পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
হাফেয বলেনঃ الاستغفار শব্দটি الغفران থেকে, যার মূল الغفر আর তা হল কোন জিনিসকে এমন কিছু পরিধান করানো যা তাকে ময়লাযুক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করবে। আর আল্লাহর তরফ থেকে বান্দাকে ক্ষমা করা বলতে বান্দাকে তাঁর শাস্তি থেকে রক্ষা করা।
কারী বলেন, الاستغفار শব্দটি কখনো তাওবাকে শামিল করে আবার কখনো তাওবাকে শামিল করে না। এ জন্য الاستغفار শব্দের পর التوبة শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। অথবা الاستغفار তথা ক্ষমা প্রার্থনা জবান দিয়ে হয়, পক্ষান্তরে তওবা্ অন্তর দিয়ে হয় আর তা হল অবাধ্যতা থেকে আনুগত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন করা আর আল্লাহর তরফ থেকে বান্দাকে ক্ষমা করা বলতে ইহকালে বান্দার গুনাহ কাউকে অবহিত করা থেকে গোপন করে রাখা এবং পরকালে সে গুনাহের কারণে তাকে শাস্তি না দেয়া।
ইমাম ত্বীবী বলেন, শারী’আতের পরিভাষায় তওবা্ হল, পাপ দোষণীয় হওয়ার কারণে তা বর্জন করা, এবং কৃত বাড়াবাড়ির কারণে লজ্জিত হওয়া, অভ্যস্ত বিষয় বর্জন ও কর্মের ক্ষতিপূরণে নিজেকে দৃঢ় করে এমন কাজ করা। এটি রাগিবের উক্তি। ইমাম নাবাবী এক্ষেত্রে একটু বেশি বলেছেন, তিনি বলেন, গুনাহ যদি আদম সন্তানের সাথে সম্পর্কিত হয় তাহলে তার আরেকটি শর্ত আছে। আর তা হল, অবিচার করা পরিমাণ বিষয় তার মালিকের কাছে ফেরত দিতে হবে অথবা তার কাছ থেকে ক্ষমা নিতে হবে।
ইবনুল কইয়্যিম মাদারিজুস্ সালিকীন-এ ১ম খণ্ড- ১৬৯ পৃষ্ঠাতে সাধারণ তাওবার তাফসীরের আলোচনাতে বলেন, অনেক মানুষ তাওবার তাফসীর করে থাকেন কোন গুনাহ দ্বিতীয়বার না করার ব্যাপারে দৃঢ়তা ব্যক্ত করা এবং অবিলম্বে সে কাজ থেকে সরে আসা। অতীতের কাজের ব্যাপারে লজ্জিত হওয়া আর যদি ঐ গুনাহটি আদম সন্তানের অধিকার সংক্রান্ত হয় তাহলে চতুর্থ আরেকটি বিষয় প্রয়োজন তা হল আদম সন্তান থেকে ক্ষমা নেয়া।
কতকে এ বিষয়টি তাওবার ক্ষেত্রে উল্লেখ করেছেন বরং একে শর্ত করেছেন। আমার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কালামের ক্ষেত্রে তওবা্ হল, তা যেমন অনেক মানুষের উল্লেখিত সংজ্ঞাকে শামিল করে তেমনিভাবে নির্দেশিত কাজের ব্যাপারে দৃঢ়তাকে ও তা আঁকড়িয়ে ধরাকে শামিল করে। সুতরাং শুধুমাত্র কোন কাজ করা থেকে সরে আসা, কোন কাজ না করার ব্যাপারে দৃঢ়তা ব্যক্ত করা, কোন কৃতকর্মের ব্যাপারে লজ্জিত হওয়ার মাধ্যমে তওবা্ সংঘটিত হয় না বরং যতক্ষণ না কর্তার তরফ থেকে নির্দেশিত কাজের ব্যাপারে দৃঢ়তা পাওয়া যায়। এটিই হল তাওবার প্রকৃত রূপ। আর তা হল দু’টি বিষয়ের সমষ্টির নাম। কিন্তু তওবা্ যখন নির্দেশিত কাজের সাথে শামিল হবে তখন তা পূর্বে অনেকের উল্লেখিত সংজ্ঞার ভাষ্য হবে আর যখন তা আলাদাভাবে আসবে তখন তা দু’টি বিষয়কে শামিল করবে আর তা ঐ তাকওয়া শব্দের মতো যা একাকী বা আলাদা প্রয়োগ হলে তা আল্লাহর নির্দেশিত কাজ করা এবং নিষেধ করা কাজ বর্জন করাকে বুঝায়।
