পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - প্রথম ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সালাত আদায়
৬১৯-[৩৩] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)-কে তোমাদের চেয়ে বেশী আগে ভাগে আদায় করতেন। আর তোমরা ’আসরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)-কে তাঁর চেয়ে বেশী আগে আদায় কর। (আহমাদ ও তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشَدَّ تَعْجِيلًا لِلظُّهْرِ مِنْكُمْ وَأَنْتُمْ أَشَدُّ تَعْجِيلًا لِلْعَصْرِ مِنْهُ. رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: এ হাদীস অনুযায়ী যুহরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) তাড়াতাড়ি পড়া মুস্তাহাব। ইবনু কুদামাহ্ তাঁর ‘‘আল্ মুগনী’’ গ্রন্থে বলেন, গরম ও বৃষ্টির দিন ব্যতীত অন্য দিনগুলোতে যুহরের সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে কোন মতানৈক্য নেই। মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, সার্বিকভাবে এ হাদীস দ্বারা ‘আসরের সালাত দেরী করে আদায় করা মুস্তাহাব সাব্যস্ত হয়, যেমনটি আমাদের (হানাফী) মাযহাবের মতো। আমি (লেখক) বলি, এ হাদীস দ্বারাই ‘আয়নী তাঁর ‘‘আল্ বিদায়াহ্ শারহিল হিদায়াহ্’’ গ্রন্থে ‘আসর দেরী করে আদায় করা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে দলীল দিয়েছেন। শায়খ ‘আবদুল হাই লাক্ষ্ণৌভী এ দলীল সাব্যস্ত করার ব্যাপারে উত্তরে বলেন, অভিজ্ঞদের নিকট এটা অস্পষ্ট নয় যে, তাদের মতের পক্ষে এ হাদীসকে ভিত্তি ধরার কোন সুযোগ নেই। কেননা এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ‘আসরের সালাতকে তাড়াতাড়ি আদায়ের তুলনায় যুহরকে তাড়াতাড়ি আদায় করা গুরুতর। এটা দ্বারা এ কথা প্রমাণিত হয় না যে, ‘আসরের সালাতকে দেরী করে আদায় করা মুস্তাহাব।
শায়খ ‘আবদুর রহমান মুবারকপূরী তাঁর আত্ তিরমিযীর শারাহ গ্রন্থে মুল্লা ‘আলী ক্বারী’র বক্তব্য উল্লেখের পরে লিখেছেন, এ হাদীস ‘আসরের সালাতকে দেরী করে আদায় করা মুস্তাহাব হওয়ার পক্ষে কোন দলীল নয়। হ্যাঁ! তবে এ কথা ঠিক যে, যাদেরকে উদ্দেশ করে উম্মু সালমাহ্ (রাঃ) এ কথাগুলো বলেছিলেন তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর থেকে বেশি তাড়াতাড়ি ‘আসরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। ‘আসরের সালাতকে তাড়াতাড়ি আদায় করা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে অনেক সহীহ ও স্পষ্ট হাদীস বিদ্যমান। সালাত তাড়াতাড়ি আদায়ের উত্তমতা সম্পর্কিত স্পষ্ট সহীহ হাদীসগুলোকে পরিত্যাগ করে এ জাতীয় হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করা বা মাসআলাহ্ সাব্যস্ত করার চেষ্টা করা মাযহাবী তাকলীদ ছাড়া আর কিছুই নয়। আল্লাহ তা‘আলা যাকে চান তাকে সিরাতে মুস্তাক্বীমে পরিচালিত করেন।