পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের ফযীলত
৬৩৩-[১০] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খন্দাক্বের যুদ্ধের দিন বলেছিলেন, কাফিররা আমাদেরকে ’মধ্যবর্তী সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)’ অর্থাৎ- ’আসরের সালাত আদায় করা থেকে বিরত রেখেছে। আল্লাহ তা’আলা তাদের ঘর আর কবরগুলো আগুন দিয়ে ভরে দিন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ فَضَائِلِ الصَّلَاةِ
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ: حَبَسُونَا عَنْ صَلَاةِ الْوُسْطَى: صَلَاةِ الْعَصْرِ مَلَأَ اللَّهُ بُيُوتَهُمْ وَقُبُورَهُمْ نَارًا) (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: হিজরী চতুর্থ বছরের শাও্ওয়াল মাসে সংঘটিত খন্দাকের যুদ্ধের (অন্য নামে আহযাবের যুদ্ধ) দিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুশরিকরা আমাদেরকে সূর্য ডোবার পূর্ব পর্যন্ত ‘আসরের সালাত আদায় করতে বাধা দিয়ে রেখেছিল। (অর্থাৎ- তাদের মোকাবেলায় ব্যাস্ত থাকার কারণে সূর্য ডোবার পূর্বে আমরা ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি)। এটা ছিল ভয়কালীন সালাত (সালাতুল খওফ) প্রবর্তিত হওয়ার পূর্বের ঘটনা।
এ হাদীস প্রমাণ করে যে, সালাতুল উস্তা, অর্থাৎ- মধ্যবর্তী সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হলো ‘আসরের সালাত। যদিও মধ্যবর্তী সালাত কোনটি এ নিয়ে ‘আলিমগণের মধ্যে বিশটিরও বেশী মত দেখতে পাওয়া যায়। এ মতগুলোর মধ্যে তিনটি মত সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ।
প্রথম মতঃ ইমাম মালিক ও ইমাম শাফিঈ (রহঃ)-এর মতে এটি হলো ফজরের (ফজরের) সালাত।
দ্বিতীয় মতঃ যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) ও ‘উরওয়াহ্ (রাঃ)-এর মতে এটি হলো যুহরের সালাত।
তৃতীয় মতঃ অধিকাংশ সাহাবী, তাবি‘ঈ, মুহাদ্দিস এবং ইমাম আহমাদ ও ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে এটি হলো ‘আসরের সালাত।
এ মতের পক্ষে স্পষ্ট সহীহ হাদীস বিদ্যমান, যা অসংখ্য প্রমাণবাহী। এ সব হাদীস ‘আল্লামা হাফিয ইবনু হাজার আল্ আসক্বালানী তাঁর ‘ফাতহুল বারী’ কিতাবে, ‘আল্লামা ইবনু কাসীর তাঁর ‘তাফসীরে আল-মাজদ’, ইবনু তাইমিয়াহ্ তাঁর ‘আল্ মুনতাক্বা’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। সে হাদীসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘আলী (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীসটি। এ মতের বিপক্ষে প্রমাণ বহনকারী অন্যান্য হাদীস ও আসার (সাহাবীগণের কথা) এ হাদীসের সমকক্ষ নয়। এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ/সঠিক কথা। ইমাম নাবাবী বলেন, সহীহ স্পষ্ট হাদীসগুলোর দাবী হলো মধ্যবর্তী সালাত হলো ‘আসরের সালাত। হাফিয ইবনু হাজার বলেন, এটা ‘আসরের সালাত হওয়াই নির্ভরযোগ্য, প্রতিষ্ঠিত, স্বীকৃত কথা।
এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের জন্য বদ্দু‘আ করে বললেন, আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের দুনিয়ার জীবনের ঘরগুলোকে ধ্বংস করে দিন এবং তাদের আখিরাতের ঘর, অর্থাৎ- কবরগুলোকে আগুন দ্বারা পূর্ণ করে দিন।