পরিচ্ছেদঃ ৫৮. নবী (ﷺ)-এর বিদায় হজ্জের বিবরণ
১৯০৫। জা’ফর ইবনু মুহাম্মাদ (রহ.) থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা জাবির ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাযি.)-এর নিকট যাই। আমরা তার নিকটবর্তী হলে তিনি (অন্ধ হওয়ার কারণে) আগন্তুকদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন এবং এক পর্যায়ে আমরা কাছাকাছি এলে আমি বললাম, আমি মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনু হুসাইন ইবনু ’আলী (রাযি.)। আমার কথা শুনে তিনি আমার মাথার দিকে হাত বাড়ান, আমার জামার উপরের ও নীচের বোতাম খুলে তার হাতের তালু আমার বুকের উপর রাখলেন। তখন আমি ছিলাম যুবক। তিনি বললেন, মারহাবা! মুবারক হোক তোমার আগমন, স্বাগতম হে ভ্রাতুষ্পুত্র! যা ইচ্ছে জিজ্ঞাসা করতে পারো। এরপর আমি জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি ছিলেন অন্ধ।
সালাতের সময় উপস্থিত হলে তিনি কাপড় পেচিয়ে নিজের জায়নামাযের উপর সালাতে দাঁড়ালেন কিন্তু তার কাপড় ছোট হওয়ায় তিনি যখনই কাঁধের উপর রাখছিলেন তখনই এর দু’পাশ তার দিকে ফিরে আসছিল। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন, অথচ তার (বড়) চাদরটি আলনার উপর রক্ষিত ছিলো। আমি বললাম, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হজ (হজ্জ) সম্বন্ধে বলুন। তিনি হাত দিয়ে ইশারা করে নয় সংখ্যাটির কথা বললেন, অতঃপর বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নয় বছর মদীনায় ছিলেন, এ সময় একবারও হজ (হজ্জ) করেননি।
অতঃপর দশম বছরে লোকদের মধ্যে ঘোষণা করলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ (হজ্জ) করবেন। ফলে অসংখ্যা লোক মদীনায় আসলো এবং প্রত্যেকেই চাইলো যে, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ করবে্ এবং তিনি যেসব কাজ করেন তারাও তাই করবে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হলে আমরাও তাঁর সাথে রওয়ানা হই। ’যুল-হুলাইফা’ পর্যন্ত পৌঁছলে আসমা ’বিনতু উমাইস (রাযি.) মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকরকে প্রসব করেন।
কাজেই তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে লোক মারফত জানতে চাইলেন, এখন আমার কি করণীয়? তিনি বললেনঃ তুমি গোসল করে (লজ্জাস্থানে) কাপড় বেঁধে ইহরাম বেঁধে নাও। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে সালাত আদায় করেন, অতঃপর উষ্ট্রী ’কাসওয়া’র উপর চড়েন। উষ্ট্রীটি যখন আল-বায়দা’ উপত্যকায় দাঁড়ালো তখন জাবির (রাযি.) বলেন, তাঁর সম্মুখে আমার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত দেখতে পেলাম শুধু আরোহী ও পদাতিক জনসমুদ্র, তাঁর ডানে, বামে এবং পিছনে সবত্রই একই অবস্থা।
এ সময় রাসূলুল্লাহ আমাদের মাঝে ছিলেন এবং তখন তাঁর উপর আহকাম সম্মলিত কুরআনের আয়াত নাযিল হচ্ছিল আর তিনি এর ব্যাখ্যা জানতেন। তিনি যা কিছু করতেন আমরাও অনুরূপ করতাম। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে ইহরাম বেঁধে উচ্চস্বরে পড়লেনঃ ’’লাব্বায়িক আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক।লাব্বায়িকা লা শারীকা লাকা লাববায়িক ইন্নাল- হামদা ওয়ান-নি’মাতা লাকা ওয়াল-মুলক লা শারীকা লাকা।’’ তিনি যেভাবে ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পড়েছেন, লোকেরাও সেভাবে ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পড়লো। তাদের কোনো কাজকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্বীকৃতি দেননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালবিয়া পাঠ অব্যাহত রাখলেন।
জাবির (রাযি.) বলেন, আমরা শুধু হজের (হজ্জের) নিয়্যাত করেছিলাম। ’উমরা’ সম্পর্কে আমরা জানতাম না। পরে আমরা তাঁর সাথে বায়তুল্লাহয় এসে পৌঁছলে তিনি রুকন অর্থাৎ হাজরে আসওয়াদে চুমু খেলেন এবং তিনবার রমল এবং চারবার স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে (তাওয়াফ) সম্পন্ন করলেন। অতঃপর মাকামে ইবরাহীমের দিকে অগ্রসর হয়ে পড়লেনঃ ’’এবং ইবরাহীমের দাঁড়ানোর স্থানকে তোমরা সালাতের স্থানরূপে নির্ধারণ করো’’ (সূরা আল-বাকারাহঃ ১২৫) এবং তিনি মাকামে ইবরাহীম ও বায়তুল্লাহকে সামনে রাখলেন। জা’ফর ইবনু মুহাম্মাদ বলেন, আমার পিতা বলেছেন, ইবনু নুফাইল এবং ’উসমান বলেছেন, আমার মনে হয়, একথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন।
সুলাইমান বলেন, আমার ধারণা, জাবির বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই রাক’আত সালাত ’কুল হুআল্লাহু আহাদ’ এবং ’কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন’ দিয়ে পড়েছেন। আবার তিনি বায়তুল্লাহর নিকট গিয়ে রুকনে (হাজরে আসওয়াদ) চুমু খেলেন। অতঃপর (বায়তুল্লাহর) দরজা দিয়ে বেরিয়ে সাফা পাহাড়ের দিকে গেলেন। তিনি সাফার কাছে গিয়ে পাঠ করলেনঃ ’’নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত’’ (সূরা আল-বাকারাহঃ ১৫৯)।
সুতরাং আমরা সেখান থেকে সাঈ শুরু করবো আল্লাহ যেখান থেকে শুরু করেছেন (অর্থাৎ প্রথমে সাফা থেকে পরে মারওয়া থেকে) এ বলে তিনি সাফা পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেন। সেখান থেকে বায়তুল্লাহ দেখে তাকবীর বললেন এবং তাঁর তাওহীদের ঘোষণা দিয়ে বললেনঃ ’’তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই, মালিকানা ও সার্বভৌমত্ব তাঁর। তিনি জীবন-মৃত্যুদানকারী। তিনি সকল প্রশংসার প্রকৃত হকদার এবং তিনি সবকিছু করতে সক্ষম ও ক্ষমতাবান। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি একাই তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করে দেখিয়েছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই সকল (বিদ্রোহী) বাহিনীকে বিতাড়িত ও পরাভূত করেছেন।’’ তিনি এর মধ্যে অনুরূপ তিনবার দু’আ করলেন।