পক্ষান্তরে তা নির্দেশিত কাজের সাথে শামিল হওয়ার সময় নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকাকে দাবী করবে। কেননা তাওবার প্রকৃত রূপ হল আল্লাহ যা ভালবাসেন সে কাজ অবলম্বন এবং তিনি যা অপছন্দ করেন তা বর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন। সুতরাং প্রিয় বস্ত্তর দিকে প্রত্যাবর্তন করা তাওবার একটি অংশ এবং অপছন্দনীয় জিনিস হতে ফিরে আসা তাওবার আরেকটি অংশ আর এজন্য আল্লাহ সাধারণ সফলতাকে তাওবার মাধ্যমে নির্দেশিত কাজ করা ও নিষিদ্ধ কাজ বর্জন করার সাথে সম্পৃক্ত করেছেন, যেমন আল্লাহ বলেন, ’’হে মু’মিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তওবা্ কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার’’- (সূরা আন্ নূর ২৪ : ৩১)। সুতরাং প্রত্যেক তওবাকারী সফলকাম। আর নির্দেশিত কাজ করা এবং নিষিদ্ধ কাজ বর্জন করা ছাড়া কেউ সফলকাম হতে পারবে না। আল্লাহ আরো বলেন, ’’আর যারা তওবা্ করেনি তারাই অবিচারকারী’’- (সূরা আল হুজুরাত ৪৯ : ১১)। নির্দেশিত কাজ বর্জনকারী যালিম যেমন নিষিদ্ধ কাজ সম্পাদনকারী যালিম। আর দু’টি বিষয়কে সমন্বয়কারী তওবা্ এর মাধ্যমে যুলমের অপসারণ হয়। তিনি বলেন, তওবাকারীকে তওবাকারী বলে নামকরণ করার কারণ তওবাকারী আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ থেকে তাঁর নির্দেশিত কাজের দিকে প্রত্যাবর্তন এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকে আনুগত্যের দিকে ফিরে আসে।
আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে ভালবাসেন। আল্লাহ কেবল তাকে ভালবাসেন যে তাঁর নির্দেশিত বিষয় সম্পাদন করে এবং তাঁর নিষেধ করা বিষয় থেকে দূরে থাকে। সুতরাং তওবা্ হল, বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণভাবে আল্লাহর নিষেধ করা বিষয় থেকে ফিরে আসা এবং তাঁর পছন্দনীয় বিষয়ের দিকে প্রত্যাবর্তন করা। এমতাবস্থায় তাওবার নামের মাঝে ইসলাম, ঈমান, ইহসানও প্রবেশ করবে এবং তওবা্ পূর্বোক্ত সকল সংজ্ঞাগুলোকে শামিল করবে।
তওবা্ দ্বারা বান্দা আল্লাহর অনুগত হয়। আর এ আনুগত্যের স্তর চারটিঃ
প্রথম স্তরঃ সৃষ্টির মাঝে অংশিদারিত্ব আর তা হল প্রয়োজনের অনুগত এবং আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষীতা। সুতরাং আকাশবাসী এবং জমিনবাসী সকলেই তাঁর নিকট মুখাপেক্ষী তাঁর নিকট নিঃস্ব। আর তিনি আল্লাহই একমাত্র সত্তা যিনি তাদের থেকে অমুখাপেক্ষী। আকাশবাসী এবং জমিনবাসী প্রত্যেকেই তার কাছে চায় পক্ষান্তরে তিনি কারো কাছে চান না।
দ্বিতীয় স্তরঃ আনুগত্য ও দাসত্বের স্তর আর তা স্বেচ্ছাধীন অনুগত আর এটি হল তার অনুগতদের সাথে নির্দিষ্ট আর এটি দাসত্বের গোপন।
তৃতীয় স্তরঃ ভালবাসার অনুগত কেননা যে ভালবাসে সে প্রিয় সত্তার অনুগত। সত্তার প্রতি ব্যক্তির ভালবাসার পরিমাণ অনুপাতে তার ভালবাসা সাব্যস্ত হয় সুতরাং ভালবাসাকে ভিত্তি দেয়া হয়েছে ভালবাসার পাত্রের প্রতি বিনয় প্রদর্শনের উপর।
চতুর্থ স্তরঃ অবাধ্যতা ও অপরাধের বশ্যতা।
সুতরাং এ চারটি স্তর যখন একত্রিত হয় তখন বিনয় নম্রতা একমাত্র আল্লাহর জন্য ও পূর্ণাঙ্গভাবে সাব্যস্ত হয়। কেননা ব্যক্তি তার ভয়ে, আশংকায়, ভালবাসায়, প্রত্যাবর্তন, আনুগত্যের সাথে এবং তার দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে বিনয় প্রকাশ করে।
