পরিচ্ছেদঃ ১৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার
৩৩৬৯-[২৮] আবূ যার্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের অধীনস্থ দাস-দাসীকে নিজেরা যা খাবে, তাকেও তাই খাওয়াবে; নিজেরা যা পরিধান করবে, তাকেও তাই পরিধান করাবে। আর যারা তোমাদের (অধীনস্থ) উপযোগী বা মানানসই নয়, তাদের বিক্রি করে দাও এবং তোমরা আল্লাহর বান্দাকে কষ্ট দিও না। (আহমাদ, আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ لَاءَمَكُمْ مِنْ مَمْلُوكِيكُمْ فَأَطْعِمُوهُ مِمَّا تَأْكُلُونَ وَاكْسُوهُ مِمَّا تَكْسُونَ وَمَنْ لَا يُلَائِمُكُمْ مِنْهُمْ فَبِيعُوهُ وَلَا تُعَذِّبُوا خَلَقَ اللَّهِ» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (لَاءَمَكُمْ) ‘আরবী শব্দ (المُلاءَمَةُ) থেকে নির্গত। যার অর্থ উপযোগী হওয়া, খাপ খাওয়া, সন্ধি হওয়া ইত্যাদি। হাদীসের অর্থ হলো, যে গোলামের সাথে তোমাদের খাপ খায় তথা বনিবনা হয় তাকে নিজে যা খাও খাওয়ায়, নিজে যা পরিধান করো তাকে পরিধান করাও। অর্থাৎ তাকে সাথে রাখো এবং তার সাথে কোনো বৈষম্য আচরণ করো না। তবে ইতোপূর্বে এই মর্মের হাদীসের আলোচনায় আমরা জেনেছি যে, মালিকের সাদৃশ্য হুবহু খাবার ও পরিধেয় বস্তু গোলামকে দেয়ার হুকুমটি মুস্তাহাব পর্যায়ের। তবে গোলামকে তার জন্য প্রচলিত মানের খাবার ও পরিধেয় বস্তু অবশ্যই দিতে হবে। এতে কৃপণ করা যাবে না।
(وَمَنْ لَا يُلَائِمُكُمْ مِنْهُمْ فَبِيْعُوْهُ) আর গোলামের মধ্যে যে তোমাদের উপযোগী না হয় তাকে বিক্রি করে দাও। অর্থাৎ গোলামের সাথে বনিবনা না হলে তাকে প্রহার করবে না, বরং বিক্রি করে দিবে; কেননা আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টিকে কষ্ট দেয়া জায়িয নয়। বনিবনা না হওয়ার কারণে অনেক সময় অযথা তাকে কষ্ট দিতে পার যা তোমার গুনাহের কারণ হবে। পরবর্তীতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টিকে কষ্ট না দেয়ার বিষয়টি ব্যাপক আকারে নির্দেশ দিয়ে বলেন, (وَلَا تُعَذِّبُوْا خَلَقَ اللّٰهِ) আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিয়ো না। অর্থাৎ আল্লাহর তা‘আলার কোনো সৃষ্টিকেই কষ্ট দেয়া যাবে না। আল্লাহর দাসকে কষ্ট দিয়ো না বলে সাধারণভাবে আল্লাহর সৃষ্টির কষ্ট না দেয়ার কথার বলার মাঝে দু’টি ফায়েদা রয়েছে। (এক) গোলামকে যেমন কষ্ট দেয়া জায়িয নেই তেমনি আল্লাহর কোনো সৃষ্টিকেই অন্যায় কষ্ট দেয়া জায়িয নেই। গোলামকে কষ্ট না দেয়ার কথা বলতে গিয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য সৃষ্টির কথাও ঢুকিয়ে দিলেন। (দুই) যে কোনো সৃষ্টির কষ্ট দেয়ার কথা নিষেধ করলে গোলামের কষ্ট দেয়ার নিষেধাজ্ঞা আরো দৃঢ় হয়। কেননা যে কোন সৃষ্টিকে কষ্ট দেয়া যেখানে নিষেধ, সেখানে গোলাম সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ, সেই তুলনায় তাকে কষ্ট আরো বেশি খারাপ ও নিষেধের আওতায় পড়বে। মোটকথা, ব্যাপকভাবে বলে গোলামকে কষ্ট দেয়ার নিষেধাজ্ঞা দৃঢ় করা উদ্দেশ্য। (মিরকাতুল মাফাতীহ)