অতঃপর সেখান থেকে নেমে মারওয়ায় গেলেন, তাঁর পদদ্বয় নিম্নভূমি স্পর্শ করলো, তিনি সমতল ভূমিতে রমল করলেন। সমতল ভূমি অতিক্রম করে মারওয়া পাহাড়ের নিকটে এসে স্বাভাবিক গতিতে হাটলেন এবং তারপর মারওয়া পাহাড়ে তাই করলেন যেরূপ করেছিলেন সাফা পাহাড়ে। পরে মারওয়ার সর্বশেষ তাওয়াফ সম্পন্ন করে বললেনঃ আমি যা পরে জেনে নেই তা যদি আগে জানতাম তাহলে কুরবানীর পশু সঙ্গে নিয়ে আসতাম এবং (হজের (হজ্জের)) ইহরামকে ’উমরায় পরিণত করতাম। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাদের সাথে কুরবানীর পশু নেই, তারা যেন ’উমরা করার পর ইহরাম খুলে ফেলে এবং (তাওয়াফ, সাঈ ইত্যাদিকে) ’উমরার কাজ হিসেবে করে নেয়।
ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং যাদের সাথে কুরবানীর পশু ছিলো তারা ব্যতীত সকল লোক তাদের ইহরাম খুলে মাথার চুল ছেটে ফেললো। এসময় সুরাকাহ ইবনু জ’শুম (রাযি.) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরূপ কি শুধু আমাদের এ বছরের জন্য প্রযোজ্য, নাকি সর্বকালের জন্য? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাতের আঙ্গুল অন্য হাতের আঙ্গুলের মধ্যে ঢুকিয়ে বললেনঃ ’উমরা হজের (হজ্জের) মধ্যে প্রবেশ করেছে, এভাবে তিনি দু’বার বললেন, সর্বকালের জন্য।
বর্ণনাকারী বলেন, এসময় আলী (রাযি.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কুরবানীর পশু নিয়ে ইয়ামেন থেকে এলেন। তিনি দেখলেন, ফাতিমা (রাযি.) ইহরাম খুলে রঙ্গিন পোশাক পরে সুরমা লাগিয়েছেন। ’আলী (রাযি.) এটা অপছন্দ করে বললেন, তোমাকে এরূপ করতে কে বলেছে? তিনি বললেন, আমার পিতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বর্ণনাকারী বলেন, এক সময় আলী (রাযি.) ইরাকে এ কথা বলেছেন, আমি ফাতিমাহর কৃতকর্মের জন্য রাগ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলাম। আমি তাঁকে জানালাম, আমি ফাতিমাহর এ কাজ অপছন্দ করেছি এবং সে বলেছে, আমার পিতা আমাকে এরূপ করতে আদেশ করেছেন।
তিনি আমার কথা শুনে বললেনঃ সে সত্য বলেছে, সত্য বলেছে। (হে আলী!) তুমি হজ (হজ্জ) ও ’উমরার ইহরাম বাঁধার সময় কি বলেছিলে? তিনি বললেন, আমি বলেছি, হে আল্লাহ! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরূপ ইহরাম বেঁধেছেন, আমার ইহরামও অনুরূপ। তিনি বললেনঃ আমার সাথে কুরবানীর পশু আছে। সুতরাং (আমার মতো) তুমিও ইহরাম খুলে হালাল হতে পারবে না।
অপরদিকে ’আলী (রাযি.)-এর ইয়ামেন থেকে নিয়ে আসা কুরবানীর পশু এবং মদীনা থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিয়ে আসা কুরবানীর পশু, এগুলো মোট সংখ্যা ছিলো একশ’টি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর ঐ সব সাহাবী যাদের সাথে কুরবানীর পশু ছিলো তারা ব্যতীত সকলেই ইহরাম খুলে হালাল হয়ে মাথার চুল খাটো করলো। বর্ণনাকারী বলেন, তারা যখন (অষ্টম তারিখ) তারবিয়ার দিনে মিনা দিকে রওয়ানা হলেন, তখন তারা হজের (হজ্জের) উদ্দেশ্যে ইহরাম বাঁধলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়ারীতে চড়লেন এবং মিনায় পৌঁছে আমাদেরকে যুহর, ’আসর, মাগরিব, ’ইশা এবং ফজর, মোট পাঁচ ওয়াক্ত সালাত সেখানে আদায় করলেন এবং সূর্যদয় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলেন।
তিনি তাঁর জন্য একখানা পশমের তাবু টানাতে নির্দেশ দিলেন এবং ’নামিরা’ নামক স্থানে তা টানানো হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গেলেন। যাতে কুরাইশদের এরূপ সংশয় না করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশ’আরুল হারামের নিকটবর্তী মুযদালিফায় অবস্থান করবেন, যেরূপ কুরাইশরা জাহিলিয়াতের যুগে করতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে রওয়ানা হয়ে আরাফাতে আসলেন। এখানে এসে দেখলেন ’নামিরায়’ তাঁর জন্য তাবু টানানো হয়েছে। পশ্চিমাকাশে সূর্য ঢলে পড়া পর্যন্ত তিনি ঐ তাবুতে অবস্থান করেন। অতঃপর সূর্য ঢলে পড়লে তিনি ’কাসওয়া’ উষ্ট্রীটি উপস্থিত করার নির্দেশ দিলেন। তা আনা হলে তিনি তাতে চড়ে বাতনুল ওয়াদীতে আসলেন এবং লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন।
তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত ও সম্পদ (পরস্পরের জন্য) আজকের এই দিন, এই মাস এবং এই শহরের মতোই সম্মানিত। সাবধান! জাহিলী যুগের সমস্ত কাজ ও প্রথা আমার দুই পায়ের নীচে পতিত হলো। জাহিলী যুগের রক্তের সকল দাবী বাতিল। আমি সর্বপ্রথম আমাদের (বনী হাশিমের) রক্তের দাবী পরিত্যাগ করলাম। বর্ণনাকারী ’উসমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমি ইবনু রবী’আহর রক্তের দাবী ও সুলাইমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমি রবী’আহ ইবনু হারিস ইবনু ’আব্দুল মুত্তালিবের রক্তের দাবী পরিত্যাগ করলাম। আর রবী’আহ সা’দ গোত্রের দুগ্ধপুষ্য থাকাকালীন হুযাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করেছিল। জাহিলী যুগের সুদও বাতিল হলো।
আমি সর্বপ্রথম ’আব্বাস ইবনু ’আব্দুল মুত্তালিবের সুদের দাবী পরিহার করলাম। তা সম্পূর্ণরূপে বাতিল হলো। তোমরা নারীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছো এবং আল্লাহর বিধান মোতাবেক তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে নিজেদের জন্য হালাল করেছো। তাদের উপর তোমাদের অধিকার আছে, তারা যেন তোমাদের অপছন্দনীয় ব্যক্তিকে তোমার ঘরে স্থান না দেয়। তারা এরূপ করলে তাদেরকে খুবই হালকা মারধর করো। তাদের ভরণ-পোষনের দায়িত্বও তোমাদের উপর। তোমরা যা স্বাভাবিকভাবে আদায় করবে।
