হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৩৪৫

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্

২৩৪৫-[২৩] সফ্ওয়ান ইবনু ’আসসাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা তওবা্ কবূলের জন্য পশ্চিম দিকে একটি দরজা খুলে রেখেছেন, যার প্রশস্ততা সত্তর বছরের পথ। সূর্য পশ্চিম দিকে উদয় না হওয়া পর্যন্ত এ দরজা বন্ধ করা হবে না। আর এটাই হলো আল্লাহ তা’আলার এ বাণীর ব্যাখ্যাঃ ’’যেদিন (কিয়ামতের পূর্বে) তোমার ’রবের’ কোন বিশেষ নিদর্শন এসে পৌঁছবে, সেদিন এ ঈমান তার কোন কাজে আসবে না। কেননা এ নিদর্শন আসার আগে ঈমান আনেনি’’- (সূরা আল আন্’আম ৬ : ১৫৮)। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى جَعَلَ بِالْمَغْرِبِ بَابًا عَرْضُهُ مَسِيرَةُ سَبْعِينَ عَامًا لِلتَّوْبَةِ لَا يُغْلَقُ مَا لم تطلع عَلَيْهِ الشَّمْسُ مِنْ قِبَلِهِ وَذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ: (يَوْمَ يَأْتِي بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قبل) رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه

ব্যাখ্যা: (إِنَّ اللّٰهَ تَعَالٰى جَعَلَ بِالْمَغْرِبِ بَابًا) ‘‘যার প্রশস্ততা সত্তর বছরের পথ’’। অর্থাৎ- অনুভবযোগ্য দরজা। একমতে বলা হয়েছে, আধ্যাত্মিক।

(عَرْضُه مَسِيرَةُ سَبْعِينَ عَامًا) অর্থাৎ- সুতরাং তার দৈর্ঘ্যতা কেমন? একমতে বলা হয়েছে, سبعين শব্দটি আধিক্যতার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে, সীমাবদ্ধতার জন্য নয়। লাম্‘আত গ্রন্থকার বলেন, একমতে বলা হয়েছে, سبعين দ্বারা তাওবার দরজা উন্মুক্ত থাকার ক্ষেত্রে আধিক্যতা এবং তাওবার ক্ষেত্রে মানুষ সুপ্রশস্ততার মাঝে থাকা উদ্দেশ্য। আর এটি হল অপব্যাখ্যা। তবে স্পষ্ট ঈমান হল, কোন অপব্যাখ্যা ছাড়াই এর প্রতি ঈমান আনা। প্রকৃত জ্ঞান আল্লাহর কাছে।

(لِلتَّوْبَةِ) ‘‘তাওবার জন্য’’, অর্থাৎ- দরজাটি তাওবাহ্কারীদের জন্য খোলা অথবা দরজা খোলা। তাওবাহ্ বিশুদ্ধ হওয়া ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার চিহ্ন।

(مَا لَمْ تَطْلُعِ الشَّمْسُ مِنْ قِبَلِه) ইবনুল মালিক বলেন, এটি প্রকৃত দরজা হওয়ার সম্ভাবনা আছে আর এটিই প্রকাশমান অর্থ। আর দরজা বন্ধ থাকার উপকারিতা হল, মালায়িকাহ্-কে (ফেরেশতাগণকে) তাওবার দরজা বন্ধ হওয়া সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া। দরজার বিষয়টি উদাহরণস্বরূপও হতে পারে।

ইমাম ত্বীবী বলেন, অর্থাৎ- নিশ্চয়ই তাওবার দরজা মানুষের জন্য খোলা এমতাবস্থায় তারা প্রশস্ততার মাঝে অবস্থান করছে যতক্ষণ পর্যন্ত পশ্চিম দিক হতে সূর্য উদিত না হবে। অতঃপর যখন পশ্চিম দিক হতে সূর্য উদিত হবে তখন তাওবার দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে তখন তাদের থেকে ঈমান, তাওবাহ্ কোন কিছু গ্রহণ করা হবে না। কেননা যখন তারা প্রত্যক্ষভাবে তা দেখবে, তখন ঈমান আনতে বাধ্য হয়ে যাবে এবং তাওবার প্রতি বাধ্য হয়ে যাবে তাই ঐ তাওবাহ, ঈমান কোন কাজে আসবে না যেমনিভাবে মৃত্যু উপস্থিত হওয়া ব্যক্তির তাওবাহ্, ঈমান কোন কাজে আসবে না। আর দরজা বন্ধের বিষয়টি যখন পশ্চিম দিকে তখন দরজা খোলার বিষয়টিও পশ্চিম দিকেই হবে।

(وَذٰلِكَ) অর্থাৎ- পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া তাওবাহ্ গ্রহণের জন্য প্রতিবন্ধক।

يَوْمَ يَأْتِىْ بَعْضُ اٰيَاتِ رَبِّكَ অর্থাৎ- কিয়ামতের ব্যাপারে প্রমাণ বহনকারী তার কতিপয় নিদর্শন। অথবা কিয়ামাত যখন নিকটবর্তী হবে তখন তোমার পালনকর্তা কতিপয় নিদর্শনাবলী প্রকাশ করবেন। আর তা হল, পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া।

لَمْ تَكُنْ اٰمَنَتْ مِنْ قَبْلُ ‘‘যে আত্মা ইতোপূর্বে ঈমান আনেনি’’। অর্থাৎ- তার কতিপয় নিদর্শন আসার পূর্বে। আর তা হল উল্লেখিত উদয় এবং নিদর্শনের পূর্ণতা। অথবা যদি সে তার ঈমানের ক্ষেত্রে কল্যাণ অর্জন করে না থাকে, অর্থাৎ- তার ঈমান গ্রহণের সুযোগ থাকাবস্থায় তাওবাহ্ করে না থাকে। আর এ নিরূপণের মাধ্যমে হাদীস এবং আয়াতের মাঝে পূর্ণ সামঞ্জস্যতা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং ঈমান ও তাওবাহ্ অর্জনের সময় ঈমান ও তাওবাহ্ উপকারে না আসার এবং সূর্য উদিত হওয়াকে স্বচক্ষে অবলোকন করা মৃত্যু উপস্থিত হওয়াকে স্বচক্ষে অবলোকন করার মতো- এ উক্তিটি কারীর।

ইমাম ত্বীবী বলেন, কোন নাফসের উপকারে আসবে না তার ঈমান আনয়ন করা যে নাফস্ ইতিপূর্বে ঈমান আনেনি। অথবা ঈমানের ক্ষেত্রে তার কোন কল্যাণ অর্জন করা কাজে আসবে না যদি ইতিপূর্বে ঈমান এনে না থাকে। অথবা ঈমানের ক্ষেত্রে কোন কল্যাণ অর্জন করে না থাকে।

সফ্ওয়ান থেকে যির কর্তৃক ইবনু মাজাহ্’র শব্দ। সফ্ওয়ান বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই সূর্য অস্তমিত হওয়ার দিকে একটি খোলা দরজা আছে যার প্রশস্ততা সত্তর বছর পথ অতিক্রমের সমান। সেই দরজা সর্বদা তাওবার জন্য খোলা থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত না হবে। আর যখন সূর্য পশ্চিমদিক থেকে উদিত হবে। তখন ঐ নাফসে্র জন্য ঈমান কোন কাজে আসবে না যদি ইতিপূর্বে ঈমান এনে না থাকে। অথবা তার ঈমানের ক্ষেত্রে কল্যাণ উপার্জন না করে থাকে।