পরিচ্ছেদঃ
১৬০। আমি আরবী ভাষী, কুরআন আরবী ভাষায় এবং জান্নাতীদের ভাষা আরবী। এ তিনটি কারণে তোমরা আরবদের মুহাব্বাত কর।
হাদীসটি জাল।
হাদীসটি হাকিম “আল-মুসতাদরাক” গ্রন্থে (৪/৮৭) এবং “মারিফাতু উলুমিল হাদীস” গ্রন্থে (পৃঃ ১৬১-১৬২), উকায়লী “আয-যুয়াফা” গ্রন্থে (৩২৭), তাবারানী “মুজামুল কাবীর” (৩/১২২/১) ও “আল-আওসাত” গ্রন্থে, তাম্মাম “আল-ফাওয়াইদ” গ্রন্থে (১/২২) এবং তার সূত্রে যিয়া আল-মাকদেসী "সিফাতুল জান্নাহ" গ্রন্থে (৩/৭৯/১), বাইহাকী “শুয়াবুল ঈমান” গ্রন্থে, ওয়াহেদী তার "আত-তাফসীর" গ্রন্থে (১/৮১) এবং ইবনু আসাকির ও আবূ বকর আল-আম্বারী “ইযাহুল ওয়াকফ ওয়াল ইবতিদা” গ্রন্থে ’আলী ইবনু আমর হানাফী সূত্রে ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াযীদ আল-আশয়ারী হতে, তিনি ইবনু যুরায়েজ হতে ... বর্ণনা করেছেন।
এটির সনদ তিনটি কারণে বানোয়াট।
১। ’আলা ইবনু আমর; যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে তার সম্পর্ক বলেনঃ তিনি মাতরূক। ইবনু হিব্বান বলেনঃ কোন অবস্থাতেই তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা জায়েয নয়। অতঃপর তার এ হাদীসটি উকায়লীর সূত্রে উল্লেখ করে বলেনঃ এটি বানোয়াট। আবু হাতিম বলেনঃ এটি মিথ্যা। অতঃপর তার অন্য একটি হাদীস উল্লেখ করে বলেনঃ এটিও মিথ্যা। হাফিয ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে বলেন, আযদী বলেছেনঃ তার হাদীস লিখা যাবে না। ইবনু হিব্বান তাকে “আস-সিকাত” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। নাসাঈ বলেনঃ তিনি দুর্বল। আবু হাতিম বলেনঃ তার নিকট হতে লিখেছি, ভাল ছাড়া তার মধ্যে অন্য কিছু দেখিনি। সম্ভবত ইবনু হিব্বান ও আবু হাতিম কর্তৃক দু’ধরনের কথা এ কারণে এসেছে যে, তারা তার জাল হাদীস বর্ণনা করা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পূর্বেই তার ব্যাপারে ভাল মন্তব্য করেছিলেন। অতঃপর তার সম্পর্কে জানার পর খারাপ মন্তব্য করেছেন।
ইবনু আবী হাতিম উক্ত হাদীসটি “আল-ইলাল” গ্রন্থে (২/৩৭৫-৩৭৬) উল্লেখ করে বলেছেনঃ আমি আমার পিতাকে যে হাদীসটি ’আলা হানাফী বর্ণনা করেছেন সেটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমি তাকে উত্তরে বলতে শুনেছিঃ এ হাদীসটি মিথ্যা। হাফিয ইবনু হাজার “আল-লিসান” গ্রন্থে তার জীবনীতে বলেনঃ উকায়লী হাদীসটির তাখরীজ করে বলেছেনঃ এটি মুনকার, মতনটি (ভাষাটি) দুর্বল। এর কোন ভিত্তি নেই। অতঃপর তিনি (ইবনু হাজার) তার কথাকে সমর্থন করেছেন। হায়সামী “আল-মাজমা" গ্রন্থে (১০/৫২) বলেনঃ ’আলা ইবনু আমর দুর্বল এ মর্মে সকলে একমত।
২। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াযীদ সম্পর্কে ইবনু মাঈন বলেনঃ তিনি দুর্বল। ইবনু নুমায়ের বলেনঃ তিনি একটি খেজুরের সমতুল্যও নন। আবু যুরীয়াহ বলেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস। ইবনু হাজার “লিসানুল মীযান” গ্রন্থে বলেছেনঃ তাকে সাজী, উকায়লী ও ইবনু জারুদ দুর্বলদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। হাকিম হাদীসটিকে সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। তার সমালোচনা করে যাহাবী বলেনঃ তাকে ইমাম আহমাদও দুর্বল বলেছেন। অন্য সূত্রে তার স্থলে মুহাম্মাদ ইবনুল ফযল এসেছে, তিনি মিথ্যার দোষে দোষী। আমার ধারণা হাদীসটি বানোয়াট। হাফিয ইরাকীও তার সমালোচনা করে বলেনঃ তিনি যা বলেছেন তেমনটি নয়, বরং তিনি দুর্বল। কারণ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াযীদ ও তার থেকে বর্ণনাকারী আলা ইবনু আম্বর তারা উভয়েই দুর্বল।
