পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - ইহরাম অবস্থায় যা থেকে বেঁচে থাকতে হবে
২৬৮৬-[৯] ’উসমান (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় চোখে ব্যথা অনুভব করে সে মুসাববার দিয়ে পট্টি বাঁধবে। (মুসলিম)[1]
بَابُ مَا يَجْتَنِبُهُ الْمُحْرِمُ
وَعَن عُثْمَان حَدَّثَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الرَّجُلِ إِذَا اشْتَكَى عَيْنَيْهِ وَهُوَ محرمٌ ضمدهما بِالصبرِ. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (فِى الرَّجُلِ) এখানে পুরুষের সাথে মহিলাও অন্তর্ভুক্ত হবে।
(ضَمَّدَهُمَا) এ শব্দটি বাবে তাফ্‘ঈল থেকে নির্গত এবং তা ماضى তথা অতীতকালীন অর্থবোধক শব্দ। ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, মিশকাতের মূল পাণ্ডুলিপিতে ضمد তথা ‘আমর অর্থাৎ- নির্দেশসূচক শব্দের ব্যবহার আছে এবং নির্দেশসূচক শব্দটি আবশ্যকের অর্থ না দিয়ে বৈধতার অর্থ বুঝাবে।
আমি বলব, [‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ)] শব্দটি باب نصر অথবা ضرب থেকে ماضى তথা অতীতকালীন ক্রিয়া হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, ضمد الجرح يضمد অর্থাৎ- ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেস লাগিয়েছে। এ হচ্ছে ضمد শব্দের আসল ব্যাখ্যা, অতঃপর সেটা ঔষধ তরল পদার্থের সাথে মিশানো তারপর ক্ষতস্থানে লাগানো ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়।
(بِالصَّبْرِ) শব্দটি صبر অথবা صبر সাকিন দেয়া চলে এ দু’ভাবেই পড়া যায়। আল কামূস গ্রন্থকার বলেন, কবিতার পংতির মিল করার মতো জরুরী কারণ ব্যতীত باء এ সাকিন পড়া বৈধ নয়। এ শব্দটির অর্থ হচ্ছে عصاره شجر مر তথা তিক্ত গাছের রস।
বাহরুল জাওয়াহির গ্রন্থকার (রহঃ) বলেন, যেমন সু’সিন নামক এক প্রকার গাছ যা লাল ও হলুদের মাঝামাঝি রংয়ের।
উর্দূ ভাষায় একে ঈলূআ বলা হয়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ‘সাবির’ নামক এ দ্রব্যটিকে পানির সাথে মিশিয়ে চোখে ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করা অথবা এ দুয়ের মাধ্যমে সুরমা বানিয়ে তা চোখে লাগানো।
এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, চোখে সাবির বা এ জাতীয় জিনিসের মাধ্যমে ড্রপ ব্যবহার করা জায়িয আছে। ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, ‘উলামায়ে কিরামের ঐকমত্যে সুগন্ধি ব্যতীত চোখে সাবির বা এ জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা যায় এতো কোন ফিদিয়া দিতে হবে না, তবে সুগন্ধি যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে তা করতে পারে, এর জন্য ফিদিয়া আবশ্যক হবে।
আর এ বিষয়েও ঐকমত্য আছে যে, মুহরিমের জন্য সুরমা যা সুগন্ধিবিহীন তা ব্যবহার করা জায়িয এক্ষেত্রে কোন ফিদিয়া দেয়া লাগবে না তবে যদি সৌন্দর্যের জন্য দেয় তাহলে ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) এটাকে মাকরূহ বলেছেন। অপর একদল ‘আলিম যাদের অন্যতম হলেন, ইমাম আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) এটাকে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করেছেন। ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)-এর মতো এক্ষেত্রে শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মত।