হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩২৪৫

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত

৩২৪৫-[৮] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, (হে ’আয়িশাহ্!) তোমার মন যখন আমার প্রতি সন্তোষ থাকে এবং যখন অসন্তোষ হয়- তা আমি বুঝতে পারি। আমি [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] জিজ্ঞেস করলাম, কিভাবে তা বুঝতে পারেন? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যখন তোমার মন আমার প্রতি সন্তোষ থাকে (তখন কথা প্রসঙ্গে কসমের প্রয়োজনে) তুমি বল- ’’না, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রবে্র কসম!’’ অপরদিকে যখন তোমার মন আমার প্রতি অসন্তোষ থাকে তখন তুমি বল- ’’না, ইব্রাহীম (আঃ)-এর রবে্র কসম!’’ আমি [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] বললাম, জি, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তবে আমি শুধু আপনার নামই পরিত্যাগ করি (কিন্তু হৃদয়ে আপনার প্রতি শ্রদ্ধা, প্রীতি-ভালোবাসা সর্বদা অটুট থাকে)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ عِشْرَةِ النِّسَاءِ وَمَا لِكُلِّ وَاحِدَةِ مِّنَ الْحُقُوْقِ

وَعَنْهَا قَالَتْ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي لأعْلم إِذا كنت عني راضية وَإِذا كنت عني غَضْبَى» فَقُلْتُ: مِنْ أَيْنَ تَعْرِفُ ذَلِكَ؟ فَقَالَ: إِذَا كُنْتِ عَنِّي رَاضِيَةً فَإِنَّكَ تَقُولِينَ: لَا وَرَبِّ مُحَمَّدٍ وَإِذَا كُنْتِ عَلَيَّ غَضْبَى قُلْتِ: لَا وَرَبِّ إِبْرَاهِيمَ . قَالَتْ: قُلْتُ: أَجَلْ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَهْجُرُ إِلَّا اسْمَكَ

ব্যাখ্যা : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা যত গভীরই হোক না কেন তবু কোনো কোনো সময় তার মধ্যে একটু ভাটা পরে, আর এটার বহিঃপ্রকাশ ঘটে অভিমান দিয়ে। এ অভিমান নিন্দনীয় নয়, বরং এতে তাদের ভালোবাসা আরো গভীর ও অটুট হয়। এটা যেন পরম প্রেমসম্পদকে আরো কাছে টানার আত্মজগতের এক অদৃশ্য প্রস্তাব।

মুসলিম নারীদের আদর্শ উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি অভিমানের ঘটনা এখানে প্রকাশিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন টের পেলেন তখন তা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর কাছে বলে ফেললেন যে, আমি কিন্তু তোমার এই কাজ বুঝতে পারি। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কিভাবে তা বুঝতে পারেন? ওয়াহীর মাধ্যমে বা কাশ্ফের মাধ্যমে, নাকি কোনো কিছুর আলামত আপনার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উত্তরে বললেন, তুমি যখন আমার প্রতি সন্তুষ্ট ও খুশি থাকো তখন কোনো কিছুর শপথ করতে বলে থাকো, ‘মুহাম্মাদ-এর রবের শপথ’ আর যখন তুমি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকো তখন এ জাতীয় শপথে বলে থাকো, ‘ইব্রাহীম-এর রবের শপথ’ আমার নামের পরিবর্তে তুমি ইব্রাহীম-এর নাম উচ্চারণ করে থাকো। এর প্রতি উত্তরে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রসূল! হ্যাঁ, তবে এটা আমার মুখের কথাই মাত্র, আল্লাহর শপথ! আমি অভিমানের সময় শুধু মৌখিক আপনার নামটাই বাদ দেই কিন্তু আপনার মহববত এবং শ্রদ্ধা আমার হৃদয়ে গভীর ও স্থায়ীভাবে প্রোথিত।

ইবনুল মুনীর (রহঃ) বলেন, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম বাদ দিয়ে ইব্রাহীম (আঃ)-এর নাম উচ্চারণ করে দূর পথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদা অক্ষুণ্ণই রেখেছেন। (শারহে মুসলিম ৯ম খন্ড, হাঃ ২৪৩৯; মিরকাতুল মাফাতীহ)