পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা
১৭৪৮-[২৭] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা যায়নাব (রাঃ)মারা গেলে মহিলারা কাঁদতে লাগল। ’উমার (রাঃ) হাতের কোড়া দিয়ে তাদেরকে আঘাত করলেন। এ অবস্থায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’উমার (রাঃ) কে সরিয়ে দিলেন এবং বললেন, ’উমার! কোমল হও। আর মহিলাদের বললেন, তোমরা তোমাদের গলার আওয়াজ শায়ত্বন (শয়তান) থেকে দূরে রাখো (অর্থাৎ চিৎকার করে ইনিয়ে বিনিয়ে কেঁদ না।) তারপর বললেন, যা কিছু চোখ (অশ্রু) ও হৃদয় (দুঃখ বেদনা ও শোক-তাপ) বের হয় তা আল্লাহর তরফ থেকেই বের হয়। এটা হয় রহমতের কারণে। আর যা কিছু হাত ও মুখ হতে বের হয় তা হয় শায়ত্বনের (শয়তানের) তরফ হতে। (আহমাদ)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: مَاتَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَكَتِ النِّسَاء فَجعل عُمَرُ يَضْرِبُهُنَّ بِسَوْطِهِ فَأَخَّرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ وَقَالَ: «مهلا يَا عمر» ثُمَّ قَالَ: «إِيَّاكُنَّ وَنَعِيقَ الشَّيْطَانِ» ثُمَّ قَالَ: «إِنَّهُ مَهْمَا كَانَ مِنَ الْعَيْنِ وَمِنَ الْقَلْبِ فَمِنَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَمِنَ الرَّحْمَةِ وَمَا كَانَ مِنَ الْيَدِ وَمِنَ اللِّسَانِ فَمِنَ الشَّيْطَانِ» . رَوَاهُ أَحْمد
ব্যাখ্যা: যায়নাব (রাঃ) ছিলেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বড় মেয়ে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবূওয়্যাতের পূর্বে যায়নাবের প্রথম বিবাহ হয়, তখন তার বয়স ছিল দশ বছর। তার খালাত ভাই আবুল ‘আস ইবনু রাবী তাকে বিবাহ করেন। যায়নাব (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বাদ্র (বদর) যুদ্ধের পরে তিনি হিজরত করে মদীনায় চলে আসেন। অষ্টম হিজরীর শুরুর দিকে তিনি ইন্তিকাল করেন। তার একটি পুত্র সন্তান ও একটি কন্যা সন্তান ছিল। পুত্রের নাম ‘আলী এবং মেয়ের নাম উমামাহ্। ‘আলী (রাঃ) পরিণত বয়সে তার পিতার জীবদ্দশায় ইন্তিকাল করেন। আর উমামাকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত স্নেহ করেন। ফাত্বিমাহ্ (রাঃ)-এর ইন্তিকালের পরে ‘আলী (রাঃ) উমামাকে বিবাহ করেন।
এ হাদীসে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে মুখ চাপড়ানো কাপড় ছিঁড়ে ফেলা ও শোক গাঁথা কবিতা আবৃতি করা এবং বিলাপ সহ ক্রন্দন করাকে শায়ত্বনের (শয়তানের) সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। উল্লেখিত বিষয় ব্যতীত শুধু অন্তরের দুঃখ-কষ্ট ফুটিয়ে তোলার জন্য যে চোখের পানি প্রবাহিত হয় তা আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমাত।
এখানে যেসব কাজ হাত দ্বারা সংঘটিত হয় তা হল, মুখ চাপড়ানো, গলায় আঘাত করা, কাপড় ছিঁড়ে ফেলা ও চুল ছিঁড়ে ফেলা। এ কাজগুলো শায়ত্বনের (শয়তানের) পক্ষ থেকে হয়ে থাকে এবং শারী‘আতে এগুলো নিষিদ্ধ মুখ দিয়ে যে সকল কাজ হয়ে থাকে তা হল, উচ্চৈঃস্বরে কাঁদা, বিলাপ করা ও এমন সব কথা বলা, যাতে আল্লাহ অখুশী হন। এ সব শায়ত্বনের (শয়তানের) পক্ষ থেকে এবং শারী‘আতে এসব কাজ নিষিদ্ধ।