পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - কিরাআতের ভিন্নতা ও কুরআন সংকলন প্রসঙ্গে
২২১৯-[৯] ’আলকামাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা হিম্স শহরে ছিলাম। ওই সময় একবার ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) সূরা ইউসুফ পড়লেন। তখন এক লোক বলে উঠল, এ সূরা এভাবে নাযিল হয়নি। (এ কথা শুনে) ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ(রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে এ সূরা পড়েছি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে বলেছেন, বেশ ভাল পড়েছ। ’আলকামাহ্ বলেন, সে তাঁর সাথে কথা বলছিল এ সময় তার মুখ থেকে মদের গন্ধ পাওয়া গেল। ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ(রাঃ) তখন বললেন, মদ খাও আর আল্লাহর কিতাবকে মিথ্যা বানাও। এরপর ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ(রাঃ) মদপানের অপরাধে তাকে শাস্তি প্রদান করলেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]
وَعَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ: كُنَّا بِحِمْصَ فَقَرَأَ ابْنُ مَسْعُودٍ سُورَةَ يُوسُفَ فَقَالَ رَجُلٌ: مَا هَكَذَا أُنْزِلَتْ. فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ: وَاللَّهِ لَقَرَأْتُهَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَحْسَنْتَ» فَبَيْنَا هُوَ يُكَلِّمُهُ إِذْ وَجَدَ مِنْهُ رِيحَ الْخَمْرِ فَقَالَ: أَتَشْرَبُ الْخَمْرَ وَتُكَذِّبُ بِالْكِتَابِ؟ فَضَرَبَهُ الْحَد
ব্যাখ্যা: জমহূর ‘উলামা বলেছেন, এখানে কিতাবকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা কুফরীর শামিল। এটা তার প্রতি কঠোরতা আরোপের জন্য বা সতর্ক করার জন্য। এজন্য তিনি (ইবনু মাস্‘ঊদ) তার প্রতি মুরতাদের হুকুম আরোপ করেননি।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, ইবনু মাস্‘ঊদ তাকে দণ্ড দিয়েছেন এটা এজন্য যে, আমীর কর্তৃক তিনি এ দায়িত্ব বিশেষভাবে পেয়েছিলেন।
হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, হয়ত ইবনু মাস্‘ঊদ তাকে আমীরের নিকট সোপর্দ করেছিলেন। আর আমীর তাকে দণ্ড দিয়েছেন। তাই তিনি দণ্ডকে রূপকভাবে নিজের প্রতি সম্বোধন করেছেন।
কুরতুবী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসটি যারা গন্ধ পেলে শাস্তি হবে না বলেছেন যেমন হানাফী মতাবলম্বী তাদের বিপক্ষে দলীল।
কারী (রহঃ) বলেন, একটি দলের মতামত হলো এ হাদীসটি থেকে বাহ্যিকভাবে বুঝা যায়, গন্ধ পেলে মদ পান করেছে বলে ধরে নিয়ে তাকে শাস্তি দেয়া যাবে। তবে আমাদের এবং শাফি‘ঈদের মতামত এর বিপরীত। কারণ টক আপেলেও মদের গন্ধ পাওয়া যায়। আর জোর জবরদস্তিতে মদ পান করতে পারে। সম্ভবত ইবনু মাস্‘ঊদ তার নিকট থেকে কোন স্বীকৃতি পেয়েছিলেন অথবা তাকে শাস্তি দিয়েছেন।
ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, এই মাসআলাটি মতানৈক্যপূর্ণ। তবে শ্রেষ্ঠ অভিমত হলো যে, শুধু গন্ধের কারণে শাস্তি দেয়া যাবে না। বরং তার সাথে আর কোন ইঙ্গিত বা প্রমাণ পেতে হবে। যেমন মাতলামী, বমি করা অথবা মদ্যপায়ী লোকের সাথে অবস্থান করা, অথবা মদপানকারী হিসেবে মানুষের নিকটে পরিচিত হওয়া।