পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)
২২০২-[১৬] ’উকবাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উচ্চস্বরে কুরআন পড়া প্রকাশ্যে সদকা করার মতো। আর চুপে চুপে কুরআন পড়া চুপে চুপে সদকা করার মতো। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী। ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি হাসান ও গরীব।)[1]
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْجَاهِرُ بِالْقُرْآنِ كالجاهر بِالصَّدَقَةِ ولامسر بِالْقُرْآنِ كَالْمُسِرِّ بِالصَّدَقَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
ব্যাখ্যা: বাহ্যিকভাবে হাদীসের অর্থ হলো উচ্চৈঃস্বরে কুরআন পড়ার চাইতে চুপি স্বরে পড়ার উত্তম, যেমন গোপনে সদাকাহ্ করা উত্তম। এ মতটি ইমাম তিরমিযী ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞ ‘আলিমগণ এভাবেই হাদীসের ব্যাখ্যা করেছেন। যেন মানুষ অহংকার থেকে নিরাপদ থাকে, কারণ যে গোপনে কোন ‘আমল করে তার অহংকারের ভয় থাকে না যা প্রকাশ্যে করলে হয়ে থাকে। আসলে উঁচু আওয়াজে কুরআন পড়া ও নিম্নস্বরে পড়া উভয় পক্ষে হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
উভয়ের মাঝে সমাধানকল্পে ইমাম তিরমিযী বলেন,
(إن الأسرار أبعد من الرياء فهو أفضل في حق من يخاف ذلك، فإن لم يخف الرياء فالجهر أفضل بشرط أن لا يؤذي غيره)
অর্থাৎ- নীরবে পড়া রিয়া বা লৌকিকতা থেকে অধিক দূরের বিষয়। আর যার রিয়ার আশংকা আছে তার জন্য নীরবে পড়া উত্তম। কিন্তু যার এই ভয় নেই তার উঁচু স্বরে পড়া বেশি ভাল, তবে এর দ্বারা মুসল্লি, ঘুমন্ত ব্যক্তির যেন কষ্ট না হয়। অর্থাৎ- যেখানে লৌকিকতা, মুসল্লির কষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে সেথায় নীরবে পড়া উত্তম। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে স্বরবে পড়া উত্তম। এর প্রতি ‘আমল করা উল্লেখযোগ্য কাজ। কেননা এর মাধ্যমে মানুষ মনোযোগ সহকারে শোনার, শিক্ষার, অনুসরণ করার উপকার পায়। উপরন্তু এটি একটি ধর্মের প্রতীক। আর এর দ্বারা পাঠকের কলব জাগ্রত হয়, তার চেতনা চিন্তার জন্য পুঞ্জীভূত হয় কেননা এটা ঘুমকে দূরীভূত করে। এসব নিয়্যাতে উঁচু স্বরে কুরআন পড়া উত্তম কাজ।