পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - হাদিয়া (উপহার) ও হিবার (অনুদান) প্রসঙ্গে
৩০১৮-[৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দান করে ফেরত নেয়, সে কুকুরের সদৃশ; সে স্বীয় বমি পুনরায় খায়। আমাদের মাঝে এই নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত কাম্য নয়। (বুখারী)[1]
بَابٌ فِى الْهِبَةِ وَالْهَدِيَّةِ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْعَائِدُ فِي هِبَتِهِ كَالْكَلْبِ يَعُودُ فِي قَيْئِهِ لَيْسَ لَنَا مَثَلُ السوء» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: (لَيْسَ لَنَا مَثَلُ السُّوْءِ) একমতে বলা হয়েছে- যার মাধ্যমে মন্দের উপমা পেশ করা হয় সে ব্যাপারে কাজ করা আমাদের জাতির জন্য মানায় না। কাযী বলেন, আমাদের জন্য ঐ নিন্দনীয় গুণ দ্বারা গুণান্বিত হওয়া উচিত না যে ক্ষেত্রে সর্বাধিক নিকৃষ্ট প্রাণী সর্বাধিক নিকৃষ্ট অবস্থায় আমাদের অংশীদার হবে। অথচ উপমা পেশ করা হয়- অবাক অভিনব বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে চাই তা প্রশংসাজ্ঞাপক হোক অথবা নিন্দাজ্ঞাপক হোক।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘যারা পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না তাদের জন্য রয়েছে মন্দ দৃষ্টান্ত আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সুউচ্চ দৃষ্টান্ত’’- (সূরা আন্ নাহল ১৬ : ৬০) এর মাধ্যমে দান করা বস্তু গ্রহীতা আয়ত্তে নেয়ার পর দানকারীর তা ফিরিয়ে নেয়া বৈধ না হওয়ার ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করা হয়েছে। নববী (রহঃ) বলেন, দান-সাদাকা গ্রহণ করার পর তা গ্রহীতার কাছ থেকে ফিরিয়ে নেয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে দৃষ্টান্তটি স্পষ্ট। তবে কোনো ব্যক্তি তার সন্তানকে এবং তার সন্তানের সন্তানকে যা দান করেছে তা উদ্দেশ্য নয়, যেমন এ ব্যাপারে নু‘মান বিন বাশীর-এর হাদীসে স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এটা শাফি‘ঈ, মালিক ও আওযা‘ঈ-এর অভিমত। আবূ হানীফাহ্ এবং অন্যান্যরা বলেন, পিতা এবং মাহরাম ছাড়া প্রত্যেক দাতা ফিরিয়ে নিতে পারবে। অনাত্মীয়দের থেকে দান ফিরিয়ে নেয়া যাবে বলে যারা মনে করে তাদের কাছে এ হাদীসটিতে যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে তা মাকরূহ অর্থে হারাম অর্থে নয়। আর তিনি ‘উমার -এর হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করে থাকেন। যখন তিনি ঐ ঘোড়া ক্রয় করতে চেয়েছিলেন, আল্লাহর পথে যার উপর তিনি কাউকে আরোহণ করতে দিয়েছিলেন। অতঃপর তিনি ঐ সম্পর্কে আল্লাহর রসূলকে প্রশ্ন করলে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদিও সে তা তোমাকে এক দিরহামের বিনিময়ে দেয়, তথাপিও তা ক্রয় করবে না। তুমি তোমার দান ফিরিয়ে নিবে না। কেননা দানকে ফেরত গ্রহণকারী ঐ কুকুরের মতো, যে বমি করার পর পুনরায় তা চেটে নেয়। তূরিবিশতী বলেনঃ এ উক্তি যখন দান করা বস্তুর ক্রয় করার হুরমাতকে আবশ্যক সাব্যস্ত করতে পারল না, তখন এভাবে এ হাদীস কোনো বস্তু দান করার পর তা ফিরিয়ে নেয়া হারাম হওয়াকে আবশ্যক সাব্যস্ত করতে পারবে না। কিন্তু ত্বীবী এমন এক মাধ্যমে এর সমালোচনা করেছেন যাতে বিস্ময় রয়েছে।
জামি‘উস্ সগীরে আছে, (الْعَائِدُ فِىْ هِبَتِه كَالْكَلْبِ يَعُوْدُ فِىْ قَيْئِه) অর্থাৎ- ‘‘দান করে তা ফেরত গ্রহণকারী বমি করে পুনরায় তা ভক্ষণকারীর মতো।’’ (মিরকাতুল মাফাতীহ)