২৩২৩-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আমি প্রতিদিন সত্তরবারেরও বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই ও তওবা্ করি। (বুখারী)[1]
بَابُ الْاِسْتِغْفَارِ وَالتَّوْبَةِ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَاللَّهِ إِنِّي لِأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سبعينَ مرَّةً» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: (إِنِّىْ لِأَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ) এখানে استغفار এর হুবহু শব্দ উদ্দেশিত হওয়ার সম্ভাবনা রাখছে আর ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার (রাঃ) থেকে মুজাহিদের জাইয়িদ (উত্তম) সানাদে নাসায়ী সংকলন করেছেন তা একে সমর্থন করছে। আর তা হল নিশ্চয়ই ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বৈঠক থেকে দাঁড়ানোর পূর্বে একশত বার (استغفر الله الذى لا إله إلا هو الحى القيوم وأتوب إليه) এ দু‘আটি বলতে শুনেছেন। সম্ভাবনা রয়েছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু‘আটির দ্বারা ক্ষমা অনুসন্ধান করতেন এবং তাওবার ব্যাপারে দৃঢ়তা ব্যক্ত করতেন ও তাওবাহ্ করতেন। আর অচিরেই ‘আবদুল্লাহ ‘উমার (রাঃ)-এর হাদীস কর্তৃক দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের শেষে যা আসছে তা একে সমর্থন করছে। সে হাদীসে ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার (রাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই আমরা বৈঠকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য (رب اغفرلى وتب على إنك أنت التواب الغفور) এ দু‘আটি একশতবার গণনা করতাম। একে আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ মুহাম্মাদ বিন সূকহ্’র সানাদে সংকলন করেছেন আর সূকহ্ নাফি' থেকে আর নাফি' ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার থেকে বর্ণনা করেন।
(أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِيْنَ مَرَّةً) এভাবে বুখারীতে শু‘আয়ব-এর বর্ণনাতে আছে, শু‘আয়ব যুহরী থেকে আর যুহরী আবূ সালামাহ্ থেকে, আবূ সালামাহ্ আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে। তিরমিযীতে এবং ইবনুস্ সিন্নীতে মা‘মার-এর বর্ণনাতে আছে, মা‘মার যুহরী থেকে যুহরী আবূ সালামাহ্ থেকে বর্ণনা করেন। তাতে আছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি দিনে সত্তরবার ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকি। অনুরূপভাবে আবূ ইয়া‘লা আল বাযযার ‘ত্ববারানী’ গ্রন্থে আনাস-এর হাদীসে এসেছে। সুতরাং এখানে সংখ্যা আধিক্যতা উদ্দেশ্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘আরবরা সাত, সত্তর, সাতশত সংখ্যাকে আধিক্যতার স্থলে প্রয়োগ করে থাকে। নির্দিষ্ট সংখ্যা উদ্দেশ্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিতাবের বর্ণনাতে أكثر শব্দটি অস্পষ্ট। সুতরাং তা ইবনু ‘উমারের উল্লেখিত হাদীস দ্বারা ব্যাখ্যাকৃত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে, আর নিশ্চয়ই তা শতকে পৌঁছবে। নাসায়ীতে মুহাম্মাদ বিন ‘আমর-এর বর্ণনাতে আছে, তিনি আবূ সালামাহ্ থেকে আর তিনি আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। ইবনু