পরিচ্ছেদঃ ৬. আল্লাহর আত্মমর্যাদা এবং অশ্লীল কাজ হারাম হওয়ার বর্ণনা
৬৮৮৪-(৩২/২৭৬০) উসমান ইবনু আবূ শাইবাহ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ..... ’আবদুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর তুলনায় আত্মপ্রশংসা বেশি পছন্দকারী কেউ নেই। এজন্যই তিনি নিজে নিজের প্রশংসা করেছেন। এমনিভাবে আল্লাহর তুলনায় বেশি আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্নও কেউ নেই। এজন্যই প্রকাশ্য এবং গোপনীয় সকল প্রকার অশ্লীলতাকে তিনি হারাম ঘোষণা করেছেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৭৩৬, ইসলামিক সেন্টার ৬৭৯২)
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। নিশ্চয় সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা তাঁর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা করা ভালবাসেন। এবং তিনি তাঁর আনুগত্য, উপাসনা এবং স্মরণের মাধ্যমে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার বিষয়টিকেও ভালবাসেন; তাই মুসলিম ব্যক্তির একটি উত্তম কাজ হলো এই যে, সে যেন তার পালনকর্তার অধিকতর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার কর্মে রত থাকে। যাতে তার পালনকর্তার সাথে তার সুসম্পর্ক সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত থাকে।
২। কোনো ব্যক্তি যখন সর্বশক্তিমান আল্লাহর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা করতে থাকে, আল্লাহ তখন তাকে পুণ্যবাণ বা পুণ্যাত্মা করে দেন; সুতরাং সেই ব্যক্তি এর দ্বারা নিজেই উপকৃত হয়ে থাকে। কেননা মহান আল্লাহ তো সৃষ্টিজগৎ হতে অভাবমুক্ত। কোনো ব্যক্তি মহান আল্লাহর সুন্দরভাবে সুন্দর প্রশংসা করলে বা না করলে তাতে আল্লাহর কোনো মঙ্গলসাধন বা ক্ষতিসাধন হয় না।
৩। পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ কঠিন তীব্র ঈর্ষাপরায়ণ; সুতরাং তাঁর চেয়ে অধিকতর কঠিন তীব্র ঈর্ষাপরায়ণ আর কেউ নেই।
মহান আল্লাহ প্রকৃতপক্ষে ঈর্ষাপরায়ণ, এর মানে হলো এই যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ পছন্দ করেন না যে, কোনো মানুষের কোনো প্রকার অকল্যাণ হোক কিংবা ক্ষতিসাধন হোক অথবা তার প্রতি কোনো প্রকার আক্রমণ হোক বা তার কষ্ট হোক, তার ধর্মের দিক দিয়ে বা জানও মানের দিক দিয়ে কিংবা তার মন বা বুদ্ধির দিক দিয়ে; তাই মহান আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন: ব্যভিচার, চুরি, অপহরণ, সুদ, মাদক দ্রব্য সেবন করা এবং সমস্ত প্রকারের অশালীন আচরণ ও অনৈতিক পথ অবলম্বন করা।
৪। ন্যায় পন্থায় ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে সৎলোক এবং পুণ্যবান লোকের প্রশংসা করা একটি পুণ্যের কাজ এবং সৎকর্ম; সৎলোক এবং পুণ্যবান লোকের মর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।
৫। যখন অন্যায় পন্থায় অন্ধভাবে আন্দাজ করে কোনো অসৎলোকের প্রশংসা করা হবে কিংবা যে ব্যক্তি নিজের প্রশংসা শুনলে অহংকারে পড়ে যাবে, সেই লোকের বা ব্যক্তির প্রশংসা করা কোনো সময় বৈধ নয়; কেননা এই অন্যায় প্রশংসার দ্বারা সমাজের ক্ষতিসাধন হবে এবং যে ব্যক্তির কোনো মর্যাদা নেই বা সম্মান নেই, তাকে অন্যায়ভাবে মর্যাদা বা সম্মান দেওয়া হবে; এই অবস্থার কারণে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"إذَا رَأَيْتُمُ الْمَدََّاحِيْنَ فَاحْثُوْا فِيْ وُجُوْهِهِمُ التُّرَابَ".
(صحيح مسلم, رقم الحديث ৬৯- (৩০০২),).
অর্থ: “তোমরা যখন মানুষের সামনে প্রশংসাকারীদেরকে দেখতে পাবে, তখন তাদের মুখে মাটি রেখে দিবে”।
[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯ -(৩০০২) ]।
কিন্তু কোনো সৎলোক এবং পুণ্যবান লোকের সামনে ন্যায় পন্থায় তাঁর প্রশংসা করলে কোনো বাধা নেই; কেননা তিনি তো নিজের প্রশংসা শুনলে অহংকারে পড়ে যাবেন না; যেহেতু তাঁর মধ্যে পূর্ণরূপে তাকওয়া (অর্থাৎ: আল্লাহকে ভক্তিসহকারে ভয় করে তাঁর সঠিক ভক্ত হওয়ার বিষয়টি), বুদ্ধি এবং আল্লাহ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান বিদ্যমান রয়েছে।
باب غَيْرَةِ اللَّهِ تَعَالَى وَتَحْرِيمِ الْفَوَاحِشِ
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ، عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ الْمَدْحُ مِنَ اللَّهِ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ مَدَحَ نَفْسَهُ وَلَيْسَ أَحَدٌ أَغْيَرَ مِنَ اللَّهِ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ " .
'Abdullah reported Allah's Messenger (ﷺ) as saying:
Nothing is more loveable to Allah than His praise as He has praised Himself and no one is more self-respecting than Allah Himself and it As because of this that He has prohibited abominable acts.