পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির দাফনের বর্ণনা
১৭১৮-[২৬] ইবনু আবূ মুলায়কাহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুবশী (মক্কার নিকটবর্তী একটি জায়গার নাম) নামক স্থানে ’আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকরের মৃত্যু হলে তাঁর লাশ মক্কায় নিয়ে এসে দাফন করা হয়। উম্মুল মু’মিনীন ’আয়িশাহ্ (রাঃ) (মক্কায় হাজ্জ (হজ/হজ্জ) করতে) এলে তিনি ’আবদুর রহমানের (ভাইয়ের) কবরের কাছে এলেন। ওখানে তিনি (কবি তামীম ইবনু নুওয়াইরার কবিতার এ দু’টি পংক্তি আবৃত্তি করেন যাতে কবি তার ভাই মালিকের জন্য শোক প্রকাশ করেছিলেন)-
ওয়া কুন্না- কানাদ্ মা-নী জাযীমাতা হিক্ববাতান মিনাদ্ দাহরি হাত্তা- ক্বীলা লাই ইয়াতা সাদ্দা’আ
ফালাম্মা- তাফাররাক্বনা- কাআন্নী ওয়ামা-লিকান লিতূলিজ্ তিমা-’ইন লাম নাবিত লাইলাতাম্ মা’আ।
অর্থাৎ আমরা দু’ ভাই বোন, জাযিমার সে দু’ বন্ধুর মতো অনেক দিন পর্যন্ত একত্রে কালযাপন করছিলাম। তাদের এ অবস্থা দেখে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, এরা তো কখনো (একে অপর থেকে) পৃথক হবে না। কিন্তু যখন আমরা দু’জন অর্থাৎ আমি ও তুমি একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হলাম, তখন দীর্ঘ সময় পর্যন্ত এক সাথে থাকার পরও মনে হলো, আমরা একটি রাতের জন্যও একত্রে এক জায়গায় ছিলাম না।
এরপর ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি যদি তোমার ইন্তিকালের সময় তোমার কাছে থাকতাম, তাহলে আমি তোমাকে সেখানেই দাফন করতাম, যেখানে তুমি মৃত্যুবরণ করেছিলে। আর আমি যদি তোমার মৃত্যুর সময় তোমার কাছে থাকতাম তাহলে আজ তোমার কবরের পাশে আমি আসতাম না। (তিরমিযী)[1]
وَعَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ عبد الرَّحْمَن بن أبي بكر بالحبشي (مَوضِع قريب من مَكَّة) وَهُوَ مَوْضِعٌ فَحُمِلَ إِلَى مَكَّةَ فَدُفِنَ بِهَا فَلَمَّا قَدِمَتْ عَائِشَةُ أَتَتْ قَبْرَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ فَقَالَتْ: وَكُنَّا كَنَدْمَانَيْ جَذِيمَةَ حِقْبَةً مِنَ الدَّهْرِ حَتَّى قِيلَ لَنْ يَتَصَدَّعَا فَلَمَّا تَفَرَّقْنَا كَأَنِّي وَمَالِكًا لِطُولِ اجْتِمَاعٍ لَمْ نَبِتْ لَيْلَةً مَعَا ثُمَّ قَالَتْ: وَاللَّهِ لَوْ حَضَرْتُكَ مَا دُفِنْتَ إِلَّا حَيْثُ مُتَّ وَلَوْ شهدتك مَا زرتك رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: হাবশাহ্ একটি স্থানে নাম। এটি মক্কার নিকট অবস্থিত। তবে মক্কা থেকে এর দূরত্ব হচ্ছে বারো মাইল। কেউ কেউ বলেছেন, দশ মাইল। শামনী বলেন, এ হাদীসে কবিতার যে পংতিগুলো উল্লেখ করা হয়েছে তা রচনা করেছিলেন তামীম ইবনু নুওয়াইরাহ্। তিনি তার ভাই মালিক, যাকে খালিদ ইবনু ওয়ালীদ আবূ বাকর (রাঃ)-এর খিলাফাতকালে হত্যা করেছিলেন তার প্রতি শোক প্রকাশের জন্য তিনি এ কবিতাগুলো রচনা করেছিলেন।
এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) কবর যিয়ারত করতে গিযেছিলেন। অথচ অন্য হাদীসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারতকারিণী মহিলাদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন। তাহলে কিভাবে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) কবর যিয়ারত করলেন? এর উত্তরে বলা যায় যে, হাদীসে যে নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে তা হল অধিক অধিক কবর যিয়ারত করার ক্ষেত্রে।
মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারত করার বিধান সম্পর্কে ‘উলামাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে অধিকাংশ ‘উলামায়ে কেরাম মহিলাদের কবর যিয়ারত করাকে জায়িয বলেছেন। তবে তারা এ শর্তারোপ করেছেন যে, যখন তারা ফিতনাহ্ (ফিতনা) থেকে নিরাপদ থাকবে তখন তাদের কবর যিয়ারত করাতে কোন সমস্যা নেই। এ ব্যাপারে এ হাদীসটি ছাড়াও আরো হাদীস বর্ণিত রয়েছে।