মাজাতে (إنى لأستغفر الله وأتوب إليه كل يوم مائة مرة) অবশ্যই আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও তার কাছে তাওবাহ্ করে থাকি, প্রত্যেক দিন একশতবার আর আগার্-এর আগত হাদীসে আছে, (وإنى لأستغفر الله كل يوم مائة مرة) আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক দিন আল্লাহর কাছে একশতবার তাওবাহ্ করে থাকি। তিনটি বর্ণনা উল্লেখের পর ইমাম শাওকানী বলেন, সর্বাধিক সংখ্যাকে গ্রহণ করাই উচিত হবে আর তা হল শতকের বর্ণনা। সুতরাং ব্যক্তি প্রত্যেক দিন একশত বার (اللهم إنى أستغفرك فاغفرلى وأتوب إليك فتب على) পাঠ করে তাহলে সে চাওয়ার দু’টি প্রান্তকে অবলম্বন করল। আর আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলা বলেন, غَافِرِ الذَّنْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِِ ‘‘গুনাহ ক্ষমাকারী ও তাওবাহ্ কবূলকারী’’- (সূরা গাফির/আল মু’মিন ৪০ : ৩)।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ক্ষমা প্রার্থনা সংঘটিত হওয়া মুশকিল, কেননা তিনি গুনাহ থেকে সুরক্ষিত। পক্ষান্তরে ক্ষমা প্রার্থনা অবাধ্যতায় লিপ্ত হওয়াকে দাবী করে। এ প্রশ্নের কয়েকটি উত্তর দেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে একটি হল, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষমা প্রার্থনা দ্বারা উদ্দেশ্য হল তার ঐ প্রকৃত ক্ষমা প্রার্থনা যা আগত আগার্-এর হাদীসে সংঘটিত হয়েছে। এর ব্যাখ্যা হল, ইবনুল জাওযীর উক্তি আর তা হল মানবিক বৈশিষ্ট্যের অপরাধ যা থেকে কেউ বাঁচতে পারে না, নাবীগণ যদিও কাবীরাহ্ গুনাহ থেকে বাঁচতে পারে কিন্তু তারা সগীরাহ্ গুনাহ থেকে বাঁচতে পারে না আর তা ইচ্ছার বিপরীতে অবস্থিত, তবে প্রাধান্যযোগ্য কথা হল সগীরাহ্ গুনাহ থেকেও নাবীগণ বেঁচে থাকা। সে উত্তরগুলোর আরেকটি হল, ইবনু বাত্ত্বাল-এর উক্তি আর তা হল আল্লাহ নাবীদেরকে আল্লাহর পরিচিতি থেকে যা দান করেছেন তার কারণে তারা মানুষের মাঝে ‘ইবাদাতে সর্বাধিক চেষ্টাকারী। তারা সর্বদা তার কৃতজ্ঞতায় লিপ্ত। তারা তার কাছে অক্ষমতা স্বীকারকারী।
নিশ্চয়ই আল্লাহর উদ্দেশে যা ওয়াজিব এমন হক আদায়ের ক্ষেত্রে ক্ষমা প্রার্থনা অক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত। আরো সম্ভাবনা রয়েছে, একজন নাবীর ক্ষমা প্রার্থনা মূলত বৈধ বিষয়াবলী তথা খাওয়া, পান করা, সহবাস করা, ঘুম, শান্তি নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে অথবা কথোপকথনের কারণে, তাদের কল্যাণের দিকে দৃষ্টি দেয়া, কখনো তাদের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করা, কখনো শত্রুর সাথে কোমল আচরণ করা এবং অন্যান্য কাজ করা যা তাকে আল্লাহর যিকিরের প্রতি ব্যস্ত হওয়া ও তার নিকট অনুনয়-বিনয় করা থেকে বাধা দেয় এবং এমন সকল কাজ বিচক্ষণতার সাথে লক্ষ্য করে সুউচ্চ স্থানের দিকে লক্ষ্য করে তা পাপ মনে করা আর এ কারণে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর সে উত্তরগুলো থেকে আরেকটি হল নিশ্চয়ই ক্ষমা প্রার্থনা উম্মাতকে শিক্ষাদান ও শারী‘আত প্রণয়নের উদ্দেশে। অথবা তার উম্মাতের গুনাহের কারণে, সুতরাং তা উম্মাতের জন্য সুপারিশ স্বরূপ।