (অর্থাৎ সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে)।
আবু নুয়াইম আব্দুল্লাহ ইবনু ওবায়েদের জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে (৩/৩৫৬) বলেছেনঃ তিনি আবুদ দারদা (রাঃ), হুযাইফা (রাঃ) প্রমুখের উদ্ধৃতিতে মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
من اقتراب الساعة اثنتان وسبعون خصلة، إذا رأيتم الناس أماتوا الصلاة، وأضاعوا الأمانة، وأكلوا الربا، واستحلوا الكذب، واستخفوا الدماء، واستعلوا البناء، وباعوا الدين بالدنيا، وتقطعت الأرحام، ويكون الحكم ضعفا، والكذب صدقا، والحرير لباسا، وظهر الجور، وكثر الطلاق وموت الفجأة، وائتمن الخائن، وخون الأمين، وصدق الكاذب، وكذب الصادق، وكثر القذف، وكان المطر قيظا، والولد غيظا، وفاض اللئام فيضا، وغاض الكرام غيضا، وكان الأمراء فجرة، والوزراء كذبة، والأمناء خونة، والعرفاء ظلمة، والقراء فسقة، إذا لبسوا مسوك الضأن، قلوبهم أنتن من الجيفة وأمر من الصبر، يغشيهم الله فتنة يتهاوكون فيها تهاوك اليهود الظلمة، وتظهر الصفراء - يعني الدنانير - وتطلب البيضاء - يعني الدراهم - وتكثر الخطايا، وتغل الأمراء، وحليت المصاحف، وصورت المساجد، وطولت المنائر، وخربت القلوب، وشربت الخمور، وعطلت الحدود، وولدت الأمة ربتها، وترى الحفاة العراة، وقد صاروا ملوكا، وشاركت المراة زوجها في التجارة، وتشبه الرجال بالنساء، والنساء بالرجال، وحلف بالله من غير أن يستحلف، وشهد المرء من غير أن يستشهد، وسلم للمعرفة، وتفقه لغير الدين، وطلبت الدنيا بعمل الآخرة، واتخذ المغنم دولا، والأمانة مغنما، والزكاة مغرما، وكان زعيم القوم أرذلهم، وعق الرجل أباه، وجفا أمه، وبر صديقه، وأطاع زوجته، وعلت أصوات الفسقة في المساجد، واتخذت القينات والمعازف، وشربت الخمور في الطرق، واتخذ الظلم فخرا، وبيع الحكم، وكثرت الشرط، واتخذ القرآن مزامير، وجلود السباع صفافا، والمساجد طرقا، ولعن آخر هذه الأمة أولها، فليتقوا ( كذا) عند ذلك ريحا حمراء، وخسفا ومسخا وآيات ضعيف - أخرجه أبو نعيم في " الحلية " (3/358) من طريق سويد بن سعيد عن فرج بن فضالة عن عبد الله بن عبيد بن عمير الليثي عن حذيفة بن اليمان مرفوعا. قال أبو نعيم " غريب من حديث عبد الله بن عبيد بن عمير، لم يروه عنه فيما أعلم إلا فرج بن فضالة " قلت: وهو ضعيف كما قال الحافظ العراقي (3/297) ، وفيه علة أخرى وهي الانقطاع، فقد قال أبو نعيم في ترجمة عبد الله بن عبيد هذا (3/356) : " أرسل عن أبي الدرداء وحذيفة وغيرهم " وللفرج فيه إسناد آخر بلفظ أخصر تقدم آنفا والحديث مما فات السيوطي والمناوي فلم يورداه في " جامعيهما