পরিচ্ছেদঃ ১৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - দানসমূহ
৩০০৯-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’উমরা বা ভোগ দখলস্বত্ব দান করা জায়িয। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْعَطَايَا
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْعُمْرَى جَائِزَةٌ»
ব্যাখ্যা: ইমাম বুখারী তাঁর বুখারীতে «الرقبى» শব্দ দ্বারা অধ্যায় বেঁধেছেন এবং তার অধীনে «العمرى» জীবনস্বত্বদান সম্পর্কিত দু’টি হাদীস নিয়েছেন, যেমন তিনি মনে করছেন «العمرى» এবং «الرقبى» উভয়ে প্রতিশব্দ। আর এটা জুমহূরের অভিমত। ইমাম মালিক, আবূ হানীফাহ্ এবং মুহাম্মাদ «الرقبى»-কে নিষেধ করেছেন। আর আবূ ইউসুফ জুমহূরের অনুসরণ করেছেন। আর নাসায়ী বিশুদ্ধ সানাদে ইবনু ‘আব্বাস কর্তৃক মাওকূফ সূত্রে বর্ণনা করেন, (الْعُمْرٰى وَالرُّقْبٰى سَوَاءٌ) অর্থাৎ-‘উমরা এবং রুকবা সমান। নাসায়ীতে ইসরাঈল-এর সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি ‘আব্দুল কারীম হতে, আর তিনি ‘আত্বা হতে বর্ণনা করেন। নিশ্চয় ‘আত্বা বলেন, ‘‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমরা এবং রুকবা করতে নিষেধ করেছেন, আমি বললাম, রুকবা কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কোনো ব্যক্তি আরেক ব্যক্তিকে বলবে, এটা তোমার জন্য তোমার বেঁচে থাকা পর্যন্ত। যদি তোমরা এমন কর তাহলে তা বৈধ। এভাবে তিনি একে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন, তিনি একে ইবনু জুরায়জ-এর সানাদেও বর্ণনা করেছেন, তিনি ‘আত্বা হতে, তিনি হাবীব বিন আবূ সাবিত হতে, তিনি ইবনু ‘উমার হতে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘‘কোনো ‘উমরা নেই, কোনো রুকবা নেই, যে ব্যক্তি কাউকে কোনো বস্তু ‘উমরা এবং রুকবা হিসেবে দিবে সেটা ঐ ব্যক্তির জন্য তার জীবদ্দশাতে এবং তার মৃত্যুর পর মালিকানা সাব্যস্ত হবে।’’ এর বর্ণনাকারীগণ নির্ভরশীল তবে হাবীব এ হাদীসটি ইবনু ‘উমার হতে শ্রবণের ক্ষেত্রে মতানৈক্য করা হয়েছে।
অতঃপর নাসায়ী এক সানাদে একে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, অন্য সানাদে এর অর্থ এসেছে, মা’ওয়ার্দী (রহঃ) বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা কি দিক নির্দেশনা করছে?’’ এ ব্যাপারে তারা মতানৈক্য করেছে। স্পষ্ট হলো- নিষেধাজ্ঞা হুকুম অভিমুখী হচ্ছে। একমতে বলা হয়েছে, জাহিলী শব্দের এবং রহিত হওয়া হুকুমের মুখাপেক্ষী হচ্ছে। আর একমতে বলা হয়েছে- যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে তা সম্পাদন করা যতক্ষণ পর্যন্ত উপকারে আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত ‘‘নাহী’’ তার নিষেধাজ্ঞার বিশুদ্ধতাকে বাধা দিবে। পক্ষান্তরে যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে তার বিশুদ্ধতা তথা তাতে যখন জড়িত হওয়া ব্যক্তির ওপর ক্ষতিকারক হবে, তখন ‘‘নাহী’’ তার অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞার বিশুদ্ধতাকে বাধা দিবে না। যেমন ঋতুর সময়ে তালাক দেয়া, আর জীবনস্বত্ব দান করার বিশুদ্ধতা জীবনস্বত্ব দানকারীর ওপর ক্ষতিকারক, কেননা বিনিময় ব্যতিরেকে তার মালিকানা দূর হয়ে যায়। এ সকল কিছু ঐ ক্ষেত্রে যখন নিষেধাজ্ঞাকে হারাম অর্থের উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর নিষেধাজ্ঞাকে যদি মাকরূহ অর্থের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, তাহলে এ ব্যাপারে প্রমাণ বহন করবে না, স্পষ্ট আলামাত হলো, এর হুকুম বর্ণনায় হাদীসের শেষে যা বর্ণনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাঁর (الْعُمْرٰى جَائِزَةٌ) ‘‘জীবনস্বত্ব দান করা বৈধ’’ এ উক্তি স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিরমিযীতে আবুয্ যুবায়র-এর সানাদে আছে, তিনি জাবির থেকে বর্ণনা করেন, জাবির একে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬২৬)