সর্বপরই আমি তোমাদের মধ্যে এমন একটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, তোমরা তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তা হলো আল্লাহর কিতাব। (কিয়ামতের দিন) তোমাদেরকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, তখন তোমরা কি বলবে? তারা বললেন, আমরা সাক্ষ্য দিবো, আপনি আপনার দায়িত্ব যথাযথভাবে পৌঁছিয়েছেন, আপনার আমানতের হক আদায় করেছেন এবং ভালো কাজের উপদেশ দিয়েছেন। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে তর্জনী তুলে ধরেন এবং মানুষের প্রতি ইঙ্গিত করে (তিনবার) বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন।
অতঃপর বিলাল (রাযি.) আযান অতঃপর ইকামাত দিলেন। তিনি যুহরের সালাত আদায় করলেন, পুনরায় ইকামাত দিলে আসরের সালাত আদায় করলেন। কিন্তু এ দুইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি অন্য (নফল) সালাত পড়েননি। অতঃপর তিনি কাসওয়া উষ্ট্রীতে আরোহণ করে আরাফাতে অবস্থানের স্থানে এলেন এবং কাসওয়া উষ্ট্রীকে ’জাবালে রহআতের’ পাদদেশে ঘুরিয়ে দাঁড় করিয়ে তিনি পাহাড়কে সামনে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়লেন। সূর্য ডুবে আকাশের লালিমা কিছুটা মুছে যাওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলেন।
সূর্যের লালিমা বিলুপ্ত হওয়ার পর তিনি উসমানকে তাঁর পিছনে সওয়ারীতে বসিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে রওয়ানা হলেন এবং উষ্ট্রীর লাগাম শক্ত করে ধরলেন, ফলে উটের মাথা হাওদার সম্মুখভাগের সাথেই ছুটলে লাগলো। এসময় তিনি ডান হাতের ইশারায় বলতে লাগলেনঃ ধীর স্থিরভাবে পদ চলো, হে লোকেরা, ধীর স্থিরভাবে চলো, হে লোকজন! তিনি কোনো বালির টিলার নিকট এলে উষ্ট্রীর লাগাম সামান্য ঢিলা করতেন যাতে তা সহজে টিলায় উঠে সামনে অগ্রসর হতে পারে। অবশেষে তিনি ’মুযদালিফায়’ উপস্থিত হলেন।
এখানে এসে এক আযান ও দুই ইকামাতের মাগরিব ও ’ইশার সালাত একত্রে আদায় করেন। এই দুই সালাতের মাঝখানে তিনি অন্য কোনো (নফল) সালাত পড়েননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ স্থানে ভোর পর্যন্ত বিশ্রাম করেন। ফযরের সময় হলে তিনি ফযরের সালাত আদায় করেন। তিনি এ সালাত আদায় করেছেন এক আযান ও এক ইকামাতে।
অতঃপর তিনি কাসওয়া উষ্ট্রীর উপর চড়ে মাশ’আরুল হারামে এসে তার উপর উঠেন। তারপর তিনি কিবলাহকে সামনে রেখে মহান আল্লাহর প্রশংসা, তাকবীর এবং তাহলীল পাঠ করেন। তিনি আল্লাহর একত্ববাদেরও ঘোষণা করেন এবং তিনি ভোর হওয়া পর্যন্ত এ স্থানে অবস্থান করেন। অতঃপর সূর্যদয়ের পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাদল ইবনু আব্বাস (রাযি.)-কে তাঁর বাহনের পেছনে বসিয়ে রওয়ানা হলেন। ফাদল ছিলেন কালো চুল ও সুন্দর চেহারার অধিকারী যুবক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চলার পথে জন্তুযানের অবস্থানকারী এক দল মহিলাও তাঁর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিল।
আর ফাদল বারবার তাদের দিকে তাকাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাদলের মুখের উপর হাত রাখলেন। ফাদল অন্য দিকে ঘুরে তাদের দিকে দেখছিলেন। ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাদলের মুখের উপর হাত দিয়ে তা অন্য দিকে ফিরালেন। এবার তিনি ’মুহাসসার’ নামক স্থানে পৌঁছলেন এবং তিনি উষ্ট্রীকে কিছুটা দ্রুত চালালেন। অতঃপর এখান থেকে রওয়ানা হয়ে জামরাতুল কুবরার দিকে মধ্যবর্তী পথ ধরে চললেন এবং সেখানে বৃক্ষের নিকটবর্তী জামরায় এসে উপস্থিত হয়ে তাতে সাতটি কংকর মারলেন আর প্রত্যেক কংকর নিক্ষেপের সময় তাকবীর বললেন। কংকরগুলো ছিলো পাথরের ক্ষুদ্র টুকরার মতো এবং তা সমতল ভূমি থেকে নিক্ষেপ করেছেন।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পশু কুরবানীর স্থানে উপস্থিত হলেন এবং নিজ হাতে তেষট্টিটি উট কুরবানী করলেন। অতঃপর ’আলী (রাযি.)-কে নির্দেশ দিলে তিনি অবশিষ্টগুলো যাবাহ করলেন। তিনি ’আলী (রাযি.)-কে তাঁর কুরবানীতে অংশীদারও করেন। অতঃপর তিনি প্রত্যেকটি যাবাহকৃত পশু থেকে এক টুকরা করে মাংস তাঁকে দেয়ার আদেশ করলেন। সুতরাং তা নিয়ে একটি হাড়িতে পাকানো হলো। তাঁরা দু’জনেই এ মাংস খেলেন এবং এর ঝোল পান করলেন।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উষ্ট্রীতে চড়ে খুব তাড়াতাড়ি রওয়ানা হয়ে বায়তুল্লাহয় উপস্থিত হলেন। তিনি মক্কায় এসেই যুহরের সালাত আদায় করলেন। পরে তিনি বনী ’আব্দুল মুত্তালিবের নিকট গেলেন। এসময় তারা (লোকদের) যমযমের পানি পান করাচ্ছিল। তিনি তাদেরকে বললেনঃ হে বনী আব্দুল মুত্তালিব! পানি উত্তোলন করতে থাকো। লোকদের অত্যাধিক ভিড় হওয়ার আশংকা যদি না থাকতো তাহলে আমিও তোমাদের সাথে পানি উত্তোলনে অংশগ্রহণ করতাম। এরপর লোকেরা তাঁকে পানির বালতি সরবারাহ করলে তিনি তা থেকে পান করেন।[1]
সহীহ।