৩। ইবনু যুরায়েজ একজন মুদল্লিস বর্ণনাকারী। ইমাম আহমদ বলেনঃ এসব হাদীসগুলোর কতিপয় হাদীসকে ইবনু যুরায়েজ মুরসাল হিসাবে উল্লেখ করতেন। সেগুলো বানোয়াট। তিনি কোথা হতে গ্রহণ করছেন তার পরওয়া করতেন না। অনুরূপ কথা “আল-মীযান” গ্রন্থেও এসেছে। ইবনুল জাওযী হাদীসটি "আল-মাওযুআত" গ্রন্থে (২/৪১) উকায়লীর সূত্রে উল্লেখ করে বলেছেনঃ উকায়লী বলেছেনঃ এটি মুনকার, এর কোন ভিত্তি নেই। ইবনুল জাওযী বলেনঃ ইয়াহইয়া উলট পালটকৃত হাদীস বর্ণনা করতেন। সুয়ূতী ইবনু হিব্বান সহ অন্য যারা হাদীসটি সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করেছেন তা “আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/৪৪২) উল্লেখ করে হাদীসটি গ্রহণযোগ্য এদিকে ইঙ্গিত করেছেন। কিন্তু লক্ষ্য করেননি যে, এক ব্যক্তি সম্পর্কে ভাল এবং খারাপ মন্তব্য উভয়টি হলে খারাপ মন্তব্যটিই অগ্রাধিকার পায়।
أحبوا العرب لثلاث: لأني عربي، والقرآن عربي، وكلام أهل الجنة عربي موضوع - أخرجه الحاكم في " المستدرك " (4 / 87) وفي " معرفة علوم الحديث (ص 161 - 162) والعقيلي في " الضعفاء " (327) والطبراني في " الكبير " (3 / 122 /1) و" الأوسط "، وتمام في " الفوائد " (22 / 1) ومن طريقه الضياء المقدسي في " صفة الجنة " (3 / 79 / 1) والبيهقي في " شعب الأيمان " والواحدي في " تفسيره " (81 / 1) وابن عساكر (6 / 230 / 1 و7 / 34 / 1) وكذا أبو بكر الأنباري في " إيضاح الوقف والابتداء " (ق 6 / 1 نسخة الإسكندرية) كلهم من طريق العلاء بن عمرو الحنفي حدثنا يحيى بن يزيد الأشعري أنبأنا ابن جريج عن عطاء عن ابن عباس مرفوعا قلت: وهذا إسناد موضوع، وله ثلاث علل الأولى: العلاء بن عمرو، قال الذهبي في " الميزان ": متروك، وقال ابن حبان: لا يجوز الاحتجاج به بحال، ثم ساق له هذا الحديث من طريق العقيلي ثم قال: هذا موضوع، قال أبو حاتم: هذا كذب، ثم ساق له حديثا آخر ثم قال وهو كذب، وقال في " اللسان ": وقال الأزدي: لا يكتب حديثه، وذكره ابن حبان في " الثقات " وقال: ربما خالف، وقال النسائي: ضعيف، وقال صالح جزرة: لا بأس به، وقال أبو حاتم: كتبت عنه وما رأيت إلا خيرا قلت: لعل قول أبي حاتم هذا وهو في " الجرح والتعديل " (3 / 1 / 359) قبل أن يطلع على روايته للأحاديث المكذوبة، وإلا فتوثيقه لا يتفق في شيء مع تكذيبه لحديثه كما نقله الذهبي عنه، وهو في كتاب " العلل " لابنه قال: (2 /375 - 376) قال: سألت أبي عن حديث رواه العلاء بن عمرو الحنفي (قلت: فذكره قال) : فسمعت أبي يقول: هذا حديث كذب لكن قد يقال: ما دام أن الحديث له علل كثيرة فجائز أن تكون العلة عند أبي حاتم في غير العلاء هذا، والله أعلم وقال في ترجمته من " اللسان ": وقال العقيلي بعد تخريجه: منكر ضعيف المتن لا أصل