হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
১৩২৮

পরিচ্ছেদঃ ৪০. সালাতুত্ তাসবীহ

সালাতুত্ তাসবীহ-এর বর্ণনা- এ সালাতে অধিক তাসবীহ পাঠ করা হয় বিধায় একে সালাতুত্ তাসবীহ বলা হয়।


১৩২৮-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আব্বাস ইবনু ’আবদুল মুত্ত্বালিবকে বললেন, হে ’আব্বাস! হে আমার চাচাজান! আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে বলে দেব না? আপনাকে কি দশটি অভ্যাসের অধিপতি বানিয়ে দেব না? আপনি যদি এগুলো ’আমল করেন তাহলে আল্লাহ আপনাকে পূর্বের, পরের, পুরানো ও নতুন, ইচ্ছাকৃত অথবা ভুলক্রমের, ছোট কি বড়, প্রকাশ্য কি গোপন, সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর সেটা হলো আপনি চার রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবেন। প্রতি রাক্’আতে ফাতিহাতুল কিতাব ও সঙ্গে একটি সূরাহ্। প্রথম রাক্’আতের ক্বিরাআত (কিরআত) পড়া শেষ হলে দাঁড়ানো অবস্থায় পনের বার এ তাসবীহ পড়বেনঃ ’’সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি, ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু আল্ল-হু আকবার’’। তারপর রুকূ’তে যাবেন। রুকূ’তে এ তাসবীহটি দশবার পড়বেন। তারপর রুকূ’ হতে মাথা উঠিয়ে এ তাসবীহ আবার দশবার পড়বেন।

তারপর সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবেন। সাজদায় এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। তারপর সিজদা্ হতে মাথা উঠাবেন। সেখানেও এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। তারপর দ্বিতীয় সাজদায় যাবেন। এ তাসবীহ দশবার এখানেও পড়বেন। তারপর সিজদা্ হতে মাথা উঠিয়ে এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। সর্বমোট এ তাসবীহ এক রাক্’আতে পঁচাত্তর বার হবে। চার রাক্’আতে এ রকম পড়ে যেতে হবে। আপনি যদি প্রতিদিন এ সালাত এ রকম পড়তে পারেন তাহলে প্রতিদিনই পড়বেন। প্রতিদিন পড়তে না পারলে সপ্তাহে একদিন পড়বেন। সপ্তাহে একদিন পড়তে না পারলে প্রতিমাসে একদিন পড়বেন। যদি প্রতি মাসে একদিন পড়তে না পারেন, বছরে একবার পড়বেন। যদি বছরেও একবার পড়তে না পারেন, জীবনে একবার অবশ্যই পড়বেন। (আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী’র দা’ওয়াতুল কাবীর)[1]

بَابُ صَلَاةِ التَّسْبِيْحِ

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لِلْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ: يَا عَبَّاسُ يَا عَمَّاهُ أَلَا أُعْطِيكَ؟ أَلَا أَمْنَحُكَ؟ أَلا أحبوك؟ أَلَا أَفْعَلُ بِكَ عَشْرَ خِصَالٍ إِذَا أَنْتَ فَعَلْتَ ذَلِكَ غَفَرَ اللَّهُ لَكَ ذَنْبَكَ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ قَدِيمَهُ وَحَدِيثَهُ خَطَأَهُ وَعَمْدَهُ صَغِيرَهُ وَكَبِيرَهُ سِرَّهُ وَعَلَانِيَتَهُ: أَنْ تُصَلِّيَ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ تَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَسُورَةً. فَإِذَا فَرَغْتَ مِنَ الْقِرَاءَةِ فِي أَوَّلِ رَكْعَةٍ وَأَنْتَ قَائِمٌ قُلْتَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً ثُمَّ تَرْكَعُ فَتَقُولُهَا وَأَنْتَ رَاكِعٌ عَشْرًا ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ الرُّكُوعِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ تَهْوِي سَاجِدًا فَتَقُولُهَا وَأَنْتَ سَاجِدٌ عَشْرًا ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ السُّجُودِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ تَسْجُدُ فَتَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ فَتَقُولُهَا عَشْرًا فَذَلِكَ خَمْسٌ وَسَبْعُونَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ تَفْعَلُ ذَلِكَ فِي أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ إِنِ اسْتَطَعْت أَن تصليها فِي كل يَوْم فَافْعَلْ فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّةً فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ شَهْرٍ مَرَّةً فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ سَنَةٍ مَرَّةً فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي عُمْرِكَ مَرَّةً . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعْوَات الْكَبِير

ব্যাখ্যা: কেউ বলেছেন, দিনে কিংবা রাতে হোক সালাতুত্ তাসবীহ চার রাক্‘আত এক সালামে আদায় করতে হবে। কেউ বলেছেন, দিনের বেলায় এক সালামে ও রাতের বেলায় দু’ সালামে আদায় করতে হবে। কেউ বলেছেন, একবার এক সালামে ও অন্যবার দু’ সালামে আদায় করতে হবে।

তবে সালাতুত্ তাসবীহ সূর্য ঢলে পড়ার পর যুহরের পূর্বে আদায় করতে হবে, যা আবূ দাঊদ তার সুনান গ্রন্থে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) মারফূ‘ভাবে বর্ণনা করেছেন, যখন দিন গড়ে যায় তখন দাঁড়াও এবং চার রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করো। কেউ বলেছেন সালাতুত তাসবীহতে কখনো সূরাহ্ যিলযাল, আল ‘আ-দিয়া-ত, আল ফাত্‌হ, আল ইখলাস পড়বে। আবার কেউ বলেছেন সালাতুত তাসবীহের চার রাক্‘আতে সূরাহ্ আল হাদীদ, আল হাশর, আস্ সাফ্ ও আত্ তাগা-বুন পড়া উত্তম। (আল্লাহ তা‘আলা ভাল জানেন)

প্রিয় পাঠক! জেনে রাখুন যে, সালাতুত তাসবীহ-এর হাদীসের ব্যাপারে ‘উলামাদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে, একদল ‘উলামাহ্ সেটাকে য‘ঈফ বলেছেন, তাদের মধ্য আল ‘উক্বায়লী, ইবনুল ‘আরাবী, নাবাবী ইবনু তাইমিয়্যাহ্ ইবনু ‘আকিল হাদী, আল মাজী, হাফিয আসক্বালানী (রহঃ) আত তালখিসে য‘ঈফ বলেছেন এবং ইবনুল জাওযী এ হাদীসকে জাল হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেছেনঃ (আত্ তালখিস গ্রন্থে) প্রকৃত সত্য হলো আলোচ্য হাদীসের প্রতি সূত্রই য‘ঈফ।

যদিও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান স্তরের কাছাকাছি, তারপরও তা শায বা বিরল এবং তার মুতাবা' এবং অন্য সূত্রে তার কোন শাহীদ বা সাক্ষী হাদীসও নেই এবং সালাতুত্ তাসবীহ পদ্ধতিটি অন্যান্য সালাতের পরিপন্থী।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