পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)
২২০০-[১৪] সা’দ ইবনু ’উবাদাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন শিখে ভুলে গিয়েছে, সে কিয়ামতের দিন অঙ্গহানি অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। (আবূ দাঊদ, দারিমী)[1]
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «مَا من امْرِئٍ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ ثُمَّ يَنْسَاهُ إِلَّا لَقِيَ اللَّهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَجْذَمَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ والدارمي
ব্যাখ্যা: কুরআন শিক্ষা করার পর ভুলে যাওয়া গোনাহের কাজ। কুরআন শিক্ষার বিভিন্ন ধরন হতে পারে যেমন দেখে পড়া, মুখস্থ রাখা, অর্থ বুঝা। যাই হোক না কেন তা ভুলে গেলে তার কাবীরাহ্ গুনাহ হবে বলে ইমাম রাফি‘ঈ মত প্রকাশ করেন। কেউ কেউ বলেন, এখানে কুরআন ভুলে যাওয়া মানে কুরআনের তিলাওয়াত ও তার প্রতি ‘আমল থেকে বিরত থাকা। কুরআন ভোলা ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে কর্তিত হাত নিয়ে সাক্ষাৎ করবে। أجذم এর অর্থ কেউ সর্বাঙ্গহীন, কেউ দলীলহীন, কেউ কাটা হাত, কেউ কল্যাণের পথচ্যুত বলে ব্যাখ্যা করেছেন। আসলে সবগুলো অর্থ প্রায় কাছাকাছি। মোটকথা এর জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
হাফেয ইবনু হাজার আসকালানী বলেন, কুরআন ভোলা ব্যক্তির পাপের ব্যাপারে সালাফে সলিহীনের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। কেউ বলেন কাবীরাহ্ গুনাহ হবে, কেউ বলেন পাপ হবে, যেমন মাওকূফ সূত্রে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, (ما من أحد تعلم القرآن ثم نسيه إلا بذنب)। আবূ ‘উবাদাহ্ الضحاك بن مزاحم সূত্রে বলেন, কুরআন ভোলা বড় বিপদ বা গুনাহ। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, عرضت على ذنوب أمتي فلم أر ذنباً أعظم من سورة القرآن أويتها رجل ثم نسيها (হাদীসটির সানাদ য‘ঈফ)। সাহাবী আবূ ‘আলিয়্যাহ্ বলেন, كنا نعد من أعظم الذنوب أن يتعلم الرجل القرآن ثم ينام عنه حتى ينساه অর্থাৎ- আমরা সবচাইতে বড় পাপ বলে আখ্যায়িত করতাম কোন ব্যক্তির কুরআন শিক্ষা গ্রহণের পর অবহেলাবশত তা ভুলে গেলে। কুরআন তিলাওয়াত বিমুখতা ভুলে যাবার কারণ। আর ভুলে যাওয়া তার যত্নহীনতা ও তুচ্ছজ্ঞান প্রমাণ করে।