পরিচ্ছেদঃ ৩৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - ‘আমলে ভারসাম্য বজায় রাখা
১২৪৯-[৯] ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি কোন লোকের বসে বসে (নফল) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি দাঁড়িয়ে পড়ত ভাল হতো। যে লোক বসে বসে নফল সালাত আদায় করবে সে দাঁড়িয়ে পড়া লোকের অর্ধেক সাওয়াব পাবে। আর যে লোক শুয়ে সালাত আদায় করবে সে বসে পড়া ব্যক্তির অর্ধেক সাওয়াব পাবে। (বুখারী)[1]
بَابُ الْقَصْدِ فِي الْعَمَلِ
وَعَن عمرَان بن حُصَيْن: أَنَّهُ سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلَاةِ الرَّجُلِ قَاعِدًا. قَالَ: «إِنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ الْقَائِمِ وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا فَلَهُ نصف أجل الْقَاعِد» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: ‘ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ)-এর পূর্ব বর্ণিত হাদীসের ভিন্ন হাদীস এটি। তিনি বসে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারী সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উত্তরে বলেন, তুমি যদি দাঁড়িয়ে আদায় করা সেটাই উত্তম। বসে আদায় করলে দাঁড়ানো ব্যক্তির অর্ধেক সাওয়াব পাবে। ইমাম খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, এ হুকুম নফল সালাতের জন্য প্রযোজ্য ফার্যের (ফরযের/ফরজের) বেলায় নয়। কেননা সামর্থ্যবান ব্যক্তির ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বসে আদায় করা বৈধ নয়। ইমাম নাবাবী বলেনঃ ‘উলামাদের ইজমা বা সর্ববাদী সম্মত মতে এ হুকুম নফলের বেলায়, ফার্যের (ফরযের/ফরজের) বেলায় নয়। ফরয সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করতে যদি অক্ষম হয় তাহলে বসে আদায় করাবে আর এ সময় বসে আদায় করলে সাওয়াব কম হবে না। অনুরূপ দাঁড়িয়ে অথবা বসে সালাত আদায়ে সক্ষম ব্যক্তি যদি শুয়েই নফল সালাত আদায় করে তার জন্যও বসা ব্যক্তির অর্ধেক সাওয়াব মিলবে। এ হাদীস প্রমাণ করে যে, বিনা ওযরে নফল সালাত শুয়ে আদায় করা বৈধ।
ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, শায়িতাবস্থায় যারা নফল সালাত আদায় জায়িয মনে করেন না তাদের বিরুদ্ধে এ হাদীস সুস্পষ্ট এবং বলিষ্ঠ প্রামাণ্য দলীল। শাফি‘ঈগণ বলেন, এটা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যই বিশেষত্ব ছিল, অন্যের জন্য বৈধ নয়। সুতরাং এ নিয়ে ‘আলিমদের মধ্যে ইখতিলাফ বিদ্যমান রয়েছে। জমহূরের মত হলো, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও শুয়ে সালাত আদায়ের বৈধতা কেবল নফলের জন্যই প্রযোজ্য ফারযের জন্য নয়। অন্য এক শ্রেণীর ‘আলিমের মতে এটা ফার্যের বেলায়ও প্রযোজ্য হবে। ইমাম খাত্ত্বাবী এ মত পোষণ করেন। খাত্ত্বাবীর সিদ্ধান্ত হলো দাঁড়াতে সক্ষম তবে কষ্টসাধ্যে বসে ফরয সালাত আদায় করা, বসতে সক্ষম তবে কষ্টসাধ্যে শুয়ে ফরয সালাত আদায় করা বৈধ এবং এতে সে অর্ধেক সাওয়াব পাবে।