بَابُ صِفَةِ حَجَّةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَهِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدِّمَشْقِيَّانِ، وَرُبَّمَا زَادَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ الْكَلِمَةَ وَالشَّيْءَ قَالُوا: حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: دَخَلْنَا عَلَى جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ فَلَمَّا انْتَهَيْنَا إِلَيْهِ، سَأَلَ عَنِ الْقَوْمِ حَتَّى انْتَهَى إِلَيَّ، فَقُلْتُ: أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ، فَأَهْوَى بِيَدِهِ إِلَى رَأْسِي فَنَزَعَ زِرِّي الْأَعْلَى، ثُمَّ نَزَعَ زِرِّي الْأَسْفَلَ، ثُمَّ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ ثَدْيَيَّ وَأَنَا يَوْمَئِذٍ غُلَامٌ شَابٌّ، فَقَالَ: مَرْحَبًا بِكَ، وَأَهْلًا يَا ابْنَ أَخِي سَلْ عَمَّا شِئْتَ فَسَأَلْتُهُ وَهُوَ أَعْمَى وَجَاءَ وَقْتُ الصَّلَاةِ، فَقَامَ فِي نِسَاجَةٍ مُلْتَحِفًا بِهَا يَعْنِي ثَوْبًا مُلَفَّقًا كُلَّمَا وَضَعَهَا عَلَى مَنْكِبِهِ رَجَعَ طَرَفَاهَا إِلَيْهِ مِنْ صِغَرِهَا، فَصَلَّى بِنَا وَرِدَاؤُهُ إِلَى جَنْبِهِ عَلَى الْمِشْجَبِ، فَقُلْتُ: أَخْبِرْنِي عَنْ حَجَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: بِيَدِهِ فَعَقَدَ تِسْعًا، ثُمَّ قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَثَ تِسْعَ سِنِينَ لَمْ يَحُجَّ، ثُمَّ أُذِّنَ فِي النَّاسِ فِي الْعَاشِرَةِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَاجٌّ، فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ بَشَرٌ كَثِيرٌ كُلُّهُمْ يَلْتَمِسُ أَنْ يَأْتَمَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَعْمَلَ بِمِثْلِ عَمَلِهِ، فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ حَتَّى أَتَيْنَا ذَا الْحُلَيْفَةِ، فَوَلَدَتْ أَسْمَاءُ بِنْتُ عُمَيْسٍ مُحَمَّدَ بْنَ أَبِي بَكْرٍ، فَأَرْسَلَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ أَصْنَعُ؟ فَقَالَ: اغْتَسِلِي وَاسْتَذْفِرِي بِثَوْبٍ وَأَحْرِمِي، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَسْجِدِ، ثُمَّ رَكِبَ الْقَصْوَاءَ حَتَّى إِذَا اسْتَوَتْ بِهِ نَاقَتُهُ عَلَى الْبَيْدَاءِ، قَالَ: جَابِرٌ نَظَرْتُ إِلَى مَدِّ بَصَرِي مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ مِنْ رَاكِبٍ وَمَاشٍ وَعَنْ يَمِينِهِ مِثْلُ ذَلِكَ وَعَنْ يَسَارِهِ مِثْلُ ذَلِكَ وَمِنْ خَلْفِهِ مِثْلُ ذَلِكَ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ أَظْهُرِنَا وَعَلَيْهِ يَنْزِلُ الْقُرْآنُ، وَهُوَ يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ فَمَا عَمِلَ بِهِ مِنْ شَيْءٍ، عَمِلْنَا بِهِ فَأَهَلَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالتَّوْحِيدِ لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ وَأَهَلَّ النَّاسُ بِهَذَا الَّذِي يُهِلُّونَ بِهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا مِنْهُ، وَلَزِمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَلْبِيَتَهُ، قَالَ جَابِرٌ: لَسْنَا نَنْوِي إِلَّا الْحَجَّ لَسْنَا نَعْرِفُ الْعُمْرَةَ، حَتَّى إِذَا أَتَيْنَا الْبَيْتَ مَعَهُ اسْتَلَمَ الرُّكْنَ فَرَمَلَ ثَلَاثًا، وَمَشَى أَرْبَعًا، ثُمَّ تَقَدَّمَ إِلَى مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ فَقَرَأَ (وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى) [البقرة: ١٢٥] فَجَعَلَ الْمَقَامَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْبَيْتِ. قَالَ: فَكَانَ أَبِي يَقُولُ قَالَ: ابْنُ نُفَيْلٍ، وَعُثْمَانُ وَلَا أَعْلَمُهُ ذَكَرَهُ إِلَّا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ سُلَيْمَانُ: وَلَا أَعْلَمُهُ إِلَّا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ بِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَقُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى الْبَيْتِ فَاسْتَلَمَ الرُّكْنَ، ثُمَّ خَرَجَ مِنَ الْبَابِ إِلَى الصَّفَا، فَلَمَّا دَنَا مِنَ الصَّفَا قَرَأَ (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ) [البقرة: ١٥٨] نَبْدَأُ بِمَا بَدَأَ اللَّهُ بِهِ فَبَدَأَ بِالصَّفَا فَرَقِيَ عَلَيْهِ حَتَّى رَأَى الْبَيْتَ فَكَبَّرَ اللَّهَ وَوَحَّدَهُ وَقَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ أَنْجَزَ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ ثُمَّ دَعَا بَيْنَ ذَلِكَ، وَقَالَ: مِثْلَ هَذَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ نَزَلَ إِلَى الْمَرْوَةِ حَتَّى إِذَا انْصَبَّتْ قَدَمَاهُ رَمَلَ فِي بَطْنِ الْوَادِي، حَتَّى إِذَا صَعَدَ مَشَى حَتَّى أَتَى الْمَرْوَةَ، فَصَنَعَ عَلَى الْمَرْوَةِ مِثْلَ مَا صَنَعَ عَلَى الصَّفَا، حَتَّى إِذَا كَانَ آخِرُ الطَّوَافِ عَلَى الْمَرْوَةِ، قَالَ: إِنِّي لَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِي مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقْ الْهَدْيَ وَلَجَعَلْتُهَا عُمْرَةً، فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ لَيْسَ مَعَهُ هَدْيٌ فَلْيُحْلِلْ وَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً فَحَلَّ النَّاسُ كُلُّهُمْ وَقَصَّرُوا إِلَّا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَنْ كَانَ مَعَهُ هَدْيٌ فَقَامَ سُرَاقَةُ بْنُ جُعْشُمٍ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلِعَامِنَا هَذَا أَمْ لِلْأَبَدِ؟ فَشَبَّكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصَابِعَهُ فِي الْأُخْرَى، ثُمَّ قَالَ: دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِي الْحَجِّ هَكَذَا مَرَّتَيْنِ لَا بَلْ لِأَبَدِ أَبَدٍ، لَا بَلْ لِأَبَدِ أَبَدٍ قَالَ: وَقَدِمَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، مِنَ الْيَمَنِ بِبُدْنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَجَدَ فَاطِمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا مِمَّنْ حَلَّ، وَلَبِسَتْ ثِيَابًا صَبِيغًا وَاكْتَحَلَتْ فَأَنْكَرَ عَلِيٌّ ذَلِكَ عَلَيْهَا، وَقَالَ: مَنْ أَمَرَكِ بِهَذَا، فَقَالَتْ: أَبِي، فَكَانَ عَلِيٌّ يَقُولُ: بِالْعِرَاقِ ذَهَبْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحَرِّشًا عَلَى فَاطِمَةَ فِي الْأَمْرِ الَّذِي صَنَعَتْهُ مُسْتَفْتِيًا لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الَّذِي ذَكَرَتْ عَنْهُ فَأَخْبَرْتُهُ، أَنِّي أَنْكَرْتُ ذَلِكَ عَلَيْهَا فَقَالَتْ: إِنَّ أَبِي أَمَرَنِي بِهَذَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، صَدَقَتْ مَاذَا، قُلْتَ حِينَ فَرَضْتَ الْحَجَّ قَالَ: قُلْتُ اللَّهُمَّ إِنِّي أُهِلُّ بِمَا أَهَلَّ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فَإِنَّ مَعِيَ الْهَدْيَ فَلَا تَحْلِلْ قَالَ: وَكَانَ جَمَاعَةُ الْهَدْيِ الَّذِي قَدِمَ بِهِ عَلِيٌّ مِنَ الْيَمَنِ وَالَّذِي أَتَى بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْمَدِينَةِ مِائَةً فَحَلَّ النَّاسُ كُلُّهُمْ، وَقَصَّرُوا إِلَّا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَنْ كَانَ مَعَهُ هَدْيٌ، قَالَ: فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ وَوَجَّهُوا إِلَى مِنًى أَهَلُّوا بِالْحَجِّ، فَرَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى بِمِنًى الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ وَالصُّبْحَ، ثُمَّ مَكَثَ قَلِيلًا حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ وَأَمَرَ بِقُبَّةٍ لَهُ مِنْ شَعْرٍ فَضُرِبَتْ بِنَمِرَةٍ، فَسَارَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا تَشُكُّ قُرَيْشٌ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاقِفٌ عِنْدَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ بِالْمُزْدَلِفَةِ، كَمَا كَانَتْ قُرَيْشٌ تَصْنَعُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ، فَأَجَازَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى أَتَى عَرَفَةَ فَوَجَدَ الْقُبَّةَ قَدْ ضُرِبَتْ لَهُ بِنَمِرَةٍ، فَنَزَلَ بِهَا حَتَّى إِذَا زَاغَتِ الشَّمْسُ أَمَرَ بِالْقَصْوَاءِ فَرُحِلَتْ لَهُ فَرَكِبَ حَتَّى أَتَى بَطْنَ الْوَادِي فَخَطَبَ النَّاسَ فَقَالَ: " إِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا، أَلَا إِنَّ كُلَّ شَيْءٍ مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ تَحْتَ قَدَمَيَّ مَوْضُوعٌ، وَدِمَاءُ الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعَةٌ، وَأَوَّلُ دَمٍ أَضَعُهُ دِمَاؤُنَا: دَمُ ". قَالَ عُثْمَانُ: دَمُ ابْنُ رَبِيعَةَ " وَقَالَ سُلَيْمَانُ: دَمُ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، وقَالَ: بَعْضُ هَؤُلَاءِ كَانَ مُسْتَرْضَعًا فِي بَنِي سَعْدٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ، وَرِبَا الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ، وَأَوَّلُ رِبًا أَضَعُهُ رِبَانَا: رِبَا عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَإِنَّهُ مَوْضُوعٌ كُلُّهُ، اتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ، فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانَةِ اللَّهِ، وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ، وَإِنَّ لَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ، أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ، فَإِنْ فَعَلْنَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ، وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ، وَإِنِّي قَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُ إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ: كِتَابَ اللَّهِ وَأَنْتُمْ مَسْئُولُونَ عَنِّي، فَمَا أَنْتُمْ قَائِلُونَ " قَالُوا: نَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ، وَأَدَّيْتَ، وَنَصَحْتَ، ثُمَّ قَالَ: بِأُصْبُعِهِ السَّبَّابَةِ يَرْفَعُهَا إِلَى السَّمَاءِ وَيَنْكُبُهَا إِلَى النَّاسِ: اللَّهُمَّ اشْهَدْ، اللَّهُمَّ اشْهَدْ، اللَّهُمَّ اشْهَدْ، ثُمَّ أَذَّنَ بِلَالٌ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الظُّهْرَ، ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعَصْرَ، وَلَمْ يُصَلِّ بَيْنَهُمَا شَيْئًا، ثُمَّ رَكِبَ الْقَصْوَاءَ حَتَّى أَتَى الْمَوْقِفَ فَجَعَلَ بَطْنَ نَاقَتِهِ الْقَصْوَاءِ إِلَى الصَّخَرَاتِ، وَجَعَلَ حَبْلَ الْمُشَاةِ بَيْنَ يَدَيْهِ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ، فَلَمْ يَزَلْ وَاقِفًا حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ وَذَهَبَتِ الصُّفْرَةُ قَلِيلًا حِينَ غَابَ الْقُرْصُ وَأَرْدَفَ أُسَامَةَ خَلْفَهُ، فَدَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ شَنَقَ لِلْقَصْوَاءِ الزِّمَامَ حَتَّى إِنَّ رَأْسَهَا لَيُصِيبُ مَوْرِكَ رَحْلِهِ، وَهُوَ يَقُولُ بِيَدِهِ الْيُمْنَى السَّكِينَةَ أَيُّهَا النَّاسُ، السَّكِينَةَ أَيُّهَا النَّاسُ كُلَّمَا أَتَى حَبْلًا مِنَ الْحِبَالِ أَرْخَى لَهَا قَلِيلًا حَتَّى تَصْعَدَ، حَتَّى أَتَى الْمُزْدَلِفَةَ فَجَمَعَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بِأَذَانٍ وَاحِدٍ وَإِقَامَتَيْنِ، قَالَ عُثْمَانُ: وَلَمْ يُسَبِّحْ بَيْنَهُمَا شَيْئًا، ثُمَّ اتَّفَقُوا ثُمَّ اضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى طَلَعَ الْفَجْرُ، فَصَلَّى الْفَجْرَ حِينَ تَبَيَّنَ لَهُ الصُّبْحُ، قَالَ سُلَيْمَانُ: بِنِدَاءٍ وَإِقَامَةٍ، ثُمَّ اتَّفَقُوا، ثُمَّ رَكِبَ الْقَصْوَاءَ حَتَّى أَتَى الْمَشْعَرَ الْحَرَامَ فَرَقِيَ عَلَيْهِ، قَالَ عُثْمَانُ وَسُلَيْمَانُ: فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَكَبَّرَهُ وَهَلَّلَهُ، زَادَ عُثْمَانُ وَوَحَّدَهُ فَلَمْ يَزَلْ وَاقِفًا حَتَّى أَسْفَرَ جِدًّا، ثُمَّ دَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَأَرْدَفَ الْفَضْلَ بْنَ عَبَّاسٍ وَكَانَ رَجُلًا حَسَنَ الشَّعْرِ أَبْيَضَ وَسِيمًا، فَلَمَّا دَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ الظُّعُنُ يَجْرِينَ، فَطَفِقَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهِنَّ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ عَلَى وَجْهِ الْفَضْلِ، وَصَرَفَ الْفَضْلُ وَجْهَهُ إِلَى الشِّقِّ الْآخَرِ، وَحَوَّلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ إِلَى الشِّقِّ الْآخَرِ، وَصَرَفَ الْفَضْلُ وَجْهَهُ إِلَى الشِّقِّ الْآخَرِ يَنْظُرُ حَتَّى أَتَى مُحَسِّرًا، فَحَرَّكَ قَلِيلًا، ثُمَّ سَلَكَ الطَّرِيقَ الْوُسْطَى الَّذِي يُخْرِجُكَ إِلَى الْجَمْرَةِ الْكُبْرَى، حَتَّى أَتَى الْجَمْرَةَ الَّتِي عِنْدَ الشَّجَرَةِ فَرَمَاهَا بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ مَعَ كُلِّ حَصَاةٍ مِنْهَا بِمِثْلِ حَصَى الْخَذْفِ فَرَمَى مِنْ بَطْنِ الْوَادِي، ثُمَّ انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْمَنْحَرِ فَنَحَرَ بِيَدِهِ ثَلَاثًا وَسِتِّينَ، وَأَمَرَ عَلِيًّا فَنَحَرَ مَا غَبَرَ يَقُولُ: مَا بَقِيَ، وَأَشْرَكَهُ فِي هَدْيِهِ، ثُمَّ أَمَرَ مِنْ كُلِّ بَدَنَةٍ بِبَضْعَةٍ فَجُعِلَتْ فِي قِدْرٍ فَطُبِخَتْ فَأَكَلَا مِنْ لَحْمِهَا وَشَرِبَا، مِنْ مَرَقِهَا قَالَ سُلَيْمَانُ: ثُمَّ رَكِبَ، ثُمَّ أَفَاضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْبَيْتِ فَصَلَّى بِمَكَّةَ الظُّهْرَ، ثُمَّ أَتَى بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَهُمْ يَسْقُونَ عَلَى زَمْزَمَ فَقَالَ: انْزِعُوا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، فَلَوْلَا أَنْ يَغْلِبَكُمُ النَّاسُ عَلَى سِقَايَتِكُمْ لَنَزَعْتُ مَعَكُمْ، فَنَاوَلُوهُ دَلْوًا فَشَرِبَ مِنْهُ صحيح
Ja’far bin Muhammad reported on the authority of his father “We entered upon Jabir bin ‘Abd Allaah. When we reached him, he asked about the people (who had come to visit him). When my turn came I said “I am Muhammad bin Ali bin Hussain. He patted my head with his hand and undid my upper then lower buttons. He then placed his hand between my nipples and in those days I was a young boy.” He then said “welcome to you my nephew, ask what you like. I questioned him he was blind. The time of prayer came and he stood wrapped in a mantle. Whenever he placed it on his shoulders its ends fell due to its shortness. He led us in prayer while his mantle was placed on a rack by his side. I said “tell me about the Hajj of the Apostle of Allaah(ﷺ).”He signed with his hand and folded his fingers indicating nine. He then said Apostle of Allaah(ﷺ) remained nine years (at Madeenah ) during which he did not perform Hajj, then made a public announcement in the tenth year to the effect that the Apostle of Allaah(ﷺ) was about to (go to) perform Hajj. A large number of people came to Madeenah everyone desiring to follow him and act like him. The Apostle of Allaah(ﷺ) went out and we too went out with him till we reached Dhu Al Hulaifah. Asma’ daughter of ‘Umais gave birth to Muhammad bin Abi Bakr. She sent message to Apostle of Allaah(ﷺ) asking him What should I do?He replied “take a bath, bandage your private parts with a cloth and put on ihram.” The Apostle of Allaah(ﷺ) then prayed (in the masjid) and mounted Al Qaswa’ and his she Camel stood erect with him on its back. Jabir said “I saw (a large number of) people on mounts and on foot in front of him and a similar number on his right side and a similar number on his left side and a similar number behind him. The Apostle of Allaah(ﷺ) was among us, the Qur’an was being revealed to him and he knew its interpretation. Whatever he did, we did it. The Apostle of Allaah(ﷺ) then raised his voice declaring Allaah’s unity and saying “Labbaik ( I am at thy service), O Allaah, labbaik, labbaik, Thou hast no partner praise and grace are Thine and the Dominion. Thou hast no partner. The people too raised their voices in talbiyah which they used to utter. But the Apostle of Allaah(ﷺ) did not forbid them anything. The Apostle of Allaah(ﷺ) continued his talbiyah. Jabir said “We did not express our