له وأقره الحافظ قلت: وليس في نسختنا من العقيلي قوله: ضعيف المتن، والله أعلم وتوثيق ابن حبان إياه مع قوله فيما نقله الذهبي عنه لا يجوز الاحتجاج به بحال فيه تناقض ظاهر، فلعل التوثيق كان قبل الاطلاع على حقيقة أمره، والله أعلم وقد يؤيده قول الهيثمي في " المجمع " (10 / 52) بعد أن عزاه للطبراني وفيه العلاء بن عمرو الحنفي وهو مجمع على ضعفه الثانية: يحيى بن يزيد كذا وقع في هذه الرواية: يزيد، قال الذهبي: (وهو تصحيف، وإنما هو: بريد) قلت: وكذلك وقع في " الضعفاء " للعقيلى و" المعرفة " للحاكم وهكذا أورده ابن أبي حاتم في " الجرح والتعديل " (4 / 12 / 131) وروى عن ابن معين أنه قال: ضعيف، وعن ابن نمير قال: ما يسوى تمرة؟ وعن أبي زرعة: منكر الحديث وعن أبيه قال: ضعيف الحديث ليس بالمتروك يكتب حديثه قال في اللسان وذكره الساجي والعقيلي وابن الجارود في الضعفاء، وقد تابعه عند الحاكم محمد بن الفضل وهو متهم كما سبق في الحديث (26) ثم قال الحاكم: حديث يحيى ابن يزيد عن ابن جريج صحيح، فتعقبه الذهبي بقوله: بل يحيى ضعفه أحمد وغيره، والعلاء بن عمرو الحنفي ليس بعمدة، وأما محمد بن الفضل فمتهم وأظن الحديث موضوعا، وكذلك تعقبه الحافظ العراقي في " محجة القرب إلى محبة العرب " (5 /1) فقال: قلت: وليس كما قال، بل هو ضعيف لأن يحيى بن يزيد بن أبي بردة ضعيف عندهم، وكذلك راويه عنه: العلاء بن عمرو الحنفي الثالثة: عنعنة ابن جريج فإنه كان مدلسا، قال أحمد: بعض هذه الأحاديث التي كان يرسلها ابن جريج أحاديث موضوعة، كان ابن جريج لا يبالي من أين يأخذها يعني قوله: أخبرت وحدثت عن فلان كذا في الميزان والحديث أورده ابن الجوزي في " الموضوعات " (2 / 41) من طريق العقيلي، ثم قال: قال العقيلي: منكر لا أصل له، قال ابن الجوزي: يحيى يروي المقلوبات قال السيوطي في " اللآليء " (1 / 442) : قلت: إنما أورده العقيلي في ترجمة العلاء بن عمرو على أنه من مناكيره، وكذا فعل صاحب " الميزان " ثم ذكر توثيق ابن حبان وصالح جزرة للعلاء متغافلا عن قاعدة (الجرح مقدم على التعديل) وعن قول ابن حبان الآخر فيه: لا يحل الاحتجاج به بحال، وعن قول الحافظ العراقي ضعيف عندهم، كما تقدم، ثم ذكر تصحيح الحاكم له وما تعقبه الذهبي به، ثم تعقبه السيوطي بقوله: وله شاهد قلت: ولكنه منكر باعتراف السيوطي نفسه فلم يصنع شيئا! وهو الآتي بعده والحديث أورده شيخ الإسلام ابن تيمية في " اقتضاء الصراط المستقيم " (ص - طبعة الخانجي) من طريق العقيلي وأنه قال: لا أصل له وأن ابن الجوزي ذكره في " الموضوعات " وأقرهما على ذلك، إلا أنه نقل قبل ذلك عن الحافظ السلفي: هذا حديث حسن، قال شيخ الإسلام: فما أدري أراد (حسن إسناده) على طريقة المحدثين أو (حسن متنه) على الاصطلاح العام قلت: وغالب الظن أنه أراد الثاني وبه جزم في " الفيض " لكنه عزاه لابن تيمية مع أن كلامه كما رأيت لا يدل على جزمه بذلك، وعلى كل حال فإني أستبعد جدا أن يستحسن السلفي إسناد هذا الحديث مع أن أحسن أحواله أن يكون ضعيفا جدا، وقد حكم بوضعه غير واحد من الأئمة الذين سبقوه مثل أبي حاتم والعقيلي دون أن يخالفهم في ذلك أحد ممن يوثق بعلمه