হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
১৭১১

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির দাফনের বর্ণনা

১৭১১-[১৯] মুত্ত্বালিব ইবনু আবী ওয়াদা’আহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ’উসমান ইবনু মায্’ঊন (রাঃ)-এর মৃত্যুবরণ করেন, তখন তার লাশ বের করা হয় এবং তা দাফন করা হয়। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কবরের চিহ্ন রাখার জন্য এক ব্যক্তিকে হুকুম দিলেন একটি বড়) পাথর আনার জন্য। লোকটি পাথর উঠিয়ে আনতে পারলেন না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা উঠিয়ে আনার জন্য উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের দু’ হাতের আস্তিন গুটিয়ে নিলেন। হাদীসের রাবী বলেন, যে ব্যক্তি আমার কাছে রসূলের এ হাদীস শুনিয়েছেন, তিনি বলতেন, যখন তিনি হাতা গুটাচ্ছিলেন- মনে হচ্ছে এখনো আমি রসূলের পবিত্র বাহুদ্বয়ের শুভ্রতার চমক অনুভব করছি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে পাথরটি উঠিয়ে এনে ’উসমানের কবরের মাথার দিকে রেখে দিলেন এবং বললেন, আমি এ পাথর দেখে আমার ভাইয়ের কবর চিনতে পারব। এখন আমার পরিবারের যে মারা যাবে তাকে এর পাশে দাফন করব।’’ (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ قَالَ: لَمَّا مَاتَ عُثْمَان ابْن مَظْعُونٍ أُخْرِجَ بِجَنَازَتِهِ فَدُفِنَ أَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا أَنْ يَأْتِيَهُ بِحَجَرٍ فَلم يسْتَطع حملهَا فَقَامَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَسَرَ عَنْ ذِرَاعَيْهِ. قَالَ الْمُطَّلِبُ: قَالَ الَّذِي يُخْبِرُنِي عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَيَاضِ ذِرَاعَيْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ حَسَرَ عَنْهُمَا ثُمَّ حَمَلَهَا فَوَضَعَهَا عِنْدَ رَأْسِهِ وَقَالَ: «أُعَلِّمُ بِهَا قَبْرَ أَخِي وَأَدْفِنُ إِلَيْهِ مَنْ مَاتَ من أَهلِي» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের মাধ্যমে শারী‘আত কবরকে চিহ্নিত করার বৈধতা দিয়েছে। অর্থাৎ কবরটি কার? এটা চেনার জন্য কোন চিহ্ন ব্যবহার করা জায়িয।

‘উসমান ইবনু মায্‘ঊন (রাঃ) যখন ইন্তিকাল করেন তখন তার জানাযাহ্ নিয়ে কবরস্থানে যাওয়া হল এবং তাকে দাফন করা হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন যে, সে যেন একটি পাথর নিয়ে তার কাছে আসে কিন্তু লোকটি তা বহন করতে সক্ষম হল না। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটির কাছে গেলেন এবং তার বাহুদ্বয় থেকে আস্তিন সরিয়ে ফেললেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমাকে যখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে এ সংবাদ দেয়া হল তখন আমার মনে হল আমি যেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শুভ্র বাহুদ্বয় দেখতে পাচ্ছি। অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে তা বহন করে আনলেন এবং ‘উসমান ইবনু মায্‘ঊন-এর ক্ববরের উপর তার মাথার কাছে রাখলেন আর বললেন, এ হল আমার ভাইয়ের কবর। আমার পরিবারের কেউ মারা গেলে এখানেই দাফন করবে।

এ হাদীসের আলোকে কয়েকটি বিষয় অবগত হওয়া যায়। আর তা হল, নেতা তার অধিনস্ত ব্যক্তিতে কোন কাজের নির্দেশ করতে পারে। সে যদি অক্ষম হয়, তাহলে নেতা সে কাজের জন্য এগিয়ে যাবে।

কারো কবরকে চিহ্নিত করার জন্য কোন কিছু যেমন পাথর বা অন্য কিছু ব্যবহার করা জায়িয।

কবর সম্পর্কে ওয়াসীয়াত করা যায়। যেমন আমাকে অমুক স্থানে দাফন করবে।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ‘উসমান ইবনু মায্‘ঊন (রাঃ)-কে ভাই বলার দু’টি দিক রয়েছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সম্মানার্থে তাকে ইসলামের ভাই বলেছেন। অর্থাৎ এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই অথবা তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটাত্মীয় ছিলেন। কেননা তিনি ছিলেন কুরায়শ বংশের অন্তর্ভুক্ত। অথবা তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দুধ ভাই ছিলেন।

মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, এটাই সহীহ। অর্থাৎ তিনি তার দুধ ভাই ছিলেন।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী আমার পরিবারের থেকে যে মারা যাবে তাকে তার কাছে দাফন করবে। বলা হয়, ‘উসমান ইবনু মায্‘ঊন-এর পরে যে ব্যক্তি প্রথম মারা যান তিনি হলেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পুত্র ইব্রাহীম। এ হাদীস আবূ দাঊদে বর্ণিত রয়েছে। এর সানাদ সম্পর্কে আল্লামা মুনযির (রহঃ) বলেন, এর মধ্যকার কাসীর ইবনু যায়দ ছিলেন আসলামীয়ীন-এর দাস।

হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) তার তালখীস কিতাবে এর সানাদ সম্পর্কে বলেন, কাসীর ইবনু যায়দ ব্যতীত এর সানাদ সহীহ।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