পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম
১৮৭৬-[১৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (বনী ইসরাঈলের) এক ব্যক্তি বলল, আমি (আজ রাতে) আল্লাহর পথে কিছু মাল খরচ করব। তাই সে কিছু মাল নিয়ে বের হলো এবং সে মাল (তার অজান্তে) এক চোরকে দিয়ে দিল। (কোনভাবে এ কথা জানতে পেরে) ভোরে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, আজ রাতে একজন চোরকে সদাক্বার মাল দেয়া হয়েছে। (সদাক্বাহ্ দানকারী এ কথা জানতে পেরে) বলতে লাগল, হে আল্লাহ! সদাক্বার মাল একজন চোরকে (দেয়া সত্ত্বেও) সব প্রশংসা তোমার। তারপর সে বলল, (আজ রাতেও) আবার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দেব। তাই সে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দেবার উদ্দেশে আবারও সদাক্বার মাল নিয়ে বের হলো। (এবার এ সদাক্বাহ্ ভুলবশতঃ) একজন ব্যভিচারিণীকে দিয়ে দিলো। সকালে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, আজও তো সদাক্বার মাল একজন ব্যভিচারিণীকে দেয়া হয়েছে। (এ কথা জানতে পেরে) লোকটি বলল, হে আল্লাহ! একজন ব্যভিচারিণীকে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দিবার জন্য সব প্রশংসা তোমার। এরপর সে বলল, (আজ রাতেও) আমি সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দিব। সে আবারও কিছু মাল নিয়ে বের হলো। (এবারও ভুলবশতঃ) সে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) সে একজন ধনীকে দিয়ে দিলো। সকালে লোকেরা (এ নিয়ে) বলাবলি করতে লাগল, আজ রাতে একজন ধনী ব্যক্তিকে সদাক্বার মাল দেয়া হয়েছে। এ কথা শুনে সে ব্যক্তি বলতে লাগল, হে আল্লাহ! সব প্রশংসাই তোমার যদিও সদাক্বার মাল চোর, ব্যভিচারিণী ও ধনী ব্যক্তি পেয়ে গেছে। স্বপ্নে তাকে বলা হলো, সদাক্বার যে মাল তুমি চোরকে দিয়েছ, তা দিয়ে সম্ভবতঃ সে চুরি করা হতে বিরত থাকবে। তুমি ব্যভিচারিণীকে যা দিয়েছ তা দিয়ে সম্ভবত সে ব্যভিচার হতে ফিরবে। যে মাল তুমি ধনীকে দিয়েছ, সম্ভবত সে এ দান হতে শিক্ষাগ্রহণ করবে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা থেকে খরচ করবে। (বুখারী, মুসলিম; এ হাদীসের ভাষা হলো বুখারীর)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ سَارِقٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تصدق عَلَى سَارِقٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى سَارِقٍ لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدي زَانِيَةٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ اللَّيْلَةَ عَلَى زَانِيَةٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدقَة فَخرج بِصَدَقَتِهِ فوضعها فِي يَدي غَنِي فَأَصْبحُوا يتحدثون تصدق عَلَى غَنِيٍّ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى سَارِق وعَلى زَانِيَة وعَلى غَنِي فَأُتِيَ فَقِيلَ لَهُ أَمَّا صَدَقَتُكَ عَلَى سَارِقٍ فَلَعَلَّهُ أَنْ يَسْتَعِفَّ عَنْ سَرِقَتِهِ وَأَمَّا الزَّانِيَةُ فَلَعَلَّهَا أَنْ تَسْتَعِفَّ عَنْ زِنَاهَا وَأَمَّا الْغَنِيُّ فَلَعَلَّهُ يَعْتَبِرُ فَيُنْفِقَ مِمَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ وَلَفظه للْبُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: যে লোকটি বলেছিল, ‘আমি দান করব’; লোকটি ছিল বানী ইসরাঈলের মধ্যকার। এই হাদীসের দ্বারা একটি বিষয় প্রতীয়মান হয় যে, পূর্বেকার উম্মাতের দীন-শারী‘আত আমাদের জন্যেও প্রযোজ্য যতক্ষণ না তা রহিত করা হবে। হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, বানী ইসরাঈলের মাঝে কেবলমাত্র ভাল লোকের ভিতরে দান করা সীমাবদ্ধ ছিল। এজন্য হাদীসে বর্ণিত ব্যক্তিদের মাঝে দান করার কারণে তারা আশ্চর্যবোধ করেছিল। এ হাদীস দ্বারা আরো একটি বিষয় সম্পর্কে জানা যাচ্ছে যে, দানকারীর নিয়্যাত সৎ এবং ভালো হলে তার নফল দান কবূল করে নেয়া হয়, যদিও যথাস্থানে তার দান না করা হয়ে থাকে।