পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
২১১৮-[১০] আবূ সা’ঈদ ইবনু মু’আল্লা (রাঃ) বলেন, মসজিদে আমি সালাত আদায় করছিলাম। এ সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকলেন। সালাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি উত্তর দিলাম না। এরপর আমি তাঁর কাছে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি সালাত আদায় করছিলাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ কি এ কথা বলেননি যে, যখন আল্লাহ ও আল্লাহর রসূল ডাকেন তখন তাঁদের ডাকের জবাব দাও? অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মাসজিদ হতে বের হবার আগে আমি কি তোমাকে (পড়ার জন্য) শ্রেষ্ঠতর সূরাটি শিখাব না?
এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার হাত ধরলেন। তারপর আমরা মাসজিদ হতে বের হতে চাইলে, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো বলেছিলেন, ’’আমি কি তোমাকে কুরআনের শ্রেষ্ঠ সূরা শিখাব না?’’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটি হলো সূরা ’’আলহামদু লিল্লা-হি রব্বিল ’আ-লামীন’’। এ সূরাই (পুনঃ পুনঃ আবৃত্ত) সে সাতটি আয়াত (সাব্’উল মাসানী) ও মহা কুরআন, যা আমাকে দেয়া হয়েছে। (বুখারী)[1]
اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ بْنِ الْمُعَلَّى قَالَ: كُنْتُ أُصَلِّي فِي الْمَسْجِدِ فَدَعَانِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَلم أجبه حَتَّى صليت ثُمَّ أَتَيْتُهُ. فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كنت أُصَلِّي فَقَالَ أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ (اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دعَاكُمْ) ثمَّ قَالَ لي: «أَلَا أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي الْقُرْآنِ قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ» . فَأَخَذَ بِيَدِي فَلَمَّا أَرَادَ أَن يخرج قلت لَهُ ألم تقل لأعلمنك سُورَة هِيَ أعظم سُورَةً مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ: (الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) هِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنُ الْعَظِيمُ الَّذِي أُوتِيتهُ . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: বর্ণনাকারী সাহাবীর এ ঘটনাটি ছিল মসজিদে নাবাবীতে। সালাতরত অবস্থায় তাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহবান করলে, তিনি তার ডাকে কোন সাড়া দেননি, কারণ সালাতের মধ্যে কথা বলা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিষেধ করেছেন এবং সালাত ভঙ্গ করতেও নিষেধ করেছেন। আর তিনি এ কথাও ভেবেছেন যে, আল্লাহ ও তার রসূলের ডাকে সাড়া দেয়ার এ হুকুম সালাতের বাইরে।
আল্লাহ ও তার রসূলের আহবানে সাড়া দেয়ার অর্থ হলো তার আনুগত্য করা এবং হুকুম পালন করা।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরাটি শিক্ষা দানের কথা বলেছেন। এর দ্বারা উত্তমটি বুঝানো হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এর দ্বারা অধিক সাওয়াবের কথা বুঝানো হয়েছে।
ইবনুত্ তীন বলেন, বড় সূরার অর্থ হলো, এর সাওয়াব অন্য যে কোন সূরা হতে বেশি। ‘আল্লামা ত্বীবী বলেন, এটা ঐ সূরার বিশেষ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে, যা অন্য কোন সূরার মধ্যে নেই। আর এ সূরায় রয়েছে বহুবিধ উপকারিতা ও অর্থ। এর দ্বারা কুরআনের এক অংশ অপর অংশের উপর ফাযীলাত বা মর্যাদার কথাও স্বীকৃত।
মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, সূরা ফাতিহাকে আল কুরআনের বড় সূরা বলার কারণ হলো এতে রয়েছে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা, তার আদেশ নিষেধ পালনের অঙ্গীকার ও তারই জন্য ‘ইবাদাতকে খালেসভাবে পেশ করার স্বীকৃতি। সৌভাগ্যের বস্ত্ত তার কাছেই চাওয়া এবং দুর্ভাগ্যের অবস্থান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার মহান শিক্ষা। আল কুরআনের সার্বিক মৌলিক আলোচনা এ সূরাতেই নিহীত, সুতরাং এটি সবচেয়ে বড় সূরা।
এ সূরাকে সাব্‘উল মাসানী বলা হয়েছে, (সূরা আল হিজর-এর ৮৭ নং দেখুন)। এর অর্থ পুনঃপঠিতব্য সাত আয়াত বিশিষ্ট সূরা, যেহেতু এ সূরাটি প্রতি রাক্‘আতেই প্রতি সালাতেই পাঠ করা হয়। অথবা এ সূরাটি একের পর এক, অর্থাৎ- দু’বার নাযিল হয়েছে, তাই এর নাম সাব্‘উল মাসানী।