পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জানাযার সাথে চলা ও সালাতের বর্ণনা
১৬৬৭-[২২] মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আরোহী চলবে জানাযার পশ্চাতে এবং পায়ে হাঁটা ব্যক্তিরা চলবে জানাযার সামনে পেছনে ডানে-বামে জানাযার কাছ ঘেষে। আর অকালে ভূমিষ্ট বাচ্চার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে, তাদের মাতা-পিতার জন্য মাগফিরাত ও রহমতের দু’আ করবে। (আবূ দাঊদ)[1]
ইমাম আহমাদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ-এর এক বর্ণনায় রাবী বলেছেন, আরোহীরা জানাযার পেছনে থাকবে। আর পায়ে চলা ব্যক্তিরা আগেপিছে যেভাবে পারে হাঁটবে। মৃত ছোট বাচ্চাদের জন্যও জানাযার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে হবে। মাসাবীহ হতে এ বর্ণনাটি মুগীরাহ্ ইবনু যিয়াদ বর্ণনা করেছেন।
وَعَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الرَّاكِبُ يَسِيرُ خَلْفَ الْجَنَازَةِ والماشي يمشي خلفهَا وأمامها وَعَن يَمِينهَا وَعَن يسارها قَرِيبا مِنْهَا وَالسَّقْطُ يُصَلَّى عَلَيْهِ وَيُدْعَى لِوَالِدَيْهِ بِالْمَغْفِرَةِ وَالرَّحْمَةِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَفِي رِوَايَةِ أَحْمَدَ وَالتِّرْمِذِيِّ وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه قَالَ: «الرَّاكِب خلف الْجِنَازَة وَالْمَاشِي حَيْثُ شَاءَ مِنْهَا وَالطِّفْلُ يُصَلَّى عَلَيْهِ» وَفِي المصابيح عَن الْمُغيرَة بن زِيَاد
ব্যাখ্যা: এ হাদীস প্রমাণ করে যে, বাহনের উপর সওয়ার হয়ে জানাযার সাথে চলা জায়িয, পক্ষান্তরে ১৬৮৬ নং হাদীসের সাথে এটা সাংঘর্ষিক। পরস্পর বিরোধী এ দু’ হাদীসের সমন্বয় সাধনে শায়খুল হাদীস ‘আল্লামা ‘আবদুর রহমান মুবারাকপূরী (রহঃ) বলেনঃ মুগীরাহ্ কর্তৃক বর্ণিত বাহনে চলা সংক্রান্ত হাদীসটি অসুস্থ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, লেংড়া, অন্ধ, প্রতিবন্ধী, মাজুর লোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পক্ষান্তরে সাওবান কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি সর্বসাধারণের জন্য প্রযোজ্য। অথবা সাওবানের হাদীস দ্বারা জানাযার ডানে বামে এবং আগে বা সামনে চলা বুঝানো হয়েছে যা নিষিদ্ধ, আর মুগীরার হাদীস দ্বারা পিছনে বা দূরে চলা বুঝানো হয়েছে যা বৈধ। অথবা মুগীরার হাদীস জায়িয মা‘আল কিরাহাত বুঝানোর জন্য বলা হয়েছে।
অত্র হাদীস থেকে আরো জানা যায় যে, পদব্রজে গমনকারী জানাযার সামনে পিছনে ডানে বামে চতুর্দিক দিয়ে চলতে পারে। কেউ যদি একান্তই বাহনে চলতে বাধ্য হয় তবে সে যেন বেশখানিক পিছনে চলে।
অকালপ্রসূত সন্তানের জানাযাহ্ আদায়ের বিষয় নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জমহূরের মত হলো ভূমিষ্ট সন্তানের মধ্যে যদি (কান্না অথবা নড়াচড়ার মাধ্যমে) প্রাণের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার জানাযাহ্ আদায় করবে অন্যথায় নয়। (এর প্রমাণে তৃতীয় পরিচ্ছেদে ১৬৯১ হাদীসে বর্ণনা আসছে)।
পক্ষান্তরে ইমাম আহমাদ (রহঃ) অত্র মুত্বলাক্ব হাদীসের ভিত্তিতে বিনা শর্তে অকালপ্রসূত সন্তানের জানাযাহ্ বৈধ মনে করেন। চার মাস দশদিনে গর্ভস্থিত সন্তানের ভিতর রূহ্ প্রবিষ্ঠ করানো হয়। সুতরাং অকালে ভূমিষ্ট এ বয়সের সকল মৃত সন্তানেরই জানাযাহ্ আদায় করবে, চাই প্রাণের স্পন্দন প্রত্যক্ষ করুক অথবা না করুক।