intention of performing anything but Hajj, being unaware of ‘Umrah (at that season), but when we came with him to the House (the Ka’bah), he touched the corner (and made seven circuits) walking quickly with pride in three of them and walking ordinarily in four. Then going forward to the station of Abraham he recited “And take the station of Abraham as a place of prayer.” (While praying two rak’ahs) he kept the station between him and the House. The narrator said My father said that Ibn Nufail and ‘Uthman said I do not know that he (Jabir) narrated it from anyone except the Prophet (ﷺ). The narrator Sulaiman said I do not know but he (Jabir) said “The Apostle of Allaah(ﷺ) used to recite in the two rak’ahs “Say, He is Allaah, one” and “Say O infidels”. He then returned to the House (the ka’bah) and touched the corner after which he went out by the gate to Al Safa’. When he reached near Al Safa’ he recited “Al Safa’ and Al Marwah are among the indications of Allaah” and he added “We begin with what Allaah began with”. He then began with Al Safa’ and mounting it till he could see the House (the Ka’bah) he declared the greatness of Allaah and proclaimed his Unity. He then said “there is no god but Allaah alone, Who alone has fulfilled His promise, helped His servant and routed the confederates. He then made supplication in the course of that saying such words three times. He then descended and walked towards Al Marwah and when his feet came down into the bottom of the valley, he ran, and when he began to ascend he walked till he reached Al Marwah. He did at al Marwah as he had done at Al Safa’ and when he came to Al Marwah for the last time, he said “If I had known before what I have come to know afterwards regarding this matter of mine, I would not have brought sacrificial animals but made it an ‘Umrah, so if any of you has no sacrificial animals, he may take off ihram and treat it as an ‘Umrah. All the people then took off ihram and clipped their hair except the Prophet (ﷺ) and those who had brought sacrificial animals. Suraqah (bin Malik) bin Ju’sham then got up and asked Apostle of Allaah(ﷺ)does this apply to the present year or does it apply for ever? The Apostle of Allaah(ﷺ) interwined his fingers and said “The ‘Umarh has been incorporated in Hajj. Adding ‘No’, but forever and ever. ‘Ali came from Yemen with the sacrificial animals of the Apostle of Allaah(ﷺ) and found Fathima among one of those who had taken off their ihram. She said put on colored clothes and stained her eyes with collyrium. ‘Ali disliked (this action of her) and asked Who commanded you for this? She said “My father”. Jabir said ‘Ali said at Iraq I went to Apostle of Allaah(ﷺ) to complain against Fathima for what she had done and to ask the opinion of Apostle of Allaah(ﷺ) about which she mentioned to me. I informed him that I disliked her action and that thereupon she said to me “My father commanded me to do this.” He said “She spoke the truth, she spoke the truth.” What did you say when you put on ihram for Hajj? I said O Allaah, I put on ihram for the same purpose for which Apostle of Allaah(ﷺ) has put it on. He said I have sacrificial animals with me, so do not take off ihram. He (Jabir) said “The total of those sacrificial animals brought by ‘Ali from Yemen and of those brought by the Prophet (ﷺ) from Madeenah was one hundred.” Then all the people except the Prophet (ﷺ) and those who had with them the sacrificial animals took off ihram and clipped their hair. When the 8th of Dhu Al Hijjah (Yaum Al Tarwiyah) came, they went towards Mina having pit on ihram for Hajj and the Apostle of Allaah(ﷺ) rode and prayed at Mina the noon, afternoon, sunset, night and dawn prayers. After that he waited a little till the sun rose and gave orders for a tent of hair to be set up at Namrah. The Apostle of Allaah(ﷺ) then sent out and the Quraish did not doubt that he would halt at Al Mash ‘ar Al Haram at Al Muzdalifah, as the Quraish used to do in the pre Islamic period but he passed on till he came to ‘Arafah and found that the tent had been setup at Namrah. There he dismounted and when the sun had passed the meridian he ordered Al Qaswa’ to be brought and when it was saddled for him, he went down to the bottom of the valley and addressed the people saying “Your lives and your property must be respected by one another like the sacredness of this day of yours in the month of yours in this town of yours. Lo! Everything pertaining to the pre Islamic period has been put under my feet and claims for blood vengeance belonging to the pre Islamic period have been abolished. The first