পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত
৩২৬০-[২৩] লাক্বীত্ব ইবনু সবিরাহ্ হতে (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার স্ত্রী অত্যন্ত মুখরিতা (বাচাল)। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তবে তালাক দিয়ে দাও। আমি বললাম, কিন্তু ঐ স্ত্রীর ঘরে আমার সন্তান রয়েছে এবং সে আমার দীর্ঘ দিনের দাম্পত্য সঙ্গীনী। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তবে তাকে নাসীহাত কর। যদি সে তোমার উপদেশে ভালো হয়ে যায় তবে ভালো। কিন্তু স্ত্রীকে ক্রীতদাসীর ন্যায় মারবে না। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ لَقِيطِ بْنِ صَبِرَةَ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي امْرَأَةً فِي لِسَانِهَا شَيْءٌ يَعْنِي الْبَذَاءَ قَالَ: «طَلِّقْهَا» . قُلْتُ: إِنَّ لِي مِنْهَا وَلَدًا وَلَهَا صُحْبَةٌ قَالَ: «فَمُرْهَا» يَقُولُ عِظْهَا «فَإِنْ يَكُ فِيهَا خَيْرٌ فَسَتَقْبَلُ وَلَا تَضْرِبَنَّ ظَعِينَتَكَ ضَرْبَكَ أُمَيَّتَكَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: এখানে ‘‘লাক্বীত্ব ইবনু সবিরাহ্’’ নাম এসেছে, কিন্তু أَسْمَاءِ الْمُصَنَّفِ লেখকদের নাম বা রচয়িতাদের নামের মধ্যে ‘‘লাক্বীত্ব ইবনু ‘আমির ইবনু সবিরাহ্’’ রয়েছে। ইনি প্রসিদ্ধ সাহাবী, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার স্ত্রীর সম্পর্কে অভিযোগ করেন যে, সে গাল-মন্দ এবং অশ্লীল কথা বলে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘তুমি তাকে তালাক দিয়ে দাও, অর্থাৎ তুমি যদি তার কথায় ধৈর্য ধারণ করতে না পারো তবে তাকে তালাক দিয়ে দাও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ নির্দেশ আবশ্যক হিসেবে বিবেচিত হবে না বরং ইবাহাত বা বৈধতার অর্থে ব্যবহৃত হবে। লোকটি বললেন, তার সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং তার থেকে আমার সন্তানও রয়েছে, কিভাবে আমি এই দীর্ঘ ভালোবাসার অবসান ঘটিয়ে তাকে তালাক দেই। এতে আমার সন্তানের জীবনও হয়ে যেতে পারে বিপন্ন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তাহলে তুমি তাকে ভালো উপদেশ দাও, অর্থাৎ ভালো ব্যবহারের নাসীহাত করো, তার মধ্যে যদি সামান্য কল্যাণও থাকে তাহলে সে তোমার উপদেশ কবুল করবে এবং তার ঐ মন্দ অভ্যাস ত্যাগ করবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাসীহাতের কথা এজন্য বলেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা তা নির্দেশ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘তোমরা স্ত্রীদের নাসীহাত করো।’’ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৩৪)
সেকালে মানুষ দাস-দাসীদের নির্দয়ভাবে প্রহার করতো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে বললেনঃ তুমি তোমার স্বাধীনা স্ত্রীকে ঐরূপ দাস-দাসীর মতো প্রহার করো না। অর্থাৎ সে যদি নাসীহাত কবুল নাই করে, তবে আল কুরআনের অনুমোদিত প্রহারটুকু যেন দয়ার্দ্রতার সাথে হয় এবং হালকা ও মৃদু প্রহার হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২১৪২)