পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান
৩৭৭৫-[১৮] আশ্’আস ইবনু কায়স (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার ও এক ইয়াহূদীর যৌথ মালিকানায় একটি জমি ছিল। কিন্তু সে (এক সময়) আমার মালিকানাকে অস্বীকার করায় আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অভিযোগ পেশ করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ তোমার নিকট এর কোনো দলীল-প্রমাণাদি আছে কি? আমি বললাম, না। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইয়াহূদীকে বললেনঃ তুমি কসম করে বলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম : হে আল্লাহর রসূল! সে তো এখন কসম করে আমার সম্পদ দখলে নিয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেনঃ ’’যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও তার নামে কসম করে নগণ্যমূল্যে বিক্রি করে’’- (সূরা আ-লি ’ইমরান ৩ : ৭৭) আয়াতের শেষ পর্যন্ত। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَن الأشعثِ بنِ قيسٍ قَالَ: كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ رَجُلٍ مِنَ الْيَهُودِ أرضٌ فحَجَدني فَقَدَّمْتُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَلَكَ بَيِّنَةٌ؟» قُلْتُ: لَا قَالَ لِلْيَهُودِيِّ: «احْلِفْ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَنْ يَحْلِفَ وَيَذْهَبَ بِمَالِي فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: (إِنَّ الَّذِينَ يشترونَ بعهدِ اللَّهِ وأَيمانِهِم ثمنا قَلِيلا) الْآيَة. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা : অত্র হাদীসের বর্ণনাকারী সাহাবীর নাম আশ্‘আস বিন কয়স বিন মা‘দীকারাব তার উপনাম আবূ মুহাম্মাদ আল্ কিনদী। তিনি কিনদাহ্ গোত্রের নেতা হয়ে স্বদল বলে নাবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসেছিলেন। এটা ছিল ১০ হিজরীর ঘটনা, তিনি জাহিলী যুগে তার জাতির সর্দার ছিলেন, তার জাতি তাকে খুব শ্রদ্ধা করতো তার কথা মেনে চলতো। ইসলাম গ্রহণের পরও তিনি সম্মানিত ছিলেন মাঝে একবার মুরতাদ হয়ে যান। পরে আবার ইসলামে ফিরে আসেন।
আবূ বাকর -এর শাসনামলে ‘উলামায়ে কিরাম বলেন, ইমাম শাফি‘ঈ তাকে সাহাবী বলেছেন। আমাদের নিকট সহীহ মতানুসারে তিনি তাবি‘ঈ যেহেতু তার সাহাবীত্ব মুরতাদ হওয়ার কারণে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, আমার মাঝে আর অপর এক ইয়াহূদীর মাঝে একখন্ড জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল আমি বিষয়টি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার কি কোনো দলীল প্রমাণ আছে? আমি বললাম, না, তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াহূদীকে তার স্বপক্ষে শপথ করতে বললেন। এ হাদীসের অংশ থেকে বুঝা যায়, বিচারকার্যে শপথ অমুসলিমদের জন্যও হতে পারে, শপথের বিষয়টি শুধু মুসলিমদের জন্য নির্দিষ্ট নয়। তবে এক্ষেত্রে যদি সে মিথ্যা শপথ করে মুসলিমের মাল-সম্পদ হরণ করে তাহলে এর জন্য তাকে কঠিন পরিণতি বহন করতে হবে। মহান আল্লাহ সূরা আ-লি ‘ইমরান-এর ৭৭নং আয়াতে বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় যারা সামান্য কিছু লাভের আশায় মিথ্যা শপথ করবে তাদের জন্য আখিরাতে কোনো অংশ নেই, আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, কিয়ামতের দিন তাদেরকে পবিত্র করবেন না, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’’ (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৬১৮; তুহফাতুল আহওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ২৯৯৬; মিরকাতুল মাফাতীহ)