হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩৪৩২

পরিচ্ছেদঃ কোন ভাল জিনিসের সুসংবাদ ও তার জন্য মুবারকবাদ জানানো মুস্তাহাব

(৩৪৩২) ইবনে শিমাসাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমর ইবনে আ’স (রাঃ) এর মরণোন্মুখ সময়ে আমরা তাঁর নিকটে উপস্থিত হলাম। তিনি অনেক ক্ষণ ধরে কাঁদতে থাকলেন এবং দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরূপ অবস্থা দেখে তাঁর এক ছেলে বলল, ’আববাজান! আপনাকে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুক জিনিসের সুসংবাদ দেননি? আপনাকে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুক জিনিসের সুসংবাদ দেননি?’ এ কথা শুনে তিনি তাঁর চেহারা সামনের দিকে ক’রে বললেন, আমাদের সর্বোত্তম পুঁজি হল, এই সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল। আমি তিনটি স্তর অতিক্রম করেছি।

(এক) আমার চেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি বড় বিদ্বেষী আর কেউ ছিল না। তাঁকে হত্যা করার ক্ষমতা অর্জন করাই ছিল আমার তৎকালীন সর্বাধিক প্রিয় বাসনা। যদি (দুর্ভাগ্যক্রমে) তখন মারা যেতাম, তাহলে নিঃসন্দেহে আমি জাহান্নামী হতাম।

(দুই) তারপর যখন আল্লাহ তাআলা আমার অন্তরে ইসলাম প্রক্ষিপ্ত করলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হয়ে নিবেদন করলাম, ’আপনার ডান হাত প্রসারিত করুন। আমি আপনার হাতে বায়আত করতে চাই।’ বস্তুতঃ তিনি ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন। কিন্তু আমি আমার হাত টেনে নিলাম। তিনি বললেন, ’’আমর! কী ব্যাপার?’’ আমি নিবেদন করলাম, ’একটি শর্ত আরোপ করতে চাই।’ তিনি বললেন, ’’শর্তটি কী?’’ আমি বললাম, ’আমাকে ক্ষমা করা হোক---শুধু এতটুকুই।’ তিনি বললেন, ’’তুমি কি জানো না যে, ইসলাম পূর্বের সমস্ত পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়, হিজরত পূর্বের সমস্ত পাপরাশিকে নিশ্চিহ্ন ক’রে ফেলে এবং হজ্জ্বও পূর্বের পাপসমূহ ধ্বংস ক’রে দেয়?’’

তখন থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা অধিক প্রিয় মানুষ আর কেউ নেই। আর আমার দৃষ্টিতে তাঁর চেয়ে সম্মানীয় ব্যক্তি আর কেউ নেই। তাঁকে সম্মান ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার অবস্থা এরূপ ছিল যে, তাঁর দিকে নয়নভরে তাকাতে পারতাম না। যার ফলে আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করে যে, ’আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গঠনাকৃতি কিরূপ ছিল?’ তাহলে আমি তা বলতে পারব না। এ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হয়ে যেত, তাহলে আশা ছিল যে, আমি জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।

(তিন) তারপর বহু দায়িত্বপূর্ণ বিষয়াদির খপ্পরে পড়লাম। জানি না, তাতে আমার অবস্থা কী? সুতরাং আমি মারা গেলে কোন মাতমকারিণী অথবা আগুন যেন অবশ্যই আমার (জানাযার) সাথে না থাকে। তারপর যখন আমাকে দাফন করবে, তখন যেন তোমরা আমার কবরে অল্প অল্প ক’রে মাটি দেবে। অতঃপর একটি উট যবেহ ক’রে তার মাংস বন্টন করার সময় পরিমাণ আমার কবরের পাশে অপেক্ষা করবে। যাতে আমি তোমাদের সাহায্যে নিঃসঙ্গতা দূর করতে পারি এবং আমার প্রভুর প্রেরিত ফিরিশতাদের সঙ্গে কিরূপ বাক্-বিনিময় করি, তা দেখে নিই।

وَعَنِ ابنِ شِمَاسَة قَالَ : حَضَرْنَا عَمْرَو بنَ العَاصِ وَهُوَ في سِيَاقَةِ الْمَوْتِ فَبَكَى طَوِيلاً وَحَوَّلَ وَجْهَهُ إِلَى الجِدَارِ فَجَعَلَ ابْنُهُ يَقُولُ : يَا أبَتَاهُ أمَا بَشَّرَكَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بكَذَا ؟ أمَا بَشَّرَكَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِكَذَا ؟ فَأقْبَلَ بِوَجْهِهِ فَقَالَ : إنَّ أفْضَلَ مَا نُعِدُّ شَهَادَةُ أنْ لاَ إلهَ إِلاَّ الله وَأنَّ مُحَمَّداً رَسُوْلُ اللهِ إنِّي قَدْ كُنْتُ عَلَى أطْبَاقٍ ثَلاَثٍ : لَقَدْ رَأيْتُنِي وَمَا أحَدٌ أشَدُّ بُغضاً لِرَسُولِ اللهِ ﷺ مِنِّي وَلاَ أحَبَّ إليَّ مِنْ أنْ أكُونَ قدِ اسْتَمكَنتُ مِنْهُ فَقَتَلْتُهُ فَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلكَ الحَالِ لَكُنْتُ مِنْ أهْلِ النَّارِ فَلَمَّا جَعَلَ اللهُ الإسلاَمَ في قَلْبِي أتَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ فقُلْتُ : اُبسُطْ يَمِينَكَ فَلأُبَايِعُكَ فَبَسَطَ يَمِينَهُ فَقَبَضْتُ يَدِي فَقَالَ مَا لَكَ يَا عَمْرُو ؟ قُلتُ: أَرَدتُ أنْ أشْتَرِطَ قَالَ تَشْتَرِطُ مَاذا ؟ قُلْتُ : أنْ يُغْفَرَ لِي قَالَ أمَا عَلِمْتَ أن الإِسلاَمَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ وَأن الهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبلَهَا وَأنَّ الحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ ؟ وَمَا كَانَ أحدٌ أحَبَّ إليَّ مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَلاَ أجَلَّ في عَينِي مِنْهُ وَمَا كُنْتُ أُطيقُ أَن أَملأُ عَينَيَّ مِنْهُ ؛ إِجلاَلاً لَهُ وَلَو سُئِلتُ أَن أَصِفَهُ مَا أَطَقتُ لأَنِّي لَمْ أَكُن أَملأُ عَينَيَّ مِنْهُ وَلَو مُتُّ عَلَى تِلْكَ الحَالِ لَرجَوْتُ أَن أكُونَ مِنْ أهْلِ الجَنَّةِ ثُمَّ وَلِينَا أشْيَاءَ مَا أدْرِي مَا حَالِي فِيهَا ؟ فَإِذَا أنَا مُتُّ فَلاَ تَصحَبَنِّي نَائِحَةٌ وَلاَ نَارٌ فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي فَشُنُّوا عَليَّ التُّرَابَ شَنّاً ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزورٌ وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا حَتّٰـى أَسْتَأنِسَ بِكُمْ وَأنْظُرَ مَا أُرَاجعُ بِهِ رُسُلَ رَبّي رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