of those murdered among us whose blood vengeance I permit is the blood vengeance of ours (according to the version of the narrator ‘Uthman, the blood vengeance of the son of Rabi’ah and according to the version of the narrator Sulaiman the blood vengeance of the son of Rabi’ah bin Al Harith bin ‘Abd Al Muttalib). Some (scholars) said “he was suckled among Banu Sa’d(i.e., he was brought up among Bani Sa’d) and then killed by Hudhail. The usury of the pre Islamic period is abolished and the first of usury I abolish is our usury, the usury of ‘Abbas bin ‘Abd Al Muttalib for it is all abolished. Fear Allaah regarding women for you have got them under Allah’s security and have the right to intercourse with them by Allaah’s word. It is a duty from you on them not to allow anyone whom you dislike to lie on your beds but if they do beat them, but not severely. You are responsible for providing them with food and clothing in a fitting manner. I have left among you something by which if you hold to it you will never again go astray, that is Allaah’s Book. You will be asked about me, so what will you say? They replied “We testify that you have conveyed and fulfilled the message and given counsel. Then raising his forefinger towards the sky and pointing it at the people, he said “O Allaah! Be witness, O Allaah! Be witness, O Allaah! Be witness! Bilal then uttered the call to prayer and the iqamah and he prayed the noon prayer, he then uttered the iqamah and he prayed the afternoon prayer, engaging in no prayer between the two. He then mounted (his she Camel) al Qaswa’ and came to the place of standing , making his she Camel Al Qaswa‘ turn its back to the rocks and having the path taken by those who went on foot in front of him and he faced the qiblah. He remained standing till sunset when the yellow light had somewhat gone and the disc of the sun had disappeared. He took Usamah up behind him and picked the reins of Al Qaswa’ severely so much so that its head was touching the front part of the saddle. Pointing with is right hand he was saying “Calmness, O People! Calmness, O people. Whenever he came over a mound (of sand) he let loose its reins a little so that it could ascend. He then came to Al Muzdalifah where he combined the sunset and night prayers, with one adhan and two iqamahs. The narrator ‘Uthamn said He did not offer supererogatory prayers between them. The narrators are then agreed upon the version He then lay down till dawn and prayed the dawn prayer when the morning light was clear. The narrator Sulaiman said with one adhan and one iqamah. The narrators are then agreed upon the version He then mounted Al Qaswa’ and came to Al Mash’ar Al Haram and ascended it. The narrators ‘Uthaman and Sulaiman said He faced the qiblah praised Allaah, declared His greatness, His uniqueness. ‘Uthamn added in his version and His Unity and kept standing till the day was very clear. The Apostle of Allaah(ﷺ) then went quickly before the sun rose , taking Al Fadl bin ‘Abbas behind him. He was a man having beautiful hair, white and handsome color. When the Apostle of Allaah(ﷺ) went quickly, the women in the howdas also began to pass him quickly. Al Fadl began to look at them. The Apostle of Allaah(ﷺ) placed his hand on the face of Al Fadl , but Al fadl turned his face towards the other side. The Apostle of Allaah(ﷺ) also turned away his hand to the other side. Al Fadl also turned his face to the other side looking at them till he came to (the Valley of) Muhassir. He urged the Camel a little and following a middle road which comes out at the greatest jamrah, he came to the jamrah which is beside the tree and he threw seven small pebbles at this (jamrah) saying “Allah is most great” each time he threw a pebble like bean seeds. He threw them from the bottom of the valley. The Apostle of Allaah(ﷺ) then went to the place of the sacrifice and sacrificed sixty three Camels with his own hand. He then commanded ‘Ali who sacrificed the remainder and he shared him and his sacrificial animals. After that he ordered that a piece of flesh from each Camel should be put in a pot and when it was cooked the two of them ate some of it and drank some of its broth. The narrator Sulaiman said the he mounted afterwards the Apostle of Allaah(ﷺ) went quickly to the House (the Ka’bah) and prayed the noon prayer at Makkah. He came to Banu ‘Abd Al Muttalib who were supplying water at Zamzam and said draw water Banu ‘Abd Al Muttalib were it not that people would take from you the right to draw water, I would draw it along with you. So they handed him a bucket and he drank from it.