পরিচ্ছেদঃ ১২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতে ক্বিরাআতের বর্ণনা
৮৩৩-[১২] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে জামা’আতে সালাত আদায় করতেন, তারপর নিজ এলাকায় যেতেন ও এলাকাবাসীর ইমামতি করতেন। এক রাতে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ’ইশার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন, তারপর নিজ এলাকায় গিয়ে তাদের ইমামতি করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাতে সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ পাঠ করতে শুরু করলেন। এতে বিরক্ত হয়ে এক লোক সালাম ফিরিয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) থেকে পৃথক হয়ে গেল। একা একা সালাত আদায় করে এখান থেকে চলে গেল। তার এ অবস্থা দেখে লোকজন বিস্মিত হয়ে বলল, হে অমুক! তুমি কি মুনাফিক্ব হয়ে গেলে? উত্তরে সে বলল, আল্লাহর কসম! আমি কখনও মুনাফিক্ব হয়নি। নিশ্চয়ই আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাবো। এ বিষয়টি সম্পর্কে তাঁকে জানাবো।
তারপর সে ব্যক্তি রসূলের কাছে এলো। বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি পানি সেচকারী (শ্রমিক), সারাদিন সেচের কাজ করি। মু’আয আপনার সাথে ’ইশার সালাত আদায় করে নিজের গোত্রের ইমামতি করতে এসে সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ দিয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করে দিলেন। এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’আয-এর দিকে তাকালেন এবং বললেন, হে মু’আয! তুমি কি ফিতনাহ্ (ফিতনা) সৃষ্টিকারী? তুমি ’ইশার সালাতে সূরাহ্ ওয়াশ্ শামসি ওয়ায্ যুহা-হা-, সূরাহ্ ওয়ায্ যুহা-, সূরাহ্ ওয়াল্ লায়লী ইযা- ইয়াগশা-, সূরাহ্ সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আ’লা- তিলাওয়াত করবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْقِرَاءَةِ فِى الصَّلَاةِ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: كَانَ مُعَاذُ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ يَأْتِي فَيَؤُمُّ قَوْمَهُ فَصَلَّى لَيْلَةً مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعِشَاءَ ثُمَّ أَتَى قَوْمَهُ فَأَمَّهُمْ فَافْتَتَحَ بِسُورَةِ الْبَقَرَةِ فَانْحَرَفَ رَجُلٌ فَسَلَّمَ ثُمَّ صَلَّى وَحْدَهُ وَانْصَرَفَ فَقَالُوا لَهُ أَنَافَقَتْ يَا فُلَانُ قَالَ لَا وَاللَّهِ وَلَآتِيَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فلأخبرنه فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا أَصْحَابُ نَوَاضِحَ نَعْمَلُ بِالنَّهَارِ وَإِنَّ مُعَاذًا صَلَّى مَعَكَ الْعِشَاءَ ثُمَّ أَتَى قَوْمَهُ فَافْتَتَحَ بِسُورَةِ الْبَقَرَةِ فَأَقْبَلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى مُعَاذٍ فَقَالَ: يَا مُعَاذُ أَفَتَّانٌ؟ أَنْتَ اقْرَأ: (الشَّمْس وَضُحَاهَا (وَالضُّحَى) (وَاللَّيْل إِذا يغشى) و (وَسبح اسْم رَبك الْأَعْلَى)
ব্যাখ্যা: নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীর পিছনে ফরয আদায়কারীর ইকতিদা সম্পর্কে ইমামদের মতভেদঃ ইমাম আবূ হানীফাহ্, মালিক ও আহমাদ (রহঃ)-এর এক মতানুযায়ী নফল আদায়কারীর পিছনে ফরয আদায়কারীর ইকতিদা জায়িয নেই। কারণ ইমাম মুক্তাদীর সালাতের যামিন হয়। আর এটা যুক্তিযুক্ত যে, নফল আদায়কারী দুর্বল এবং ফরয আদায়কারী শক্তিমান। দুর্বল কখনো শক্তিমানের যামিন হতে পারে না। সুতরাং নফল সালাত আদায়কারী কখনও ইমাম হিসেবে ফরয আদায়কারী মুক্তাদীর যামিন হতে পারে না।
ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মতে ও আহমাদ (রহঃ) এক বর্ণনার মতে নফল আদায়কারীর পিছনে ফরয আদায়কারীর ইকতিদা জায়িয আছে। তাদের দলীল হলো- (১) আলোচ্য হাদীসে মু‘আয-এর ঘটনা যা জাবির (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে প্রথমে ফরয হিসেবে আদায় করে পরে নফল আদায়কারী হিসেবে ইমামতি করেন। যদি এটা জায়িয না হতো মহানাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্য তাকে দ্বিতীয়বারের ইমামতি করতে নিষেধ করতেন।
(২) জিবরীল (আঃ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইমামতি করেছেন। অথচ মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা)-এর ওপর সালাত ফরয নয়। যদি এটা জায়িয না হতো তাহলে ফরয আদায়কারী মহানাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নফল আদায়কারী জিবরীলের ইকতিদা করা কিভাবে জায়িয হলো?